নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১
পুরাতন ঢাকার বিরিয়ানি নিয়ে লিখতে গেলে একটা বিরিয়ানিনামা লেখা উচিত। আমার মতে পুরাতন ঢাকার সত্যিকারের কিছু বিরিয়ানি না খেলে আপনি বুঝতে পারবেন না কি জিনিস সেইটা। অধুনা যে ফুড ব্লগার, ভ্লগার, রিভিউয়ার, হাইপার (হাইপ তৈরী করে হুদাই) এদের কারণে অগা, মগা, জগা বিরিয়ানি খাইতে মানুষ দেয় দৌড়। যদি জিজ্ঞাসা করেন কোন বিরিয়ানি সারা দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশী ফেমাস হইছিলো, উত্তর হবে দিল্লী’র কারিম’স; উনাদের নিয়ে টাইমস ম্যাগাজিন কভার স্টোরি পর্যন্ত ছাপাইছিলো। কিন্তু কারিম’স এর বিরিয়ানি খেয়ে মুখ দিয়ে উচ্চারিত মনে না হলেও, মনে মনে গালি দিছিলাম ঠিকই। সে ব্যাপারে লিখেছিলাম একদা, "এখানকার বিরিয়ানি খেয়ে মনে হয়েছে, কানে ধরে এদের পুরাতন ঢাকায় এনে অগা-মগা’র বিরিয়ানি খাওয়ায় দেয়া দরকার।"
যাই হোক, পুরাতন ঢাকার বিরিয়ানি নিয়ে গল্প শুরুর আগে একটু বিরিয়ানি নিয়ে কিছু কথাবার্তা চলে আসে। প্রথমেই বিরিয়ানির প্রচলন নিয়েই কথা বলা যেতে পারে। অত্র অঞ্চল তথা ভারতীয় উপমহাদেশে বিরিয়ানি’র প্রচলন নিয়ে কয়েকটি ইতিহাস পাওয়া যায়, যার কোনটি আসলে সঠিক সে সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্যসূত্র সহ কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। প্রথমত, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সমূহে বিরিয়ানি’র সমগোত্রীয় খাবারের ইতিহাস দেখা যায়। আর সেই সূত্র ধরে একটি ইতিহাস দাবী করে, আরব দেশসমূহ থেকে ভারতবর্ষে আগত ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সর্বপ্রথম এই উপমহাদেশে বিরিয়ানির আগমন। এই দাবী মতে, ভারতবর্ষের দক্ষিণের সমুদ্র উপকূলে আরব, তুরস্ক প্রভৃতি দেশ হতে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আসা বণিকদের মাধ্যমে এই উপমহাদেশ পরিচিত হয় এই মুখরোচক খাবারের সাথে।
দ্বিতীয় আরেকটি ইতিহাস দাবী করে তুর্কি মঙ্গল বিজয়ী তৈমুর বিন তারাগাই বারলাস পনের শতকের শুরুর দিকে বিরিয়ানি’র সাথে ভারতবর্ষের পরিচয় করান। বিশাল মাটির হাঁড়িতে চাল, মাংস, মশলাপাতি দিয়ে একসাথে বিশেষ প্রক্রিয়ায় রান্না করা হতো এই বিশেষ খাবার যা তৈমুরের বিখ্যাত সেনাবাহিনীর ভোজে ব্যবহৃত হতো।
তৃতীয় ইতিহাসটি প্রায় সমগোত্রীয়, তবে তার সূত্রধর মুঘল সম্রাট শাহজাহান এর স্ত্রী মমতাজ মহল, যার স্মৃতিতে তাজমহল তৈরী করেছিলেন সম্রাট। তো মমতাজ মহল একদিন সৈন্যদের ব্যারাক পরিদর্শনে গিয়ে তাদের স্বাস্থ্যগত করুণ অবস্থা দেখে বাবুর্চিদের নির্দেশ দেন চাল, মাংস দিয়ে এমন একটা খাবার তৈরী করতে যার পুষ্টিগুণ যেমন উচ্চস্তরের হবে, তেমনই তা হতে হবে মুখরোচক এবং সুস্বাদু। আর সেই নির্দেশনা থেকেই বিরিয়ানির উৎপত্তি। তবে বিরিয়ানির ইতিহাস যাই হোক, এর নাম শুনলেই কিন্তু মুখে পানি চলে আসে। কি আসে নাই এখনো? ওকে, সাথেই থাকুন চলে আসবে।
