নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইল্লু

ইল্লু › বিস্তারিত পোস্টঃ

Ovid এর Art of love (ভালবাসার ছলা কলা)

১১ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:১১

(

পুবলিয়াস ওভিডাস নাসো(ওভিড)
জন্মস্থানঃসুমিলো,রোম
সময়কালঃখ্রীষ্টপূর্ব ৪৩-১৭/১৮ খৃষ্টাব্দ
লেখাঃমেটামরফেসিস,আমোরেস আরও অন্যান্য

২)
পুরুষেরা স্বভাবজাত ভাবেই একটু বোকা,সব কিছু বিশ্লেষণ করে আসলটা খুঁজে বের করতে তাদের বেশ বেগ পেতে হয়।মেয়েরা আবার জন্মগতভাবেই একটু খেলা,ছলনার ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়।পুরুষেরা মেয়েদের যদি খুব একটা প্রাধান্য না দিতো,তবে মেয়েরা হয়তো পুরুষের পায়ের কাছে ভক্তের মত বসে থাকতো।শিশির ভেজা মাঠে মেয়েরা নম্র সুরে খোঁজে ভালবাসা রোগের ষাঁড়,তাকিয়ে থাকে ছুটে আসা লাগাম হারানো ঘোড়ার জন্যে।পুরুষদের ভালবাসার রোগটা অত চোখেমুখে ধরা পড়ে না,আমরা চেষ্টা করি আবেগকে একটা বাঁধনে ধরে রাখার জন্যে,বাঁধাধরা একটা শালীনতার মধ্যে।।
যদি আমরা মিলাটেসের মেয়ে বায়াবলিসের কথা বলি,জমজ ভাই কুনাসের অবৈধ প্রেমের উন্মাদনায় শেষমেষ লজ্জায় আত্মহত্যা করে।বায়াবিলিস প্রথমে ভাবতো কুনাসের জন্যে তার জন্যে যে আর্কষন সেটা স্বাভাবিক একটা সর্ম্পক।কুনাসের শারীরিক আর্কষন উপেক্ষা না করতে পেরে ক্রীতদাসীর হাতে একটা চিঠি লেখে পাঠায় কুনাসের কাছে,চিঠিতে বায়াবিলিস দেবতাদের মধ্যে অজাচারের কথা ব্যাখা করে,বোঝানোর চেষ্টা করে ঐ সর্ম্পকে কোন নোংরামি নাই।তবে কুনাস নিজেকে রক্ষা করার জন্যে ঘর ছেড়ে পালায়,আর বায়াবিলিস তাকে খুঁজতে খুঁজতে পাগল হয়ে আত্মহত্যা করে।আর মাইররার অবৈধ প্রেম আরও অবিশ্বাস্য।বাবা সায়নিরাসের প্রেমে অন্ধ মাইররা চক্রান্ত করে তাকে নেশাগ্রস্ত করে তার সাথে যৌনসঙ্গম করে।গর্ভবতী মাইররার সবকথা জানার পর সায়নিরাস তলোয়ার নিয়ে তাকে হত্যা করতে গেলে ছুটে বেড়াচ্ছিল বনে জঙ্গলে মাইররা।মাইররা অসহায় ভাব দেখে দেবতারা্ করুনা করে তাকে গাছে রুপান্তরিত করে,আর জন্ম হয় গাছের আকারে এডোনিসের,মাইরার চোখের জল গাছের সুবাস হয়ে আজও বলে যাচ্ছে গল্পটা।আবেগের স্রোতে অন্ধ হয়ে আঁটকে রাখতে পারেনি তারা নিজেদের।
আইডার উপত্যকায় একটা সাদা ষাঁড় ঘুরে বেড়াতো,যার সৌন্দর্যের কোন তুলনা ছিল না।তার দুই শিং এর মাঝে ছিল সুন্দর কালো গোল একটা চাকতি,ধবধবে সাদা চামড়ার সৌন্দর্যে সেটা আরও সুন্দর হয়ে ফুটে উঠতো।ষাঁড়টা যখন গা দোলাতে দোলাতে হেঁটে যেত,গনাসাস আর সিডোনিয়ার বাছুরগুলো অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো তার একটু ছোঁয়া পাওয়ার আশায়।তবে বাছুরদের কথা থাক,যাদুতে অভিশপ্ত সূর্য দেবতা হেলিয়াসের মেয়ে পাসিফেও পাগলের মত ভালবাসতো ষাঁড়টাকে,দেবী আফ্রোদাইতির অভিশাপের ফল সেটা।পাসিফের স্বামী মিনোসকে বলির জন্যে সমুদ্র দেবতা পসাইডন ষাঁড়টা উপহার দেয়।তবে বলি দেয়া তো হয়নি,পাসিফে ঐ ষাঁড়ের যৌন আবেদনে এতই উন্মাদ ছিল যা,কামনা মেটানোর জন্যে সে,নামকরা স্থপতি ডায়েডিলাসের সাহায্য নেয় বিশেষ আয়োজন করার জন্যে।বিশেষভাবে তৈরী করা গোলকধাঁধাঁয় থাকতো ষাঁড় মিনোস,আর পাসিফে প্রাসাদ থেকে লুকিয়ে যেত অভিসারে গোপন রাস্তা দিয়ে।ক্রীটের লোকজন,ধনী,
