নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তাফসীর নিয়ে গবেষনামূলক লিখা লিখতে ভালবাসি, যুক্তি সহজে হজম হয় না, বিশুদ্ধ কিতাবের উদ্ধৃতি ছাড়া ধর্মীয় কোন বিষয় গ্রহণ করি না, আক্রমনাত্বক সমালোচনা পড়তে ও লিখতে সাচ্ছন্দ বোধ করি।

ডিগবাজি বিশারদ

খাটি কাঠমূল্লা যাকে বলে সেটাই আমি

ডিগবাজি বিশারদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের পিতা হযরত আদম ও মাতা হযরত হাওয়া আলাইহিমাস সালাম কি শিরক করেছিলেন?

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:০০

সুরা আরাফের ১৮৯-১৯০ আয়াতের তরজমা পড়লে মনে হবে আমাদের পিতা-মাতা শিরক করেছিলেন। বুঝার সুবিধার্থে তরজমা লিখে দিচ্ছি:

১৮৯ - ... هو الذي خلقكم من نفس واحدة و جعل منها
• আল্লাহ তিনি, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যাক্তি (আদম) হতে সৃষ্টি করেছেন। এবং তার থেকেই তার স্ত্রীকে (হাওয়া) বানিয়েছেন। যাতে সে তার কাছে এসে শান্তি লাভ করতে পারে। তারপর পুরুষ যখন স্ত্রীকে আচ্ছন্ন করল, তখন স্ত্রী গর্ভের হাল্কা এক বোঝা বহন করল। যা নিয়ে সে চলাফেরা করতে থাকল। অতপর সে (গর্ভ) যখন ভারি হয়ে গেল, তখন স্বামি স্ত্রী উভয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করল, তুমি যদি আমাদেরকে সুস্থ সন্তান দান করো তবে আমরা অবশ্যই তুমার কৃতজ্ঞতা আদায় করব।