বিরিয়ানি কিন্তু বাংলাদেশ বা উপমহাদেশেই নয়, সারা বিশ্বেই সমাদৃত। উপমহাদেশের বাইরে পশ্চিম এশিয়া, মায়ানমার, আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, মরিশাস, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকায় বিরিয়ানির প্রচলণ রয়েছে। তবে ভারত, পাকিস্থান আর বাংলাদেশে বিরিয়ানির রয়েছে বিশেষ প্রাধান্য, তবে এলাকাভেদে স্বাদ এবং রন্ধন প্রক্রিয়ায় বেশ পার্থক্য দেখা যায়। এক ভারতের বিরিয়ানি’র নানান প্রকার ভেদ দেখা যায়, ভারতে প্রচলিত নানান ধরণের বিরিয়ানির কয়েকটি হলোঃ ভাতকলি/নববতী, বোহরি, চেট্টিনাদ, দিল্লি, ঢাকাইয়া, ডিন্ডিগুল, হায়দ্রাবাদি, মেমনি, কল্যাণী, কলকাতা, রাওথার, সিন্ধি, শ্রীলঙ্কি, থালাসেরি, কাশ্মীরি প্রভৃতি।
বিরিয়ানি রান্নার দুটি প্রক্রিয়ার একটি পাক্কি, যেখানে মাংস আগে রান্না করে চাল অর্ধেক রান্না হয়ে আসলে তাতে মাংস মিশিয়ে বাকীটুকু সম্পন্ন করা হয়। অন্য প্রক্রিয়া কাচ্চি, যেখানে মাংস, চাল, মশলা সব একত্রে দিয়ে পাত্র সিল করে দেয়া হয়, এখানে চাল বেশীরভাগ সময় আধা সেদ্ধ দেয়া হয়। আরেকটা প্রক্রিয়া দেখা যায়, যেখানে আলাদা পোলাও রান্না করা থাকে, মাংস আলাদা সেদ্ধ করে রান্না করে সেটা পোলাও এর সাথে মিশিয়ে বিরিয়ানি হিসেবে বিক্রি করা হয়। এই প্রক্রিয়ার ঢাকা শহরে বেশীর ভাগ বিরিয়ানি’র দোকানে বিরিয়ানি বিক্রয় করা হয়। আর তেহারী বলে বিরিয়ানি’র অন্য একটা ভার্সন আছে, যেখানে মাংস এবং মশলার পরিমাণ কম থাকে, মাংসের টুকরোগুলো ছোট ছোট হয় এবং ঘ্রাণ অনেক কম হয়, কারণ এতে ঘি এর ব্যবহার তেমন একটা হয়ই না, বদলে সরিষা তেলে বেশী করে কাঁচামরিচের ঝাল দিয়ে স্বাদে বৈচিত্র আনা হয়।
তবে বিরিয়ানি’র মূল উপাদান চাল যা অঞ্চল ভেদে নানান রকমের হয়ে থাকে। আমাদের দেশে প্রচলিত কিছু চালের মধ্যে কালিজিরা, চিনিগুড়া, বাসমতী, তুলশীমালা, গোবিন্দভোগ, কাটারিভোগ ব্যাপকভাবে পরিচিত। এর বাইরে আরও কিছু সুগন্ধী চালের জাত রয়েছেঃ বাদশাভোগ, খাসখানী, বাঁশফুল, দুর্বাশাইল, বেগুন বিচি, কাল পাখরী, পুনিয়া, কামিনী সরু, জিরাভোগ, চিনি শাইল, সাদাগুরা, মধুমাধব, দুধশাইল ইত্যাদি।
মাংস হিসেবে অঞ্চলভেদে গরু, খাসী, ভেড়া, মুরগী, উট, দুম্বা, টার্কি, চিংড়ি থেকে শুরু করে মাছের ব্যবহারও দেখা যায়।
বিরিয়ানিতে মশলা হিসেবে পেয়াজ, আদা, রসুন, কাঁচা মরিচ, সাদা গোলমরিচ, কালো গোলমরিচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, ছোট এলাচ, বড় এলাচ, কালো এলাচ, আলুবোখারা, শাহী জিরা, গরমমশলা, জায়ফল, জয়ত্রী, কাবাব চিনি, মৌরি, পোস্তদানা, তেজপাতা, জাফরান, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম, কিসমিস প্রভৃতির ব্যবহার দেখা যায়। তবে সব মশলাই সকল বিরিয়ানি’তে ব্যবহৃত হয় না, এলাকা এবং প্রকারভেদে এর ব্যবহারে বৈচিত্র রয়েছে।
তেল এর মধ্যে ঘি, মাখন, সরিষা তেল, সয়াবিন তেল, ভেজিটেবল তেল, জলপাই এর তেল, বাদাম এর তেল, সূর্যমুখী তেল অঞ্চলভেদে ব্যবহৃত হয়। ভারতের দক্ষিণাঞ্চল, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ ইত্যাদি অঞ্চলে নারিকেল তেল, মালয়েশিয়া এবং এর আশেপাশে পামওয়েল ইত্যাদি দিয়েও বিরিয়ানি রান্না করা হয়।
এরই সাথে অনেক অঞ্চল এবং ধরণে বিরিয়ানিতে নানান সবজির ব্যবহার দেখা যায় যার মধ্যে অন্যতম হলঃ আলু, মটরশুটি, টমেটো, গাজর ইত্যাদির ব্যবহার বহুল প্রচলিত। আর ভারতসহ অনেক দেশে “ভেজ বিরিয়ানি” তৈরী করে যেখানে মাংসের পরিবর্তে নানান সবজি ব্যবহার করা হয় যার মধ্যে আগে উল্লেখিত সবজির বাইরে ক্যাপসিকাম, ফুলকপি সহ আরও অন্যান্য সবজির ব্যবহার দেখা যায়।
