নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা..

০৩ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৩৩

মায়েরা চিরকালই ভালো খাবার-দাবার থেকে নিজেদের বঞ্চিত করে রাখেন...। রুই মাছের মাথাটা, মুরগির গিলাটা, ইলিশ মাছের পেটিটা, শিং মাছের ডিমটা....বড় সাইজের কৈ মাছটা, বোয়াল-চিতলের নরম পেটের তৈলাক্ত পিছটা খুব যতন করে একসময় সন্তানের বাবার জন্য আলাদা করে রেখে দেন..... কিংবা বাটিতে করে টেবিলে নিয়ে চামচ দিয়ে নিজ হাতে পাতে তুলে দেন।

"আরে আরে করো কি! করো কি! তোমার জন্য একপিছ রাখো না।"

"আরে খাও, তোমার না এটা খুউব পছন্দের.. ..।"

মায়েরা সন্তানের বাবার ইলিশ মাছের পেটি খাওয়া, মুরগির গিলা খাওয়া, শিং মাছের ডিম খাওয়া, বড় কৈ মাছের মাথাটা চুষে খাওয়া তৃপ্ত চোখে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেন।

মায়েদের ছেলে বড় হয়। তারপর একই ভাবে চামচ দিয়ে ছেলের পাতে তুলে দেন....। দিয়ে পাশে বসে থাকেন। তৃপ্ত চোখে তাকিয়ে দেখেন।

"আহ্ মা কী করো, এত দিচ্ছ কেন? তুমি একটু খাওনা মা......তোমার জন্য একটু রেখে দিলাম কিন্তু.....।"

"বাদ দে তো! আমার জন্য রাখতে হবে না। কী যে বলিস, আমরা তো আজীবনই খেয়েছি...এখন তোদের সময় তোরা খা।"

মায়েরা মিথ্যা বলেন। তাঁরা আজীবন খান নি। একসময় সন্তানের বাবাকে খাইয়েছেন, এখন সন্তানদের খাওয়ান....। ইচ্ছে করেই তাঁরা নিজেদের বঞ্চিত করে রাখেন,......। রেখে সুখ পান। আনন্দ পান।

....আজ রাতের খাবার খেতে বসে বাটিতে ইলিশ মাছের তিনটা পেটি দেখে কথাগুলো মনে পড়লো আমার। মা জানেন ইলিশ মাছের পেটি তাঁর ছেলের খুব পছন্দ।

"মা তিনটা খাইতে পারুম না। একটা নেন আপনে খান।"

'আরে রাখ তো, তুই খা... আমরা কতো খাইছি!"

"আরে খান তো।"

"আচ্ছা না খাইলে তোর আব্বার জন্য রেখে দে.....।"

আমি দীর্ঘ নি:শ্বাস ছাড়ি। চোখ টলমল করে উঠে।

কোন এক অজানা কারণে মায়েরা এভাবে নিজেদের বঞ্চিত করে রাখেন। রেখে সুখ পান। তৃপ্তি পান। আনন্দ পান....।

মনে পড়ে হল-জীবন উপভোগ করার জন্য টানা এক সপ্তাহ বাসা ছেড়ে ঢাবির হলে ছিলাম। মা ফোন দিয়ে কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন, "তোর জন্য শিং মাছের ডিম জমিয়ে রাখছি। তুই কবে আসবি বাবা?"

...ছোট ভাই যখন ইউকে থেকে স্কাইপে কল করে, বিভিন্ন জন বিভিন্ন কথা বলি। মা এসে সবার আগে জানতে চান, "খাওয়া-দাওয়া করছস নি? কখন খাইছস? কী রানছস? ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া করিস!" খাওয়া-দাওয়া ছাড়া যেন এই পৃথিবীতে সন্তানের অন্য কোন কাজ নেই মায়েদের কাছে।

মায়েরা সন্তানের বাবার খাওয়া-দাওয়ার খোঁজ রাখেন। সন্তানের খাওয়া-দাওয়ার খোঁজ রাখেন। কিন্তু আজীন নিজের বেলায় কোন এক অজানা কারণে তাঁরা উদাসীন থেকে যান। অতি যতনে অতি গোপনে নিজেদের বঞ্চিত করে রাখেন.........





মন্তব্য ১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১:২১

হাদী নয়ন বলেছেন: ১০০% সত্য কথা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.