নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শেষ বলে কিছু নেই এখানেশুন্যের মাঝে চেতনারা সব জেগে থাকেঘুরে ফিরে সেইসব সুখ দুঃখফিরে ফিরে আসে চক্র পুর্ণ করhttps://www.facebook.com/herahemel
বাংলাদেশ সংখ্যালঘুদের জন্য আর নিরাপদ নয়- কথাটি আরও আগেই অনেকে বলেছেন। বিভিন্ন ইস্যুতে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হরহামেশাই ঘটছে। বাঙ্গালী দিন দিন হয়ে উঠছে সহিংস, সামান্য বিষয় নিয়ে খুনাখুনী নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু, বৌদ্ধপল্লী গুলিতে হামলার বিচার না হওয়ায়, এসব হামলার সুবিধাভোগীরা উৎসাহী হচ্ছে আবারও হামলা করতে। সরকারী দলের কিছু নেতারা এসব হামলার সাথে প্রত্যক্ষ জড়িত বলে খবরে প্রকাশিত। এদিকে পাহাড়ে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে চলছে নির্যাতন।
সংখ্যালঘুদের বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠায় যে সরকার ব্যর্থ-এ নিয়ে দ্বিমত করার উপায় নেই।
সম্প্রতি মিরপুরের বিহারী কলোনিতে দুর্বৃত্তের হামলায় ১০ জন বিহারী আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে ৪ জন নারী ২ জন শিশু।
১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর বিহারীরা ভারতের বিহার থেকে পূর্বপাকিস্তানে আসে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের সাথে মিলে বিহারীরা বাঙ্গালীদের উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। তারা খুন, ধর্ষণ, লুটপাটে মেতে ওঠে, এমনকি তাদের বর্বরতার মাত্রা কোন কোন ক্ষেত্রে পাকিস্তানীদের আগ্রাসনকেও অতিক্রম করেছিল । বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ডে এদের হাত আছে এবং বিভিন্ন কসাই খানাতে বাঙ্গালীদের জবাই করে হত্যা করে তারা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান বিহারীদের ত্যাগ করে চলে যায় বলে তারা ঘৃণ্য এবং দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বাধ্য হয়ে এদেশেই থেকে যায়। তারা এখনো উর্দুতে কথা বলে, বাংলাদেশকে মন থেকে এরা কখনোই মেনে নিতে পারেনি এবং তাদের অবস্থান এখনো পাকিস্তানীদের পক্ষেই।
জামাত শিবিরের সাথে এদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, স্বাধীনতার পরেও বিভিন্ন সময়ে এরা সহিংস কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছে। বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সাথে যুক্ত, তাদের কলোনির কাছাকাছি বসবাসরত বাঙ্গালীরা তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ বলে অনেকেই বলেছেন।
বিহারীদের এতসব অপরাধের কারণে তাদের উপর হামলার বৈধতা প্রতিষ্ঠা করতে অনেকে মেতেছেন যুক্তিতর্কে। এরা হল উগ্র জাতীয়তাবাদী, হিন্দু মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক হামলার সুবিধাভোগী এবং মৌসুমি দেশপ্রেমিক।
একাত্তর বাঙ্গালী হৃদয়ের এক কোমল অংশ, ৪৩ বছরের ক্ষত আজও বহন করে চলেছি। কোনভাবেই সেই অগ্নিঝরা দিনগুলি ভুলে যাবার নয়। সেসময় বিহারীদের অত্যাচারের কারণে তারা অবশ্যয় ঘৃণিত। যেসব বিহারী এইসব মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের বিচার দাবী করা যেতে পারে। এখন যারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের জন্য প্রশাসন আছে।
কিন্তু এভাবে নিরীহ নারী শিশুকে হত্যা করা কোন যুক্তিতেই গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। পিতার দোষে পুত্রকে সাজা দেওয়া সমীচীন নয়। যে শিশুগুলি আগুনে ঝলসে মারা পড়ল, তারা কি অপরাধ করেছিল? তারা কি বাঙ্গালী নিধনের নেতৃত্ব দিয়েছিল, তারা কি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল? যদি সেটা না হয়ে থাকে, তাহলে কেন এই হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাওয়া?
পাকিস্তান বিহারীদের নিতে অস্বীকার করেছে, তারা এদেশের নাগরিকও নয়। তারা দেশহীন মানুষে পরিণত হয়েছে, তাদের যাওয়ার জায়গা নেই কোথাও। তাই গণহত্যা চালিয়ে তাদের নির্মূল করাই উচিত-এই কথার সাথে কি সহমত হবে সবাই? আপাত দৃষ্টিতে মনে হবে এটা করা অনুচিত, কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। কিন্তু যারা এইসব নারী শিশু হত্যাকাণ্ডের সমর্থন দিচ্ছে, তারা কি পক্ষান্তরে গণহত্যার সমর্থক নয়? যদি তা না হয়, তবে এই হত্যাকাণ্ডে উল্লসিত কেন?
