নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসা প্রকাশ করতে হয় সঠিক সময়ে......

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৮

সেদিন ছিল রেনু আপুর বিয়ে। আমাদের এলাকার সেই রেনু আপু। যাকে দেখলে চোখ ফেরানো দায় ছিল। কেমন মায়া মায়া একটা চেহারা ছিল রেনু আপুর। চোখ দুটোও ছিল বেশ। তাকালেই মনে হতো, এই বুঝি টুপ করে জল গড়িয়ে পড়বে।

বিয়ে বাড়িতে সাজ সাজ রব। পুরো বাড়ি সাজানো হয়েছে। সুন্দুর আলোকসজ্জা করা হয়েছে। পুরান ঢাকা থেকে ব্যান্ডদলও আনা হয়েছে একটি। রেনু আপুর বিয়ে বলে কথা।

বিয়ের দিন দুপুর বেলা শাহেদ ভাইকে দেখলাম রেনু আপুদের বাড়ির সামনে মাথা নিচু করে পায়চারি করছেন। শাহেদ ভাই আর রেনু আপু একসঙ্গে বুয়েটে পড়াশুনা করতেন। দুজনকে প্রায়ই একই রিক্সায় চড়ে আসা যাওয়া করতে দেখতাম। বৃষ্টির দিন কি সুন্দর একটি নীল কাগজের নিচে একেবারে গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বসতেন দুজন! মাঝে মধ্যে হিংসে হতো দেখে।


আমাকে দেখতেই শাহেদ ভাই কাছে ডেকে বললেন, "তুমি রেনুদের বাসায় ঢুকতে পারবে?"

"হুম পারবো, কিন্তু কেন?"

"সুযোগ বুঝে ওকে এই চিঠিটা দিবা।"

"কিসের চিঠি শাহেদ ভাই?"

"তুমি মিয়া একটা ফাজিল। তোমার জানার কাম নাই। পারবা কি না তাই কও?"

"জ্বি পারবো।"

"তাহলে যা বলছি তাই করো।"

আমি চিঠি নিয়ে ভেতরে ঢুকলাম। এক চিপায় দাঁড়িয়ে ডানে বামে তাকিয়ে গোপন চিঠির ভাজ খুললাম। ভাজ খুলে পড়তে লাগলাম-

"রেনু
তোমাকে আমি প্রচণ্ড ভালোবাসি। কিন্তু কখনও প্রকাশ করার সাহস সঞ্চারণ করতে পারি নি। আজ আর উপায়ান্ত না দেখে প্রকাশ করতে বাধ্য হলাম। আমি বিকেলে গলির মুখে অপেক্ষা করবো। তুমি রাজি থাকলে আজই আমরা এই শহর ছেড়ে পালিয়ে যাবো। পত্রবাহকের কাছে তোমার জবাব লিখে দিও। অপেক্ষায় থাকবো...।
ইতি শাহেদ"

রেনু আপু চিঠি পড়া শেষে আমার হাতে পাল্টা একটা চিঠি ধরিয়ে দিলেন।

আমি আবার চিপায় দাঁড়িয়ে সেই চিঠির ভাজ খুললাম। তাতে লেখা ছিল-

"সঠিক সময়ে ভালোবাসা প্রকাশ করার সাহস সঞ্চার করতে হয়। অনেক দেরি হয়ে গেছে। আই এম সরি....।"

চিঠি পড়ে শাহেদ ভাই কেঁদে ফেললেন। আমার সামনেই কাঁদলেন তিনি। আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম। যেন রাজ্যের সব অপরাধ আমার।


....সেদিন বিকেলেই শাহেদ ভাই শহর ছাড়লেন। কোথায় গেলেন। কি করলেন আমরা তার কিছুই জানতে পারলাম না।

প্রায় দুই বছর পর তিনি এলাকায় ফিরে এলেন। সেদিন তাকে আমরা একেবারে অন্যভাবে আবিষ্কার করলাম। ফিরে আসা শাহেদ ভাইর সাথে পূর্বেকার শাহেদ ভাইর পার্থক্যটা ছিল চোখে পড়ার মতো........

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.