| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বোকা মানুষ বলতে চায়
আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১

বাংলাদেশ মিষ্টির দেশ—প্রতিটি অঞ্চলের নিজস্ব স্বাদ, ঘ্রাণ ও ঐতিহ্য যেন মুখে দিলেই গল্প বলে। একেক জেলার মিষ্টি শুধু খাবার নয়, এটি সেই এলাকার সংস্কৃতি, ইতিহাস ও মানুষের হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি। রাজশাহীর রসমালাই, টাঙ্গাইলের চমচম, নড়াইলের মন্ডা কিংবা যশোরের ক্ষীরার সন্দেশ—সবকিছুই দেশের মিষ্টি ঐতিহ্যের অমূল্য সম্পদ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই মিষ্টিগুলো শুধু স্থানীয় স্বাদের গণ্ডি পেরিয়ে জাতীয় পরিচয়ের অংশে পরিণত হয়েছে। আমাদের এই ধারাবাহিক লেখার প্রথম দুই পর্বে আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিখ্যাত মিষ্টিগুলোর পেছনের গল্প ও ঐতিহ্য তুলে ধরেছি। আজ শুরু করছি তৃতীয় পর্ব, যেখানে আমরা ঘুরে দেখব আরও কিছু জেলার অনন্য মিষ্টির জগৎ—যেগুলো স্বাদে, গন্ধে ও ঐতিহ্যে একেবারে আলাদা এবং অমর করে রেখেছে বাংলার মিষ্টির ইতিহাসকে।
(১১) যশোরের জামতলার মিষ্টি 
ইতিহাস ও ঘরানা
যশোর জেলার শার্শা উপজেলার জামতলা বাজারে “জামতলার মিষ্টি” নামে পরিচিত মিষ্টি স্বাদ-সুবাসে বহুদিন ধরেই মানুষের মুখে মচকি। মূল নাম ‘সাদেক গোল্লা’ বা ‘সাদেক মিষ্টি’ — শেখ সাদেক আলী ১৯৫০-এর দশকে এই মিষ্টি শুরু করেছিলেন। শুরুতে একটি সাধারণ চা দোকান ছিল, সেই দোকানে মাঝেমধ্যে মিষ্টি করা শুরু হলো; ধীরে ধীরে গুণ ও জনপ্রিয়তা বাড়ল, আজ জামতলার নামের সঙ্গে মিষ্টি জড়িয়ে গেল।
স্বাদ ও বৈশিষ্ট্য
‘সাদেক গোল্লা’ হ'ল রসগোল্লার এক বিশেষ রূপ— তুলতুলে, হালকা মিষ্টি, চিনির সিরায় ভেজানো ছানার বল। অনেকেই বলেই থাকেন, অন্য রসগোল্লার সঙ্গে তুলনায় চিনির পরিমাণ কম রাখে, ফলে মিষ্টি অতিরিক্ত জড়তা অনুভব করায় না। শৈশব স্মৃতি হতে বড়লোকের অতিথি-ভোজ, অনেক মানুষের মিষ্টিপছন্দের তালিকায় জামতলার সাদেক গোল্লা অবশ্যই থাকে।
সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব
এই মিষ্টি শুধু যশোর-শার্শার গর্ব নয়; প্রবাসীরা বিদেশে ফিরলে প্যাকেট বহন করে নিয়ে যায়, স্থানীয় উৎসব ও অনুষ্ঠানে মিষ্টি হিসেবে অনিবার্য। মিষ্টির দোকান ও উৎপাদন বেশ কয়েকটি আউটলেটে ছড়িয়ে রয়েছে, ফলে সেই অঞ্চলের অর্থনীতিতে অব্যাহত অবদান রাখে।
বিখ্যাত দোকান ও ঠিকানা
সাদেক মিষ্টান্ন ভাণ্ডার (Jamtala Sadeq Mishtaan Bhandar)
• অবস্থান: Jail Road, Daratana Bridge, Jashore 7400, Bangladesh
• ফোন নম্বর (উল্লেখ আছে Cybo তালিকায়): 01404 743028
এই দোকান জামতলা মিষ্টির প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বহু বছর ধরে চলে আসছে।
(১২) মেহেরপুরের সাবিত্রী মিষ্টি