১৯০ - ... فلما آتاهما صلحا جعلا له شركء فيما آتاهما
• কিন্তু আল্লাহ যখন তাদেরকে একটি সুস্থ সন্তান দান করলেন, তখন তারা আল্লাহ প্রদত্য নেয়ামতে অন্যদেরকে শরিক সাব্যস্ত করল। অথচ আল্লাহ তাদের অংশিবাদী বিষয়াদি থেকে বহু উর্ধে। ১
.
আয়াত যেহুতু শুরুই হয়েছে আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালামকে দিয়ে তাই পাঠক মাত্রই বুঝে নেবে এখানে সবগুলা সর্বনাম ‘সে, তারা, তাদের’ দ্বারা আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম উদ্দ্যেশ্য। তবে সঠিক বিষয় হল- এখানে “সম্বোধনের পরিবর্বতন” ঘটেছে।
প্রথম আয়াতের ‘আল্লাহ তিনি, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যাক্তি (আদম) হতে সৃষ্টি করেছেন। এবং তার থেকেই তার স্ত্রীকে (হাওয়া) বানিয়েছেন। যাতে সে তার কাছে এসে শান্তি লাভ করতে পারে।’ অংশে সম্বোধন চলছিল আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালামের।
আর এই আয়াতেরই পরবর্তি অংশ ‘তারপর পুরুষ যখন স্ত্রীকে আচ্ছন্ন করল.... থেকে দ্বীতিয় আয়াতের শেষ পর্যন্ত সম্বোধন করা হয়েছে আদম সন্তানের মুশরিক স্বামী স্ত্রীদের।
.
সে মতে আয়াতদ্বয়ের তাফসীর হবে- আয়াতের প্রারম্ভে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন স্বীয় অসীম ও পরিপূর্ণ ক্ষমতার নিদর্শন হযরত আদম ও হাওয়ার জন্ম বৃত্তান্ত স্মরণ করিয়ে দিলেন। অর্থাৎ এটা আল্লাহরই একটি কুদরত, শুধু মাত্র এক ব্যাক্তি থেকে কতশত কোটি মানুষ জন্ম নিচ্ছে। আদম ও তার সন্তানরা দুনিয়াতেই যাতে পরম অপার্থিব সুখ শান্তি খুজে পায় এর জন্য সৃষ্টি করে দিলেন হযরত হাওয়া ও নারী জাতিকে। তাও আবার হযরত আদম আলাইহিস সালামের একটি অঙ্গ থেকে।
একজন পুরুষ জানে একটি নারী তার জন্য কত কল্যান জনক ও প্রশান্তিদায়ক।
এই অসীম কুদরতের দাবি ছিল- আদম সন্তানরা আল্লাহকে যেন পরিপূর্ণ মনে করে। তার সাথে কাউকে শরীক না করে। তার সামনে মাথা অবনত করে। তার কৃতজ্ঞতা জ্ঞ্যাপন করে।
.
কিন্তু হয়েছে এর উল্টোটা। ’সন্তান জন্মের ঘটনা’র মত আল্লাহর অতি অসিম ও মহান কুদরতকেও আদম সন্তানরা শিরকের মাধ্যম বানিয়ে ফেলেছে। যখন তাদের স্বামি স্ত্রীগণ পরস্পর সঙ্গমের ফলে সন্তান ভুমিষ্টের নিকটবর্তি হয় তখন তারা সন্তানের ত্রুটিমুক্ত হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে। কারণ ত্রুটিমুক্ত সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়া তাদের ক্ষমতার বাইরে।
তারপর আল্লাহ তাদের ত্রুটিমুক্ত সুস্থ সন্তান দান করলে তারা বলে ‘এই সন্তান ত অমুক বুজুর্গ দিয়েছে’ অথবা ‘তাদের সন্তানাদিকে পীর, পুরোহিতদের সিজদা করায়’ কিংবা ‘বন্দে আলী, আব্দে মানাফ, আব্দুল উজ্জা, গোলামে আহমাদ, আব্দুল হাসান, আব্দুল হাশেম, আব্দুর রাসূল’ ইত্যাদী নাম রাখার মাধ্যমে শিরকে লিপ্ত হয়।
.
উক্ত তাফসীরের মাধ্যমে বিষয়টি সুস্পস্ট হয়ে গেল যে, “তখন তারা আল্লাহ প্রদত্য নেয়ামতে অন্যদেরকে শরিক সাব্যস্ত করল।” আয়াতাংশে শিরকের সম্বোন্ধ অদৌ হযরত আদম ও হাওয়া আলাইহিমাস সালামের দিকে হবে না। বরং শিরকের সম্বোন্ধ হবে তার ইয়াহুদী, খৃষ্টান ও মুশরিক সন্তানাদির প্রতি।
সুতরাং ‘ইন্তিকাল’ তথা সম্বোধন পরিবর্তনের নীতি অনুসরণ করে আমরা আয়াতের যে ব্যখ্যা দিলাম এটাই মুহাক্কিকদের চুড়ান্ত বক্তব্য।
এতে আমাদের পিতা আদম আলাইহিস সালামের নিষ্পাপতার প্রতি কোন আঙুল উঠবে না।
আমাদের কৃত ব্যাখ্যার ব্যপারে ইমাম রাযী বলেন: এটাই বিশুদ্ধ ও চূড়ান্ত অভিমত।
.
কিন্তু এই আয়াতের ব্যখ্যায় মুফাসসিরগণ এক জাতীয় কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করে বিভিন্ন কৃত্রিমতার আশ্রয় নেন। ফলে আমাদের পিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েন।
সবচেয়ে বিশুদ্ধ ঘটনাটি:
প্রথম প্রথম আদম আলাইহিস সালামের কোন সন্তানই বাচত না। জন্মের পরেই মারা যেতে। এর ধারাবাহিকতায় হযরত হাওয়া আবার গর্ভধারণ করলেন। তখন শয়তান এসে বলল- এবারের সন্তান হলে নাম রাখবে ‘আব্দুল হারিস’ তাহলে বাচবে। কারণ শয়তানের নাম ছিল হারিস।
আমাদের পিতা-মাতা তাই করলেন। সন্তান জন্মালে নাম রাখলেন “আব্দুল হারিস” অর্থ হারিস (শয়তানের) বান্দা। সন্তানটি বেচে গেল।
মূলত ‘এবারের সন্তান বাচবে’ গায়েবের এই খবরটি শয়তান সংগ্রহ করে ফেলে। আর এটাকে সম্বল করেই আমাদের পিতা-মাতাকে শিরকে লিপ্ত করে।
.
এখন আয়াতাংশে “তখন তারা আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামতে অন্যদেরকে শরিক সাব্যস্ত করল।” শিরককারী হযরত আদম ও হাওয়া আলাইহিমাস সালাম হয়ে গেলেন।
