নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বোকা মানুষের কথায় কিই বা আসে যায়

বোকা মানুষ বলতে চায়

আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১

বোকা মানুষ বলতে চায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

রন্তু\'র কালো আকাশ - ১৭ (ধারাবাহিক)

০২ রা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৯



আচ্ছা সবারই কি এমন হয়? রন্তু ভেবে পায় না, যেদিনই তার স্কুল ছুটি থাকে, সেদিনই কেন জানি খুব ভোরবেলা ঘুম ভেঙ্গে যায়। এত্ত খারাপ লাগে রন্তুর, ওর খুব শখের কাজ হচ্ছে আরাম করে লম্বা সময় ঘুমানো। কিন্তু কেন জানি সেই শখটা যেদিন স্কুল খোলা থাকে সেদিন ভোরবেলাই কাজ করে। অথচ আজ শুক্রবার, স্কুল বন্ধ, সকালে উঠবার কোন তাড়া নাই। নানু বা মা এসে চেঁচামেচি করবে না, ‘এই রন্তু, রন্তু... ওঠ, স্কুলের দেরী হয়ে যাবে। এই ছেলে ওঠ না...’

রন্তু বিছানায় শুয়ে শুয়ে দেয়ালে টাঙ্গানো ঘড়ির দিকে তাকাল, ঘড়িতে সবেমাত্র ভোর ছয়টা দশ। অন্যদিন স্কুল খোলা থাকার সময়েও রন্তু সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত আরামসে ঘুমিয়ে থাকে। রন্তু পাশে শায়লার দিকে তাকাল, মা কেমন গুটিসুটি মেরে কাঁত হয়ে মাথার নীচে হাত দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। মাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে, কেমন যেন সিনেমার নায়িকাদের মত সুন্দর। চোখের পাতার উপর কয়েকটা চুল চোখটাকে ঢেকে রেখেছে, নিঃশ্বাসের সাথে সাথে সেই চুলের প্রান্তগুলো কেমন পতাকার মত নড়ছে। মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে রন্তুর বুকটা কেমন হুহু করে উঠলো। চোখের কোনে জল জমে উঠতে দেখে রন্তু দ্রুত বিছানায় উঠে বসল, তারপর ফিসফিস করে বলল, ‘মা, তোমায় ভালবাসি, খুব ভালবাসি...’

রন্তু ছাঁদের দিকে রওনা হল, ভোর বেলা ঘুম ভেঙ্গে গেলে সে ছাঁদে চলে যায়। ভোর বেলা ছাঁদের রেলিঙের ধারে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আকাশে সূর্যোদয় দেখতে খুব ভালো লাগে। কেমন করে গাঢ় কুসুম কুসুম রঙ্গা সূর্যটা ধাঁধাল উজ্জ্বল বর্ণ ধারণ করে, তখন আর তার দিকে তাকান যায় না। ছোট মামা বলেছে, তখন সূর্যের দিকে তাকালে নাকি চোখের ক্ষতি হয়। কিসব রশ্মি যেন চোখের ক্ষতি করে। সিঁড়ির দিকে যেতে যেতে রন্তু রান্নাঘরে খুটখাট শব্দ শুনে উঁকি দিল, নানু এরই মধ্যে ঘুম থেকে উঠে গেছে। রন্তুর মনে হয় নানু সারা রাত ঘুমান না। কারণ রন্তু যখন ঘুমুতে যায় তখনো দেখে নানু জেগে আছে, আর ঘুম থেকে উঠেও দেখবে নানু জাগনাই আছে। এমন কি মাঝে মাঝে রাতে টয়লেটে যাবার জন্য ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখবে নানু বারান্দায় পায়চারী করছে। একবার ভাবল নানুকে গিয়ে কথাটা জিজ্ঞাসা করে আসে, পরক্ষনে মনে হল না থাক, কে জানে নানু আবার রেগে গিয়ে কান মলা দিয়ে দেয় কি না?

