| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হিমু আজাদ
একুশ শতকে এসে নব্বই দশকের ভালোবাসা খুঁজছি

প্রথম প্রেম, প্রথম স্পর্শ কী কখনো ভুলা যায়, ভুলা তো যায় না।হিমু আজাদ ভুলতে চান, কিন্তু পারেন না। ইদানিং অত্যাধিক ধূমপানের ফলে হিমু আজাদ খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন।
মৃত্যু তাকে হাতছানি দেয়, কিন্তু ধরা দেয় না। হিমু আজাদ মনে করেন মৃত্যুই একমাত্র তাকে মুক্তি দিতে পারে। তেজগাঁও রেলস্টেশনে গিয়ে কতবার যে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তার কোনো ইয়াত্তা নেই, মায়ের মুখটা ভেসে ওঠে চোখের সামনে। আজকেও সন্ধ্যে হলে গিয়েছিলেন তবে এবারও পারলেন না। হিমু আজাদ ফিরে আসেন ফার্মগেটে, লক্ষ্য ওভারব্রিজ।
ফার্মগেটের ওভার ব্রীজটাতে বসার উপায়ও নেই। সরকার মেট্রোরেল প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করার জন্য ওভারব্রিজটা ভেঙে দিয়েছে। বিষন্ন মনে হিমু আজাদ ফিরে আসলেন মেসে।
ছোট্ট রুম।রুমে চারজনের বসবাস।চারটা বেড আর দুইটা টেবিল।দুটি টেবিলের মধ্যে একটিতে সিগারেটের একচ্ছত্র আধিপত্য।আরেকটিতে পড়ে আছে দুটো থালা আর দুটো পানির বোতল।
ফারুক ভাই, আকাশ ভাই ও সাইমন কে নিয়েই হিমু আজাদের এই ছোট্ট সংসার।এরা না থাকলে বোধহয় হিমু আজাদ কবেই দম ফেটে মরে যেতেন। অবশ্য হিমু আজাদ ভিতরে প্রতিদিনই মারা যান, ছোট্ট ছোট্ট কষ্টগুলো ওনাকে মারার চেষ্টা করে।ওনি মরেন না সৃষ্টিকর্তা তাকে মরতে দেন না, পাগলও হতে পারতেন সেটাও হতে দেন না।হিমু আজাদ প্রতি মুহূর্তে এত্তসব টেনশন করেন যে তাঁর জায়গায় অন্য কেউ থাকলে বোধহয় আজ পাগলই হয়ে যেতো। হিমু আজাদ তাই আক্ষেপ করেই বলেন "দুর! পাগল হয়ে যেতে পারতাম, তাহলে হয়তো সে মায়া করতো, ফিরে আসতো সব বাঁধন ছিন্ন করে"। কিন্তু সে তো আর ফিরবার নয়।
হিমু আজাদ সত্যি একজন দূর্ভাগা, সিগারেট তাঁকে আপন করে নেয়। অজানা কোনো কষ্টে ডুব দেন তিনি নেশার জগতে।বন্ধুরা তাকে ফিরে আসতে বলে, ছেড়ে দিতে বলে সিগারেট। কিন্তু হিমু আজাদ তো আর বেঈমান না, তার যুক্তি সিগারেট যেহেতু তাকে ভালোবাসে তাহলে তিনি তাকে ছেড়ে দিবেন কেন।
হিমু আজাদ খুব স্বার্থপর। ভালোবাসা পেতে তিনি মরিয়া। বেঈমান প্রাক্তনের মতোই বন্ধুরা তাই তাকে এড়িয়ে চলে।
হিমু আজাদ প্রাক্তনের ফেলে যাওয়া স্মৃতিগুলো আঁকড়ে ধরেছেন। কোনো এক নিস্তব্ধ রাতে নিঃশব্দ কান্নায় সিগারেটের ধোঁয়ায় উড়িয়ে দেন লালিত সব কষ্ট,আক্ষেপ আর যন্ত্রণা।
©somewhere in net ltd.