তো বিরিয়ানি নামা, আজ এই পর্যন্তই থাক। বিরিয়ানিনামা’র আগামী পর্বে থাকবে পুরাতন ঢাকার এমন কিছু বিরিয়ানি দোকানের বিশেষ বিরিয়ানির কথন, যা আপনার “Must Taste” লিস্টে থাকবে। সাথেই থাকুন বিরিয়ানিনামা সিরিজের।
আসন্ন সপ্তাহান্তের ছুটিতে মধ্যাহ্ন বা রাতের ভোজ হয়েই যাক না হয় "বিরিয়ানি" দিয়ে, কি বলেন?
শুভরাত্রি।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:১৭
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ভালো কথা বলেছেন। আসলেই বিরিয়ানি একটা এডিকশন, বিশেষত পুরাতন ঢাকার অনেকের কাছেই। আমার এক কাজিনের ছিলো পুরাতন ঢাকার আরেক বিখ্যাত খাবার পু্রি'র এডিকশন।
২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৩৫
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আমিও অর্ধেক লিখে রাখছি। আপনারটা শেষ হোক, তারপর আমারটা লিখব। বাংলাদেশের ফুড ব্লগারদের পাইলে আমি কি যে করতাম!! হালারা গোবর খাইয়া কইব - হেব্বি জুসি কেক!
তবে বস, বিরিয়ানীর ব্যাপারে যতদুর জেনেছি তার মধ্য আপনার উল্লেখিত সোর্সের কথাই মুলত বলা হয়েছে। তবে আমি অনেক বছর আগে মোঘল খাওয়া দাওয়া সম্পর্কিত একটি জার্নাল পড়েছিলাম। সেখানে উল্লেখ্য করা হয়েছে, মুলত তুর্কীরা বিরিয়ানী বা সিদ্ধ মাংস আর চাল খেত। সামান্য লবন ও মধ্যপ্রাচ্যীয় কিছু মশলার সমন্বয়ে। ভারতীয় উপমহাদেশে আশার পর এই দেশের রন্ধনশীল্পিরা মুলত নানান মশলা যুক্ত করে একে বিরিয়ানীতে পরিনত করে। তবে নিরামিষভোজি একটি জাতির মধ্যে বিরিয়ানীর প্রচলন ঘটনা কতটা অভুতপূর্ব ঘটনা এটা ভাবলেই আমার গা শিহরিত হয়।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৩৯
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: বিরিয়ানি মূলত মধ্যপ্রাচ্য হতে উদ্ভুত এটা নিশ্চিত; যদিও দক্ষিণ ভারতের জনৈক লেখক তার বইয়ে দাবী করেছেন, কিছু সূত্র উল্লেখপূর্বক যে, বিরিয়ানির উৎপত্তি ভারত হতে। আমার ধারণা, মধ্যপ্রাচ্য'র সিদ্ধ মাংস'র সাথে চাল খাওয়ার যে আইটেম সেটা এই উপমহাদেশে এসে নানান মশলা এবং তেল-ঘি'তে মিশ্রিত হয়েই আজকের বিরিয়ানির সৃষ্টি; যেহেতু তৎকালে ভারতীয় উপমহাদেশ মশলার জন্যও বিখ্যাত ছিলো। তাই, মুঘলরা যখন এই দেশে আসন গেড়ে বসলো তখন তাদের হেঁশেলে বাঙ্গালীর প্রবেশ ঘটে একসময়; আর সেইসব পাচকদের উদ্ভাবনী চিন্তাধারারই ফসল হয়তো আজকের এই বিরিয়ানি, যা আবার তৎকালীন ভূভারতের অঞ্চলভেদে আরও বৈচিত্র লাভ করেছে।
আপনার পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম, আমার বিরিয়ানি সিরিজটা একটু লম্বা করার ইচ্ছে আছে, দেখা যাক কতদিনে সেটা লিখতে পারি। আমার অপেক্ষায় না থেকে লিখে ফেলেন। রন্ধনশিল্পীদের ব্যাপারে খোঁজ করতে গিয়ে ২০১৬'র দিকে আপনার লেখা একটা পোস্ট দেখতে পেলাম। একই বিষয়ে আমিও এই সিরিজের একটি পর্ব অবতারণা করতে চাচ্ছি, দেখা যাক কতদূর তা বাস্তবায়ন হয়।
ভালো থাকুন মডু ভাইয়া।
৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৫৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সবচাইতে ভালো বিরিয়ানি খেয়ে থাকি আমার বান্ধবীর বাসায়। তার চাইতে ভালো বিরিয়ানি রাঁধুনি দ্বিতীয়টি আর দেখি না। একবার খাইলে বার বার খাইতে মন চায়। আমার বান্ধবীর পরিচয় নিশ্চয়ই এতদিনে জেনেছেন। তিনি আর কেউ নন (লাস্ট লাইনে দেখুন)
আজকাল সব পার্টিতে বিরিয়ানি হয়ে গেছে মাস্ট আইটেম। এটা পরিবেশন করা সহজ। রান্নাও আজ অনেক সহজ হয়ে গেছে।
চমরৎকার পোস্ট।
আর কে? আমার স্ত্রী।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৮:২০
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ সোনা ভাই। বিরিয়ানি'র আয়োজনের ঝামেলা কম বলেই হয়তো জনপ্রিয়তা দ্রুত বেড়েছে। তার বিপরীতে সাদা পোলাও আর আলু দিয়ে গরুর মাংসের ঝোল; আগে যা মিলাদ, কুলখানি ইত্যাদি জাতীয় অনুষ্ঠানের মূল খাবার ছিলো তা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে, সেই জায়গা দখল করেছে জনাব বিরিয়ানি।
আগামীকাল বান্ধবী কি বিরিয়ানি রাঁধছে?
৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: এখন তো আমার বিরানি খেতে ইচ্ছা করছে।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:০৭
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আহারে, খাইছিলেন?
৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৫৫
ইমরান আশফাক বলেছেন: ভারতের বাংগালোরে নিজামি কাচ্চি বিরিয়ানি খেয়েছিলাম তাজ হোটেলে, একাধিকবার। এটি বিরিয়ানী বলতে যা বুঝে থাকি, এখনো তার স্বাদটি মুখে লাগে রয়েছে। সংগে আরও খেয়েছিলাম আস্ত দেশি মোরগের ঝাল রোষ্ট, ঝালটা একটু বেশী মনে হলেও স্বাদে কিন্তু অনন্য।
যাইহোক, ভারতে প্রতিবৎসরে একাধিকবার যাওয়া হয় বিভিন্ন কাজে। সেখানে নিত্য নতুন খাবার চেখে দেখার সুযোগ হাতছাড়া করিনা। সেই হিসাবে ভারত বৈচিত্রময় খাবারের এক মহা সমারোহ বটে। তবে ওদের রন্ধন প্রনালী ও মসলা ব্যবহারের পদ্ধতির সাথে অভ্যস্ত হতে বেশ সময় লেগেছে আমাদের। বিশেষ করে কলকাতায়। কলকাতার পার্কস্ট্রীটে বিখ্যাত সিরাজী হোটেলের বিরিয়ানীও একাধিকবার চেখে দেখেছি। অনেকের মতে এটা ভূ-ভারতের অন্যতশ্রেষ্ঠ বিরিয়ানী, কিন্তু আমার কাছে সেইরকম মনে হয়নি। বরং মনে হলো ঢাকার যেকোনো আল সালাদিয়া মানের হোটেলও এর চেয়ে সুস্বাদু বিরিয়ানী তৈরী করতে পারে। দিল্লীতে এখনো যাওয়া হয় নাই, তাই ওখানকার বিরিয়ানী সম্পর্কে আপাতত নো কমেন্টস।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৪২
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আমি ভারতের যেখানেই যাই, বিরিয়ানি চেখে দেখা হয় মাস্ট। দিল্লী, মুম্বাই, কাশ্মীর, ব্যাঙ্গালুরু, কেরালা, আসাম, উড়িষ্যা, কলকাতা, হিমাচল, উত্তরাখন্ড সব জায়গার মধ্যে আমার কাছে ভালো লেগেছিলো কেরালার কোচিনে একটা মার্কেট এর ভিতরে ফাস্টফুড টাইপের দোকানে কলাপাতায় মোড়ানো চিকেন বিরিয়ানি, কলকাতার Sanjha Chulah নামক রেস্তোরার খাওয়া বিরিয়ানি মনে ধরেছিলো। কলকাতার অন্য কোন বিরিয়ানি আমারো মনে ধরে নাই কখনো। দিল্লী গেলে কারিমস এর বিরিয়ানি না ট্রাই করে পুরাতন দিল্লীর রাস্তার উপর কেজি দরে বিক্রি করা বিরিয়ানিগুলো ট্রাই করে দেখতে পারেন। আর সত্যি বলতে খাবারের ফিডব্যাক একেকজনের কাছে একেক রকম হয়; কিন্তু সত্যিকার সুস্বাদু খাবার আসলেই সবার ভালো লাগবে, অল্প হোক বা বেশী, এটা আমি বিশ্বাস করতাম। কিন্তু অভিজ্ঞতা সে বিশ্বাস ভেঙ্গে দিয়েছে।