এই ঘটনা কি সহীহ? চলুন দেখি মুহাক্কিকগণ কি বলেন-
• محمد الأمين الشنقيطي (١٣٩٣ هـ)، أضواء البيان ٢/٤٠١، جاء بنحو هذا حديث مرفوع وهو معلول
• ‏الذهبي (٧٤٨ هـ)، ميزان الاعتدال ٣/١٧٩، منكر
• ‏ابن كثير (٧٧٤ هـ)، البداية والنهاية ١/٨٩ ، روي موقوفا على الصحابي وهذا أشبه وهو الصواب والظاهر أنه تلقاه من الإسرائيليات
• ‏ابن حجر العسقلاني (٨٥٢ هـ)، تحفة النبلاء ١٤٢ ، لا يصح ولا يحسن فيه عمر بن إبراهيم فيه مقال، وإسناده منقطع وروي موقوفاً على سمرة
• المباركفوري (١٣٥٣ هـ)، تحفة الأحوذي ٨/٢٣ ، [فيه] عمر بن إبراهيم وثقه غير واحد من أئمة الحديث لكنه ضعيف في رواية الحديث عن قتادة وهذا الحديث رواه عن قتادة وفي سماع الحسن من سمرة كلام معروف
• الألباني (١٤٢٠ هـ)، الإيمان لأبي عبيد ٩٧ ، ضعيف
• الألباني (١٤٢٠ هـ)، ضعيف الجامع ٤٧٦٩ ، ضعيف
• الألباني (١٤٢٠ هـ)، السلسلة الضعيفة ٣٤٢ ، ضعيف
• الألباني (١٤٢٠ هـ)، ضعيف الترمذي ٣٠٧٧ ، ضعيف
• شعيب الأرنؤوط (١٤٣٨ هـ)، تخريج المسند ٢٠١١٧ ، إسناده ضعيف
• ابن عدي (٣٦٥ هـ)، الكامل في الضعفاء ٦/٨٧ ، [فيه] عمر بن إبراهيم عن قتادة مضطرب ومع ضعفه يكتب حديثه
• ابن القيسراني (٥٠٨ هـ)، ذخيرة الحفاظ ٤/١٩٧١ ، [فيه] عمر بن إبراهيم ضعيف
• ابن عدي (٣٦٥ هـ)، الكامل في الضعفاء ٤/٣٠٥ ، من حديث شعبة منكر لا أعرف
ইমাম জাহাবী বলেছেন - হাদিসটি মুনকার (অগ্রহনযোগ্য)।
ইবনু কাসীর বলেন - এটা সুস্পস্ট ইসরাঈলী রিওয়ায়াত।
বাদ বাকি সবাই ঘটানাটিকে যাঈফ (দুর্বল) বলেছেন। যা কোন ভাবেই দলিলযোগ্য নয়।
.
এটা ত গেল সব চেয়ে বিশুদ্ধ ঘটনার হুকুম। এখন এজাতীয় আরো কিছু ঘটনার হুকুম নকল করছি-
• ابن عثيمين (١٤٢١ هـ)، شرح البخاري لابن عثيمين ٦/٤٧٠ ، باطلة ولا تصح أبداً
• ابن عثيمين (١٤٢١ هـ)، شرح رياض الصالحين ٢/٤٧٨ ، هذه قصة مكذوبة وليست بصحيحة
• ابن عثيمين (١٤٢١ هـ)، مجموع فتاوى ابن عثيمين ٨٩٣/١٠ ، القصة باطلة
• ابن عثيمين (١٤٢١ هـ)، شرح مسلم لابن عثيمين ١/٤٢٥ ، هذه القصة ليست صحيحة إطلاقاً
• القرطبي المفسر (٦٧١ هـ)، تفسير القرطبي ٩/٤٠٩ ، نحو هذا مذكور في ضعيف الحديث
ابن عثيمين (١٤٢١ هـ)، شرح البخاري لابن عثيمين ٦/١٧٣ ، [رواية] موضوعة
এজাতীয় সব ঘটনাকে ইবনে উসাইমিন জাল, বাতিল, অশুদ্ধ বলে দিয়েছেন।
ইমাম কুরতুবী ত দ্যার্থহীন কন্ঠে বলে দিয়েছেন, এজাতীয় সব ঘটনা দুর্বল হাদিসে এসেছে।
.
পাঠক আপনিই বিচার করুন এধরণের জাল, দূর্বল ও অগ্রহণযোগ্য রিওয়ায়াত দিয়ে আল্লাহর নিজ হাতের সৃষ্ট, সায়্যিদুনা ওয়া আবুনাল মুকাররাম, হযরত আদম আলাইহিস সালামকে শিরকের মত চরম অপরাধে লিপ্ত করে কৃত্রিমতার আশ্রয় নেয়ার কি প্রয়োজন?
সুতরাং মুহাক্কিক উলামায়ে কিরাম যা বলেছেন একদম সঠিক বলেছেন।
ইমাম রাযী বলেন, এধরণের ঘটনার মাধ্যমে আয়াতের ব্যখ্যা করা চরম ভুল। এরপর তিনি যৌক্তিকভাবে ঘটনা গুলার উপর কঠিন আক্রমন করেছেন। আগ্রহী পাঠকগণ ইমাম রাযীর তাফসীরটি পড়ে দেখুন। ৪
কাজী বায়যাবী বলেন, এধরণের কিচ্ছা-কাহিনি আম্বিয়াগণের শানে মানায় না। ৫
ইবনে হাইয়্যান বলেন, এক্ষেত্রে আদম, হাওয়া ও শয়তানের মাঝে ঘটে যাওয়া মুখরচক কিছু ঘটনা বলা হয় যা কুরআন ও সহীহ হাদিস সমর্থন করে না। কাজেই এগুলাকে ছুড়ে ফেলা হবে। ৬
.
দুইটি ভুল নিরসন:
১. আশরাফ আলী থানভী রহিমাহুল্লাহ লিখেন, এই ঘটানাটি সহীহ। কথাটি সঠিক নয়। ৭
২. আল্লামা শাওকানী রহিমাহুল্লাহ এই ঘটনার মাধ্যমে আয়াতের ব্যাখ্যা করাকে সহীহ মনে করেছেন। এটাও ঠিক নয়। ৮
.
আয়াত থেকে শিক্ষা:
(এক) সন্তানদের শিরকী অর্থযুক্ত নাম রাখা। যদিও উদ্দেশ্য মূলক নয়। এধরণের নাম মুশরিকদের প্রথা হওয়ার কারণে মহা পাপ।
(দুই) শিরকযুক্ত নাম রাখাও এক প্রকারের শিরক।
(তিন) সন্তানদের নাম রাখার ক্ষেত্রে কৃতজ্ঞতাসূচক পন্থা অবলম্বন করা। একারণেই হুজুর ﷺ আব্দুল্লাহ্, আব্দুর রহমান ইত্যাদী নাম পছন্দ করতেন।
.
আলহামদুলিল্লাহ। লিখাটি সম্পূর্ণ হল। আল্লাহ তাআলা ব্যপক কবুলিয়্যাত দান করুক। ভুলত্রুটি ক্ষমা করে দিক। আমীন।।
---------------------
১. তাওযীহুল কুরআন - শায়খুল ইসলাম তাকী উসমানী ১/
২. তাফসীরে সা'দী [দারুস সালাম] ৪৫৪
৩. তাফসীরে কাবীর ১৫/৯১
৪. তাফসীরে কাবীর ১৫/৯০
৫. তাফসীরে বায়যাবী ৩/৪৫
৬. আল বাহরুল মুহীত ৪/৪৩৮
৭. বয়ানুল কুরআন [উর্দু] ২/৭৬
৮. ফাতহুল কাদীর [দারুল মারিফা] ৫১৮

