নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....
দ্বিতীয় ওয়ানডের দিন পুরোটা সময় আকাশ পথে আর বিমানবন্দরে কেটেছে। প্রথমে গুয়ানজু এয়ারপোর্টে নেমে যে বিষয়টি জানার চেষ্টা করলাম, তা হলো বাংলাদেশের খেলার খবর কী?
কিন্তু কেউই জানাতে পারছিলেন না। ভেতরটা ছটফট করছিল খুব। দ্রুত এয়ারপোর্ট সিমকার্ডের দোকানে গিয়ে একটি সিমকার্ড কিনে নিলাম। ক্রিক ইনফোতে সার্চ দিয়ে জানতে পারলাম বাংলাদেশ এর অবস্থা ভালো। শুধু ভালো না, বেশ ভালো।
আমার মুখজুড়ে ছড়ানো হাসি দেখে পাশে বসে থাকা চাইনিজ ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন, "তুমি কি ইন্ডিয়ান?"
হেসে বললাম, "নাহ বাংলাদেশি। আমরা ভালো পজিশনে আছি। পাকিস্তান আমাদের কাছে পরাজিত হতে যাচ্ছে।"
ভদ্রলোক খানিক ভরকে গেলেন।
চোখ বড় করে বললেন, "বাংলাদেশ-পাকিস্তান যুদ্ধ চলছে না-কি!"
বললাম, "জ্বি। অস্ত্রবিহীন রক্তপাতহীন যুদ্ধ। যার নাম 'ক্রিকেট যুদ্ধ' ট্যাঙ্ক গোলাবারুদ যুদ্ধের চেয়ে কোনো অংশে কম নয় এ যুদ্ধ!"
ভদ্রলোকের মুখেও হাসি ছড়িয়ে পড়লো। হেসে বললেন, "ওহ আচ্ছা। বেস্ট অব লাক ফর বাংলাদেশ!"
পাশেই বসে গোঁফের আড়ালে মিটি মিটি হাসছেন একজন। দেখে অনেকটা বাংলাদেশি বলেই মনে হলো। জিজ্ঞেস করলাম, "ভাই কি বাংলাদেশি?"
ডানে বামে মাথা নাড়লেন।
"ডানে বামে মাথা নাড়েন ক্যান? মুখ নাই?"
"ভাইসাব ম্যা গুজরাট সে হু। ম্যারে কো বাংলা নেহি আতি হে। "
"অ। আই মিন ইন্ডিয়ান?"
"জ্বি।"
"ওয়ালর্ড কাপে তো আমাদের চিটিং করে হারিয়ে দিয়েছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরপর দুই ম্যাচে জিততে যাচ্ছি আমরা....হুমম।"
"সেদিনের ঘটনার জন্য আমরা শরমিন্দা ভাইসাব। প্রকৃত জয় আপনাদেরই হয়েছে। শালা আলিমদার সব গোণ্ডগোলের মূল।"
তারপর বললেন, "আপনারা একদিন অনেক দূর যাবেন.....। বেশ ভালো খেলছে আপনাদের ছেলেরা। ডুয়িং ওয়েল ডে বাই ডে.....।"
গুয়ানজু থেকে সাংহাই যাবো। ফ্লাইট ডিলে। বাংলা টাইম সাড়ে ৫টার বিমানের প্রাথমিক সিডিউল পড়লো রাত সাড়ে এগারোটা।
এয়ার পোর্টের ভেতরে ঘুরে ঘুরে দেশি লোকজন খুঁজছি। খুঁজতে খুঁজতে জনা দশেক সাংহাইর যাত্রি পেয়ে গেলাম। দশ জন এক সাথে বসে মোবাইলে খেলার আপডেট দেখছি। সাথে ছিলেন গুজরাটি ভাইসাব। তিনিও আমাদের সাথে উপভোগ করছেন। এক ভাই ছিলেন বরিশালের। তিনি কিছুক্ষণ পর পর ঘুরে এসেই জিজ্ঞেস করছেন, "এ ভাই, রান কতো অইলে কন দেহি...। আহা তামিমের রানডা কতো অইলে হেইডা একটু কন দেহি...। আর বেশি সময় লাগবে না হানে বোঝজেন, মোরা জিইত্তা যাইমু হানে......।"
এগারোটার ফ্লাইট পুনরায় ডিলে হয়ে রাত দুইটা হলো। এর ভেতর বাংলাদেশ জিতে গেলো...। আমরা যথসম্ভব উল্লাস করে বিজয় উদযাপন করলাম।
হঠাৎ একজনকে দেখলাম, দেখতে একেবারে পাকিস্তানির মতো। পাইছি পাইছি করে কাছে গিয়ে আদন্ত হাসি দিয়ে বললাম, "ভাইসাব, হাম তো আপ লোগ কো হারা দিয়া। হে হে হে হারা দিয়া, হে হে হে হারা দিয়া... দিয়া দিয়া ...."
