নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কারো কাছে নেই কোন অভিমানের দেনাপাওনা, নেই কোন কষ্টের হিসাব, তবুও লুকিয়ে থাকা হাহাকার পরম যতনে আগলে রাখি-- প্রথম পাওয়া চিঠির মত, আমি এই রকমই বন্ধু ।

জিএম হারুন -অর -রশিদ

আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম

জিএম হারুন -অর -রশিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অমিমাংসিত আর্তনাদ

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ ভোর ৪:০৬


মাননীয় ‘মহামান্য’ ছয়জন বিশেষ নাগরিককে লটারী করে সুযোগ দিলেন তাদের ইচ্ছে পুরনের আবেদনের জন্য।

একজন ডাক্তার লিখলেন-
তিনি বাগানের একজন মালী হতে চান!!
মানুষের চেয়ে উনি বৃক্ষ বেশি পছন্দ করেন।
আজকাল অপারেশনের সময় কিছু মানুষের শরীর থেকে আলকাতরা বের হয়ে উনার হাতে লেগে যায়।
সেই আলকাতরা শতবার ডেটল দিয়ে ধুলেও উঠে না।
অথচ বৃক্ষের শরীরের ভিতর সব সময় বৃক্ষই ঘুমায়।
উনি বাল্যকালে ‘My aim in life’ রচনায় লিখেছিলেন-
আমি বড় হয়ে একটি গাছ হবো।

একজন আর্কিটেক্ট ইন্জিনিয়ার আবদনে বললেন-
তিনি সাদা ঘুড়ি বানানোর একজন কারিগর হতে চান!!
উনি আকাশে উড়তে ভালোবাসেন।
বড় বড় দালানকোঠা দেখলেই মনে হয় বড় বড় কফিন।
অথচ সাদা ঘুড়ি যখন আকাশে উড়ে তখন মনে হয় একটি জীবন্ত সাদা বক উড়ছে।
সুযোগ থাকলে উনি একবার সাদা বক হয়ে জন্মাতেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন শাস্ত্রের একজন অধ্যাপক উনার ইচ্ছের কথায় লিখলেন-
তিনি একজন বাউল গায়ক হতে চান!!
ক্লাশে পড়াতে গেলেই ইদানিং মনে হয়,
উনি যা বিশ্বাস করেন না তাই তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াচ্ছেন।
অথচ বুকে বিশ্বাস না থাকলে কখনো কোনো মানুষ বাউল হতে পারেনা।
সম্প্রতি একজন বাউল উনাকে শিষ্য হিসেবে নিতে অস্বীকার করেছেন-
শুধু মাত্র উনি ‘মানুষ’ ও ‘বিশ্বাস’ শব্দ দুটি
সঠিক ভাবে উচ্চারন করতে পারেননি, তাই!!

একজন পুলিশের কর্মকর্তা দরখাস্তে বললেন-
তিনি একজন নাবিক হতে চান!!
এই শহরে উনি এখন আর কোনো মানুষ খুঁজেও পান না!!
এই ভয়ে উনি আয়না দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন।
তাই আগেছালো চুল নিয়ে ডিউটি করতে উনি হীনমন্যতায় ভুগছেন।
নাবিক হলে সমুদ্রের জলে অন্তত মাছই পাবেন।
আর সেই জলে নিজেকে দেখে অনেকদিনের না আঁচড়ানো চুল আঁচড়ে নিবেন।

একজন রাজনীতিবিদ জানালেন-
তিনি রেললাইন বানানোর একজন কারিগর হতে চান!!
বক্তৃতা দিতে গেলেই উনি এখন সত্য-মিথ্যা এক করে ফেলেন।
রাতের বেলায় উনার ঘুমের ঔষুধেও আর ঘুম হয়না।
খুবই কষ্টে আছেন!!
অথচ রেললাইন কখনো এক হবেনা- সমান্তরালই থাকবে।
অন্তত তিনি শান্তিতে ঘুমোতেতো পারবেন।

একজন কবি অভিমান করে বললেন-
তিনি জেলখানার একজন জল্লাদ হতে চান!!
ইদানিং কবিতা লেখার জন্য তিনি কোথাও শুদ্ধ হাহাকার খুঁজে পান না।
কবিতার অভাবে অনেকদিন যাবত তিনি
অর্থকষ্টে ভুগছেন।
জল্লাদের চাকুরীটা হলে অন্তত অর্থকষ্ট দূর হতো।
আর কবিতা লেখার জন্য
ফাঁসির আসামীর চোখে বেঁচে থাকার শুদ্ধ হাহাকার দেখতে পেতেন।
কবি বিশেষ নোটে লিখেছেন-
মহান সংবিধানে এমন কোনো ধারা আছে কি- জল্লাদ হলে কেউ কবিতা লিখতে পারবেনা?

মাননীয় ‘মহামান্য’ নিজেই এক অপরিচিত অথচ গোপন হাহাকারে পড়ে গেলেন
সব ইচ্ছের আবেদন পড়ে।
উনি সুসজ্জিত বারান্দায একজন অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষীর হাতে দামী শিকলে আটকানো একটি প্রশিক্ষিত কুকুরের দিকে তখনই একবার তাকালেন
তারপর বিশাল আয়নায় নিজেকে দেখলেন আরেকবার।

সেই সময়েই মাননীয় ‘মহামান্য’ আর দামী শিকলে আটকানো কুকুরটাও একটি করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো ।
শুধু কোন দীর্ঘশ্বাটি কার,
বুঝা গেলোনা সেই সুরম্য নিরাপত্তা
বেষ্টিত প্রসাদে!!
——————————-
১৩/০১/২০২০

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:০৩

নজসু বলেছেন:


মানুষ না হয়ে গাছ হলেই বুঝি আমাদের ভালো হতো।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩৬

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: একজন কবি জেলখানায় গিয়ে জল্লাদ হবেন!!!!!!!!!

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩৬

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:১০

প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন: মাননীয় ‘মহামান্য’ নিজেই এক অপরিচিত অথচ গোপন হাহাকারে পড়ে গেলেন
সব ইচ্ছের আবেদন পড়ে।
উনি সুসজ্জিত বারান্দায একজন অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষীর হাতে দামী শিকলে আটকানো একটি প্রশিক্ষিত কুকুরের দিকে তখনই একবার তাকালেন
তারপর বিশাল আয়নায় নিজেকে দেখলেন আরেকবার।

আমাদের মাননীয় ‘মহামান্য’রা কি কখনো আয়না দেখেন/ দেখবেন?

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩৭

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.