ক্ষমতাশালীরা সবাই যদিও মিথ্যা বানিয়ে বলতে বেশ ওস্তাদ,তবে কাহিনীটা কেউ কোনদিন অস্বীকার করেনি।প্রেমে অন্ধ পাসিফে নিজের হাতে ছিঁড়ে আনতো সবুজ ঘাস,নরম গাছের পাতা,গাছের কচি মিষ্টি ডাল,ভালবাসার ষাঁড়ের জন্যে।পাহাড়ে,উপত্যকায় ছুটে যেতে যেতে পাসিফের দৃষ্টিতে থাকতো ষাঁড় মিনোসের চেহারা।পাসিফের সবসময় ভাবতো এমন যদি হতো স্বামী,মানুষের এলাকা ছেড়ে সে হতে পারতো গরুর দলের একজন।তবু শুধু হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছু হয়নি,আয়নায় দেখতো বদল হয়নি কিছুই,আর একজন মেয়েমানুষ ছাড়া,সে আর কিছু না।পাসিফে অবৈধ প্রেমের স্বপ্নের তাড়নায় ছূটে যেত বরফে ঢাকা উপত্যকায়,যদিও তা ছিল তার স্বামী ক্রীটের রাজার জন্যে খুবই অপমানজনক,তবু তার তেমন কিছু করার কিইবা ছিল।রাতে পাসিফে স্বামীকে ফেলে ছুটে যেত পাহাড় জঙ্গল পার হয়ে ষাঁড় মিনোসের সাথে যৌনমিলনের আশায়,অনেকটা যেন পাগল বাচ্চান্ত খুঁজে বেড়াচ্ছে বাকুসের সঙ্গ পাওয়ার জন্যে।ঈর্ষায় জ্বলে যেত পাসিফে যখন দেখতো কোন বাছুর মিনোসের সাথে সঙ্গমের জন্যে তাকে প্রলুদ্ধ করার চেষ্টা করতো।রাগে পাসিফে বাছুরটাকে কেটে টুকরো টুকরো করতো না হয় লাঙ্গল কাঁধে দিয়ে লাগাতো চাষের কাজে।এ ভাবে অনেক বাছুর রানী পাসিফের ঈর্ষার শিকার হয়ে দেবতাদের বলি হয়ে শেষ হয়ে গেছে,শুধু তাই না পাসিফে রাগ কমানোর জন্যে বাছুরের মৃতদেহের চোখে আঙ্গুল দিয়ে হাসতো,উল্লাসে।পাসিফে স্বপ্ন দেখতো সে বদলে গেছে ইউরোপায়-যাকে দেবতাদের রাজা জুস সাদা ষাঁড়ে রূপান্তরিত করে নিয়ে গেছে তার প্রেমের খেলার শিকার হিসেবে,না হয় হয়তো সে হয়ে গেছে আইও যাকে জুস,বৌ হেরার ঈর্ষার শিকার থেকে উদ্ধার করার জন্যে বদলে দেয় একটা বাছু্রে।পাসিফের আবেগ যখন সব সীমানা ছাড়িয়ে গেছে,তখন তার এক সহকারীকে দিয়ে মেপেল কাঠের ষাঁড়ে নিজেকে লুকিয়ে ছুটে যেত রমণের খেলায়।মিনোসের সাথে যৌনখেলার ফসল মিনোটারের সহ্য হয়নি পাসিফের এই লাম্পট্য,আর তার ফলাফল কার না জানা।অর্ধেক মানুষ অর্ধেক ষাঁড় মিনোটাসের চেহারা ছিল বীভৎস-গোলকধাঁধাঁর মধ্যে লুকিয়ে থাকতো সে আর উৎর্সগ হিসেবে রেখে যাওয়া কিশোর কিশোরীরা ছিল তার খাবার।শেষমেষ থিসিয়াসের হাতে নিহত হয় মিনোটার।আবেগে ভেসে যাওয়ার আরেক উদহারণ।
ক্রীটের আরেকজন মেয়ের কথা মনে পড়ে-অলিম্পিয়ার রাজা থাইসটেসের প্রেমে এতই পাগল ছিল,তার কামনার জন্যে সে সূর্য দেবতা ফোবিসকে(এপেলোকে)বাধ্য করতো যেতে রাতের অন্ধকারে।ক্রীটের রাজা মিনোসের কথা যদি বলি,মিনোস যখন মেগারা দখল করে নাইসাসের মেয়ে স্কাইলা তাকে দেখে এতই পাগল হয়ে যায়,বশীভুত করার জন্যে বাবার যাদুর সোনালী চুল কেটে মিনোসের হাতে মেগারা তুলে দিতে দ্বিধা করেনি,নাইসাস দুঃখে নিজেকে বাজপাখীতে রুপান্তরিত করে।মিনোস যখন তাতেও তার আয়ত্বে আসেনি,স্কাইলা সাঁতার কেটে ছুটে যায় মিনোসের কাছে,বাজপাখী নাইসাস যদিও তাকে বাঁধা দেয়।আবেগের ঝড়ের আরেক উদহারণ।
আর্টিয়াসের ছেলে আগামেনন যুদ্ধ ক্ষেত্রে জয়ী হয়ে এসেও শেষে বৌ এর বিশ্বাসঘাতকতায় নিহত হয় তার প্রেমিক আগেস্থিটিসের হাতে।আগামেনন যখন ট্রয়ের যুদ্ধে ব্যাস্ত,তখন তার বৌ ক্লেমেন্সট্রা চুপি চুপি প্রেম আরম্ভ করলো আগেস্থিটসের সাথে।আর ক্লেমেন্সট্রার প্রেমে ক্লেমেন্সট্রা এতই ভেসে গেছে সে চক্রান্ত করে আগামেন্ন করে আর আগাস্থিটিস হলো মাইসেনার রাজা।পরে আগামেননের ছেলে তার বাবার খুনের প্রতিশোধ নিতে ভুলেনি।
মেডেয়ার কথাটাও বলা দরকার,জেসনের প্রেমে পাগল মেডেয়া নিজের সন্তানদের খুন করে দেবী হেরার মন্দিরে পুঁততে দ্বিধা করেনি।তার কাছে ওটা ছিল জেসনের প্রতি তার প্রতিশোধ।মেডেয়ার ভালবাসা আর যাদুর সাহায্যে জেসন সোনালী ভেড়ার লোম উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।করিনিথে পৌঁছানোর সেখানকার রাজকন্যা ক্রেয়ুসার প্রেমে পড়ে জেসন আর মেডেয়াকে,তার সন্তানদের সহ নির্বাসনে পাঠায়।মেডেয়া থেমে থাকেনি বিষ মাখানো উপহার দিয়ে শুধু ক্রেইয়ুসাকে খুন করে ক্ষান্ত হয়নি,খুন করে জেসনের ঔরশের সন্তানদেরও।