পাকিস্তনিরা যদি গণহত্যার কারণে অপরাধী হয়, যারা এই বিহারী হত্যাকাণ্ডে সমর্থন দিচ্ছে তারাও একই অপরাধে অপরাধী। একাত্তরে পাকিস্তানের জায়গাতে এরা যদি থাকত, একই কাজ এরাও করত।
একশ্রেণীর মানুষ একাত্তরের গণহত্যাকে সমর্থন দিয়েছিল শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে।
একশ্রেণীর মানুষ সমর্থন দিয়েছে স্বপরিবারের শেখমুজিব হত্যাকাণ্ডে।
একশ্রেণীর মানুষ সমর্থন দিয়েছে হিন্দু-বৌদ্ধ পল্লীতে সহিংস আক্রমণের।
একশ্রেণীর মানুষ সমর্থন দিয়েছে মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের।
একশ্রেণীর মানুষ পরামর্শ দিয়েছে অসহায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে।
একশ্রেণীর মানুষ উল্লাস করেছে হেফাজতের সমাবেশে বাচ্চাদের উপর পুলিশি নির্যাতনে।
একশ্রেণীর মানুষ হাততালি দিয়েছে করাচী বিমান বন্দরে জঙ্গিদের হামলায় নিহতের সংখ্যা গুনে।
এখন একশ্রেণীর মানুষ বাহবা দিচ্ছে বিহারীদের উপর আক্রমণ কারীদের।
এদের মধ্যে মতাদর্শের, জাতিগত, ধর্মীয় পার্থক্য থাকলেও এক জায়গাতে সাদৃশ্য আছে; এরা প্রত্যেকেই রক্তপিপাসী অমানুষ।
দেশ একটা সীমারেখা, একটা ভূখণ্ড যা সময়ের সাথে সাথে ভৌগলিক কারণে পরিবর্তিত হতে পারে। কিন্তু মানবতার কোন সীমারেখা নেই। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, বাঙ্গালী, পাকিস্তানী হওয়া যায় সহজেই, কঠিন কাজ হল সব পরিচয় মুছে ফেলে শুধুমাত্র মানুষ পরিচয় ধারণ করা।
বিহারীদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদ করার জন্য মানবতাবাদী সাজতে হয় না, হতে হয় মানুষ ।
১৫ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৪৮
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: হ্যাঁ তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে এবং তারা এখন ভোটার। বিহারীরা যে খারাপ এবং তাদের অপরাদের কথা আমি পোস্টেই বলেছি। কিন্তু এটা বিশ্বাস করা সম্ভব নয় যে তারা নিজেদের সুবিধা আদায়ের জন্য নিজেদের নারী শিশুদের পুড়িয়ে হত্যা করেছে। কোন যুক্তিতেই এই হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়ার সুযোগ নেই।
২| ১৫ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৪১
ঢাকাবাসী বলেছেন: আপনার সাথে সহমত, একশ্রেনীর মানুষ বাহবা দিচ্ছে বিহারী (অবাঙালী) খুন করার জন্য!
১৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১:০৩
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: এভাবে দিনে দিনে নির্যাতন না করে একটা গণহত্যা চালিয়ে বাংলার মাটি থেকে তাদের চিরতরে নিশ্চিহ্ন করলেই হয়। তারা অতীতে আমাদের লুটপাট করেছিল, হত্যা, ধর্ষণ করেছিল সেই অপরাধে আমরাও তাদের বংশধরদের উপর একই কায়দায় লুটপাট, হত্যা, ধর্ষণ করতে পারি। শুধু জাতীয়তাবাদের চশমা পরে নিলেই মানবতা জিনসটা মনে স্থান পাবে না।
৩| ১৫ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৯
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
১৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১:০৫
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান ভাই। এই লেখার জন্য আমি ছাগু, পাকিস্তানী দালাল, বেঈমান ইত্যাদি ট্যাগ খেয়েছি।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৯:২২
গরল বলেছেন: যদিও এটা নিসন্দেহে অমানবিক যে নারী ও শিশুদের এভাবে পুড়িয়ে মারা তবে আমার বিস্বাস হয় না যে বিহারী ক্যাম্পের ভেতরে যেয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কোনো বাঙ্গালীর আছে। কারন যারা বিহারীদের এলাকায় থাকে তারাই যানে বিহারী ক্যাম্প কি জিনিষ আর তারা কতটা ভয়ংকর। আর আপনার তথ্য ভুল যে এরা বাংলাদেশের নাগরিক না। বিএনপি সরকার এদেরকে নাগরিকত্ব দিয়েছে ভোটের রাজনিতীতে ব্যাভারের জন্য আর এটাই এদের উগ্রতাকে অপ্রতিরোধ্য পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
সেদিনের ঘটনায় বাঙ্গীলরা ছিল অসংগঠিত এবং তাদের হামলা বা ভাঙচুর ছিল তাৎখনিক এবং সীমিত। আর বিহারী ক্যাম্পের প্রতিটা বাসা বাজি পটকার আড়ৎ। এবং এরা সেই জাত যারা পরিবারের সম্মান রক্ষায় নিজের মেয়েকে পাথর ছুড়ে হত্যা করতে পারে, অতএব এরা এতই উগ্র যে নিজেদের ঘরে আগুন দিয়ে ঘটনা উস্কে দিয়ে যে কোন ফায়দা হাসিল করতে উদ্যত হবে এটা খুবি স্বাভাবিক। এবং এতে এরা প্রমাণ করতেও সমর্থ হয়েছে যে এরা নির্যাতিত ও এদের আরও সাহায্য দরকার কারণ নাগরিত্ব পাওয়ার পর এদের জাতিসংঘ থেকে সাহায্য প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে কারণ ওরা এখন আর রিফুজী না। এবং সৌদি থেকে প্রাপ্য সাহায্যও বন্ধ হবার পথে। সুতরাং এই ঘটনা ওদেরকে আবার সে সাহাজ্য ফিরে পাওয়ার জন্য একটা যৌক্তিক কারণ হিসাবে দাড় করাতে পারবে।