নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সর্বং অনিত্যম

আমার কবিতারা ঘাস খায় বিষণ্ণ নদীর তীরে

ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড

শেষ বলে কিছু নেই এখানেশুন্যের মাঝে চেতনারা সব জেগে থাকেঘুরে ফিরে সেইসব সুখ দুঃখফিরে ফিরে আসে চক্র পুর্ণ করhttps://www.facebook.com/herahemel

ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুণ্য হৃদয়ের প্রতিবিম্ব

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৮

শীতের শুরুতেই বাড়ির পাশের বিল অতিথি পাখিদের কলকালীতে মুখর হয়ে উঠত। বিলের পানিতে বসবাসরত ছোট ছোট মাছ গুলির সুখের জীবনে দুঃস্বপ্নের একরাশ কালো মেঘ ছড়িয়ে আগমন ঘটত ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির। পাখিগুলি বিল থেকে মাছ ধরে ঠোঁটে করে নিয়ে যেত জলের বুকে জেগে ওঠা ছোট ছোট দ্বীপ গুলিতে অপেক্ষারত সঙ্গীর জন্য।

এইসব শীতের সকালে কুয়াশার আগ্রাসন, মাছদের উপর পাখিদের আগ্রাসন দেখতে দেখতে অনিলের বুকেও জেগে উঠেছিল স্বপ্নের আগ্রাসন।



স্বপ্নের আগ্রাসন সফল করতে একদিন ঘটা করেই বিয়ে করল অনিল। গীতা ছিল আগুনের মতই রূপবতী, কেমন যেন চোখ ঝলসানো রূপ। সেই রূপের পুঁজা করতে গিয়ে দিন রাত পরিশ্রম করতে হয়েছিল অনিলকে। তপাথি সুখের ঝর্ণাধারাই বয়ে চলেছিল তার হৃদয়ে।



কিন্তু শীতের পাখিদের মতই ক্ষনস্থায়ী হয়েছিল তার সংসার। ঠিক কি কারণে গীতা অনিলকে ছেড়ে গিয়েছিল অনিলের আজও তা বোধগম্য হয়না। হয়ত তার হৃদয় মন্দির দেবীকে ধরে রাখার মত যথেষ্ট মজবুত ছিল না কিংবা তার পুঁজোতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি দেবী। কারণ যাই হোক না কেন, তাতে অনিলের কষ্ট এতটুকুও কমেনি।



অনিলের ভালবাসার আগ্রাসন উপেক্ষা করে গীতা চলে গিয়েছিল অনিলেরই এক বন্ধুর হাত ধরে। তাকে যতটা না কষ্ট দিয়েছিল গীতার বিচ্ছেদ বেদনা, তার চেয়েও বেশি আঘাত করেছিল অপমানবোধ। বন্ধুর সাথে নিজ স্ত্রীর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সমাজের চেয়েও বেশি অপমানিত হয়েছিল অনিল নিজের কাছেই।



তারপর অনেক কাল অতিক্রান্ত হয়েছে, সময়ের করাল গ্রাসে বিবর্ণ হয়েছে গীতার স্মৃতি। সদ্য হারানো ভালবাসা আর অপমান মিশ্রিত তীরের ক্ষতও শুকিয়ে গেছে অনেক আগেই। কিন্তু সেই তীরের দাগ এখনো স্পষ্ট অনুভব করে অনিল। যতবার সে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে চেয়েছে, ততবারই স্বপ্ন ও তার হৃদয়ের মাঝে দেওয়াল তুলে দিয়েছে সেই দাগটি। তাই অনিলের হৃদয় আজ অবধি স্বপ্নহীন হয়ে আছে, আগ্রাসন চালাতে পারেনি নতুন কোন স্বপ্ন।



এইবার শীতের মাঝামাঝি সময়েও বিলে পাখিদের সমাগম ঘটেনি। বিলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অনিল দেখতে পেল পুর্বের সেই জলভরা প্রানচ্ছোল বিল এখন জলশুণ্য প্রানহীন মরুভূমি। বাঁধের আগ্রাসনে শুকিয়ে গেছে বিল। তাই আর পাখিরাও আসে না এখানে, মাছগুলিও কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। অনিলের হৃদয়ের মতই এখন প্রানশুণ্য খটখটে এই বিল। বিলের শুকনো মাটির দিকে তাকিয়ে যেন তার নিজ হৃদয়ের প্রতিবিম্বই দেখতে পেল অনিল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.