নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রিয় বিবেক

প্রিয় বিবেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক মমতাময়ী মায়ের বেদনার ইতিকথা !!!

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৫১

প্রায় ২৫ বছর আগের কথা,
মাত্র ১৬ বছর বয়সে গ্রামের মেয়ে ''সুন্দরী আমেনা বানুর'' বিয়ে হয়েছে। স্বামীর বয়স ৩৭ নাম ''জব্বার মিয়া''। অনেক বছর বিলেতে ছিলেন, এখন মফস্বলে বড় দোকান আছে।বিয়ের কয়েক বছর কেটে গেলেও তাঁদের কোন সন্তান/সন্ততি নেই। এ নিয়ে জব্বার মিয়ার আক্ষেপ স্ত্রীর প্রতি। এর দায় স্ত্রীর প্রতি চাপিয়ে প্রায় ই খুব মারধর করেন। অনেক ডাক্তার ও দেখিয়েছেন, কিন্তু কোন লাভ ই হয় নি। অবশেষে এক কবিরাজের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিলেন।

কোন এক সন্ধার দিকে আমেনা বানু তার স্বামী কে ডেকে পাঠালেন। তখন জব্বার মিয়া বাবা না হতে পারার দুঃখে নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। বাড়িতে এসেই স্ত্রীকে আবার মারধর শুরু করলেন। আর বলতে থাকলেন, ''হারামজাদী একটা বাচ্চার মুখ দেহাইতে পারছ না, আবার আমারে ক্যান ডাকছস তুই?''
কান্না জড়িত কণ্ঠে আমেনা বানু বললেন ''আজ আমার অনেক খুশির দিন, আমি বুঝতে পারতাছি যে আমি মা হমু আর আপ্নে বাবা হবেন''। ঐ কথা শুনে জব্বার মিয়ার আনন্দ দেখে কে, যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মত অবস্থা।

অবশেষে তাঁদের কোল জুড়ে জন্ম নেয় এক পুত্র সন্তান। পরিবার বড় হয়, ভালবাসাও বাড়তে থাকে। পুত্র সন্তান ও আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে, অনেক বড় !

আজ সে পুত্রের বয়স ২৪, ভার্সিটিতে পড়ে। ইতোমধ্যেই পুত্র টি কোন এক মেয়ের প্রেমে পড়ে যায়। ভালই চলতে থাকে তাদের সম্পর্ক। মাঝে মাঝে ঝগড়া লাগে আবার ঠিক হয়ে যায়। একদিন ঐ মেয়ে তার নাম্বারে ফোন দিচ্ছিল কিন্তু সে ঘুমুচ্ছিল। তাই ফোন এর শব্দ পেয়ে মা পাশের রুম থেকে এসে ফোন রিসিভ করলেন। গ্রামের মেয়ে আমেনা বানু হয়তো শহরের মেয়েটির সাথে খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারেন নি। এতে ভীষণ রাগ হল মেয়েটির। সে এটা নিয়ে তার বিএফ এর সাথে বড় আকারের ঝগড়া বাধিয়ে দিল। আর বলল, ''তোমার মা এত ক্ষেত কেন? সে কি জানে না কার সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়? সাথে আর কিছু যোগ করে মেয়েটি তাদের সম্পর্কের সাময়িক ইতি টানল।

পুত্রের মন অনেক খারাপ। খাওয়া দাওয়া সব বন্ধ করে দিয়েছে। এ অবস্থা দেখে তার বাবা/মা অনেক চিন্তায় পড়ে গেলেন। ঐ মুহূর্তে তার মা তার রুমে এসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করলেন কি হয়েছে তোর বাবা? কিছু হলে আমাকে বল, আমি তোর মা। এগুলো শুনে ক্ষোভে ফেঁসে উঠল ছেলে। অবশেষে মাকে বলেই ফেলল ''আপনি এত্ত ক্ষেত কেন? মানুষের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় আপনি জানেন না? না জানলে অন্য মানুষের ফোন ধরতে যান কেন? সাথে আরও অনেক অপমান।'' চোখের কোনে জল লুকিয়ে মুহূর্তেই মা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।

''আমেনা বানুর চোখের জলে খেলা করতেছিল আজ থেকে ২৪ বছর আগের সন্তান না হওয়ার যন্ত্রণা, মা ডাক শুনার হাহাকারের বর্ণনা, সন্তান জন্ম দেওয়ার অক্ষমতার দোষ চাপানোর যাতনা, আর স্বামীর অকথ্য যন্ত্রণা। এভাবেই আবার ও নতুন কোন স্বপ্ন সুখের চেতনায় হারিয়ে যায় আমেনা বানুর চোখের কোনে লুকিয়ে থাকে অজস্র অশ্রু বিসর্জনের বেদনা।'' দিন শেষে আমেনা বানু আবার কাঁদে, অপমানের দ্যোতনায় কাঁদে, চোখ ভিজিয়ে কাঁদে। যেন সব দুঃখ শেষ হয়ে যায়। যেন সে আবার সুখি মনে ছেলে কে যেয়ে বলতে পারে, ''আয় খোকা মায়ের কোলে আয়, ঘুম পাড়িয়ে দেই।''

নোটঃ একজন আমেনা বানু, একজন জব্বার মিয়া, একটি পুত্র সন্তান, একটি পুত্র সন্তানের জিএফ চরিত্র টি কাল্পনিক হলেও এখানে যা ফুটানোর চেষ্টা করেছি তা মোটেই কাল্পনিক নয়। আমেনা বানু চরিত্র কে নিজের মা, জব্বার মিয়াকে নিজের বাবা, আপনাকে পুত্র সন্তানের, আর আপনার প্রিয় মানুষকে জিএফ এর চরিত্রে চিত্রণ করেন। তাহলেই আপনার পরিচয় ফুটে উঠবে, আসলে আপনার অবস্থান কোথায় !!!

---গোলাম রাব্বানী

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৩৩

বুক লাভার বলেছেন: pore valo laglo. thanks share korar jonno. dowa kori jeno karo ma ke emon kichu sojjo korte na hoy.

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:২০

প্রিয় বিবেক বলেছেন: সেটাই ভাই। দোয়া করি।

২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৪৩

জালিম০বাদশাহ বলেছেন: নিজের মাকে যেনো কখনো এমন কষ্ট না দিই

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:২০

প্রিয় বিবেক বলেছেন: সেটাই ভাই। দোয়া করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.