৬| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৩৪
দূর পথিক বলেছেন: ইউটিউবে রিভিউ দেখে এ মাসেই শুরুর দিকে পুরান ঢাকায় গেলাম খেতে। "বিসমিল্লাহ কাবাব"-এ গেলাম প্রথমে, যার কাছে যতো মজাই লাগুক আমি বলবো কাবাব এটা কোন পদেরই না। আমি যশোরের "জনি কাবাব" খেয়েছি, এর থেকে হাজার গুন ভালো অথচ তার নাম কেউই আপনারা জানবেননা হয়তো। আমি কাস্মিরে গিয়ে অনেক রকম কাবাব খেয়েছি, সেগুলো আরো অনেক ভালো। এর পরে গেলাম "বিউটি লাচ্ছি" খেতে, পরিবেশ নোংরা থাকলেও লাচ্ছি ভালো, তবে আহামরি কিছুই না। এর থেকেও অনেক ভালো লাচ্ছি ঢাকার বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায়। এরপরে "হাজির বিরিয়ানি" কিনে নিয়ে বাসায় গেলাম, আমি হতাশ সেই আগের টেস্ট আর মোটেও নাই। এর থেকে সোবহানবাগের সস্তা তেহারী খেতে অনেক ভালো। সব মিলিয়ে পুরান ঢাকার খাবার আমার কাছে মনে হয়েছে ওভার হাইপড্, তার থেকে ঢাকার অন্যান্য যায়গার খাবার এখন ভালো।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৪০
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: কথা সত্য, বিসমিল্লাহ কাবাব বা বিউটি লাচ্ছি, নুরানী কোল্ড ড্রিংস (চকবাজার) আমার কাছে এদের খাবার-পানীয় কখনো ভালো লাগে নাই। আর হাজী বিরিয়ানি খাবেন সিদ্দিকবাজারের শোরুমে সন্ধ্যার পরপর বসে থেকে, ধোঁয়া ওঠা অবস্থায়; একই কথা প্রযোজ্য চকবাজারের শাহ সাহেবের বিরিয়ানি অথবা রয়েলের খাসির বিরিয়ানির। এগুলো হাড়ি থেকে বের করে পরিবেশনের সময় আসল স্বাদ পাওয়া যায়; বাসায় নিয়ে গিয়ে খেলে সেই স্বাদ কখনো পাবেন না। পুরাতন ঢাকার খাবার হাইপড বা ওভার রেটেড মনে হতে পারে, তবে সব খাবার নয়। আর স্বাদ এবং রুচির পছন্দের একটা ব্যাপারও এখানে কাজ করে। আমার কাছে পুরাতন ঢাকার বাইরে অনেক জায়গার বিরিয়ানি, কাচ্চি, মোরগ পোলাও খেয়ে দু'একটা ছাড়া আর ভালো লাগে নাই। তাই আপনি হাজী বা হানিফ এর বিরিয়ানি সিদ্দিকবাজার মোড়ের ওদের দোকানে বসে গরম গরম পরিবেশনের সময় খেয়ে দেখতে পারেন।
অনেক ধন্যবাদ, পাঠ এবং মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন।
৭| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৪৭
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: বিরিয়ানি একটা ভালোবাসার নাম।
আর হ্যা - হাইপার , ভিউয়ার, টিউবার অনেকের কিন্তু পেট চুক্তি থাকে।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:২৬
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ভালো বলেছেন, "বিরিয়ানি একটা ভালবাসার নাম"+++++
৮| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৪০
শোভন শামস বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১০
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভ্রাতা
৯| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:২৯
মনিরা সুলতানা বলেছেন: বিরিয়ানি হইতাছে আনন্দ !
