| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গোলাম মহিউদ্দিন নসু
মনের কথা- সত্য কথা- বাস্তবতা- গবেষণা- সমস্যা- সম্ভাবনা- ইতিহাস- ঐতিহ্য- স্থাপত্য- ফোক কালচার সহ ইত্যাদি বিষয়ে সাংবাদিকতার দৃষ্টিতে লেখা-লিখি।
* ৪ উপজেলার ১৯ খালের ১৭২ কিলোমিটার খননের প্রস্তাব
* খালের ৩৫ মিটার চওড়ার স্থলে ২৩মিটারই বেদখল
গোলাম মহিউদ্দিন নসু,নোয়াখালী
নোয়াখালী খালের চরম সংকটাপন্ন অবস্থা। দখলবাজরা চৌমুহনী বাজার এলাকায় খালের উপর দোকান-বাসা-বাড়ী তৈরী করে পানি চলাচল বন্ধ করে ফেলছে। অবাধে ময়লা ফেলে অনেক জায়গায় খালের বুকে বাঁধ পড়ে গেছে। বর্ষা মৌসূমের আগে খনন করা না হলে প্রতিবছরের মতো এবারো জলাবদ্ধতায় তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হবে- বিপুল পরিমান ফসলাদি,অসংখ্য রাস্তা ঘাট আর বিশাল জনগোষ্ঠি।
জলাবদ্ধতা দূর্ভোগ দুরীকরনের লড়াই থেকেই নামকরন করা হয় নোয়াখালীর। জেলাটি যখন ত্রিপুরা রাজ্যের অংশ ছিলো তখন পাহাড়ের পানি আর বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় ঢুবে যেত। সে দিন এখানের মানুষকে বাঁচাতে এ অঞ্চলের বুকচিরে গোমতি-ডাকাতিয়া-মেঘনার সংযোগ তৈরী করে খনন করা হয় একটি নতুন খাল। নোয়াখালীর ভাষায় নতুনকে বলে ‘নোয়া’।্ সেই থেকে এ অঞ্চলের নাম হয় ‘নোয়াখালী’। কিছু বছর সূখে কাটলেও আবারো মেঘনায় ভাঙ্গতে শুরু করে জেলার দক্ষিন অঞ্চল।নোয়াখালীকে রক্ষা করতে ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৮সাল পর্যন্ত ক্রসডেস(ওবায়দুল্্যার বাঁধ) নির্মান করলে দক্ষিন অঞ্চল রক্ষা ফেলেও পলি মাটি জমে সে অঞ্চল উচু হয়ে যায়।জাগতে শুরু হয় নতুন নতুন চর।ভরে যায় নোয়াখালী খালের দক্ষিন অংশ। আবারো কোম্পনীগঞ্জ-কবিরহাট-সদর- বেগমগঞ্জবাসীর কপালে নেমে আসে জলাবদ্ধতার দূর্ভোগ।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় নোয়াখালীর দক্ষিনাচঞ্চলে অর্থনৈতিক জোনসহ নানা উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহনের অংশ হিসাবে জলাবদ্ধতা দুরীকরনে নেয়া হয় ৩২৪ কোটি টাকার প্রকল্প।
নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকোশলী জহিরুল ইসলাম জানান,জেলার জলবদ্ধতা দুরীকরনে ৪ উপজেলায় ১৯ খালে ১৭২ কিলোমিটার খনন, ১০ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ,সাড়ে ১১ কিলোমিটার সাধারন বাঁধ ও বামনী নদীতে রেগুলেটার নির্মানের কাজ আগামী অর্থ বছরে পর্যায় ক্রমে শুরু করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কাজটি শুরু করার জন্য খালের বর্তমান অবস্থার জরিপ কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ সেনা বাহীনি কাজটি শুরু করার জন্য ইতোমধ্যে উচ্চ পর্যায়ের পরিদর্শন সম্পন্ন করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরিপ কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম থেকে জানা গেছে নোয়াখালী খালের বিভিন্ন অংশে ৩০Ñ৩৫ মিটার চওড়া থাকলেও চৌমুহনী বাজার অংশে গোলাবাড়িয়া ব্রিজ হতে রাবেয়া হাসপাতাল পর্যন্ত অংশে ১২- ১৮ মিটার চওড়া পাওয়া গেছে। খালের ৩৫ মিটার চওড়ার স্থলে আংশিক এলাকায় প্রায় ২০মিটারই বেদখল হয়ে আছে। বিশেষ করে মদন মোহন স্কুলের মালিকানায় নির্মিত মার্কেট এলাকায় মাত্র ১২ মিটার চওড়া পাওয়া গেছে।অনেক এলাকায় খালের জায়গায় দোকান-বাসা-বাড়ী নির্মান করায় পানি চলাচলের পথ বন্ধ হয়েে গেছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম আরো জানান,৩২৪টাকার পকল্পের আওতায় কোম্পনাীগঞ্জের বামণী রেগুলেটর ও কোম্পানীগঞ্জ,সদর,কবিরহাট উপজেলায় মেঘনা নদীর ভাঙ্গন থেকে প্রতিরক্ষাসহ ২৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মান হবে।
সদর উপজেলায় দত্তের খালে সাড়ে ৮ কিলোমিটার, নোয়াখালী খাল ১৫ কিলোমিটার, দেবীপুর খাল ১৫কিলোটার, বেগমগঞ্জ উপজেলায় রমজান বিবি খাল সাড়ে ৮ কিলোমিটার, গাবুয়া খাল ১৯ কিলোমিটার, চৌমুহনী -ছাতারবাড়িয়া খাল ১৩ কিলো মিটার,তুলাতলী খাল ৩ কিলোমিটার, সোনাইমুড়ি খাল ৪ কিলো মিটার, হাজিপুর খাল ৫ কিলোমিটার, রায়পুর খাল ৩ কিলোমিটার, কবির হাট উপজেলায় আলগী খাল ৮ কিলোমিটার, কালামুন্সী খাল ২০ কিলোমিটার. কবিরহাট খাল সাড়ে ৫ কিলোমিটার, ভানুবিবির খাল সাড়ে ৮ কিলোমিটার, নোয়াখালী খাল ১০ কিলোমিটার, কোম্পানী গঞ্জ উপজেলায় চাপরাশি খাল ১৬ কিলোমিটার,বায়রা খাল ৩ কিলোমিটার,বড় খাল সাড়ে ৩ কিলোমিটার ও বদ্দমতি খাল ৩ কিলোমিটার খনন করা হবে।
প্রসঙ্গত, নির্বাহী প্রকৌশলী আরো বলেন, খনন কাজ করলেও জনসচেতনতা না বাড়লে, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ভ’মিকা না রাখলে খাল খননের সুফল আসবে না।তিনি চৌমুহনী বাজার এলাকার খালের কথা উল্লেখ করে বলেন এখানে খালের মধ্যে বাজারের ময়লা ফেলা হয়, স্থানীয় দোকানীরা খালের জায়গা দখল করে দোকান নির্মান করে খালের পানি চলাচলের পথ বদ্ধ করে দিয়েছে।
খাল খননের পরে যেন এ ধরনের আর না হয় সে দিকে পৌর সভার মেয়র, স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ দায়িত্বশীলদের নজর রাখতে হবে।
বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদা খানম জানালেন, বর্ষার পানি দ্রুত নামানের জন্য খালের উপর বাঁধ কাটাসহ বেআইনী দখল উচ্ছেদের কাজ শুরু হয়েছে।#

©somewhere in net ltd.