(পূর্ব ঘটনা প্রবাহঃ রন্তু, শায়লা আর জাভেদের একমাত্র সন্তান। জাভেদের সাথে শায়লার প্রনয় থেকে পরিণয়, পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পর শায়লা ধীরে ধীরে বুঝতে পারে জাভেদ ভয়ঙ্কর রকমের মানসিকভাবে অসুস্থ। এক সময় মানিয়ে নিতে না পেরে ছোট্ট শিশু রন্তুকে নিয়ে মায়ের বাসায় চলে আসে। তাদের মিউচুয়ালি ডিভোর্স হয়ে গেছে। মা-বাবার এই টানাপোড়নে শিশু রন্তুর মানসিক জগতের গল্প, সাথে তার নিত্যদিনকার প্যাচালি, এই হল এই গল্পের উপজীব্য। কয়েক মাস আগ পর্যন্ত জাভেদ রন্তুকে স্কুলের গেটে মাসে এক-দুইবার দেখা করতে আসতো, গত মাস চারেক আগে শেষবারের মত ছেলেকে দেখতে এসেছে। মানসিক সমস্যাগ্রস্থ জাভেদ পরিবার, আত্মীয় পরিজন হতে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে একাকী জীবন পথে হেঁটে চলেছে। অপর দিকে রন্তুর মা শায়লা এক প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরী করছে, যেখানে তার এক সিনিয়র পোস্টের সহকর্মী ইরফানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে যাচ্ছে প্রণয়ের দিকে। ইদানীং রন্তুর মাঝে একটি মানসিক সমস্যা দেখা যাচ্ছে, সে বাবা-মা সহ নিজেদের একটি পরিবার খুব মিস করে। আর সেই অপ্রাপ্তি থেকে সে নিজের মনে একা একা এক কাল্পনিক জগতে বিচরন করে। গত পর্বে রন্তু স্কুলের কালচারাল প্রোগ্রামে কবিতা আবৃত্তি করতে করতে কল্পনায় বাবাকে ভেবে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিল। পিতামাতা’র সম্পর্কের এই টানাপোড়নের সাথে তার শিশু মনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া’য় কেমন চলছে আমাদের রন্তুর জগত তা জানার জন্য আসুন এবার আবার শুরু করা যাক)

ছাঁদে আসতেই আশ্চর্যরকম শীতল একটা মিষ্টি বাতাস পুরো শরীরে ছুঁয়ে গেল। ছোট্ট রন্তুর শরীরের প্রতিটি লোমকূপ যেন দাঁড়িয়ে প্রতিক্রিয়া জানালো। আজও বুঝি ভোররাতে খুব বৃষ্টি হয়েছে, চারিপাশ কেমন ভেজা ভেজা, মনে হয়ে কেউ যেন অতি যত্ন করে ধুয়েমুছে সব সাফ করে রেখেছে। রন্তুদের বাসার নারিকেল গাছটার পাতাগুলো বাতাসে নড়লে কেমন শিরশির শব্দ হচ্ছে আর তা থেকে পাতায় জমে থাকা কিছু পানির কনা ঝিরঝির করে ঝরে পড়ছে। রন্তু সাবধানে পা ফেলে পূব পাশের রেলিঙ্গের ধারে এগিয়ে গেল। আকাশে এখনো মেঘের দলের দৌড়ঝাঁপ রয়েছে। তাই সূর্য মামা মাঝে মাঝে উঁকি দিয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে। এখন বুঝি আরও ভোরবেলা সূর্য উঠে, কারণ সেই উঁকি দেয়ার মাঝেই রন্তু দেখল সূর্য মামার গায়ের রং এখন অনেকটাই উজ্জ্বল সোনালি হয়ে গেছে। রন্তুর মনে হল, ঘুমটা যখন ভাঙলই তখন আরেকটু আগে কেন ভাঙল না!

