নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শেষ বলে কিছু নেই এখানেশুন্যের মাঝে চেতনারা সব জেগে থাকেঘুরে ফিরে সেইসব সুখ দুঃখফিরে ফিরে আসে চক্র পুর্ণ করhttps://www.facebook.com/herahemel
একটি ইঁদুর,ধুসর লোমশ, আকারে ছোটখাট বিড়ালের সমান। রান্নাঘরের সিংকের খোলা মুখ দিয়ে প্রতি রাতেই আসে।
তার সাথে প্রথম সাক্ষাৎ সুখকর ছিল না আমার জন্য, খাবারের সন্ধানে রান্নাঘরে গিয়ে বাটির উপরে বসা অবস্থায় তাকে আবিস্কার করি। নিজের খাবারে অন্যায় হস্তক্ষেপকারীকে দেখে যতটা না বিরক্ত হয়েছিলাম, তার চেয়ে বেশি বিস্মিত হয়েছিলাম দখলদারের বিড়াট বপু দেখে। ডিস্কোভারি চ্যানেলেও এতবড় ইঁদুর দেখিনি কখনো।
বিস্ময়ভাব কাটার আগেই তাকে পালিয়ে যেতে দেখলাম।
সেই রাতে না খেয়েই ঘুমিয়ে যেতে হল, তবুও অহেতুক যন্ত্রণাপ্রদানকারীর উপর কি এক অজানা কারনে মেজাজ খারাপ করতে পারলাম না।
কিন্তু পর পর কয়েক রাত আমাকে অভুক্ত রাখার দরুণ তার উপর সৃষ্ট সহানুভূতিটুকু উধাও হয়ে গেল। ইতিমধ্যে অনেকের খাবারে ভাগ বসানোর সুবাদে বাসার সবার সাথে তার মোটামুটি পরিচয় ঘটে গেল।
এভাবে রাতের পর রাত আমাদের অভুক্ত রাখার অপরাধে, আলোচনার মাধ্যমে নিষ্ঠুর সিদ্ধান্তটি নিয়ে ফেললাম।
হত্যা করা হবে তাকে।
কয়েকদিন পর এক গভীর রাতে রান্নাঘরে বাসন পতনের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল আমার। বুঝতে পারলাম কসাই হওয়ার সময় অনাগত। রুমমেটকে ঘুম থেকে উঠিয়ে নাটকীয় সুরে বললাম আজকেই সেই রাত। নীরবে উঠে এল সে, চোখে শীতল পৈচাশিক দৃষ্টি। নিঃশব্দে দুজন রান্নাঘরে প্রবেশ করলাম, নীরেট অন্ধকার।
চাপাস্বরে শাকিল আমাকে বলল, সিংকের মুখটা বন্ধ করে দে।
আমি নিঃশব্দে সিংকের মুখ বন্ধ করে সেখানে বসে পড়লাম। লাইট জ্বালানোর পর পাতিলের ভিতরে আয়াসে ভজনরত অবস্থায় দেখলাম তাকে, মেজাজ খারাপ হয়ে গেল সাথে সাথে।
আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সচকিত হয়ে উঠল সে, ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ছুট লাগাল তার গমন পথের দিকে। সিংকের মাঝে গর্তের অস্তিত্ব খুজে না পেয়ে থমকে দাঁড়াল। তার বিমূঢ়তার সুযোগে খপ করে ধরে ফেললাম।
এইবার তোমার জারিজুরি খতম,চাঁদু। পড়েছ নিষ্ঠুর কসাইয়ের হাতে।
শাকিল সোল্লাসে এগিয়ে এল আমার দিকে, মুখে ক্রুঢ় হাসি। শিকার আমাদের হাতের মুঠোই।
কিভাবে এই ক্ষুদ্র ট্যানেলবাসীর ভবলীলা সাঙ্গ করা যায়, সেটা নিয়ে ভাবতে বসলাম দুজনে। বললাম ছুড়ি দিয়ে মাথাটা আলাদা করে ফেলি।
- না থাক, অযথা বেশি রক্তপাত হবে এতে।
- তাহলে পাথর দিয়ে মাথাটা থেঁতলে দেই।
-গুড আইডিয়া, এতে খুনের পর রক্ত পরিস্কার করার ঝামেলা কম হবে।
শাকিল উঠে গেল খুনের উপযোগী পাথর খুজতে।
আমি হাতের মুঠোই থাকা এই ক্ষুদ্র জীবটির দিকে নজর দিলাম। দীর্ঘ পুরুষ্ট লেজ, মাংসল তুলতুলে শরীর, ভারী। আমি তাকালাম তার চোখের দিকে, কম্পনরত চোখের পাতায় অসহায় চাহনি। সোজা তাকিয়ে আছে আমার চোখের দিকে, হঠাৎ জগতের এই অপ্রয়োজনীয় উপদ্রপ জীবটার প্রতি মায়াতে মনটা ভরে উঠল।
শাকিলকে ডেকে দেখালাম তার চোখের অসহায় দৃষ্টি। পরস্পরের দিকে তাকিয়ে বুঝে গেলাম, ক্ষুদ্র এই অপরাধীকে হত্যা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। চুপচাপ সিংকের মুখটা খুলে তাকে ছেড়ে দিলাম। নীরবে এসে শুয়ে পড়লাম দুজনে।
এরপর কেটে গেছে কয়েকরাত, একদিনও দেখিনি তাকে আর। হয়ত সেই রাতের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তার স্মৃতি পট থেকে মুছে যায়নি এখনো।
বেশ কয়েকদিন পর, এক গভীর রাতে রান্নাঘর থেকে ভেসে এল খুটখাট আওয়াজ। বুঝলাম এসেছে সে। কাউকে না জানিয়ে নিঃশব্দে উঠে গেলাম রান্নাঘরে। লাইট জ্বালিয়েই তাকে দেখলাম সেই রাতের মত পাতিলের ভিতরে। কিন্তু সে রাতের মত প্রতিক্রিয়া দেখালো না। আমাকে দেখার পরও আশ্চর্যজনকভাবে শান্ত স্থির আছে সে। আমি তার পাশে বসলাম, তার পুর্ণ মনযোগ খাবারে। আমিও আর বিরক্ত করলাম না। খাওয়া শেষে ধীরলয়ে এগিয়ে গেল সিংকের দিকে, পিছু ফিরে একবার আমার দিকে তাকিয়ে হারিয়ে গেল গর্তের ভিতরে।
পরেরদিন থেকে আমরা খাবার সাবধানে রাখতে শুরু করলাম, তার নাগালের বাহিরে। আর কিছু খাবার নিচে রেখে দেই তার জন্য। প্রতি রাতেই আসে সে, খেয়ে চলে যায়। কোন কোন রাতে বসি তার পাশে, খাবার এগিয়ে দেই। দ্বিধা, সঙ্কোচ, ভয় কিছুই নেই আর তার মাঝে, যেন আমার নির্বাক বন্ধু হয়ে উঠেছে। তাকে জিজ্ঞেস করি, পরিবারে আর কে কে আছে, না'কি আমার মত নিঃসঙ্গ একজন সে?
