![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুই ভালো লাগছেনা , মনে হয় ঘুমপরী এসে চোখে লেপ্টে বসেছে । হঠাৎ
এক অদ্ভুৎ রিংটনে মোবাইলটা আচমকা নাচতে লাগলো , ফোন রিসিভ
করতেই মনকাড়া এক পরিচিত ফ্লেভার নাকের নল দিয়ে ঢুকছে ।
কি আশ্চর্য !
ফোন রিসিভ করলাম আর ফ্রেন্ডিয়ার গায়ে মাখা পারফিউমের ফ্লেভার
আসলো কোথা থেকে !
অহহ!..
এইবার খেয়াল হয়েছে , আরে মোবাইলাটাতো আজ সকালেই মার্কেট
থেকে আনলাম , বর্তমানে এটাই মার্কেটের সেরা মোবাইল , এর রয়েছে
বিশেষ ক্ষমতা ভিডিও কলের দৃশ্যমানতার সাথে ঐ স্থানের আশপাশের
ঘ্রাণও ধারন করে এর ব্যাবহারকারিকে আনন্দ দেয় , আসলে এই ডিজিটাল
যুগে সবই সম্ভব ।তাইতো ফ্রেন্ডিয়ার পারফিউমের ফ্লেভার আমার নাগে
লাগলো ।
কিন্তু রিংটন ?
আসলে মঙ্গল গ্রহ থেকে ফোন আসলে ফ্লেভার ফোন ফাইভে এই রিংটনই
বাজে ।
---
ফ্রেন্ডিয়া আমার মঙ্গল গ্রহের বন্ধু , গত বছর পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহের মধ্যকার
আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায় ওর সাথে পরিচয় , পরীর মতোন মেয়ে , দেখলে
চোখ ফেরানো যায়না , প্রথমে চোখে চোখ পড়া পরে বন্ধুত্ব ও পরে এক
পর্যায়ে মন দেওয়া নেওয়া হয়ে যায় ।
ওর দাদা ছিলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন পরবর্তিতে নাসার সাথে কাজ
করেন । উনি শখ করে ২০৫০ সালে মঙ্গল গ্রহে একটি বাংলো বাড়ি তৈরি
করেছিলেন , তবে ফ্রেন্ডিয়া এবং ওর পরিবার এখন সেখান স্থায়ী ভাবে
বাস করে ।
....
ফ্রেন্ডিয়ার অনুরোধে প্রথমবারের মত মঙ্গল গ্রহে এসেছি । এটা অনেকটা
পৃথিবীর মতই তবে অতটা সুন্দর নয় , এর মাটির রং লাল , মাত্র কয়েক বছর
পূর্বে পৃথিবীর মানুষ এসে এখানে বসতি গড়েছে । ইতোমধ্যেই এলিয়েনদের
বশে এনে দাস বানিয়ে ফেলেছে , এলিয়েনরা মানুষের হুকুমের দাস হয়ে সকল
কাজ করে ।
---
ফ্রেন্ডিয়ার সাথে বিভিন্ন যায়গায় ঘুরাফেরা করলাম , পৃথিবী থেকে
আসা কয়েকজনের বাড়িতে গেলে তাঁরা আমাকে দেখে খুবই উৎফুল্ল হলেন ।
অনেক গল্প হলো সবার সাথে , কি ভাবে পৃথিবীতে ছিলেন কি ভাবে এলেন
এই সব ।
---
ফ্রেন্ডিয়ারা যে অঞ্চলে থাকে সে অঞ্চলের নাম বাংলান্ট্রিয়া অর্থাৎ
এখানকার আদিবাসীরা পৃথবীর বাংলাদেশ থেকে এসেছে , এখানকার
লোকেদের ভাষাও বাংলা । ফ্রেন্ডিয়া আমাকে বাংলান্ট্রিয়ার
বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল ।
---
ফ্রেন্ডিয়ার সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছে , কথা বলতে বলতে
একবার ফেইসবুকে লগইন করলাম , লগইন করতেই একটা একেবারে নতুন
ফ্লেভার এসে নাকে লাগলো । আসলে এটা ফেইসবুকের নতুন সংস্করন ,
আগেকার লোকজন যেমন নিজের স্থির ছবি ধারন করে ফেইসবুকে
প্রোফাইলে রাখতো যেটার নাম ছিল সেলফি , কিন্তু ফ্লেভার ফোন বের
হওয়ার পর থেকে এটা কেবলই ইতিহাস ।
---
সেলফির মতোই সেলফ্লেভএনিমি এখন বেশ জনপ্রিয় , পারফিউম গায়ে
মেখে নিজের শর্ট ভিডিও ধারন করে ছোট্ট এক ধরনের এ্যনিমিশন তৈরি
