নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বোকা মানুষের কথায় কিই বা আসে যায়

বোকা মানুষ বলতে চায়

আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১

বোকা মানুষ বলতে চায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোচিন শহরে ঘোরাঘুরি (সেইন্ট ফ্রান্সিস চার্চ এবং ব্যাসিলিকা চার্চ) - (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১৫)

২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১৭



কেরালার সর্ববৃহৎ প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর “হিল প্যালেস” দেখে (এই সিরিজের আগের পোস্ট দ্রষ্টব্য) একটি রোড সাইড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম আমরা। চাইনিজ খাবারের এই এক মজার বিষয়, স্থানভেদে এই খাবারগুলোর রন্ধন প্রক্রিয়া এবং স্বাদ যায় বদলে। তাই আমি কিছুটা উৎসুক ছিলাম, দক্ষিণের কেরালায় কি হাল চাইনিজ খাবারের। তবে সেই গল্প আজ নয়, আজ গল্প কোচিন শহরে ঘোরাঘুরি’র। এখান হতে খাওয়া-দাওয়া শেষে আমরা রওনা হলাম সেইন্ট ফ্রান্সিস চার্চ এবং ব্যাসিলিকা চার্চ এর উদ্দেশ্যে।







১৫০৩ সালে নির্মিত এই ঐতিহাসিক ইউরোপিয়ান চার্চ ভারতের সর্বপ্রাচীন চার্চ হিসেবে গন্য করা হয়। এই উপমহাদেশে ইউরোপীয় শাষনের আদ্যোপান্ত’র সাক্ষী এই চার্চ। ভাস্কো-ডা-গামা সফলভাবে ভারত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে ১৪৯৮ সালে কালিকুট বন্দরে এসে নোঙ্গর করেন। পরবর্তীতে পেদ্রো এলভারেজ ক্যাবরাল এবং অ্যাফোন্সো ডি অ্যালবাক্যারেক প্রমুখদের নিয় ফোর্ট কোচি সংলগ্ন সমুদ্র সৈকত এলাকায় গড়ে তোলেন এই চার্চটি, উদ্দেশ্য ধর্মচর্চা। তবে প্রশ্ন থেকে যায়, তা কি নিছক ধর্মচর্চা’র উদ্দেশ্যেই ছিল? ইতিহাস কথা বলে... কোচিনের তৎকালীন রাজার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই নির্মিত হয়েছিল এই চার্চ, একেবারে কোচিন ফোর্ট এর নিকটে। বাকীটুকু বুঝে নিতে হবে। ;)







প্রথমে এই চার্চটি ছিল কাঠের তৈরি, যা সেইন্ট বার্থলমিউ কে উৎসর্গ করে নির্মিত হয়। পরবর্তীতে এই চার্চ ফ্রান্সিসকান ফ্রিয়ার্স দ্বারা পাকা দালানে রুপান্তরিত হয়। ১৫১৬ সালে এই চার্চ নির্মান সম্পন্ন হয় এবং তা সেইন্ট এন্থনি’র নামে উৎসর্গ করা হয়। ১৬৬৩ সালে ডাচদের দ্বারা কোচিন দখল হয় তখন এই চার্চ ব্যাতীত ভারতে সকল চার্চ ধ্বংস করে ফেলা হয়। কেননা পুর্তগীজ’রা ছিল রোমান ক্যাথলিক; অপরদিকে ডাচরা ছিল প্রটেসটান্টস। ডাচরা এটিকে সংস্কার করে সরকারী মালিকানায় নিয়ে আসে। ১৯৭৫ সালে যখন ব্রিটিশরা কোচিন দখল করে তখন তারা এতে কোন হস্তক্ষেপ করে নাই।







