| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গোলাম মহিউদ্দিন নসু
মনের কথা- সত্য কথা- বাস্তবতা- গবেষণা- সমস্যা- সম্ভাবনা- ইতিহাস- ঐতিহ্য- স্থাপত্য- ফোক কালচার সহ ইত্যাদি বিষয়ে সাংবাদিকতার দৃষ্টিতে লেখা-লিখি।
এটি কি রাজনৈতিক বিবেচনা ---না--- চলমান প্রক্রিয়া ---------
সরকারের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধার সুষ্পষ্ট সংজ্ঞা দেয়া দরকার।
যারা এখন মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আসছেন---তারা ৪৬ বছর কোন ধ্যানে ছিলো ? কোন সাল পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম যোগ হবে ?
আমি ’৭১সনে বেগমগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র ছিলাম। অটো প্রমেশনে সপ্তম শ্রেনীতে গেছি।
স্কুল সময়ে পানজাবি-মেলেশিয়া দেখে পালিয়ে থাকতাম।রাজাকাররা কাকে ধরিয়ে দিয়েছে- তা দেখলে মুক্তিযোদ্ধা বা তার পরিবারকে জানাতে চেষ্টা করতাম।নির্যাতিত নারীদের বিষয়ে নানা কথা শুনে আতংকিত হতাম।কালা পোলে কোনদিন কতজন মেরে ফেলে রেখেছে-দেখতে যেতাম- রাজাকার দেখলে দৌড়ে পালাতাম।
তার আগে প্রাইমারী স্কুলে থাকতেই শ্রদ্ধেয় ছৈয়দ আহাম্মদ স্যারের তত্বাবধানে সাংস্কৃতিক কর্মী ফিরোজ ভাইয়ের(বর্তমান একলাশপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার) সহায়তায় নাটক-গান-আবৃতিসহ কাব ষ্কাউট ও মুকুল ফৌজ নামে লাফ-রাইট ট্রেনিংসহ অসহযোগ আন্দোলনে শরীক ছিলাম।হরতাল সময়ে দোকানের সামনে থেকে রাস্তায় টুল বসানো,লাকড়ীর গন্ডি দিয়ে গাড়ী আটকানো ছাত্রলীগ নেতাদের কথায় ইত্যাদি কাম ।
রাজাকারের ভয়ে পরিবারসহ বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে ছিলাম। যাদেরকে দেখেছি-যুদ্ধের সময় স্বাভাবিক ভাবে বাজারে চলাফেরা করতো,রিক্সা চালাতো ,আ’লীগ-ছাত্রলীগ করার দায়ে অনেকে পালিয়ে ছিলো-তারা কোন কোটায় মুক্তিযোদ্ধা হলো---কিছু লোক ভারত গিয়ে নিজেদের আত্বীয়স্বজনের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছিলো বলে গুঞ্জন আছে-তারাও বা কিভাবে মুক্তিযুদ্ধে নিজেকে জড়াতে পারলো---
যেই রাজাকার-রা মুকবল চেয়ারম্যানের ঘরে আগুন দিলো বলে শুনেছি-যেই মুকবুল চেয়ারম্যান মুক্তি যুদ্ধের সময় সংগঠক হয়ে ক্যাম্প কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করলো, যিনি অনেক রাজাকারকে জীবনে বাঁচিয়ে দিলো- তিনিতো মুক্তিযোদ্ধা ?কিন্ত সেই রাজাকারদের আজো বিচার হলো না । বরং তারা বিত্তবান হয়ে ক্ষমতা নিয়ন্ত্রন করে-মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লিখানো অনেককে দেখি তাদের দালালি করে-
বাবা যুদ্ধের আগে বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থন করতে গিয়ে‘চাকুরীতে অনুপস্থিত থেকে শোকজ পেয়েছিলেন, লাপের ভিতর ঢুকে আকাশবানী,বিবিসি,বাংলাদেশ বেতারের খবর শুনে সহযোগী আওয়ামী কর্মীদের সাহস যোগাতেন-গোপনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে কাজ করার চেষ্টা করে গেছেন-( নেতা নুরুল হক মিয়া) হক সাহেবের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে গেছেন, স্ব পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেশের মুক্তিকামনা করেছেন-কই- তিনিতো সার্টিফিকেট পাননি-
এক চেয়ারম্যনের কথা বলি- ছাত্রজীবনে তিনি আমার এক বছরের জুনিয়র। তিনার নাম দেখলাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়। একদিন আলাপ চারিতায় জিজ্ঞাসা করলাম -‘আপিনি নাকি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। বললো হাঁ করেছি- আপনিতো ছাত্র জীবনে আমার এক বছর জুনিয়র ছিলেন, যুদ্ধ সময়ে আমি পড়ি চিক্সে- আপনি ফাইভে-কত বছর বয়সে আপনি যুদ্ধ করেছেন এবং কোথায়-?আপনাকে নিয়েতো একটা হিস্ট্রি হতে পারে। বললো- আমি মামার সাথে‘ক্যাম্পে যেতাম’।
নোয়াখালী পিটিআই স্কুলের শেষ যুদ্ধের কথা বলি-পাশ্ববর্তী বাড়ীর লকিয়ত উল্যা- চাকরি করতেন ইপিআর-এ। যুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীতে গিয়ে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। পিটিআই স্কুলে গুলিও খেয়েছেন। তিনি ৫ বছর আগ পর্যন্তও মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেননি। একদিন জিজ্ঞাসা করলাম কাকা আপনি সার্টিফিকেট ফেলেন না কেনÑ‘শালার পুতেরা আমার কাছে টাকা চায়। টাকাও দি নাই- সার্টিফিকেটও পাই নাই-তালিকায়ও নাম উঠে না।’বললাম আপনিতো রাগি মানুষ- কি করবেন- কিছু কাজে একটু মানিয়ে নিতে হয়। শুনেছি মৃত্যুর আগে নাকি তালিকায় নাম উঠেছে।
তারিখ ১২.৭.১৭
চলবে--
(বানান ভুল আর শব্দ চয়ন লেখকের নয়- কথকের)
©somewhere in net ltd.