![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....
.... আজ সকালে অফিসের উদ্দেশ্যে রাস্তায় বাহির হইয়া প্রধান সড়কে উঠিতেই দুই হাঁটু থর থর করিয়া কাঁপিতে আম্ভ করিলো, দিগ্বিদিক লোকজনের ছুটাছুটি দেখিয়া দৌড়ে একটি গলির মধ্যে প্রবেশ করিলাম। মনে হইলো পায়ের তলার মাটি যেন সব সরিয়া যাইতেছে....এই বুঝি পুলিশের গুলি আসিয়া বক্ষ বিদীর্ণ করিয়া দিবে, এই বুঝি হরতালকারীদের ইট-পাটকেল কিংবা ককটেল আসিয়া মস্তক উড়াইয়া নিবে....ভয়ে বুকটা হিম হইয়া আসিল। মনে সংশয় উদিত হইল, প্রাণাধিক সন্তানকে বাসায় ফিরিয়া আর দেখিতে পাইবো কি-না, কে জানে এই জীবনে আমার অধর তাহার তুলতুলে গালখানি আর স্পর্শ করিতে পারিবে কি-না ..।
গলিভ ভিতর দাঁড়াইয়া আমি প্রাণপণ হাঁপাইতে ছিলাম। দর দর করিয়া ঘাম নামিতে লাগিল। এমন সময় ভিতর হইতে কে একজন জিজ্ঞাসা করিলেন, `আজ ক`জন গেল ভাই, ২৩, ২৪ না-কি ২৭? পুলিশ ক`জন গেল?` কি জবাব দিবো ভাবিয়া পাই না, সঠিক সংখ্যা আমার জানা নাই, তাই চুপ করিয়া থাকিলাম। লোকটা বিরক্তিসহকারে উচৈস্বরে বলিলেন,`আপনারা শিক্ষিত্ মানুষ হইয়াও দেশের খবর কিছুই রাখেন না দেখছি, চাইরদিকে পাখির মতো মানুষ মরতাছে তার খবর কিছুই রাখেন না!`
আমি গলির ভিতর হইতে বাহির হইয়া এক প্রকার দৌড়ানোর মতো করিয়া আবার হাঁটিতে লাগিলাম। কিছুদূর যাইয়া চোখ তুলিয়া আকাশ পানে তাকাইতেই প্রাণ-বধুয়ার কথা মনে পড়িয়া গেল। সকালে বাহির হইবার সময় দরজার কপাট ধরিয়া সজলদৃষ্টিতে এমনভাবে তাকাইয়া দেখিতেছিল যে- মনে হইল, একজনমের তরে প্রাণ ভরিয়া বুঝি দেখিয়া লইতেছে- এই জীবনে হয়তো আর দেখা নাও হইতে পারে।
চোখে জল আসিয়া পড়িল। জামার হাতায় চোখ মুছিয়া আবার ছুটিতে লাগিলাম। যত অনিশ্চয়তাই থাকুক, পথ তো চলিতেই হইবে....চলিতে চলিতে একদিন হয়তো পথের মাঝেই হারাইয়া যাইবো..।
©somewhere in net ltd.