পরবর্তীতে এই চার্চ ১৮০৪ সালে সাংস্কৃতিক বিভাগের অধীনে নিয়ে আসা হয়, তার আগে এটি “Anglican Communion” লে এর অধীনে অর্পন করা হয়। ধারনা করা হয় এর পরবর্তী কোন এক সময়ে এই চার্চের নাম বদলে সেইন্ট ফ্রান্সিস এর নামে নামকরণ করা হয়। ১৯২৩ সালে এটি ভারতের সংরক্ষিত স্থাপনা হিসেবে আইনি লিপিবদ্ধ হয়। তার পর থেকে এটি প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের দেখভালে রয়েছে। রবিবার এবং অন্যান্য ধর্মীয় দিবস ব্যাতীত বাকী সকল দিবসে এটি পর্যটকদের জন্য উম্মুক্ত থাকে। ১৫২৪ সালে ভাস্কো-ডা-গামা তার তৃতীয় ভারত সফরে এসে কোচিনে মৃত্যুবরণ করেন এবং এই চার্চ প্রাঙ্গণে তাকে সমাহিত করা হয়। যদিও পরবর্তীতে ১৫৩৮ সালে তার মরদেহ লিসবনে নিয়ে যাওয়া হয়।





আমরা যখন এখানে পৌঁছই তখন চার্চে প্রার্থনা চলছিল। বাহির হতে ঘুরে ঘুরে চার্চের স্থাপত্য দেখলাম। দরজার বাহির হতে প্রার্থনা। ভ্রমণে গিয়ে যে কোন উপাসনালয়েই আমি ভেতরে প্রবেশ করি না। প্রতিটি উপাসনালয় সেই ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থান। তাই আমার মতে বাহির হতে উপাসনালয়ের দর্শনই শ্রেয়। এখানে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে আমরা গেলাম ব্যাসিলিকা চার্চ দেখতে, যার আরেক নাম “Santa Cruz Cathedral Basilica”।





কেরালার আটটি ব্যাসিলিকা’র মধ্যে এই সান্তা ক্রুজ ক্যাথেড্রাল অন্যতম, যা হেরিটেজ উপাসনালয় হিসেবে বিবেচিত হয়। ভারতের অন্যতম আকর্ষণীয় এবং দৃষ্টিনন্দন চার্চ এটি, যা দেখতে প্রতিবছর বিশ্বের নানান প্রান্ত হতে প্রতি বছর অসংখ্য পর্যটক এখানে ভিড় করে থাকে। ১৫৫৮ সালে পোপ চতুর্থ পল দ্বারা নির্মান করা হয়, যখন ডাচ’রা ভারতের প্রায় সকল ক্যাথেলিক চার্চ গুড়িয়ে দিয়েছিল তাদের দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠিত করার পরপরই। পরবর্তীতে ১৮৮৭ সালে পুরানো স্থাপনা ভেঙ্গে নতুন করে চার্চ নির্মিত হয়ে জোয়াও গোমেজ এর নেতৃত্বে। ১৯০৫ সালে সান্তা ক্রুজ চার্চটির নির্মান শেষ হয় এবং পপ দ্বিতীয় জন পল এটিকে ব্যাসিলিকা হিসেবে ১৯৮৪ সালে ঘোষণা দেন। এরপর থেকে এটি ক্যাথেড্রাল ব্যাসিলিকা হিসেবে চলে আসছে।





এখানে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে আমরা চলে গেলাম চাইনিজ ফিশিং নেট দেখতে, সেখান থেকে পরিকল্পনা মুভি দেখার। সেই গল্পগুলো আগামী পর্বে হবে না হয়। খুব ঘুম পাচ্ছে, গল্পের ঝাঁপি বন্ধ করতে হবে যে ভাইসকল.... .. . . . (চলবে)

আগের পর্বগুলোঃ
যাত্রা শুরুর গল্প (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০১)
ট্রানজিট পয়েন্ট কলকাতা... অন্যরকম আতিথিয়তার অভিজ্ঞতা (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০২)
অবশেষে কোচিন - তৃতীয় রাতে যাত্রা শুরুর স্থানে (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৩)
ডেস্টিনেশন মুন্নার (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৪)
মুন্নার টি মিউজিয়াম (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৫)
মুন্নার ভ্রমণ - মাতুপত্তি ড্যাম এবং ব্লোসম পার্ক (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৬)
ইকো পয়েন্ট এবং টপ ষ্টেশন অফ মুন্নার (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৭)
ট্রিপ টু কুলুক্কুমালাই... (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৮)
পেরিয়ার লেক - ওয়াইল্ড লাইফ স্যাঙ্কচুয়ারি (থিক্কাদি - কেরালা) (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ০৯)
শিকারা রাইড এন্ড সানসেট এট ব্যাকওয়াটার (কুমারাকোম - কেরালা) (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১০)
কোভালাম সী বিচ (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১১)
কন্যাকুমারী দর্শন (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১২)
কেরালা ব্যাকওয়াটার হাউজবোটে একদিন - (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১৩)
আলিপ্পে টু কোচিন - (ট্রিপ টু কেরালা ২০১৬) (পর্ব ১৪)