আমি জানি আমার কথা সে বুঝতে না পারলেও ভালবাসাটুকু ঠিক বুঝতে পারে।
প্রায় রাতে মহাকালের স্রোতে অহেতুক আটকে পড়া দুটো নিঃসঙ্গ প্রানী আমরা বসে থাকি পাশাপাশি, আর থাকে নীরবতা
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫২
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২১
নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: আপনার আর আপনার বন্ধুর জন্য শুভকামনা
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৪
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: ইঁদুরটার জন্য শুভকামনা করি আমি। কারণ বাসা পরিবর্তন করেছি অনেক আগে।
৩| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৫
মামুন রশিদ বলেছেন: প্রায় রাতে মহাকালের স্রোতে অহেতুক আটকে পড়া দুটো নিঃসঙ্গ প্রানী আমরা বসে থাকি পাশাপাশি, আর থাকে নীরবতা
বেশ লেগেছে..
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৫
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন:
৪| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫০
এনামুল রেজা বলেছেন: মানবিক।
খুব ভালো লাগলো।
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৬
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: কিংবা ইদুবিক
৫| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১৫
সুমন কর বলেছেন: মোটামুটি লাগল। তবে বাক্য তৈরি ভাল হয়েছে।
বাস্তবে, ইঁদুরকে এতো সহজে ধরা যায় না !
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৯
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: এটি আমার জীবনে ঘটে যাওয়া সত্য একটি ঘটনার উপর লেখা গল্প। যদি ইঁদুরটা অন্য সব ইঁদুরের মতই আচরণ করত, তবে গল্পটি লেখা হত না। ব্যতিক্রম একটি ঘটনা। আপনাকে ধন্যবাদ
৬| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৬
বলেছেন: ভালো লাগলো
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০০
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন:
৭| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩৯
আমি তুমি আমরা বলেছেন: সুন্দর গল্প। ভেবেছিলাম ইদুরের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে গল্প শেষ হবে। অন্যরকম ফিনিশিং এর জন্য ধনবাদ
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:০৫
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: ধন্যবাদ
৮| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৫
কলমের কালি শেষ বলেছেন: এইরকম একটা ইঁদুর আমাদের বাসায় প্রতিরাতে এসে রান্না ঘরে জুড়িতে থাকা ময়লা খাবার খেয়ে যায় । ইয়া বিশাল কুচকুচে কালো ।মাঝে মাঝে টেনশানে পড়ে যাই ইহা কি আসলেই ইঁদুর ।
আপনার গল্প বেশ লাগলো ।
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৭
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: ছোটখাট বিড়ালের সমান দেখতে, হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালা গল্পে এরকম ইঁদুরের কথা ছিল।
৯| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪১
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো।
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: ধন্যবাদ
১০| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মহাকালের স্রোতে অহেতুক আটকে পড়া দুটো নিঃসঙ্গ প্রানী আমরা বসে থাকি পাশাপাশি, আর থাকে নীরবতা ..................
++++++
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৯
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: শুভ কামনা
১১| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৪
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
পৈশাচিক ধারার শুরু হলেও শেষটায় কোথায় যেন মায়ায় জড়িয়ে গেল পাঠক ৷
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫২
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: শুভ কামনা
১২| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫২
সুলতানা সাদিয়া বলেছেন: ভাল লেগেছে।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪
ব্ল্যাক_ডাইমণ্ড বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৯
ভুং ভাং বলেছেন: ভালো লাগলো ।