নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাসিম হাসান

নাসিম হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডিজিটাল বাংলাদেশ- স্বপ্ন ও বাস্তবতা

১৮ ই মে, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮

সংবাদঃ গতকাল বাংলাদেশের সবগুলো আইএসপি ও ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে বিটিআরসি এর পক্ষ থেকে একটা চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের বরাত দিয়ে সারা দেশের ইন্টারনেট এরে গতি ৭৫ শতাংশ কমিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেয়া হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে ইন্টারনেট এর ডাউনলোড ও আপলোড গতি যথাক্রমে ৭৫% ও ২৫% কমিয়ে ফেলতে বলা হয়।



প্রধানমন্ত্রীর সম্মেলনথঃ ঠিক গতকালই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে হয়ে গেল আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস-২০১৩’। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সাথে বাস্তব অবস্থা এবং তাঁর মন্ত্রনালয়ের কাজের মধ্যে আমরা আম-জনতা তীব্র স্ববিরোধীতা দেখতে পাচ্ছি। সম্মেলনে তিনি জ্ঞানভিত্তিক গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, "এ জন্য তাঁর সরকার টেলিযোগাযোগ ও আইসিটির উন্নয়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে"। এরকম আরও অনেক ভাল ভাল কথা তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে। দর্শকশ্রোতারা মুহুর্মুহু করতালিতে প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানিয়েছে।



বাস্তবচিত্রঃ একটা প্রবাদ আছে- 'কাজীর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই'। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবস্থাও তথৈবচ। সারা পৃথিবীতে দিনদিন অবস্থার উন্নতি হয়। আর আমরাই শুধু পশ্চাতে ধাবিত হই। আজকে বাংলাদেশ আউটসোরসিং খাতে যেখানে উঠে এসেছে সেখানে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা খুব নগণ্যই বলা যায়। যারা তথ্যপ্রজুক্তির সাথে সম্পৃক্ত শুধু তারাই বুঝবেন ইন্টারনেট এর গতি এখানে কতটা জরুরী। ইন্টারনেট এর গতি কমিয়ে, ইউটিউব বন্ধ করে দিয়ে, যখন তখন অবাস্তব থিওরি প্রয়োগ করে সরকার এই সেক্টরের কী মহাভারত সাধন করতে চাচ্ছেন সেটা আমাদের মত ক্ষুদ্র আদমকুলের বোঝার ক্ষমতা হয়তো নেই। কিন্তু সাধারণ মানুষ হিসেবে আমি বলতে চাই এটা প্রচণ্ড অন্যায়। অবশ্য যে দেশের অর্থমন্ত্রী আউটসোরসিং এর মাধ্যমে অর্জিত টাকাকে কালো টাকা হিসেবে আখ্যায়িত করতে পারে, যে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হন সাহারা খাতুনের মত একজন নন-টেকনিক্যাল পারসন, সেখানে এদেশের তথ্যপ্রযুক্তি কোন চুলাতে যাবে সেটা আমরা মোটামুটি ধারনা করতে পারি। গিগাবাইট এর পর গিগাবাইট গতির টাকা সরকার পরিশোধ করছে জনগনের করের টাকা দিয়ে। অথচ তাঁর বিশ শতাংশও জনগণকে ব্যাবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে না। ঠুঁটো জগন্নাথ টেলিটককে থ্রিজি লাইসেন্স দিয়ে এবং অন্য অপারেটরদের নাকের সামনে মুলো ঝুলিয়ে সরকার তাঁর প্রায় অন্তিম সময়ে চলে এলো। অথচ সেই নূহ নবীর আমল থেকে আমরা শুনে আসছি থ্রিজির কথা। বিশ্ব আজ ৪জি ৫জি নিয়ে ব্যাস্ত।



পরিশেষঃ এই সরকারের একটা বড় সমস্যা হল এরা কোন ধরণের সমালচনা সহ্য করতে পারে না। কেউ সরকারের সমালচনা করলেই সরকার তাকে স্বাধীনতা বিরোধী, দেশ বিরোধী, যুদ্ধাপরাধ বিচার বিরোধী- ইত্যাদি বিশেষণে ভূষিত করে ফেলে। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত আজকে যতটুকু এসেছে, সেটা দেশের অসংখ্য তরুণতরুণীর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার ফসল। কোন সরকার বাহাদুর এখান থেকে কোন ধরণের ক্রেডিট নিতে চাইলেই হবে না। আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, এই খাতকে ধ্বংস করার জন্য কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল অত্যন্ত সক্রিয়। ঠিক যেই মুহূর্তে আমরা আউটসোরসিং এ প্রায় এক নম্বর হতে যাচ্ছি, ঠিক সেই সময়ে ইন্টারনেট এর গতি হ্রাস এর মত হঠকারী সিদ্ধান্ত কার প্ররোচনায়, বা কাকে খুশি করার জন্য নেয়া হল দেশের প্রায় প্রতিটি তরুন আজ জানতে চায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.