খুব সাধারন একটি গল্প

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:১০

আজ গল্প বলব,একান্ত নিজের গল্প।খুব সাধারন একটি গল্প..........
মধ্যবিত্ত আর গ্রামে জন্ম আমার।ইট-পাথরের ছোঁয়া ছোট্ট বেলায় পাইনি বললেই চলে।যে টুকু বা পেয়েছি তার গল্প আজ বলব না।আজ খুব সাধারন একটি গল্প বলব।
প্রতি ঈদে খুব ভোরে আমরা দু ভাই-বোন তৈরি হতাম সবাইকে সালাম করার জন্য।মুরব্বিরা সালামি দিত এক বা দু টাকার নতুন নোট।সারা দিন নোটগুলো হাতেই রাখতাম।নতুন নোটের সেই গন্ধটা আজ ও নাকে লেগে আছে।
আস্তে আস্তে দিন যায়,টাকার পাল্লা ভারী হয়।
বাবা কোন দিন ও হাতে টাকা দেয়নি।স্কুলের সামনে ছোট এক চায়ের দোকান ছিল।সেখানে প্রতি দিন দু টাকা বরাদ্দ্ ছিল।স্কুলের টিফিন হলে সোঁজা গিয়ে হাজির হতাম সেখানে।দু টাকার বাটার বন।
বাই সাইকেলের অনেক শখ ছিল।বাবা কিনে দেননি।হয়ত সাধ্য ছিল না,হয়ত বা ইচ্ছে।বাজারে পুরনো সাইকেলের দোকান ছিল।মায়ের কাছ থেকে নেওয়া দু টাকা দিয়ে ঘন্টা চুক্তি সাইকেল চালাতাম।
এমনি করে দু টাকা,দু টাকা জমিয়ে এক দিন বার টাকা হলো।সোঁজা ছুটলাম সিনেমা হলে।সামনের সারিতে ফ্লোরে বসে ছবি দেখা।তারপর সপ্তাহ ধরে সেই ছবির প্রিয় দৃশ্যগুলোর গল্প কতবার করেছি তা মনে নেই।
মনে আছে বন্ধু,একদিন আইসক্রিমের জন্য এক টাকা ধার নিয়েছিলাম।কবির ভাইয়ের সেকারিন দেওয়া লাল আর সবুজ আইসক্রিমে কতো দিন ঠোঁট রাঙ্গিয়েছি।সে টাকা আজ ও দেওয়া হয়নি।ক্ষমা করিস বন্ধু আর হয়তো বা কোন দিন ও দিতে পারবো না।
এই তো কিছু দিন আগে শোনলাম আমাদের দু টাকার নোট নাকি পৃথিবীর সব থেকে সুন্দর নোট।শোনলাম সরকার নাকি এক টাকা আর দু টাকার নোট তোলে নেবে।দেশে নাকি আর এসব নোট চলবে না।আর আজ শুনলাম আমাদের অর্থমন্ত্রী নাকি আজই পাঁচ টাকার(অচল বা অবৈধ)কয়েন দেখলেন!তিনি আমাদের দেশের অর্থমন্ত্রী,যিনি জানেন ই না বাজারে কতো ধরনের,কতো টাকা মূল্যমানের মুদ্রা চালু আছে!
হয়তো আজ থেকে ২০ বছর পর আমার সন্তানকে দু টাকার নোট বা পাঁচ টাকার কয়েন (দেশে প্রচলিত বিভিন্ন মানের মুদ্রা) নিয়ে কোন গল্প বলতে পারবে না।এক টাকার নোট দেখে বলবে না বাবা এ সুন্দর পশুটার নাম কি ?এ পাখিটার নাম কি?কিন্ত আমি তাদের গল্প বলব।একটি সাধারন গল্প।সুন্দরবনের হরিনের গল্প,দোয়েল পাখির গল্প আর আজব দেশের এক রাবিশ অর্থমন্ত্রীর গল্প ..............

৪ টি +০/-০