রন্তু রেলিঙ্গের কাছ থেকে ছোট মামার ঘরের দিকে এগিয়ে গেল এবং খুব অবাক হয়ে দেখল ছোট মামা জেগে আছে। খুব মনোযোগ দিয়ে খাতায় কিছু লিখছে, সামনে বেশকিছু বইপত্র খোলা রয়েছে। পায়ের শব্দে ছোট মামা মাথা ঘুরিয়ে রন্তুকে দেখল, তারপর আবার খাতার দিকে মনোযোগ দিল। রন্তু কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ছোট মামার চিলেকোঠার ঘরটিতে ঢুকলো। মামার ঘরে ঢুকলেই রন্তুর খুব মজা লাগে, মনে হয় রূপকথার গল্পে চড়ে অন্য কোন জগতে চলে এসেছে। রাজ্যের জিনিসপত্রে ঠাসা অগোছালো এই ঘরখানি রন্তুর খুবই ভালো লাগে। রন্তুর ধারণা এমন কোন জিনিস নাই যা ছোট মামার ঘরে পাওয়া যাবে না। রন্তু গুটিগুটি পায়ে ছোট মামার কাছে এসে দাঁড়াল।

‘কি চাই?’

‘কিচ্ছু না’

‘এতো সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়লি যে?’

‘ঘুম ভেঙ্গে গেল যে তাই’

‘এতো সকালে ঘুম ভাঙ্গে কেন?’

‘ওমা! আমি কি জানি?’

‘ঘুমকে শক্ত করে ধরে রাখতে পারিস না?’

‘যাহ, ঘুমকে কি ধরে রাখা যায় নাকি?’

‘হুম যায়, কায়দা জানতে হয়। আমাকে দেখিস না কত বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকি’

‘হুমম... কিন্তু আমি যে কায়দা জানি না, তুমি শিখিয়ে দিবে?’

‘উঁহু... এই কায়দা কেউ কাউকে শেখাতে পারে না। নিজে নিজে শিখতে হয়।’

‘নিজে নিজে কীভাবে শিখব?’

‘আরেকটু বড় হয়ে নে, দেখবি নিজে নিজে শিখে গেছিস’

‘সত্যি?’

‘হ্যাঁ, সত্যি। এখন ভাগ এখান থেকে, আমার একটা এসাইনমেণ্ট রেডি করছি, কাল জমা দিতে হবে।’

‘ওমা, তুমি না কাল বলেছিলে যে, আজ ঘুড়ি ওড়াবে আমাকে নিয়ে...’

‘হুমম ওড়াবো, এখন আমাকে কাজ করতে দে। ডিস্টার্ব করলে কিন্তু ঘুড়ি ওড়ানো বন্ধ।’

এই কথার পর আর ছোট মামার ঘরে থাকা চলে না। রন্তু ছাঁদে বের হয়ে এল, আকাশে মেঘ কেটে গিয়ে সূর্য দেখা যাচ্ছে। সোনালি রোদে নারিকেল গাছের পাতাগুলো কেমন চিকচিক করছে, চারিপাশ আলোয় ঝলমল করছে। ভোররাতের বৃষ্টিতে চারিপাশ ধুয়েমুছে পরিস্কার হয়ে যাওয়াতে সকালের এই স্বর্ণালী আলোতে বড় মায়াময় দেখাচ্ছে চেনা এইসব কিছুকেই। রন্তু কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে ছাদ হতে নেমে এল। নীচে নামতেই নানুর সাথে দেখা হয়ে গেল, মা এখনো ঘুম থেকে উঠেনি, মায়ের আজ অফিস নেই বলে আরামসে ঘুমুচ্ছে।

‘কি রে, আজও ঘুম ভেঙ্গে গেল?’

‘হুম’

‘তো ঘুম ভাঙ্গলেই কি এই সাতসকালে ছাঁদে যেতে হবে?’

‘ভোরবেলা ছাঁদে যেতে ভালো লাগে নানু...’

‘শিবলি কি ঘুমুচ্ছে?’

