কে?

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৫২

-দাদু কেমন আছ?
-এই রোগে-শোকে জর্জরিত থাকলে কি আর ভাল -থাকা যায়।
-রোগ তা নাহয় বুজলাম।শোক কিসের?
-রোগের সাথে শোক ফ্রি।হা হা হা
- শোক তো আমার।মনে বসন্তের হাওয়া লেগেছিল।আবার উড়েও গেল।তাই এলাম তোমার সাথে গল্পগুজব করব।
- আচ্ছা তাহলে তো ভালই হয়।দু কাপ চা নিয়ে আয়।তাহলে জমবে ভাল।

তারপর দাদু বেশ আয়োজন করে গল্প বলা শুরু করল।যেন একটা তৃপ্তি বোধ কাজ করছে।


আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ড-কালীন অধ্যাপক।আমার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।তিনি সেখানে পদার্থবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক।আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খণ্ড-কালীন অধ্যাপনা করছিলাম আর ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম।তখন চাকুরী ছিলনা এমন কিছু নয়।আমি শিক্ষকতা করতে চেয়েছিলাম।তাই খুঁজছিলাম।
আমি আমার দূর সম্পর্কের ভাইটিকে বলে রেখেছিলাম যেন আমার জন্য কিছু একটা করে।তো এভাবেই দিনকাল যাচ্ছিলো।
হঠাৎ একদিন আমার সেই ভাই অর্থাৎ আব্দুল্লাহ(তার নাম) এখানে এসে হাজির।কোন আগাম চিঠিপত্র কিছুই দেয়নি।
যাহোক তার আসার কারণ জেনে আমিতো মহা-খুশি।অবশেষে মনের ইচ্ছেটা পূরণ হল তাহলে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক নিয়োগ দেয়া হবে।তারা জানাশোনার ভিতরেই নিতে চাচ্ছে।আব্দুল্লাহ আমার কথা তাদেরকে বলেছেন।সে একটা এপোয়েনমেন্ট লেটার নিয়ে হাজির হয়েছে।আমার চাকুরী হয়ে যাবে প্রায় নিশ্চিত।
তার প্রায় ১৭ দিন পর অর্থাৎ তাদের নির্ধারিত করে দেওয়া দিনে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গেলাম।আর যাওয়ার পর আমি যা জানতে পারলাম তা আমি আজ পর্যন্ত ভেবে কোন ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে পারিনি।
আব্দুল্লাহ গত ১৭ দিন আগে তার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের বাসায় যাওয়ার পথে বাস দুর্ঘটনায় মারা যায়।অর্থাৎ যেদিন আমার কাছে আব্দুল্লাহ গিয়েছিল তার আগেই সে মারা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এতদিন কোন অধ্যাপকের প্রয়োজন ছিলনা তবে তার মৃত্যুতে নতুন করে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
আমার মাথায় এখনও শুধু একটা কথাই ঘুরপাক খায়।সেটা হচ্ছে যদি আব্দুল্লাহ আমার কাছে পৌঁছানোর পূর্বেই মারা যায় তাহলে আমাকে এপোয়েনমেন্ট লেটার টা দিল কে?

৬ টি +১/-০