নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম
অনেকদিন ধরেই সকালে পত্রিকা পড়তে গেলে হঠাৎ হঠাৎ চশমাটা খুঁজে পাইনা!
সেদিন মা যেন নিশ্চিতভাবেই জানেন আজ আমি চশমা খুঁজে পাবোনা।
সাথে সাথে আলমারি খুলে অতি যত্ন করে মখমল কাপড়ে মুড়িয়ে রাখা একটা চশমা বের করে দেন।
অনেক পুরোনো কালো ফ্রেমের একটি চশমা,
আমার বাবার চশমা।
আমি সেই চশমা দিয়ে চোখে প্রায় কিছুই দেখিনা,
সব কেমন যেন অস্পষ্ট ছায়ার মতো মনে হয়।
তবুও প্রায় আধাঘন্টা যাবত খুব মনোযোগ দিয়ে পত্রিকা পড়ি
-সব পাতা উল্টে পাল্টে।
আসলে পড়ি না,
পড়ার অভিনয় করি।
মা পাশে বসে থেকে আমার পত্রিকা পড়া দেখেন খুব মনোযোগ দিয়ে,
আর পাহারা দেন যাতে আমার ভুলে বাবার চশমার কোনো ক্ষতি না হয়।
আমি জানি সেই সময় মায়ের চোখ ছলছল থাকে।
পত্রিকা পড়ার পর চশমাটা ফিরিয়ে দিলে
-তখনই তা খুব যত্নে সেই মখমলের কাপড়ে জড়িয়ে আগের জায়গায় রেখে দেন।
বাবা মারা যাবার পর গত পনেরো বছর যাবত প্রায়ই মা আমার পড়ার চশমাটা সকালে কিছুক্ষণের জন্য সরিয়ে রাখেন,
মাঝে মাঝে আমিও ইচ্ছে করে মাকে ডেকে বলি,
-“মা, আমার চশমাটা খুঁজে পাচ্ছি না,
বাবার চশমটা একটু বের করে দাও।”
তখনই ছলছল চোখে এক অদ্ভুত উৎসাহে আমার মা তার মৃত স্বামীর চশমাটা বের করে দেন।
হয়তো, দেখতে চান সন্তানের চোখে সেই চশমাটা কেমন দেখায়!
বেধহয় বাবার ছায়া খোঁজে সেই চশমায়।
প্রতিবারই চশমাটা চোখ থেকে খুললে
আমার চোখ থেকে কেনো যে কয়েক ফোঁটা জল ঝরে পড়ে, বুঝিনা!
বুকটাও খালি খালি লাগে সেই সময়!
আমি সেই জল মায়ের চোখ থেকে লুকিয়ে রাখি খুব স্মার্টভাবে,
শুধু বুকের ভিতরে চিৎকার করে নিঃশব্দে বলি,
-“বাবা আপনার চশমা আমাকে অভিনয় শিখিয়েছে!”
——————————
রশিদ হারুন
২৩/০৫/২০২০
২৪ শে মে, ২০২০ রাত ৩:১৪
জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন
২| ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১০:০১
রাজীব নুর বলেছেন: অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর।
২৪ শে মে, ২০২০ রাত ৩:১৫
জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ৮:২৯
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালো লাগার ভালোবাসা । মনোরম লেখনী