‘নাহ, পড়ালেখা করছে।’

‘ওহ... একটু উপরে গিয়ে শিবলিকে বল আমি ডাকছি। ঘরে সরিষা তেল নেই, দোকান থেকে তেল এনে দিতে হবে। আজ আলু পারাটা বানাচ্ছি’

‘আলু পরাটা! ওয়াও...’ বলে রন্তু নানুকে জড়িয়ে ধরল।

‘ছাড় আমার ওয়াও-ওয়ালা, ঢং করতে হবে না ছোঁচা কোথাকার। যা শিবলিকে ডেকে নিয়ে আয়।’

রন্তু ছাঁদে গিয়ে ছোট মামাকে ডেকে আনতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে এল। ছোট মামা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে যে, তাকে আরেকবার ডিস্টার্ব করলে রন্তুর ছাঁদে আসার ভিসা একমাসের জন্য ক্যান্সেল করে দিবে। রন্তু দ্রুত নীচে নেমে এসে নানুকে বলল,

‘নানু ছোট মামার কাল কি যেন জমা দিতে হবে, পড়ছে, তাই আসতে পারবে না’

‘সারা মাস টো টো কর ঘুরে বেড়াবে, এখন এই সাতসকালে উনার পড়ালেখার বাহার। যতসব... এখন খাওয়াব সব কয়টাকে সয়াবিন তেলের পরাটা, আমার কি...’

‘ও নানু, দাও আমি তেল এনে দেই’

‘তুই এনে দিবি মানে। তুই কি বড় রাস্তার ঐ মুদিদোকান চিনবি?’

‘কি যে বলনা নানু, আমি রোজ স্কুলে একা একা যাই না? বড় মসজিদের কাছে থেকে আমার স্কুল গেছে হাতের বামদিকে আর বড় রাস্তার ঐ মুদিদোকানটা হল ডানের রাস্তায়, বাজার গেছে যে রাস্তা দিয়ে।’

‘তুই এতো কিছু কীভাবে চিনলি?’

‘ছোট মামা চিনিয়েছে, এখন দাও তেল নিয়ে আসি। আজ আলু পরাটার নাস্তা... আমার এখনই খিদে লেগে গেছে যে...’ বলে রন্তু ফিক করে হেসে দিল।

ঘুড়িটা এখন দেখাচ্ছে একেবারে ছোট্ট একটা বিন্দুর মত। ছোট মামা বলেছে এক বলে ছোড় দেয়া, সুতো ছেড়ে ঘুড়িকে অনেক অনেক উঁচুতে নিয়ে যাওয়া। এখন আকাশে তেমন একটা ঘুড়ি নেই, দূরে আরও দুয়েকটা ঘুড়ি উড়ছে। তাই এই অবিরাম সুতো ছেড়ে ঘুড়িকে দূর আকাশ পাণে হারিয়ে যেতে দেওয়া যায়। নইলে, আকাশভরা ঘুড়ির দল থাকলে যে কেউ এসে কাটাকুটি খেলে ঘুড়ি কেটে দিলে ঘুড়ির সাথে সাথে সবসুতোও চলে যায়, তাই এই সকালবেলা ছোট মামা রন্তুকে নিয়ে ঘুড়ি ওড়াচ্ছে। নাস্তা শেষে রন্তু বেশ কিছুক্ষণ পড়ার বই নিয়ে বসেছিল, মাসখানেক পর প্রথম পার্বিক পরীক্ষা, তাই বইগুলো নিয়ে বসেছিল। আগে ছুটির দিনে রন্তু রংপেন্সিল নিয়ে বসত, ছবি আঁকার চেষ্টা করত; এখন ছবি আঁকতে মন চায় না। বেলা দশটার দিকে ছোট মামা তার ছাদের ঘর হতে নেমে নাস্তা করে রন্তুকে নিয়ে ছাঁদে এসেছে ঘুড়ি ওড়াতে।

নাটাই খুব ভারী বলে রন্তু ঘুড়ি ওড়াতে পারছে না মজা করে। ছোট মামা দুয়েকবার রন্তুকে সুতো ধরে ঘুড়ি ওড়াতে দিয়েছে, তখন ছোট মামার হাতে নাটাই ছিল। ছোট মামা বলে দিচ্ছিল কখন সুতো ছাড়তে হবে, কখন টানতে হবে; সেই অনুযায়ী রন্তু কাজ করে যাচ্ছিল। রন্তুর খুব মজা লাগছে, মনে হচ্ছে ঘুড়ি নয়, রন্তু নিজেই যেন ঐ নীলাকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে। শুধু ঐ অত উঁচু হতে নীচের পৃথিবীটা দেখতে কেমন দেখায় এটাই জানা হল না।

