নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হিমু আজাদ।প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ ও তাঁর সৃষ্ট চরিত্র হিমুকে আঁকড়ে ধরার তীব্র ইচ্ছা থেকেই হিমু আজাদ হয়েছি।

হিমু আজাদ

একুশ শতকে এসে নব্বই দশকের ভালোবাসা খুঁজছি

হিমু আজাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাওরাইদ অ্যাডভেঞ্চার - ০১ : অযত্ন অবহেলায় ব্রহ্মমন্দির ও সম্ভাবনাময় দর্শনীয় স্থান

১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৪১



ঢাকা থেকে ৭৪ কিলোমিটার দূরে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার সুতিয়া নদীর তীরে অবস্থিত ছোট্ট একটি গ্রাম কাওরাইদ। একজন লেখক হিসেবে যদি বলতে চাই, তাহলে সত্যিই আমি গর্বিত একজন যার গ্রাম কাওরাইদ গ্রামের পাশে অবস্থিত। আমার গ্রামের পাশের গ্রাম থাকায় এখানে বহুবার ভ্রমণ করার সুযোগ আমার হয়েছিল।

আমি গর্বিত এই জন্য যে এই গ্রামটি এমন কিছু মহান ব্যাক্তির স্মৃতি বিজড়িত যা সত্যিই আমার হৃদয়কে প্রশান্তি দেয় এবং গর্বিত করে।বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গীতিকার অতুল প্রসাদ সেন, ব্রিটিশ ভারতবর্ষের প্রথম আইএসসি ও ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম ‘নাইট ‘ উপাধিপ্রাপ্ত স্যার কে জি গুপ্ত সহ অসংখ্য মনীষীদের পায়ের ধুলো পড়েছে এই গ্রামে।

তবে বড় আশ্চর্যের বিষয় এতদিন ধরে এই গ্রামে চলাফেরা করছি অথচ কখনো ভাবতে পারিনি এই গ্রামটি ইতিহাস সমৃদ্ধ। তবে প্রতিবারই একজন মানবিক শাখার শিক্ষার্থী হিসেবে মনে হতো গ্রামটিতে অবশ্যই মূল্যবান কিছু লুকিয়ে আছে। কৌতুহলের বশে চষে বেড়িয়েছি পুরো গ্রামটা।সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি।আর একজন লেখক হিসেবে আমিও আপনাদের সেই অনুভূতিটি শেয়ার করার চেষ্টা করছি মাত্র।



মনে আছে কী 'মোদের গরব মোদের আশা, আ-মরি বাংলা ভাষা' কবিতাটির কথা।আসলে এটি একটি গান , গানটি লিখেছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কালজয়ী গীতিকার অতুলপ্রসাদ সেন।

আসলেই বাংলা ভাষার কোনো তুলনা হয় না, মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার যে মিষ্ট অনুভূতি তাই সুরের মাধুরী মিশিয়ে তুলে ধরেছেন অতুল প্রসাদ সেন।


চিত্রঃ কাওরাইদের ব্রহ্মমন্দির

১৮৭১ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকায় এই মহান মনীষীর জন্ম হয়েছিল আর ১৯৩৪ সালের ২৬ আগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়েছিল লক্ষ্ণৌতে (বর্তমান ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের রাজধানী)‌।আরেকটি বিষয় এখানে উল্লেখ না করলেই নয় তার চিতাভস্ম সমাহিত করা হয়েছে এই কাওরাইদ গ্রামেরই ব্রহ্ম মন্দিরের পাশে।তবে দুঃখের বিষয় এই যে সমাধিটি চরম অযন্ত আর অবহেলায় পড়ে রয়েছে।দেখে বুঝার উপায় নেই যে এখানে কোনো মহান মনীষীর সমাধী রয়েছে।ইন ফেক্ট, আমি এই ব্রহ্মমন্দিরের পাশ দিয়ে চলাচল করি বহু বছর যাবত তবে আজ অব্দি আঁচও করতে পারি নি।


একদিন কৌতুহল বশত চারদিকে দেওয়া কাঁটাতারের বেড়া টপকিয়ে ঢুকে পড়ি ব্রহ্মমন্দিরে। মন্দিরে প্রবেশ করা মাত্রই মনে হলো ইতিহাসের পাতায় হাঁটছি। মন্দিরের পিছনে লক্ষ্য করলাম অনেকগুলো সমাধিস্তুপ, প্রতিটি সমাধিস্তুপের সাথে একটি করে স্মৃতিফলক। জানা যায় স্মৃতিফলকগুলো গুপ্ত রাজপরিবারের বিখ্যাত ব্যাক্তিদের স্মরণে তৈরি করা হয়েছিল।স্মৃতিফলকগুলো মূল্যবান শ্বেত পাথরের তৈরি এবং এগুলো আনা হয়েছে কলকাতা থেকে।


চিত্রঃ ব্রহ্ম মন্দিরের স্মৃতিফলকগুলো

নানা আগ্রহের সাথে প্রতিটি স্মৃতিফলকগুলোর লেখাগুলো পড়তে বৃথা চেষ্টা করলাম।এতটাই অযন্ত আর অবহেলায় পড়ে রয়েছে যে কোনো একটি সমাধিস্তুপেরও আত্মপরিচয় আন্দাজ করতে পারলাম না।তবে শোনা যায় এখানে যাদের সমাধি রয়েছে তাঁরা প্রত্যেকেই তৎকালীন ভারতবর্ষের প্রভাবশালী হিন্দু মনীষী ছিলেন।


তবে আমার বিশ্বাস আমাদের সরকার ও সমাজ যৌথভাবে সংস্কারের উদ্যোগ নিলে এই ব্রহ্মমন্দিরটি জ্ঞানপিপাসুদের মিলনস্থল হয়ে উঠবে।না জানি এই মন্দিরে বাংলার আরো কত ইতিহাস লুকিয়ে আছে।


তথ্য সূত্রঃ

১। অতুল প্রসাদ – মানসী মুখোপাধ্যায়

২। ব্রাহ্ম মন্দির, ঢাকা সমগ্র – ২, মুনতাসির মামুন

৩। এক-নজরে - কাওরাইদ ইউনিয়ন

৪।শ্রীপুরের ইতিহাসে কাওরাইদ

৫। ঢাকার ধর্মীয় জীবন, হৃদয়নাথের ঢাকা শহর, ঢাকা সমগ্র – ১, মুনতাসির মামুন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.