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: কিন্তু যিশুর জন্ম নিয়ে খটকা আছে।
বড্ড গোলমেলে।

২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:২১

ডিগবাজি বিশারদ বলেছেন: আমি আসলে কমেন্টের উত্তর দিতে পারছি না। তাই সরাসরি কমেন্ট করলাম।
@রাজিব নূর ভাই! আয়াত বা হাদিস নিয়ে এধরনের খটা জন্মেছে?
যদি তাই হয় তাহলে আমাকে একটু বলুন। একটু তাহকীক করি।

৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: ডিগবাজি বিশারদ বলেছেন: আমি আসলে কমেন্টের উত্তর দিতে পারছি না। তাই সরাসরি কমেন্ট করলাম।
@রাজিব নূর ভাই! আয়াত বা হাদিস নিয়ে এধরনের খটা জন্মেছে?
যদি তাই হয় তাহলে আমাকে একটু বলুন। একটু তাহকীক করি।


যিশুর অনেক ক্ষমতা।
সে অন্ধকে ভালো করে দেন। অসুস্থ রোগীকে ভালো করে দেন। এমন কি মৃত ব্যক্তিকে জীবত করেন। ব্যাপার গুলো হাস্যকর। অথচ তাকে যখন নির্মম ভাবে হত্যা করা হলো- উনি তখন কিছুই করতে পারলেন না!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.