বেলা বারোটা নাগাদ ছাদ থেকে রন্তু নেমে এল। নামতেই মা’র সাথে দেখা হল রন্তুর। মাকে কেমন যেন গম্ভীর দেখাচ্ছে, সেটা অনেকক্ষণ ঘুমনোর কারণে কি না বুঝা যাচ্ছে না। মা কেমন যেন আনমনা হয়ে থাকে ইদানীং, অনেক কিছুই খেয়াল করে না। এই তো গত পরশু রন্তু বাসার সামনে ছেলেপেলেদের সাথে ফুটবল খেলতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিল, হাঁটুর কাছের চামড়া ছিলে গিয়ে একটু রক্তও বের হয়েছিল। বাসায় আসার পর নানুর সে কি বকা, রন্তু ভয়ে ভয়ে ছিল মা না জানি তাকে ধরে মারা শুরু করে। কিন্তু রাতে মা অফিস থেকে ফেরার পর যখন শুনল এই ঘটনা, রন্তুকে অবাক করে দিয়ে কিছুই বলল না।

রন্তু গোসল সেরে নিয়ে পাজামা-পাঞ্জাবী পড়ে তৈরি হয়ে গেল। ইদানীং সে ছোট মামা শিবলির সাথে মসজিদে জুম্মা নামাজ পড়তে যায়। রন্তুর খুব ভালো লাগে নামাজ পড়তে যেতে। কত মানুষ, সবার মাথায় সাদা টুপি, গায়ে পাঞ্জাবী, দেখতে খুব ভালই লাগে। তবে অনেকের টুপি রঙ্গিনও হয়, কেউ কেউ আবার শার্ট গেঞ্জি পরেও নামাজ পড়তে আসে। নামাজ শুরুর আগে হুজুর আরবিতে অনেক কিছু তেলাওয়াত করেন, তখন সবাই একেবারে চুপচাপ হয়ে মনোযোগ দিয়ে সেগুলো শুনতে থাকে। রন্তু একবার মামাকে কি যেন জিজ্ঞাসা করতে নিলে, মামা রন্তুকে চুপ করিয়ে দেয়। পরে রন্তু মামার কাছে থেকে জানতে পারে ঐ সময় কোন কথা বলতে হয় না। রন্তু ধীরে ধীরে নামাজ শিখছে, নানুর কাছে ও নিয়মিত কোরআন শরীফ পাঠ করা শিখছে। কিছুক্ষণ পর ছোট মামাও পাঞ্জাবী পড়ে তৈরি হয়ে এলে মামার হাত ধরে রন্তু মসজিদের দিকে রওনা হল।

'রন্তু'র কালো আকাশ' এর আগের সব পোস্টগুলোঃ
রন্তু'র কালো আকাশ - ১
রন্তু'র কালো আকাশ - ২
রন্তু'র কালো আকাশ - ৩
রন্তু'র কালো আকাশ - ৪
রন্তুর কালো আকাশ - (১-৫)
রন্তু'র কালো আকাশ - ৬
রন্তু'র কালো আকাশ - ৭
রন্তু'র কালো আকাশ - ৮
রন্তু'র কালো আকাশ - ৯
রন্তু'র কালো আকাশ - ১০
রন্তু'র কালো আকাশ - ১১
রন্তু'র কালো আকাশ - ১২
রন্তু'র কালো আকাশ - ১৩
রন্তু'র কালো আকাশ - ১৪
রন্তু'র কালো আকাশ (পর্ব ১-১৪ ফিরে দেখা)
রন্তু'র কালো আকাশ - ১৫
রন্তু'র কালো আকাশ - ১৬

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:০৫

কাবিল বলেছেন:


ভাল, তবে আগের গুলো না পড়লে ভাল করে অনুধাবন করা যাবেনা।
ভাবছি সময় করে পড়ে নিব।

আমার তো বয়স হয়েছে কি ভাবে ঘুম ধরে রাখব?

