![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....
পঁচাত্তর বয়সি ফজিলা বেগম জানতেন না আজ তার ময়নাতদন্ত হবে। জানতেন না পয়ত্রিশ বছর বয়সি আদুরি বেগম কিংবা পঞ্চান্ন বছর বয়সি সৃস্টি রানী সরকার। জানতেন না বাইশ বছর বয়সি তরুণি গৃহবধু রুবি আক্তারও।
আজ রাতেই কিংবা কাল দিনের মধ্যে নতুবা পরশু সকালের মধ্যে তাদের ময়নাতদন্ত হবে। হতেই হবে। এ যে অপমৃত্যু! শুধু তাদের নয়- সত্তর বছরের হাজেরা, পয়ষট্টি বছরের রহিমা বেগম, ষাট বছরের ফাতেমা বেগম ও রিনা রানী দে, বায়ান্ন বছরের জোহরা খাতুন, পঞ্চাশ বছরের নাজমা বেগম ও খোদেজা। হামিদা বেগম, ফাতেমা বেগম, সখিনা, শাহারন বেগম, রিজিয়া আক্তার, মমতাজ বেগম, সুফিয়া বেগম, সামু বেগম, আদুরি বেগম- যাদের সবার বয়স ত্রিশ থেকে পয়তাল্লিশের ঘরে। আজ কাল কিংবা পরশু সকালের মধ্যেই এদের সবার ময়নাতদন্ত হবে। হতেই হবে!!
অথচ ঘণ্টা কতেক আগ পর্যন্ত এদের সবার ভেতরই তাজা কতগুলো প্রাণ ছিল। শিরা-উপশিরায় ঠিকঠাকভাবে রক্তের প্রবাহ ছিল। চোখ দুটো জুড়ে ভাবলেশহীন চাহনি ও ঝাঁপসা স্বপ্ন ছিল। বুকের ভেতর ভারী হয়ে জমে থাকা বোবা কান্না ছিল। হৃদয়ের গহীনে জমে থাকা দীর্ঘশ্বাস ও হাহাকার ছিল। পাঁজর ভেঙ্গে বেরিয়ে আসা আর্তনাদ ছিল.....। এখন আর কিছুই নেই তাদের ভেতর। পোড়া কপাল আর অভাবের তাড়নায় তাড়িত শত শত পায়ের নিচে দলিত হয়ে- চিরদিনের মতো নিশ্চল নিশ্চুপ আর একেবারে শান্ত হয়ে গেছেন সবাই।
লজ্জা নিবারণের একটুকরো নতুন বস্ত্রের জন্য আরো শত শত জনের সাথে এরাও ছুটে গিয়েছিলেন ময়মনসিংহের ধনী তামাক ব্যবসায়ী শামীম তালুকদার-এর বাড়ি দিকে।
২৫ বিলিয়ন ডলারের রিজাভ সমৃদ্ধ একটি মধ্যম আয়ের দেশের মুখে চুন-কালি মেখে। লজ্জায় ডুবিয়ে। সেই লজ্জা চিরতরে নিবারণ হয়েছে তাদের।
আমরা সত্যিই লজ্জিত ফজিলা বেগম। আমরা সত্যিই লজ্জিত জোহরা খাতুন, নাজমা, মমতাজ, সুফিয়া, আদুরি বেগম। আমরা দারুণভাবে লজ্জিত ও মর্মাহত।
আফসোস, মুসলিম কান্ট্রি দাবি করা একটি দেশের মানুষকে যাকাত সম্পর্কে সচেতন করতে হলে, গুলশানের শ্যুটিং ক্লাবে যাকাত ফেয়ারের আয়োজন করতে হয়...। বড়ই আফসোস।
©somewhere in net ltd.