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১৫

গঢভবণণ বলেছেন: https://youtu.be/ooBJjcAyCoQ

আপনি কি 3D তে অঙ্কন করতে চান? আপনার উত্তর যদি হ্যা হয় তাহলে এই ভিডিওটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। সবচেয়ে সহজ ভাবে আপনার এন্ড্রয়েড ফোন দিয়ে এক মিনিটেই অঙ্কন করতে পারবেন আপনার ইচ্ছ মতো 3D আ্যাট।এবং পাঠিয়ে দিতে পারবেন আপনার বন্ধুর নিকট। আর অবাক করে দিন আপনার বন্ধুকে।

https://youtu.be/ooBJjcAyCoQ

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪৪

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ। তবে, এই ধরনের প্রচারণা এই ব্লগ প্লাটফর্মে না করাই শ্রেয়।

ভাল থাকুন সবসময়। :)

২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৯

পবন সরকার বলেছেন: চমৎকার বর্ণনা ও ছবি। ধন্যবাদ

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১০

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ পবন সরকার, পাঠ এবং মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন।

৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৬

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার সুন্দর লেখার জন্য! সবগুলি পর্বই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। হায়দ্রাবাদ নিয়ে কোন লেখা/অভিজ্ঞতা থাকলে জানাবেন, উপকৃত হব।

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:১৬

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ রিফাত। হায়দ্রাবাদ নিয়ে লেখা আসবে সুদূর ভবিষ্যতে; :) কেননা, সিরিয়ালে অনেক পিছে পড়ে আছে, এর আগে আরও শ'খানেক পর্ব বাকী রয়ে গেছে যে... :'(

৪| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:২৯

সোহানী বলেছেন: তোমার ছবিগুলা দেখি মাঝে মাঝে আমারগুলার মতো উল্টায়ে যায়।

যাক্, পরপর দুটা পোস্ট দেখলাম..............

ভালোলাগা সহ ++++++++++

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৩

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: কিছু ছবি এডিট করে সোজা করে দিলেও কেন জানি উল্টে যায়, রহস্যটা ধরতে পারছি না। সবগুলোতে এমনটা হয় না। চেষ্টা করছি ফিরতে, কেরানীগিরি'র দমবন্ধ আঙ্গিনা থেকে একটু মুক্তি পাওয়া যায় ব্লগে এলে। তাই চেষ্টা করছি... ইচ্ছে আছে আজ আরেকটি পোস্ট করার, দেখা যাক। :)

৫| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০৬

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: চার্চের ইতিহাস পড়ে যদিও মনের ক্ষুধা মিটলো কিন্তুু "চাইনিজের" অভাবে পেটের ক্ষুধা পেটেই রইলো।।

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৩

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: হা হা হা, কেরালার খানাপিনা নিয়ে একটা পোস্ট দেয়া হবে অদূর ভবিষ্যতে। :)

৬| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:২০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার !!!

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৫

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। :)

৭| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৫

শামচুল হক বলেছেন: ছবি এবং বননা খুব ভালো লাগল।

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৪

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আপনার নামের এবং মন্তব্যের ভুলগুলো কি ইচ্ছেকৃত? ;)

৮| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কোচিনের তৎকালীন রাজার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই নির্মিত হয়েছিল এই চার্চ, একেবারে কোচিন ফোর্ট এর নিকটে। বাকীটুকু বুঝে নিতে হবে। ;)

হা হা হা

ভাল লাগা +++++++++

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:১০

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: বুগতে হপে ;)

=p~ =p~ =p~

৯| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৯

নতুন নকিব বলেছেন:



ভ্রমন বরাবরই প্রিয়। মুগ্ধতা একরাশ!

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৫৪

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভ্রাতা। পাঠ এবং মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.