০৩ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৩৩

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ কাবিল। প্রতি পর্বে সংক্ষেপে পূর্ব ঘটনা প্রবাহ দিয়ে দেই, এই পর্বে প্রথমে এটা দিতে মনে ছিল না। আপনি যখন পড়েছেন, তখন এটা ছিল না, পরে যোগ করে দিয়েছি। এখন পড়লে কিছুটা বুঝতে পারবেন। আর পুরোটা পড়তে চাইলে পর্ব ১-১৪ একসাথে দেয়া আছে একটি পোস্ট আকারে, সেটা সময় থাকলে পড়ে দেখতে পারেন।

আমারও ঘুম ধরে রাখার বয়স হয়েছে, রাত হলে ঘুম আসে না... :(

২| ০২ রা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:১৪

ঢাকাবাসী বলেছেন: বেশ লাগল্ ।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:০৮

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ সুপ্রিয় ঢাকাবাসী, ভালো থাকুন সবসময়।

৩| ০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:৫৭

প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল রুন্তর কালো আকাশ। অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৩৬

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই, নিয়মিত রন্তুর সাথে থাকার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।

ভালো থাকুন, শুভকামনা।

৪| ০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:১৮

কলমের কালি শেষ বলেছেন: কাহিনী চলুক । ভাল লাগছে ।

কমপ্লিট হলে বই বের করে ফেলেন । ভাল হবে ।

শুভ কামনা রইলো । :)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১:১৯

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ককাশে। নারে ভাই আপাতত বই বের করার ইচ্ছা নাই, আর নিজের পয়সায় বই বের করাটা আপাতত সম্ভব না। আর নিশ্চয়ই এই গল্প ছাপাতে কোন প্রকাশক আগ্রহ দেখাবে না। তাই সামুর আঙ্গিনাই ভরসা। লিখতে থাকি, যদি ভবিষ্যতে কোন মনের মত একটা উপন্যাস লেখা হয় তখন না হয় ভাবা যাবে।

ভালো থাকা হোক সবসময়, শুভকামনা।

৫| ০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৩৫

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: শুরুটা খুব ভালো লাগছে লেখক ভাই :)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৫৯

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ নাজমুল হাসান মজুমদার, ভালো থাকুন সবসময়।

৬| ০৩ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১:৪১

জেন রসি বলেছেন: প্রথম থেকে পড়া শুরু করতে হবে। :)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:১২

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ জেন রসি। প্রথম থেকে পড়তে চাইলে, একটা পোস্ট আছে পর্ব ১-১৪ নিয়ে, সেটা দিয়ে শুরু করতে পারেন। আগ্রহের কথা জেনে ভালো লাগলো। ভালো থাকুন, শুভকামনা।

৭| ০৩ রা জুলাই, ২০১৫ ভোর ৪:২৩

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: মাঝে মাঝে নিজেকে রন্তুর সাথে মিশে যেতে,মাঝে জাভেদের সাথে।।
তবে ছোটমামার স্মৃতি হৃদয়ে অমলিন।।
আর ঘুড়ি উড়ানো বন্ধ বড়ভাইয়ের মৃত্যুর পর থেকেই।। পুরো ৫৯জনের পরিবারের মধ্যেই।। আমি না মানলেও পরে আব্বার আবেগে নিরস্ত হয়েছি।।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৪

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আসলে রন্তু চরিত্রের মাঝে আমি যে জিনিসটি লক্ষ্য করছি তা হল এটি যে কোন পাঠককে তার শৈশবের কোন না কোন স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। আসলে আমাদের সকলের শৈশব আলাদা আলাদা হলেও একটি বিষয়ে সবার মিল রয়েছে, সেটা হল "শৈশব"।

