![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খুব অস্থির এবং আবেগী। ইমেইল - [email protected] মুখবই - http://www.facebook.com/m.k.a.hredoy
০১.
আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকে জোনাকী। কপালে টিপ গেঁথে দিয়ে বলে ওঠে- কি গো সুন্দরী?তুমি কি রানী না কি? পাশে রাখা কুপিটা এগিয়ে নেয়।তোমার রাজা কোথায়? নিজেই আবার বলে ওঠে-আসবে রাজা আসবে।রাজা আসবে,মহারাজা আসবে,আসবে রাজপুত্র।ওদেরকে যে রাইতের রানীর কাছে আসতেই হয়।আয়নায় নিজের চেহারা দেখে কান্না চলে আসে তার।কি সুন্দর চেহারাই না ছিল তার।ছোটবেলায় তার একটা জোনাকী নাম থাকলেও আশপাশের সবাই তাকে রানী বলেই ডাকত।রূপের যখন রানী তখনতো সবার নজরই পড়বে তার উপর।মা অন্যের বাড়িতে কাজ করত।বাবা জন্ম দিয়েই নাই হয়ে গিয়েছিল।মা আবার বিয়ে বসেছিল।মার সঙ্গও সে বেশিদিন পায়নি।সেই ছোট্টবেলায়ই সবাই তাকে কাছে পেতে চাইত।আদর করতে চাইত।কি ছোট কি বড়।শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে পা দিতেই যৌন নির্যাতনের শিকার হল।এ পথ সে পথ ঘুরতে ঘুরতে তার আশ্রয় হল গিয়ে পতিতালয়ে।অপুর্ব রূপ যৌবনের অধিকারী জোনাকীকে খদ্দের পেতে বেগ পেতে হোত না।স্বাভাবিক জীবন তার অদৃষ্ট থেকে চিরকালের জন্য হারিয়ে গেল।প্রতিদিন খদ্দেরদের মনোরঞ্জনের জন্য তাকে সেজেগুজে থাকতে হোত।খদ্দেরদের কাছ থেকেই সে জেনেছে ডায়ানার নাম,ম্যাডোনার নাম।ওরাই তাকে বলেছে জোনাকী তুই খুব সুন্দরী।তুই আসলেই রানী।জোনাকী মনে মনে বলে ওঠে-সে শুধু রাইতের জন্যই,শুধু মনোরঞ্জনের সময়টুকুই।তারপর যেই জোনাকী,সেই জোনাকী।
০২.
চোখের কাজল জলে ভিজে যায়।হাত দিয়ে মুছতে গিয়ে কাজলটা মুখে আরও ছড়িয়ে পড়ে।এখন আর সেই রূপ যৌবন নেই জোনাকীর।কোনমতে তিনবেলা খাবারের পয়সা জুটলেও মাথা গোজার স্থায়ী কোন ঠাঁই জোটেনি জোনাকীর।পতিতাপলি্লতে মাথা গোজার ঠাঁই মিললেও মাঝে মধ্যেই পুলিশের নাকানি চুবানি খেতে হতো জোনাকীদের।তারপর একসময় সমাজপতিরা তাদের স্বার্থে আঘাত লাগছে বলে নিজেদের স্বার্থেই পতিতাপলি্ল ভেঙ্গে দিল। জোনাকীর রূপ যৌবন অনেকটাই ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছিল।পথেই আশ্রয় হল জোনাকীর।পথে পথেই ঘুরতে লাগল জোনাকী। দিনের বেলা ষ্টেশনে,ফুটপাতে শুয়ে বসে দিন পার করতে লাগল।আর রাতে মুখে রঙ লাগিয়ে খদ্দেরের খোঁজে উকি ঝুকি মারা চলতে লাগল। দেহকে বিক্রি করতে করতে নিঃশেষ হয়ে গেছে তার দেহখানি।কিন্ত হয়নি তার স্বামী সংসার।সৃষ্টিকর্তাকে অভিশাপ নাকি ধিক্কার জানাবে জানে না জোনাকি। সোহাগ কেমন সে জানে না।কিন্তু সে বোঝে মাতৃত্বের আকাঙ্খা।সে যে নারী।তার ইচ্ছে হয় তার গর্ভে সন্তান আসুক।কিন্তু সে সন্তান টাকার বিনিময়ে কোন অজানা,অচেনা পুরুষের কাছ থেকে নয়, কেননা সে সন্তান একদিন তাকে প্রশ্ন করবে,তার পিতার পরিচয় জানতে চাইবে।সে তার নিজ মাকে ধিক্কার দিবে।
০৩.
কুপিটা নিবিয়ে দিয়ে রাস্তার গলিতে এসে দাঁড়ায় জোনাকী।আশেপাশে উঁকি দেয়।রাস্তার পথচারী কেউ কেউ বাঁকা চোখে দেখে।এগিয়ে যায় জোনাকী।অশ্লীল ইঙ্গিত করে।কামনা করে কোন এক খদ্দেরের।দেহের প্রয়োজনের জন্য নয়,মনের ক্ষুধা মিটানের জন্যও নয়।তার কালকের পেটের ক্ষুধা মেটানোর জন্য অর্থের প্রয়োজন।আর সেই অর্থের সন্ধানেই খদ্দেরের খোঁজে এগোতে থাকে জোনাকী।
বি.দ্র.:- কাহিনীর প্রয়োজনে বেশ কিছু মাত্রাতিরিক্ত শব্দ ব্যবহার করেছি........... আশা করি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন.
প্রথম প্রকাশ :- ( আমার ফেইসবুক একাউন্টে ১০-১১-২০১১ তারিখ)
০৭ ই জুলাই, ২০১২ বিকাল ৩:১১
হৃদয় জিনিয়াস বলেছেন: চেষ্টা করেছি ফুটিয়ে তুলতে
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
২| ০৬ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৮:১৪
যাযাবরমন বলেছেন: সবই প্রভুর খেলা।
যাই হোক সে (জোনাকি) নিজের যা আছে তাই নিয়ে বাচার চেস্টা করছে, এর জন্যও অনেক সাহস লাগে। আমাদের কজনের এই সাহস আছে?
পোড় খাওযা জীবন, ইট ভাংতে গেলেও জোনাকিকে দেহ বাচাতে পারবে না। কোন সর্দার/কন্টেকটারকে বিনামুল্যে দিতে হবে।
আমি কি করবো, আমার যে সাহস নাই। দেশ নিয়ে ১টা লেখা দিব তাই ভয় পাচ্ছি, দিতে পারছিনা।
০৭ ই জুলাই, ২০১২ বিকাল ৩:১৪
হৃদয় জিনিয়াস বলেছেন: নেগেটিভ হলেও বাস্তব সম্মত কিন্তু
আপনার লেখাটা প্রকাশের অপেক্ষায় রইলাম
৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০১২ রাত ৯:৪৬
১১স্টার বলেছেন: ভালো লাগলো
৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০১২ রাত ৯:৫৮
আবিদ ফয়সাল বলেছেন: জোনাকিদের জীবন এমন ই !
ভাল লিখেছেন ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৮:০৪
মাসুদ১আলম বলেছেন: সমাজের দরিদ্র মেয়েদের সমস্যা.... খুব ভাল লাগল