নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....
ঈদের পর দিন সন্ধ্যার দিকে দুই ছোট ভাই ফোন দিল, "ভাই আপনি আসবেন না?"
বললাম, "হুম আসবো। একটু ওয়েট করো।"
যেতে যেতে দশটার মতো বেজে গেল।
জহরুল হক হলের পুকুর পাড়ে বসলাম আমরা। নতুন চাকরিতে জয়েন করার উদ্দেশে সকালে ঢাকা ছেড়ে চলে যাবে ওরা। আনন্দিত হবার বদলে বিষাদে ছেয়ে আছে ওদের মন।
"কি ব্যাপার মন খারাপ করে বসে আছ কেন তোমরা?"
একজন বলল, "ভাই, ইউনিভার্সিটির জন্য খুব মায়া লাগছে। মনে হচ্ছে, কি যেন ছেড়ে চলে যাচ্ছি আমরা। কার কাছ থেকে যেন বহু দূরে কোথাও সরে যাচ্ছি...।"
কাঁধে হাত রেখে বললাম, "আরে একদনি তো সবাকেই যেতে হয়। হবে.....। তোমরা নতুন চাকরিতে জয়েন করতে যাচ্ছ, এটা তো খুব আনন্দের কথা। কোথায় হাসি ঠাট্টা করবো, তা না করে মন খারাপ করে বসে আছ!"
"ভাই, আপনাকেও খুব মিস করবো।"
"আরে পাগল! ফোনে তো রেগুলার কথা হবেই। আর মাঝে মধ্যে ঢাকায় তো আসবাই। প্রয়োজনে আমি গিয়ে দেখা করে আসবো তোমাদের সাথে।"
সিনিয়র জুনিয়রদের এই মায়াময় আর গভীর ভালোবাসার বন্ধন পৃথিবীর আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আছে কি-না আমার জানা নেই।
চুপচাপ বসে রইলাম বেশ কিছু সময়। ওদেরকে হাসির গল্প শোনাবার চেষ্টা করলাম। হাসির গল্প শোনার পর হাসার বদলে দুজনার চোখই জলে ভরে এসেছে।
তা দেখে আমার চোখের পাতা জোড়াও ভিজে ওঠতে শুরু করলো।
কিছু সময় চুপ থাকার পর ওরা বলল, "ভাই, চলেন আজ সারা রাত ক্যাম্পাসে হাঁটি।"
দীর্ঘ নি:শ্বাস ছেড়ে বললাম, "ঠিক আছে।"
ক্যাম্পাসে হাঁটতে হাঁটতে মনে হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শুধুই একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম নয়.....এটি কারও কাছে তার পিতা-মাতার মতো। কারও কাছে, প্রেমিক কিংবা প্রেমিকার মতো। কারও কাছে তার সন্তানের মতো.....।
©somewhere in net ltd.