হুমম... বিংশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত পুরাতন ঢাকায় ঘুড়ি ওড়ানোর একটা ক্রেজ ছিল। আশি-নব্বইয়ের দশকে ঘুড়ি ওড়াতে অথবা কেটে যাওয়া ঘুড়ি ধরতে গিয়ে অনেক মানুষ ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে অথবা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত-নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আল্লাহ্‌ আপনার বড় ভাইকে জান্নাতবাসী করুন।

ভালো থাকুন প্রিয় ব্লগার, শুভকামনা নিরন্তর।

৮| ০৩ রা জুলাই, ২০১৫ ভোর ৬:০৮

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: ভাল লেগেছে। সময় করে প্রথম থেকে সবগুলো পড়তে হবে।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:০০

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ মৃদুল শ্রাবন ভাই, আগ্রহের কথা জেনে ভালো লাগছে।

ভালো থাকুন সবসময়, শুভকামনা রইল।

৯| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১:৩৪

ডি মুন বলেছেন: রন্তুর মামাটা কতো ভালো।
ছোটমামারা বোধ হয় এমনই হয়।

+++

ছোটবেলায় ঘুড়ি উড়ানোর কথা মনে পড়ে গেল - এপর্ব পড়ে।
:)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:১১

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: না, সব ছোট মামারা এমন হয় না, রন্তুর ভাগ্য ভালো তার ছোট মামাটা এত্ত ভালো। আপনার ছোট মামাও বুঝি এমন ভালো ছিল? হুম... ঘুড়ি, লাটিম, মার্বেল, ডাংগুলি এগুলো শুনলে বিংশ শতকে জন্ম নেয়া যে কোন মানুষ নস্টালজিক হয়ে যায়।

ভালো থাকুন প্রিয় ডি মুন, শুভকামনা সর্বদা।

১০| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১:৪৪

কলমের কালি শেষ বলেছেন: কথাটা কিন্তু ভুল বললেন । আপনার উপন্যাস আঙ্গিকের এই গল্পটি আসলেও অনেক সুন্দর এবং সাবলিল । আর রন্তুর মত এমন চরিত্র আমাদের সমাজে দিন দিন বেড়েই চলছে । সমসাময়িকের উপরে উপন্যাস হিসেবে অসাধারণ । আমি হয়তো পাঠক হিসেবে অতি নিম্ন মানের । কিন্তু আপনার এখানে অনেক উঁচুমানের পাঠকেরাও যেখানে ভাল বলছে সেখানে তো আর কথা থাকতে পারে না ।
তবে হ্যাঁ নিজের টাকাই অনেক ভাল লেখকেরাই বই বের করতে চান না । তবে সেটা ব্যক্তিগত ব্যাপার তাই এখানে কিছু বলার নেই ।

শুভ কামনা বোমা ভাই । :)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:১৩

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আমি হয়তো পাঠক হিসেবে অতি নিম্ন মানের । !!!! এই কথা বলার অপরাধে আপনার সাথে নো কথা X(( X(( X((

১১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ৩:৩৬

কম্পমান বলেছেন: I am falling in love with Rontu!!! আবার অন্য কিছু মনে নিয়েন না। রন্তু র মধ্যে অনেক সময় নিজের ছায়া দেখতে পাই। যদিও আমি আমার মা বাবার সাথে থাকি।। অনেক অনেক ভাল লাগা রইল।। আপনার জন্য দোয়া করি অনেক ভাল থাকেন, আর রন্তু যেন সুখী হতে পারে।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৮

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: রন্তু আরেকটু বড় হইলে অন্য কিছু মনে নিতাম। অসুবিধা নাই খুব শীঘ্রই রন্তু বড় হইয়া যাইবে ;)

আসলে আমার কাছে মনে হয় রন্তু এমন একটা চরিত্র যার মাঝে কোন না কোন জায়গায় প্রতিটি মানুষ তার শৈশব খুঁজে পাবে। তাই রন্তুর মাঝে নিজের ছায়া দেখতে পাওয়াটা স্বাভাবিক। উপরে আরকেটা মন্তব্যের প্রতিত্তরেও আমি এই কথাটা বলেছি।

আপনিও ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন। শুভকামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.