ইতিহাস ও উৎপত্তি
মেহেরপুর জেলার প্রখ্যাত মিষ্টি ‘সাবিত্রী’–র ইতিহাস প্রায় একশ বছরের মতো পুরনো। সাবিত্রী মিষ্টি মেহেরপুর ও রাজশাহী অঞ্চলে জনপ্রিয়, ‘নীরস’ মিষ্টি হিসেবে বিবেচিত। উৎপাদন পদ্ধতিতে এ মিষ্টি বেশ সূক্ষ্ম — দুধ, ছানা ও চিনির রেশমিময় মিশ্রণ এবং সময় ও তাপ নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাদ ও বৈশিষ্ট্য
সাবিত্রী মিষ্টি অতিরিক্ত চিনি বা ঘি ব্যবহার না করেই মিষ্টি স্বাদ ও কোমলতা রক্ষা করে। কেবল এক কামড়ে সেটি গলে যায়, আর মধুর গন্ধ স্মৃতিতে রয়ে যায়। সাধারণত এই মিষ্টি এক দুটি গুটিতে তৈরি হয়, বড় আকারে নয়, এবং বিশেষ করে উপহার বা উৎসবের সময়ে বেশি ব্যবহার হয়।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব
সাবিত্রী মিষ্টি মেহেরপুরের গর্ব — অনেকেই বিদেশেও এই মিষ্টির খ্যাতি নিয়ে গেছেন। জমিদারবাড়ির খ্যাতি-সময় থেকেই সাবিত্রী মিষ্টি অতিথিপরায়ণতার অংশ ছিল— অতিথি আপ্যায়নে এই মিষ্টি পরিবেশন করা হতো।
বিখ্যাত দোকান ও ঠিকানা
বাসুদেব মিষ্টান্ন ভাণ্ডার (Basudeb Misti Bhandar, Mheherpur)
• মার্কেট পরিচিতি: সাবিত্রী ও রসকদমের উৎপাদন ও বিক্রয় এখানে চলে।
• অতীতে বলা হয়েছিল, এটি ছিল জমিদার সুরেন বোসের বাড়ির সামনের অংশ, বর্তমানে দোকানটি ‘বাসুদেব গ্র্যান্ড সন্স’ নামে পরিচালিত।
(১৩) গাইবান্ধার রসমঞ্জরী
ধারণা ও সম্ভাব্য উৎপত্তি
‘রসমঞ্জরী’ নাম শুনলেই গাইবান্ধার মিষ্টি প্রেমীদের মুখে জাগে এক নরম, মধুর স্বপ্ন। যদিও অনলাইন সূত্রে রসমঞ্জরী সম্পর্কে বিস্তারিত ইতিহাস বা উৎপাদন কারখানার তথ্য পাওয়া যায়নি, নাম-রূপ ও প্রাদেশিক বর্তমানতা থেকে ধারণা করা যায় এটি রসমালাই স্বাদের এক বিশেষ পার্থক্যযুক্ত রূপ। রসমঞ্জরী মিষ্টিতে হতে পারে মিষ্টি ছানা গ্রানুলাসহ দুধ-ক্ষীর এবং কিছু পিষ্ট চিনি বা ফ্লেভার উপাদান — যেন রসগোল্লাকে উপরে কর্মে প্রসারিত করা হয়।
স্বাদ ও বৈশিষ্ট্য
যেহেতু “রসমঞ্জরী” নামে পরিচিত, এটি হয়তো একটু মিষ্টি, দুধ ও ছানার মিশ্রিত প্রকৃতির। বানিজ্যিকভাবে হালকা স্বাদ, কোমলতা ও স্বাভাবিক গন্ধ বজায় রাখতে চেষ্টা করা হয়।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রাসঙ্গিকতা
রসমঞ্জরী নামটি স্থানীয়ভাবে মিষ্টিপ্রেমীদের কাছে পরিচিত নাম। কিছু মিষ্টি ভাণ্ডারে— শহরতলীতে বা জেলা শহরে — এই মিষ্টি বিক্রি হতে পারে, বিশেষ করে উৎসব ও হোলিতে।
বিখ্যাত দোকান ও ঠিকানা
অনলাইন অনুসন্ধানে গাইবান্ধার রসমঞ্জরী–র একটি নিশ্চিত দোকান বা ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
(১৪) রাজশাহীর রসকদম
ইতিহাস ও পরিচিতি
রাজশাহী ও আশেপাশের অঞ্চলে ‘রসকদম’ মিষ্টি প্রচলিত একটি ধরন। মেহেরপুরেও সাবিত্রী মিষ্টির সঙ্গে ‘রসকদম’ একে প্রাচীন যুগ থেকেই পরিচিত। রসকদমের উৎপাদন প্রক্রিয়াটি একটু ভিন্ন — ছানা দিয়ে বল তৈরি, অতিরিক্ত রস ঝরিয়ে দিয়ে ক্ষীর বা মিষ্টি সস (রস)-এ মুড়িয়ে দিন।
