![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....
শেষ রাতে দরজায় টোকা দেয়ার শব্দ পেলাম। সেহেরি খেয়ে বিছানায় শুয়ে এ পাশ-ওপাশ করছি। চোখ দু'টো কেবল লেগে এসেছে।
"কে?"
নিস্তব্ধতার অতল গভীরে যেন হারিয়ে গেছে রাত। সাড়া-শব্দ না পেয়ে আবার জিজ্ঞেস করলাম- কে?
নাহ্ সাড়া-শব্দ নেই।
একটু পরই গোঙ্গানির মতো বিশ্রি একটা শব্দ শুনতে পেলাম। ঠিক যেন একটি আহত কুকুর দরজার ওপাশে বসে গোঙ্গাচ্ছে।
মনে মনে ভাবলাম, রুবি না-তো! আমাদের বাসায় থাকে মেয়েটি। বাসার কাজ-কর্মে সহযোগিতা করে। ইদানীং রাতে না-কি মৃত মানুষ দেখতে পায় সে। মৃত মানুষ তার খাটের উপর সাদা কাপড় পরে গুটিসুটি হয়ে বসে থাকে। এ নিয়ে ক'দিন আগে তুমুল কাণ্ড। আব্বা মা আর আমি মিলে মধ্যরাতে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।
সারা বাড়িতে সে এই মৃত মানুষের ভয় ছড়িয়ে দিয়েছে। রাত-বেরাতে মা এবং আমার স্ত্রীকে ডেকে তুলে হাপাতে হাপাতে তাদের ভূত আর মৃত-মানুষ দেখার গল্প শোনায়।
আমি গলার স্বর একটু বাড়িয়ে বললাম- কে? রুবি না-কি?
ভারী আর গম্ভীর গলায় জবাব এলো- "না...। আমি রুবি না।"
"তবে কে?"
"আমাকে ভুলে গেছ তোমরা...?"
বেশ ভীতি জাগানিয়া কণ্ঠস্বর।
"আরে কে তুমি? কাকে ভুলে গেছি আমরা? কে তুমি?"
"আমি...।"
"আহ হা আমি টা কে?"
"আমি ফেলানী। ফেলানী খাতুন..।"
"কোন ফেলানী? ফেলানী কে? এ বাসায় তো এ নামে কেউ থাকে না।"
"হা হা হা আমাকে ভুলে গেছ তোমরা? অমিয় ঘোষ আমাকে খুন করেছে..। আমি ফেলানী...। আমি ফেলানী। ফেলানী খাতুন....।"
এমন সময় বউ'র কণুই'র গুতা খেয়ে ঘুম ভেঙ্গে গেল।
বউ ঘুম ঘুম কণ্ঠে বলল, "এ্যাঁই ঘুমের ভেতর কার সাথে কথা বলছ তুমি?"
ফুল বলিউমে ফ্যান চলছে। তারপরও ঘেমে-নেয়ে একাকার অবস্থা। রোজা না থাকলে এক জগ পানি সাবার করে ফেলতাম এক টানে।
....উঠে বসলাম। তারপর বিছানা থেকে নেমে রুমের ভেতর খানিক পায়চারি করতে লাগলাম।
.................
ফেলানির মত একটা ক্লাসলেস অসহায় মেয়ের বিচারের কি রায় হল তা নিয়া আমাদের আগ্রহ না থাকারই কথা।
আচ্ছা, ফেলানি যদি ভারতের কোন ক্লাসলেস মেয়ে হতো। আর তার নাম হতো রাধিকা। তাকে হত্যা করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। তাহলে কি অবস্থা হত? কি হতো সেই বিচারে রায়?
আমাদের কল্পনাশক্তি হয়তো অতদূর দেখতে পায় না। কিন্তু খানিকটা হলেও তো অনুমান করা যায়।
আফসোস গোলামির জিঞ্জির থেকে আমরা আজও বের হতে পারলাম না। গোলামি আর কুকুরের মতো পা চাটাই যে আমাদের রক্তে মিশে আছে বহুকাল ধরে......
২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৫
ফা হিম বলেছেন: ফেলানীকে ভুলে যাওয়া আসলে বিচিত্র কিছু না, শিঘ্রই আরো বিভিন্ন নামের লাশ দেখতে পাবেন। সেখানে ওই একটা নাম বুদবুদের মতই হারিয়ে যাবে, আমরা কিছুই করতে পারব না।
৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:১৪
শাহাদাত হোসেন বলেছেন: ফেলানীর মত অনেকে ঐ নরপশুদের শিকার হবে কিন্তু আমরা দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারবো না ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
ফেলানী পুরো জাতির বুকে কস্ট হয়ে বেঁচে আছে।
তবে, আপনার হাউকাউ লেখায় ফেলানীকে এভাবে আনবেন না; এভাবে ফেলানীকে কাণনচা লেখার নায়িকা বানাবেন না।