করা হয় আর এই এ্যনিমিশনের নামই সেলফ্লেভএনিমি । বিভিন্ন ঘ্রাণের
পারফিউম গায়ে মেখে যার যার প্রোফাইলকে আরো বেশী আকর্শনীয়
করতে সেলফ্লেভএনিমি সেভ করে রাখা হয় , এ যেন এক ধরনের
প্রতিযোগীতা , যার কারনে একেক জনের প্রোফাইলে একেক ধরনের ঘ্রাণ ।
---
নতুন এই ফ্লেভারটি বিশ্বকাপ উপলক্ষে মার্কেটে এসেছে , বাংলাদেশ
বনাম আর্জেন্টিনার ফাইনাল খেলা দেখতে চন্দ্রবিন্দু স্টোডিয়ামে
যাচ্ছি ঠিক এই কথা সংবলিত ঐ সেলফ্লেভএ্যনিমিটি বেশ আকর্ষনীয় ।
মঙ্গল গ্রহে বেড়াতে আসার কারনে আজকের এই ঐতিহাসিক খেলা
দেখতে যেতে পারছিনা , তবে তেমন কোন সমস্যা নেই আমার
ফ্লেভারফোন ফাইভের একটি বাটন চাপ দিতেই মোবাইল থেকে আস্তে
আস্তে একটা পর্দা বের হতে লাগলো বিশাল পর্দা তবে চাহিদা মত ছোট
বড় করা যায় । পর্দা অপেন করেই খেলা দেখতে বসে গেলাম আমি
ফ্রেন্ডিয়া এবং বাংলান্ট্রিয়ার বেশ কয়েকজন লোক এক সাথে খেলা
দেখছি।
---
বাংলাদেশ দলটি একেবারে নতুন করে সাজানো হয়েছে , দলের এগার জন
খেলোয়াড়ই ক্লোন , সবাই দেখতে একই রকম আবার সবাই সবার মনের কথা
সহজেই বুঝে ফেলে , শরীর কাঠামো এবং খেলার ধরনও একিরকম এজন্য
প্রতিপক্ষ দলের বেশ বিড়ম্বনা পোহাতে হয় ।
সেমি ফাইনালে ব্রাজিল দল সমর্থকদের গোল বন্যায় অজ্ঞান করে ফাইনেলে উঠেছে বাংলাদেশ। আর্জেন্টিনাকে একেবারে
পানি খাইয়ে ছেড়েছে এই ফুটবল টাইগারেরা অবশেষে ৭-০ গোল বিশ্বকে
তাক লাগিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা নিজেদের করে নিল
বাংলাদেশ টাইগার বাহিনী ।
---
মনের মাঝে আনন্দের শিহরন বয়ে যেতে লাগলো , মনে হলো এক লাফে
পৃথিবীতে চলে যাই ।
হায় হায়! একি !...
পা ফসকে পৃথিবীর দিকে পড়ে যাচ্ছি , এতো দূর থেকে পড়লেতো হাড্ডি
মাংশ কিছুই খোঁজে পাওয়া যাবেনা ।
ভয়ে চিৎকার করছি । ফ্রেন্ডিয়া বা বাংলান্ট্রিয়ার কাউকেই দেখতে
পাচ্ছিনা কেউই মনে হয়
আমার চিৎকার শুনতে পাচ্ছেনা ।
ভাবলাম কাউকে ফোন দেই কিন্তু মোবাইলটা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে
আরো ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে হঠাৎ একটুকরো মেঘের সাথে ধাক্কা
খেলাম তখনই চেতনা ফিরে পেয়ে নিজেকে বেডরুমের খাটের নিচে
আবিষ্কার করলাম ।
---
ভয়ের ছাপ এখনো মুখে লেগে আছে , বুকটা ধুক ধুক করছে , শরীর ঘামে ভিজে
চপচপ করছে , হঠাৎ মোবাইলের দিকে খেয়াল হলো হাত বাড়িয়ে দেখি
এতো আমার সদ্য নষ্ট হওয়া আইফোন ফাইভ । আসলে সকাল থেকে
মোবাইলটা নষ্ট হয়ে গেছে তাই মনটা ভিষণ খারাপ ছিলো মোবাইলের
কথা চিন্তা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম খেয়াল নেই । কিন্তু
এই স্বপ্ন দেখে কেন জানি মনটা একটু হালকা হয়ে গেছে , এরকম কোনো
মোবাইলকি আসলেই বের হবে ? এই রকম একটা ভাবনাও মনে জাগে ,আবার
মঙ্গল গ্রহ থেকে কি কেউ পা ফসকে পড়ে যায় নাকি এই রকম ভাবতেই
আনমনে ঠোটের কোণে ফোটে ওঠে এক চিলতে হাসি।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা জুন, ২০১৬ রাত ১১:৩৮
কবি হাফেজ আহমেদ বলেছেন: দারুন প্রকাশ। এগিয়ে যান কবি। শুভ কামনা।