| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গোলাম মহিউদ্দিন নসু
মনের কথা- সত্য কথা- বাস্তবতা- গবেষণা- সমস্যা- সম্ভাবনা- ইতিহাস- ঐতিহ্য- স্থাপত্য- ফোক কালচার সহ ইত্যাদি বিষয়ে সাংবাদিকতার দৃষ্টিতে লেখা-লিখি।
বিশ্বটা যেমন উচু-নীচু,বিশের¦ মানুষগুলি ধনী-দরিদ্র, আবাসনের জায়গায় শহর আর মফাস্বল এ যেন সৃষ্টির নিরন্তন সত্য। এমনি আরো কত কি!
আমরা যারা মফাস্বলে থাকি, নানাবিধ কাজ করি, তারা যেন হরিজন আর ব্রাম্মন পার্থক্যের একটা উদাহরন।
ছোট বেলায় কবিতা লেখা; ছবি আঁকা; এ গুলি আবার পত্র পত্রিকায় ছাপানো, আবার সামাজিক অভাব অসুবিধার কথা,সমস্যা নিরসনের জন্য জাতীর কাছে তুলে ধরার জন্য পত্রিকার চিঠি পত্র কলামে ছাপানো ইত্যাদি আগ্রহ থেকে পত্রিকা জগতে আসা। দেশ বিদেশের নানা ঢেউ পেরিয়ে আবার সেখানে। শেষতক নব্বইয়েরদশকে এসেই গেলাম। ডিগ্রী সার্টিফিকেটের সুবাদে শুরুতে একটি স্থানীয় পত্রিকার ব্যব¯া’পনার সাথে জড়িত হলাম। এক সময় স্পট নিউজ, প্রতিবেদন, অনুসন্ধান ইত্যাদি কোন ফাঁকে শুরু হলো বুঝলাম না।সাহস রইলো মনে- গরুর রচনা যখন লিখতে পারি; সাংবাদিকতাও পারবো। কিন্ত ম্যাস লাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি)র বদৌলতে বুঝলাম- এত দিন যা লিখেছি তা মানুষ যদি পড়েছে, শুধু মাত্র সময় কাটাতে বা মূল কথাটা বুঝতে। কারন সংবাদ লেখার রীতি নিয়ম কিছুই ছিল না। যদি কিছু পাওয়া গেছে সেটা নিয়ম জানার কারনে নয়; অন্যের লেখা অনুসরন করেছিলাম বলে।
কিছুদিন লেগে রইলাম। বুনিয়াদি থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি ফলোআপ প্রশিক্ষন। আবার মানবাধিকার;বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এমনকি সরকারি সেবা মূলক অনেক সংঘটনের সাথে জড়িত হয়ে গেলাম বলে নানা ধরনের সেমিনার -সেম্পোজিয়ামে যোগদানের সূযোগ তৈরী হয়ে গেল। অনেক সময় গড়িয়ে গেল। স্থানীয় পত্রিকায় বার্তা- নির্বাহী কখনো ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক । এদিকে ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় পত্রিকা নামে খ্যাত পত্রিকায় উপজেলা জেলা বিশেষ প্রতিনিধি হিসাবে কাজের সূযোগ পেয়ে গেলাম। সে আরেক জগত! বিজ্ঞাপনের কমিশন ছাড়া পত্রিকা অফিস থেকে কিছুই পাওয়া যায় না। বিজ্ঞাপন কমিশন দিয়ে চলে না। তা হলে অন্যেরা চলছে কি ভাবে। সে এক আজব ব্যাপর! বলবো না!! দেখলাম ৫ম/৮ম শ্রেনী পাশের সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি নিয়ে যে লোকটি পত্রিকা বিলি করতো অথবা বিজ্ঞাপন খুজতো ,তার পকেটে উপজেলা,জেলা বা বিশেষ প্রতিনিধির কার্ড । ইংরেজীতে নিজের ঠিকানাটা ভাল ভাবে লিখতে যার কষ্ট হবে ,সেও ঢাকার ইংরেজী কাগজের প্রতিনিধির পরিচয় দিচ্ছে। পত্রিকা বিলি কারক;বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি; সংবাদদাতা; প্রতিনিধি; প্রতিবেদক সবই কি - ? সাংবাদিক নামের লোকেরা পরস্পারিক ভাবে একে অপরের সমালোচনা করে যাচ্ছে। পত্রিকার কোন কোন সম্পাদকরা এ সূযোগে কার্ড ব্যবসা করেন। আবার মান মূল্যায়ন না করে ফ্যক্টরী মালিকের মতো অনেকটা বিনে পয়সায় খাটিয়ে নিচ্ছে। হাতে গুনা ২/৪টি কাগজে সম্মানী ভাতা দিলেও তা নিতান্তই কম। মফস্বল সাংবাদিকতা এমন একটি পেশা যেখানে কোন সার্টিফিকেট লাগে না। ট্রেনিং লাগে না। চলমান এমন নিয়মের কারনেই সবাই অবমূল্যায়িত। এ নিয়ম পরিবর্তন হওয়া দরকার। মফস্বল সাংবাদিকতায় একটি নীতি মালা খুবই জরুরী।
এ জগতে আমার এক বড় ভাইয়ের ছ্ােট্র একটি কাহিনী বলে শেষ করি- গেল সংসদ নির্বাচনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগটন ‘অধিকার’এর নোয়াখালী প্রতিনিধি হিসাবে ২ জনে কাজ করছিলাম। কাজের দায়িত্বে জেলা প্রশাসকের অফিসে যেতে হয়। উনাকে বললাম-ভাইয়া কাজটা আপনি সেরে নিবেন। তিনি আমাকে ঠেলে দিয়ে বললেন, আপনি যেয়ে কাজটা করে নিয়েন। আর না হয় আপনার সাথে আমি থাকবো।
বুঝলাম না- আশ্চার্য হলাম?
ঘটনার দিন দেখলাম ঐ অফিসের অনেকের কাছে তারঁ পরিচয় বলে দিতে হলো।
আবার আশ্চার্য হলাম-!
যিনি মুক্তকন্ঠসহ অনেকগুলি জাতীয় পত্রিকায় প্রতিনিধি/ষ্টাপ রিপোর্টার হিসাবে কাজ করেছেন; যাঁর লেখা প্রথম আলো প্রত্রিকায় কলাম হিসাবে ছাপা হয়; যিনি সাংবাদিকদের প্রশিক্ষন দিয়েছেন; যাঁকে নোয়াখালীর অনেকে চারন সাংবাদিক হিসাবে জানে;যিনি বিভিন্ন সংঘটনে গবেষনা কাজ করে টাকা পান। যিনি ফরহাদ মাজহর এর মতো আন্তর্জাতিক লেখক গবেষকের ছোট ভাই-তাঁকে এখনো পরিচয় করিয়ে দিতে হয় । কারন তিনি নিশ্চয় এখনো আর ঐ সেই কার্ডগুলো নিয়ে হাঁটে না।
যাঁরা কিছূ লিখেন; যাঁরা সামাজের উন্নয়ন নিয়ে কিছু ভাবেন; এখনো সময় আছে- নিজেরা একত্রিত হউন।মফস্বল সাংবাদিকতার মান অক্ষুন্ন রাখতে এগিয়ে আসুন।##
লেখক: সাংবাদিক ও কলাম লেখক
নোয়াখালী
[email protected]
©somewhere in net ltd.