নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

টুকরো কথা

হিসলা সিবা

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ট্রাকের চাকার নিচে ফেটে যাওয়া দিপালী সাহার হৃদপিন্ডকে যারা ভ্যালেন্টাইন-বেলুন বানিয়ে বেচে দ্যায়, অথবা যাদের শুধুমাত্র শরৎবাবুই কাঁদাতে পারেন, একমাত্র গোপাল ভাঁড়ই হাসাতে পারে- সেই নিথর স্বাভাবিকতায় মৃত মানুষদের ব্যবচ্ছেদ ঘটে এক নীল ক্লিনিকে।

হিসলা সিবা › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা ছোট গল্প লেখার অপচেষ্টা- "ধর্মের করাত"

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৯

দুই বাংলার বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক কবি "সোলেমান সোলে" কিঞ্চিত চিন্তিত...



আজ সকালে তার কাছে একটা চিঠি এসেছে। চিঠিতে অশ্রাব্য ভাষায় তার সাহিত্যের সমালোচনা করা হয়েছে। এবং তার সর্বশেষ প্রকাশিত কবিতা "স্বর্গের হুরপরী, বাকবাকুম তুরতুরি" থেকে দুটি লাইন তুলে দিয়ে তাকে নাস্তিক কাফের ঘোষণা করা হয়েছে।

তাকে এখনি নিজ দেশ ভারতে গিয়ে দুর্গার ছবি আঁকতেও বলা হয়েছে চিঠিতে।



যদিও সোলেমান সোলে কোনদিন ভারতে যান নি।



তবে এটা তো সবাই জানে নাস্তিক কাফেরদের অভয়ারণ্য তো ভারতই, এই সোলেমান সোলেই দেশের বহু লেখক-লেখিকাদের নাস্তিক বলে ভারতে পাঠিয়েছেন।



হঠাৎ তার মনে পড়ে যায় একাত্তরের স্মৃতি, আহা... কি জীবনই না ছিল... শালা নাস্তিক বাঙ্গালী বলদের দল; এত যে স্বাধীনতার জন্য লড়লি, আজকে পাকিস্তান একসাথে থাকলে কত সুবিধা হইত ভাবিস কখনো ?? টেরেনে কইরা পাকিস্তানে যাইতি। ১০ টাকায় বিদেশ ভ্রমণ।



আহারে পাকিস্তান... সোলেমান সোলের মনটা কেঁদে উঠল পাকিস্তানের জন্য। আনমনে গেয়ে ওঠেন ...পাক সারজামিন সাদ বাদ...



সোলেমান সোলে কখনই তেমন উঁচু মানের কবি ছিলেন না। তার কবিতা গুলো টেনে টুনে ছড়া বলে চালানো যায়। কবি এখন একটা জাতীয় দৈনিকের সাহিত্য পাতার উপসম্পাদক।



যদিও তার সাহিত্য পাতায় মউদুদির তাহফিমাত, গোলাম আযমের হাকিকাত আর সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠীর পাহাড়ে চড়ার গল্প ছাড়া কিছুই থাকে না। এই মানবাধিকার ট্রাইব্যুনাল তার সুখের জীবনে এক অভিশাপ। সব সাহিত্যিকরা কারাগারে, এখন লেখা কই পাওয়া যায় ?

যাই হোক পুরনো বইপত্র দিয়ে কোনমতে কাজ চালাচ্ছেন সোলেমান সোলে। তার মাঝে এই যন্ত্রণা...।



সোলেমান তার মুঠোফোন থেকে তার পত্রিকা "দৈনিক কাঠ কয়লার সম্পাদক" 'মোল্লা মোজাফফর আলী'কে ফোন করলেন। বারবার রিং হয় কেউ ধরেনা। সোলেমান সোলে একটু বিচলিত হলেন, বেরিয়ে পড়লেন অফিসের উদ্দেশ্যে। তার শিশু সুলভ ছড়া কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার কথা না।



সত্যি বলতে সোলেমান সোলে একটু ভয় পাচ্ছেন। এর আগে যতবার এই দেশে কারো নামে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের গুজব রটেছে। তাদের কেউই দেশে নেই,

আর যারা দেশে আছেন তারা কেউ বেঁচে নেই...