ভাইসাব ঠোঁট উল্টে ইংরেজিতে জানতে চাইলেন কী বলছি আমি?
তারপর বললেন, "আই এম ফরম ইরান!"
"অহ সরি সরি! মিসটেক মিসটেক!!"
তৃতীয় ওয়ানডেতে ওয়েবসাইটে চোখ রেখে যখন দেখেছি, বাংলাদেশ জিতে যাচ্ছে, তখন আবেগে চোখের কোণে জল জমেছে। একদিন আমরা হাঁটি হাঁটি পা পা করে শুরু করেছিলাম........।
সত্যিই বাংলাদেশের ক্রিকেট আজ গর্ব করার মতো একটা অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে।
সাংহাইতে একজন শ্রিলংকান ভদ্রলোকের সাথে মেট্রতে পরিচয় হয়েছিল। যিনি প্রায় ২৫ বছর আমেরিকায় বসবাস করছেন। তিনি বললেন, "বাংলাদেশ সম্পর্কে আমি তেমন একটা জানি না, বাট আই এম ফলোয়িং ইউর ক্রিকেট!!"
গর্বে বুকটা ফুলে গেল আমার। ভদ্রলোকের সাথে হাত মেলানো শেষে বাহিরে আকাশের দিকে তাকালাম।
সাংহাইর আকাশে তখন ঝকঝকে রোদ......।
..... রমিজ রাজা-পাজা কিংবা সিধু-গেদু দের গাত্র জ্বলনিতে আমাদের কীইবা আসে যায়!!
০৫ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৪
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ বিদ্রোহী ভৃগু
২| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৫
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: ভাই, অন্যের কথা মাথা ব্যাথাই বাড়ায়। বাংলাদেশের ক্রিকেটের যদি দুর্দিনও আসে, আমরা যেন আমাদের সাথেই থাকি, কে কি বললো কিই বা যায় আসে।
০৫ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৪
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: হুম তাই। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
৩| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৮
মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: বাংলাদেশ সত্যিই দারুণ দেখাল ভাই ! এখন এটা ধরে রাখলেই হয় !
০৫ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৫
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: জ্বি তাই...
৪| ০৫ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫১
বটের ফল বলেছেন: আপনার সাথে আমরাও গর্বিত ভাই। এবারই প্রথম আমাদের খেলোয়াররা ধারাবাহিক ভাবে ভালো খেলে যাচ্ছে।
আপনার কথাই ঠিক। ওদের গা জ্বালা করছে, ওরা চিল্লাচ্ছে। আমাদের ওইদিকে নজর না দিলেই হলো।
প্রবাস জীবন ভালো কাটুক।
০৭ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৫
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই...
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: গর্বে বুকটা ফুলে গেল আমার। ভদ্রলোকের সাথে হাত মেলানো শেষে বাহিরে আকাশের দিকে তাকালাম।
সাংহাইর আকাশে তখন ঝকঝকে রোদ......।
..... রমিজ রাজা-পাজা কিংবা সিধু-গেদু দের গাত্র জ্বলনিতে আমাদের কীইবা আসে যায়!!
+++++++++++++++++++++++