নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রিয় বিবেক

প্রিয় বিবেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

"ইন্স এন্ড আউট অফ অ্যা ম্যান" !!!

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৫


ভাই শুনেন, জীবনে আগাইতে গেলে অনেকে অনেক কথাই বলবে। তাই বলে কি অনেকের কথায় কান দিবেন? উঁহু, সবার কথায় কান দিতে যাবেন না নাইলে জীবনে মানুষের কথা শুনা ছাড়া কিছুই করতে পারবেন না।

~এস.এস সি পরীক্ষা তে আমার রেজাল্ট ছিল 4.94 তখন আমার সময় খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। আমার অনিচ্ছা সত্তেও আমাকে কুমিল্লা বোর্ডের প্লেস করা চাঁদপুর জেলার নামকরা "আল আমিন একাডেমি কলেজে" ভর্তি করানো হল। কলেজের ক্লাস শুরু হয়ে গেল। একদিন আড্ডার ফাঁকে আমি আমার এক মেধাবী ফ্রেন্ড কে বললাম দোস্ত কিছু বুদ্ধি দে ইন্টারে ভালো রেজাল্ট করতে হবে। সে আমার কথা শুনে অবাক হল তারপর আমাকে লক্ষ বলল "যেই না এক স্টুডেন্ট সে আবার ভালো রেজাল্ট করবে"!
ওর এ কথা শোনার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। শরীরের রক্ত রা শিহরিত হল, নতুন যুদ্ধে যাওয়ার জন্য জেগে উঠল। তারপরের ঘটনা শুধুই গল্প।
তারপর ইন্টারমেডিয়েটের টানা ২ বছর আমি আমার প্লেস করা কলেজের ব্যাবসায় শিক্ষা গ্রুপ থেকে সকল পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়েছি যদিও আমার সাথে আরেকজন সমান রেজাল্ট করার কারনে ফার্স্ট হয়েছে। কিন্তু আমার সে মেধাবী বন্ধু যে আমাকে ইনসাল্ট করেছিল সে একটি পরীক্ষায় ও সব বিষয়ে পাশ করতে পারে নি এমন কি টেস্টে ও না!!!

~আমি যখন DCC BLOOD BANK নামে একটি স্বেচ্ছায় ব্লাড ডোনেট করার গ্রুপ খুলি তখন অনেকে আমাকে এগিয়ে যাবার জন্য সাহস দিলেও আমার এক খুরুচ বড় ভাই আমাকে সব সময় ইনসাল্ট করতো। "মাঝে মাঝে বলতো আমি নাকি রক্ত বেইচা নতুন নতুন জামা কাপড় কিনি"। মুখ বুঝে সহ্য করতাম কিন্তু কিছুই বলতাম না। মাসখানেক আগে ঐ ভাই এর মায়ের জন্য ২ ব্যাগ ব্লাড লাগত। কোথাও ব্লাড না পেয়ে আমাকে ফোন দেয়। আমি ম্যানেজ করে দিয়েছি আর বলেছি "আমি যে রক্ত বেইচা নতুন জামা কাপড় কিনি না এখন কি বুঝছেন নাকি এখনো বুঝেন নাই"?
উনি আর কিছু বলেন নি। তারপর আমি শুধু তার কান্নার শব্দ শুনছি আর অসংখ্য বার সরি বলছে তার আগের কথার জন্য। তখন থেকে তিনিও ব্লাড ডোনেট করেন!!!

~প্রথম যখন লেখালেখি শুরু করি তখন যে কি পঁচানি খাইতাম তা বলেও বুঝাতে পারবো না। সবচেয়ে বেশী পঁচাইত আমার ক্লোজ ফ্রেন্ডরা। কখনোই কাউকে মিথ্যা প্রমান করতে যাই নি শুধুই নিজেকে সংযত রেখেছি। আর এবারের বই মেলায় আমার বই বের হচ্ছে এবং এ জন্য যারা আমাকে সবচেয়ে বেশী অভিবাদন জানাচ্ছে সে মানুষগুলো যারা আগে সবচেয়ে বেশী পঁচাইত।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে বছর চারেক আগে আমার ছোট খাট একটি রিলেশন ছিল। মাত্র ২ মাস ১৩ দিনের একটি রিলেশন। তখন এত বেশীই ভদ্র ছিলাম যে তার সাথে ৪ বার সামনা সামনি দেখা হওয়া সত্তেও তার হাত টুকুও ধরি নাই। তারপর সে একদিন আজাইরা এক উছিলা দিয়া আমার সাথে ব্রেক আপ কইরা দিল। আমার ফার্স্ট লাভ ছিল সেটা। কত কান্নাকাটি কইরা তাকে সরি বলছি কিন্তু সে আর ফিরে এলো না। মেসে থাকতাম তাই রুমে কান্না করা যেত না তাই ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ কইরা বেসিনের আয়নার সামনে দাঁড়াইয়া কাঁদতাম আর চোখের পানি মুছতাম। অনেক খারাপ সময় পার করছিলাম। তারপর কিউট ছেঁকা খাইয়া পেছনের সব ভুলে যেতে লাগলাম।

এইতো সেদিন আমার প্রথম বই "স্বপ্নের চিলেকোঠা" হাতে পাওয়া মাত্র তার বাসায় এক কপি পাঠায়া দিলাম। সে গতকাল আমাকে ফোন করে সরি বলছে এবং আবার ব্যাক করতে চাইছে। আমি খুব বেশী চিন্তা না কইরা মানা কইরা দিছি!!!
নিজের জীবন থেকে পালিয়ে বাঁচতে চাইলে শান্তনা পাওয়া যায় কিন্তু শান্তি পাওয়া যায় না।

বস শুনেন, জীবনে অনুপ্রেরনার জন্য রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, হুমায়ুন আহমেদ, জাফর ইকবাল না পড়লেও চলে। আপনার জীবনের ভুল গুলোই আপনার জন্য বড় অনুপ্রেরণা।

আপনি সামনে আগাইতে গেলে ২/৪ টা পাঁকনা সবসময়ই আপনাকে কথা শুনাবে। তাই বলে কি আপনি পিছিয়ে যাবেন! যদি পিছিয়ে যান তাইলে আপনি বোকা। যে পাকনামি করে তাকে "নোবডি" ভেবে জাস্ট ইগনোর করেন।
বস, জীবন টা আপনার। আপনার জীবনের সকল সিদ্ধান্ত ই আপনার। তাইলে কোন এক "নোবডির" কথা শুনে কেন নিজেকে হারিয়ে দিচ্ছেন? কেন রে ভাই কেন ???

~গোলাম রাব্বানী

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.