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:২৩
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: উঁহু, ইহা হয় একটি অতীব আনন্দ...
১০| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ভোর ৪:০৬
গরল বলেছেন: বিরিয়ানির উৎস আমি জানতাম ইরান, যেমন পোলাউ যা পারসিয়ান ভাষায় পিলাউ। সমস্ত তুর্কেমেনিসান অঞ্চলেই বিরিয়ানির চল আছে যেমন তর্কেমনিস্থান, উজবেকিস্তান, আযারবাইজান ইত্যাদি। মুঘলরা হয়ত রান্নার ধরণটা একটু পরিবর্তন করেছে। আমি ডিসকভারি চ্যানেলেও ভ্রমণ বিষেক অনুষ্ঠানেও দেখেছি যে ইরাণ ও উজবেকিস্থানের লোকারা বিরিয়ানিকে তাদের নিজস্ব ঐতিজ্যবাহী খাবার বলেই বর্ণনা করে। বিরিয়ানির কাছাকাছি আরবদেরও একটা খাবার আছে যেটাকে তারা বলে কাবসা। এটাও নাকি ইরাণ থেকে আরবে প্রবর্তিত হয়েছে। আমার জানার ভূলও থাকতে পারে তবে পোষ্ট পড়ে জিভে জল চলে আসল। কতদিন পুরান ঢাকার হানিফ বিরিয়াণি, হাজীর বিরিয়াণী আর ফকরুদ্দিন তো আমার সবচেয়ে প্রিয়।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:১৭
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আপনার জানা অবশ্যই সঠিক। আপনার মন্তব্যের পর আরো কিছুটা ঘাটাঘাটি করে বুঝলাম আমাদের বিরিয়ানি মূলত বিবর্তন এর ফলে সৃষ্ট এক খাবারের নাম। মধ্যপ্রাচ্যর আদি খাবারে যোগ হয়েছে আমাদের তেল মশলা, রন্ধনশৈলী। যেমন ভারতে দেখা যায় নুডলস, পাস্তার বিবর্তন..
ধন্যবাদ গড়ল ভাই, পাঠ এবং মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন
১১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:০৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
পুরান ঢাকার খাবারের স্বাদ ও মজাই আলাদা।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:০৬
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: হাচা কথা কইছো, বুকে আহো মিয়া...
১২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৪০
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এখন বিরিয়ানি খাবো, ঘ্রাণ পাচ্ছি
বিরিয়ানি দেন এনে।
মাঝে মাঝে বিরিয়ানি জানে টানে আসলেই
আর বাচ্চারা বেশী পছন্দ করে
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৫৩
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: হায়রে বিরিয়ানি... অসময়ে খাওয়ার ইচ্ছে জাগলে একমাত্র ভরসা সিদ্দিক বাজার চৌরাস্তা...
১৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩৪
ফয়সাল রকি বলেছেন: বিরিয়ানী একটা অদ্ভুত বস্তু! কোনোভাবেই নিজেকে আটকে রাখা যায় না ।
০১ লা মার্চ, ২০২২ রাত ১২:৫৮
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: কথা সইত্য ভাই সাহেব...
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:১৪
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: চা আর সিগারেট এর মতোই বিরিয়ানি আরেকটি এডিকশন। স্পেশালি কাচ্চি।