কি যন্ত্রণা !!! পরশু রাতে জামাতের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা মউদুদির তারজুমানুল কুরান পড়ছিলেন সোলে



…. অমুসলিমদের সন্তানেরা জান্নাতে যাবে এবং সেখানে তারা জান্নাতবাসীদের দাসে রুপান্তরিত হবে (পৃঃ ১৩৪)। অমুসলিমদের যেসব কন্যা অল্প বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদেরকে জান্নাতে হুর বানানো হবে ( জুন ১৪, ১৯৬৯)। মওদুদি মনে করেন, এই বিশাল বক্ষা হুররা জান্নাতের পুরুষদের সাথে জান্নাতি প্রাসাদের অন্দরমহলে সময় কাটাবেন। আর ছোট ছোট “হুরি মেয়েরা” সারা জীবন ছোট থাকবে এবং প্রাসাদের বাইরে অবস্থান করবে।

যখন তারা বিকালে ঘুরে বেড়াবে, তখন জান্নাতের পুরুষরা তাদের সাথে সঙ্গম করবে। আহা! “কাফের” শিশুদের জন্য দুঃখ হয়…….



এসব পড়েই "স্বর্গের হুরপরী, বাকবাকুম তুরতুরি" কবিতাটা জন্ম দিয়ে দিলেন সোলেমান সোলে।



---------------------------------------------------------------------------------------------



পরদিন দেশের সবকয়টা দৈনিক পত্রিকায় সোলেমান সোলের কাণ্ড বড় অক্ষরে ছাপা হল। দৈনিক কাঠ কয়লার সার্কুলেশন বন্ধ করার জন্য মাদ্রাসার ছাত্ররা উঠে পড়ে লাগলো। পত্রিকা অফিসে আগুন দেয়া হল। মসজিদে মসজিদে বিক্ষোভের ডাক... বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন কোর্টে মামলা করে দিলো। বড় বড় নেতারা সভা সমাবেশ করে, এক দড়িতে সোলেমান সোলে এবং মোল্লা মোজাফফর আলীর ফাঁসি দাবী করলো।



বিভিন্ন মসজিদের খতিবরা এই বিচার না হলে সারা দেশে আন্দোলনের ডাক দিলেন, এবং সরকার পতনের হুমকি দিলেন।



সরকার ঐ দিনই প্রেস নোটে তড়িঘড়ি করে "দৈনিক কাঠ কয়লা"র সার্কুলেশন বন্ধ করে দিলো। বিকালের দিকে এক প্লাটুন পুলিশ এসে সোলেমান সোলে কে গ্রেফতার করে নিয়ে গেল। তার বাসার বাইরে মানুষ জন তাকে কিছুক্ষণ জুতা পেটা করলো, স্থানীয় শিবির নেতা নিজ হাতে জুতার মালা পরিয়ে দিলো।



সোলেমান সোলে খুবই অবাক হলেন। এই দৃশ্যটাই এর আগেও তিনি কোথাও দেখেছেন...



দ্রুত বিচার আইনে সোলেমান সোলের মামলার দুই মাসেই বিচার হয়ে গেল। তথ্য অধিকার আইনে তার সাজা হল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। সোলেমান সোলে খুশীই হলেন। আদালত থেকে বের হলেন "ভি" চিহ্ন দেখিয়ে।



খুব ভালো করেই জানেন ছাড়া পেলে বাঁচার আশা নাই, পাবলিক নিজ উদ্যগে ছাল চামড়া তুলে নেবে; কবর পর্যন্ত দিতে দেবে না।



"কাঠ কয়লা" ৬০ বছর পুরনো পত্রিকা।

৭১'এ পাকিস্তানের দালালি করে বহু সুনাম কামিয়েছিলো। সোলেমান সোলে নিজে শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলো দুই মাস, তবে বেকুব বিধায় বেশী ডিন টেকে নাই। মুক্তিযুদ্ধের ৪২ বছরেও কেউ এই পত্রিকার টিকি পর্যন্ত ছুতে পারে নাই

আর আজ এই হাস্যকর কবিতা তার এই অবস্থা করলো...



---------------------------------------------------------------------------------------------



আপনাদের সবাইকে একটা গোপন কথা বলে দেই... সোলেমান সোলে কে হুমকি ধামকি দিয়ে চিঠিটা আমিই লিখেছিলাম। আর ঐ চিঠির কয়েকটা কপি দেশের সবগুলো সংবাদপত্র আর বড় বড় ধর্মভিত্তিক দল গুলোর কাছে পাঠাই আমিই।





ধর্মের করাতে ধার অনেক, তবে একটা কথা আছে না করাত আসতে কাটে যাইতেও কাটে......



ধর্মের করাতে আজও অনেক ধার,

শুধু ধরতে জানতে হয়...













মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.