নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তাফসীর নিয়ে গবেষনামূলক লিখা লিখতে ভালবাসি, যুক্তি সহজে হজম হয় না, বিশুদ্ধ কিতাবের উদ্ধৃতি ছাড়া ধর্মীয় কোন বিষয় গ্রহণ করি না, আক্রমনাত্বক সমালোচনা পড়তে ও লিখতে সাচ্ছন্দ বোধ করি।

ডিগবাজি বিশারদ

খাটি কাঠমূল্লা যাকে বলে সেটাই আমি

ডিগবাজি বিশারদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পূর্ণাঙ্গ দরুদ না লিখে (সাঃ/ স.) জাতীয় সংকেত ব্যবহার করা অমার্জনীয় অপরাধ!

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:৪০

“সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” পূর্ণাঙ্গ না লিখে সংক্ষেপে (সাঃ/ স./ দ./ ص/ صع/ صعل ইত্যাদী) লিখা অমার্জনীয় অপরাধ!

একমাত্র বাংলা বইগুলাতে এই কাজটি অধিকহারে পরিদৃষ্ট হয়। সে অনুসারে আমরাও দৈনন্দিন টুকিটাকি লেখার ক্ষেত্রে এমন করে থাকি। পূর্ণাঙ্গ দরুদ না লিখে শুধু (সাঃ/ স.) ইত্যাদী সংকেতীক চিহ্ন ব্যবহার করে দায়িত্ব এড়িয়ে যাই। অথচ এই উম্মতে রাসূলের ﷺ কাছে দায়বদ্ধ। তার ﷺ উপর দরুদ পাঠানোও এই উম্মতের গুরুদায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত।

পরিতাপের বিষয় হচ্ছে এই গুরুদায়িত্বটি আমরা (সাঃ/ স.) এর মত সংকেতীক চিহ্ন ব্যবহার করে এড়িয়ে যাই। বিষয়টি শরয়ী ও যৌক্তিক দৃষ্টিকোন থেকে কেমন সেটাই আজ সংক্ষেপে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ্।
.
কয়েক লাইনের একটি ভূমিকা-
ফজীলতের ক্ষেত্রে রাসূল ﷺ এর নাম মৌলিক নাকি তার উপর ‘দরুদ পাঠ’ মৌলিক?
কোন বিষয় মৌলিক-অমৌলিক হওয়াটা নির্ভর করে সেটার গুরুত্ব ও মহাত্মের উপর। তাহলে বিষয়টি যাচাই করা যাক-

১. আল্লাহ ﷻ পবিত্র কুরআনে মুমিনদেরকে রাসূলের ﷺ উপর দরুদ পাঠের আদেশ করেছেন।
২. স্বয়ং আল্লাহ ﷻ ও ফিরিশতাগণ রাসূলের ﷺ উপর দরুদ পড়েন।
৩. রাসূল ﷺ এর উপর দরুদ পাঠের ফজীলত সম্পর্কে প্রচুর হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
৪. আমাদের সালাফগণ দরুদ পাঠের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন।
এই চারটি দিক থেকে বুঝা যাচ্ছে রাসূলের ﷺ জন্য দরুদ মূল উদ্দেশ্য, তার নাম নয়।

রাসূল ﷺ এর নাম যে মূল উদ্দেশ্য নয় তার প্রমাণ হল-
১. কুরআনে রাসূলের ﷺ ‘নাম’ পাঠের আদেশ না দিয়ে দরুদ পাঠের আদেশ প্রদান।
২. হাদিসে রাসূলের ﷺ নাম পাঠের উপর কোন ফজীলত বর্ণিত না হয়ে, বর্ণিত হয়েছে দরুদ পাঠের ফজীলত।
৩. রাসূলের ﷺ নামে জিকির হয় না বরং জিকির হয় দরুদের।
৪. রাসূলের ﷺ নাম ‘মুহাম্মাদ/আহমাদ/রাসূলুল্লাহ্’ কথায় বা লেখায় না আনলেও তার উপর দরুদ পড়তে হয়। যেমন: আপনি যদি তাফসীর, হাদীস, ফিকাহ এর আরবি কিতাবগুলো পড়ে থাকেন তাহলে في حديثه صلي الله عليه و سلم، قاله صلى الله عليه و سلم‚ قوله عليه السلام জাতীয় ইবারাত অবশ্যই দেখবেন।

রাসূল ﷺ এর উপর দরুদ পাঠ মৌলিক। উপরোল্লিখিত বিষয়গুলো পড়লে এটাই বুঝে আসে। আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন।

এখন আসুন! আমরা সংক্ষেপিত শব্দ কেন লিখি, কেন বলি? এটার আলোচনায় আস যাক-
১. কোন শব্দ বলা বা লিখায় অমৌলিক, গুরুত্বহীন, অপ্রয়োজনীয় বা অপছন্দনীয় হওয়া সত্বেও অন্যকর্তৃক শব্দটি পূণরাবৃত্তির নির্দেশ থাকায় “ছেড়ে দে মা কাইন্দা বাচি” প্রবাদে আক্রান্ত হয়ে একান্ত অনিচ্ছায় বিভিন্ন সংকেতীক চিহ্ন ব্যবহার করে শব্দ পূণরাবৃত্তির দায়িত্ব সম্পাদনের ব্যর্থ চেস্টা করা।

২. শব্দটি ভিন্ন বা নিজ ভাষায় সংক্ষেপিত রুপেই প্রসিদ্ধি লাভ করা। যার পূর্ণরুপ বললে বা লিখলে লোকদের বুঝতে কস্টসাধ্য হয়ে যায়।

এখন আপনিই বলুন! রাসূল ﷺ এর উপর দরুদ পাঠ কি অমৌলিক? গুরুত্বহীন? অপ্রয়োজনীয়? বা এটা কি আরবি ভাষাতে সংক্ষেপিত রুপে প্রসিদ্ধ?
নিশ্চয় না! তাহলে দরুদ পাঠের বাক্যটি কেন সংক্ষেপে লেখা হবে?