স্বাদ ও বৈশিষ্ট্য
রসকদম মিষ্টি সাধারণত বেশি মিষ্টি সস বা রসের স্তর রাখে— তাই নামের ‘রস’ প্রতিফলিত হয়। মিষ্টি ও স্বাদ বেশি হলেও মুখে মৃদু টান ধরে, এবং সর্দি ও ঠাণ্ডায় বিশেষভাবে প্রিয়।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব
রসকদম মিষ্টি মানুষে মানুষে প্রেরণ করা হয়, উপহার দেওয়া হয়, অনুষ্ঠান-আয়োজনেও এটি প্রাসঙ্গিক। মেহেরপুর অঞ্চলে ‘রসকদম’ শব্দটি সাবিত্রী মিষ্টির সঙ্গেও জুড়ে চলে।
বিখ্যাত দোকান ও ঠিকানা
যেমন সাবিত্রী মিষ্টির ক্ষেত্রে, রসকদমের ক্ষেত্রেও সুনির্দিষ্ট রাস্তা ও দোকান নাম অনলাইন উৎসে পাওয়া যায় নি। মেহেরপুর এলাকার বাসুদেব মিষ্টান্ন ভাণ্ডার একই নির্মাতার কাছে রসকদম ও সাবিত্রী মিষ্টি তৈরি ও বিক্রি করে বলে উল্লেখ আছে।
(১৫) কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের পনির
ধারণা ও সম্ভাব্য উৎপত্তি
কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম অঞ্চলে প্রথাগত পনির মিষ্টি (পনির সন্দেশ বা পনির মিষ্টি) প্রচলিত থাকতে পারে। বাংলা মিষ্টি সংস্কৃতিতে “পনির” নাম অনেক সময় ‘ছানা’ বা ‘খোয়া’–ভিত্তিক মিষ্টির ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। এটি সাধারণভাবে দুধ থেকে ছানা, ক্ষীর বা দুধের রস সংযোজন করে তৈরি হতে পারে। যেহেতু অষ্টগ্রামের পনির মিষ্টি নামে বিশেষ পরিচিতি পাওয়া যায় নি, এটি একটি আঞ্চলিক স্বাদ হতে পারে যা স্থানীয় মিষ্টিপ্রেমীদের মধ্যেই পরিচিত।
স্বাদ ও বৈশিষ্ট্য
এই ধরনের পনির মিষ্টি সাধারণত নরম, মৃদু মিষ্টি ও দুধের সৌগত সংযোজন রেখে তৈরি হয়। মুখে গলে যায়, এবং দুধ-মাছির গন্ধ থাকে।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ
স্থানীয়ভাবে, অষ্টগ্রামের মিষ্টি দোকানগুলিতে এ ধরনের পনির মিষ্টি পাওয়া যেতে পারে। উৎসব, পুজো বা উপহার প্রকল্পে এখানে মিষ্টি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
বিখ্যাত দোকান ও ঠিকানা
দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, অনলাইন উৎসে কিশোরগঞ্জ অষ্টগ্রামের পনির মিষ্টি–র কোনো নির্দিষ্ট দোকান বা ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
তৃতীয় পর্ব সমাপ্ত
বিঃদ্রঃ পুরো লেখাটি যথাযথ "প্রম্পট" দিয়ে AI দ্বারা লিখিত, কোন ধরনের সম্পাদনা ব্যতীত।
এই সিরিজের সকল পর্বঃ
প্রথম পর্বঃ বাংলাদেশের মিষ্টি অমনিবাস (পর্ব ০১)
দ্বিতীয় পর্বঃ বাংলাদেশের মিষ্টি অমনিবাস (পর্ব ০২)
তৃতীয় পর্বঃ বাংলাদেশের মিষ্টি অমনিবাস (পর্ব ০৩)
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।
এখন অবশ্য মিষ্টি খাই না। কিন্তু ছোটবেলা প্রচুর মিষ্টি খেতাম।