![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....
অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় একদিন "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়" লেখা একটি লাল বাসের সামনে দিয়ে দৌড়ে উঠে পড়ি।
বাসের সামনের অর্ধেক মেয়েদের আসন(এটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর জেনেছি)
আপুদের কয়েকজন সমস্বরে চিৎকার করে উঠলেন- আরে আরে কী করতাছ কী করতাছ এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি!!
মনে মনে বললাম, তাতে হয়েছেটা কী? তখনও বুঝতে পারি নি যে "বিশ্ববিদ্যালয়" লেখা গাড়িতে অন্যদের উঠা মানা!
নাদুস নুদুস এক আপু মধুমিশ্রিত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলেন, "বাবু তুমি কোন ক্লাসে পড়ো?"
"জ্বি এইট এ।"
"শোন, এ গাড়িতে সাধারণ যাত্রিদের উঠা নিষেধ। তুমি বড় হযে যখন ইউনিভার্সিটিতে চান্স পাবা তখন এ গাড়িতে উঠতে পারবা।"
তারপর হেলপার হাত ধরে সামনের একটি স্টপেজে নামিয়ে দিলেন।
আমার চোখে জল এসে গেল। এবং সেদিন জানতে পারলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নামে বিখ্যাত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে এ দেশে। এবং সে প্রতিষ্ঠানের এত সুন্দর লাল রঙের বাস রয়েছে।
কলেজে উঠার পর একদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে গেলাম। কার্জন হল, টিএসসি ঘুরে দেখার পর গেলাম কলাভবন এরিয়ায়। বিপত্তিটা ঘটলো সেখানে। কলাভবন এলাকায় গিয়ে কলা-বাগান খুঁজতে লাগলাম। ভেবেছিলাম, কলাভবনের আশপাশে বোধহয় মস্ত বড় কলার বাগান রয়েছে। তারপর জানলাম, এই কলা সেই কলা নয়!
যাই হোক সেই কলাভবনই একসময় আমার ঠিকানা হলো। নিজ গ্রাম তো দূরের কথা আশপাশের তিন-চার গ্রামের ভেতর প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবে ঢাবিতে চান্স হলো আমার। ঢাবি ছাড়া অবশ্য দ্বিতীয় কোন পছন্দও ছিল না আমার।
যেই রুটের লাল বাস থেকে একদিন আমাকে নামিয়ে দেয়া হয়েছিল, পর পর দুইবার সেই রুটের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি। রুট পরিচালানা করেছি। সেই একই চালক গাড়ি চালিয়েছেন। এখনো চালাচ্ছেন!
আমার ছন্নছাড়া লক্ষ্যহীন জীবনের প্রথম মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল নটরডেম কলেজ। আর জীবনকে একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ দান করেছে আমার প্রিয় প্রতিষ্ঠান "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়"। তাই তো এখনও মাঝরাতেও ছুটে যাই প্রিয় ক্যাম্পাসে। কাউকে খুঁজে পাই না। তবুও একা একা কিছু সময় ক্যাম্পাসের বুকে হেঁটে আসি....। হৃদয়ের গভীর থেকে বেরিয়ে আসা কিছু তপ্ত বাতাস ক্যাম্পাসের মুক্ত আকাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেই...। দিয়ে সুখ পাই।
মাঝে মধ্যে দু:খবোধ হয় এ কথা ভেবে যে, ঢাবির মতো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী কী করে কর্ম জীবনে ঢুকে ঘোষ-খোর হয়, প্রতারক হয় ভেবে পাই না....। তাদের কথা ভাবলে, তাদের চেহারার দিকে তাকালে সত্যিই করুণা হয় আমার....। বুকের ভেতর থেকে দীর্ঘ নি:শ্বাস বেড়িয়ে আসে।
প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আজ তোমার জন্মদিন। শুভেচ্ছা রইলো। আর জেনে রেখ, আমার সন্তানকে আমি যতটুকু ভালোবাসি, ঠিক তোমাকে, তোমার প্রতিটা ধুলিকণা আর সবুজ ঘাসকেও ততোটা ভালোবাস.....।
ভালো থেকো..... নিরাপদে থেকো....।
০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১:১৩
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: জীবন তো আর থেমে থাকবে না ভাই...
২| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:২০
শিরোনামহীনভক্ত দিহান বলেছেন: আপনি ঢাবিকে ভালোবাসেন আর আমি বুয়েটকে ভালোবাসি। ঠিক আপনার মতো। কিন্তু আপনার মতো আমার স্মৃতি কথা এখনো সমৃদ্ধ হয় নাই।
০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১:১৩
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: হা হা হা ...
৩| ০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৪৮
সুমন কর বলেছেন: হৃদয়ের গভীর থেকে বেরিয়ে আসা কিছু তপ্ত বাতাস ক্যাম্পাসের মুক্ত আকাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেই...। দিয়ে সুখ পাই।
ভালো থেকো..... নিরাপদে থেকো....।
০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১:১৪
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই...
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৪১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সাবলীয় পোস্ট। তবে দুঃখ হলো ২ বার পরীক্ষা দিয়েও ঢাবিতে চা্স পাইনি।