দরুদকে পূর্ণাঙ্গই লিখতে হবে। অসংখ্য দলিল আদিল্লার মাধ্যমে বিষয়টি প্রমাণিত। দরুদের উপর সংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করেই যারা ক্ষ্যান্ত হোন নিম্নোক্ত বিষয়গুলো একটু চিন্তা করে দেখবেন?
১.
إن الله و ملائكته يصلون علي النبي يا أيها الذين آمنوا صلوا عليه و سلموا تسليما.
আয়াতে আল্লাহ ﷻ দরুদের পূর্ণাঙ্গ অবকাঠাম উল্লেখ করেছেন। অথচ কুরআন হচ্ছে ব্যপক অর্থবোধক সংক্ষীপ্ত ভাষ্যের কিতাব। সংক্ষীপ্ততার উদ্দেশ্য সত্বেও দরুদ কিন্তু কুরআনে পূর্ণাঙ্গ এসেছে। তাহলে আমরা (সাঃ/ স.) জাতীয় সংকেত ব্যবহারের অধিকার কোথায় পেলাম?
আফসোস! আমাদের পাদুকা পঙ্কে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।

২. একাধিক দূর্বল সুত্রে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন- কেউ যদি আমার জন্য দরুদ লিখ, লেখাটি যতদিন থাকবে সে ব্যক্তি ততদিন দরুদের সোয়াব পেতে থাকবে” [আল মুজামুল কাবীর তাবরানী, হাদিস নাম্বার ৪৪৭]
এখন আমরা যদি পূর্ণাঙ্গ দরুদ না লিখে (সাঃ) লিখে দেই তাহলে কিসের সোয়াব পাব?

৩. দরুদকে এভাবে সংক্ষেপে লেখা রাসূল ﷺ এর প্রতি অবজ্ঞা ও বিবেকভ্রষ্ট কাজ। যার উসিলায় আমরা সৃষ্টি হলাম, জগতের নেয়ামত পেলাম, ঘোর অন্ধকার থেকে আলোর দিশা পেলাম! তার প্রতি দরুদ লেখার সময় নেই? আমাদের এতই ব্যস্ততা? অথচ অধিক দরুদ পাঠ রাসূলের ﷺ প্রতি ভালবাসার নিদর্শন। এই কি আমাদের ভালবাসা?
নিশ্চয় এটা সবচেয়ে বড় কবিরা গুনাহ্।

৪. আমাদের সালফে সালেহীন যারা আছেন। তাদের কিতাব খুলে দেখুন ত! যতবার রাসূলের ﷺ নাম এসেছে ততবার পূর্ণাঙ্গ দরুদ লিখেছেন তিনারা। সহীহ বুখারী, মুসলিম, তিরমিজী.... ত্বহাবী শরীফ এর জ্বলন্ত প্রমাণ। কেমন পাগল ছিলেন তারা স্বচক্ষে দেখতে পাবেন। এই কিতাব গুলো রাসূলের ﷺ জন্য পূর্ণাঙ্গ দরুদ লেখার ব্যেপারে উলামায়ে উম্মতের ‘ইজমার’ প্রতি ইঙ্গিত বহন করে।

৫. দরুদকে (...) এই দুই চিহ্নের মাঝেও লেখা যাবে না। কারণ এভাবে লেখা অপ্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিত প্রদান করে।
.
ভাই! হাবিবে খোদা, আশরাফে আম্বিয়া মুহাম্মাদূর রাসূল ﷺ এর জন্য অন্তরে সত্যিকার মুহাব্বত সৃষ্টি করে দেখুন না! পূর্ণাঙ্গ দরুদ লিখতে কত মজা লাগে। রাসূলের ﷺ ইশকে যাদের ক্বলব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে তাদের জিজ্ঞাসা করুন দরুদ পড়তে কত মজা লাগে। খোদার কসম! সমস্ত জিকিরের স্বাদ আর দরুদ পাঠের স্বাদ কখনো এক নয়।

ইয়া রাব্বাল আলামীন! আপনার রাসূলের মুহাব্বত আমাদের অন্তরে পয়দা করে দিন। আপনার রাসূলের সুন্নাতের মুহাব্বত অন্তরে পয়দা করে দিন। আপনার রাসূলের ভালবাসায় আমাদের জীবন উৎসর্গ করার তৌফীক দিন। আমীন। আমীন।।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:১১

রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম।

২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩১

নীল আকাশ বলেছেন: এত ভালো একটা বিষয় নিয়ে লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এটা খুব কমন ভুল যা অনেকেই করে থাকেন। আশা করছি এটা পড়ার পর সবাই এখন থেকে সাবধান হয়ে যাবেন।
আল্লাহ আপনাকে এত ভালো একটা কাজের জন্য উত্তম পুরষ্কার দান করুন, আমীন।

৩| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:২২

যাযাবর চখা বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন। অনেককিছু জানলাম।

৪| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:১৩

ডিগবাজি বিশারদ বলেছেন: আপনাদের সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.