মেয়েদের ভালবাসার প্রতিশোধের কাহিনীর শেষ নাই,মেয়েদের প্রতিশোধ পুরুষদের চেয়ে অনেক ভয়ংকর,বলা যায় হয়তো হাজারো গুনে বেশী।তাই আমার উপদেশ ভালবাসা্র মানুষটার বিশ্বাস নষ্ট করো না সহজে।এমন কোন মেয়ে আছে যে পচ্ছব্দ করে না প্রেম নিবেদন,সম্মতি দিক বা না দিক,হয়তো আছে হাজার দশের মধ্যে একজন যে জড়ায় না প্রেমের খেলায়।।আর সে যদি তোমাকে প্রত্যাখান করেই তাতে তোমার ক্ষতিটা কোথায়,আর তোমাকে প্রত্যাখান করার তার কারণ কিইবা হতে পারে?নতুন আনন্দ কে না খুঁজে পেতে চায়?আমরা তো সবসময়ই অন্যদের তাকিয়ে দুঃখ করি,মনে মনে ভাবতে কি ভাল লাগে না,ঐ সুন্দরী যদি আমার প্রেমিকা হতো?
সবচেয়ে ভাল সিদ্ধান্ত হলো,পচ্ছন্দের মেয়েটার চাকরানীর সাথে বন্ধুত্ব করা,তার সাহায্য নিঃসন্দেহে তোমাকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে।অবশ্য এটাও জানা দরকার,কাজের মেয়ের সাথে মনিবের সর্ম্পকটা কেমন,জানার চেষ্টা করবে তার পচ্ছন্দের অপচ্ছন্দের বিষয়গুলো।তাই আমার উপদেশ চেষ্টা করবে মানসীর কাজের মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব করতে,দেখবে অনেককিছু সহজ হয়ে গেছে তোমার জন্যে।কাজের মেয়ের কাছ থেকেই জানতে পারবে তোমার পচ্ছব্দের মেয়েটার সাথে কথা বলার শুভসময় কোনটা,সময়টা ভাল হবে প্রেম নিবেদন করার।কখন সেই সময় যখন সে আনন্দে,হাসিতে ছুটে বেড়ায়,বসন্তের প্রজাপতির মত ছন্দে ছন্দে,সেটাই তো সময় যখন অজান্তেই তার হ্রদয়ে দাগ কাটবে তোমার কথাগুলো।

ইলিয়নের(প্রতিষ্ঠাতার নামে ট্রয়ের পুরোনো নাম)অধিবাসীরা গ্রীকদের আক্রমনে রাগে দুঃখে অসহায় হয়ে কাঁদছিল,আবার আনন্দে মত্ত হয়ে তাদের ঘোড়া এনে নিজেদের বিপদ ডেকে আনতে তাদের বেশী সময় লাগেনি।একটা ভাল সময় হলো যখন তোমার মানসী কারও সাথে যুদ্ধে হেরে মানসিকভাবে অশান্ত,অস্থির হয়ে আছে।সম্ভব হলে ভাব দেখাবে,তুমিই যেন তার প্রতিশোধের বিশেষ অস্ত্রটা।কাজের মেয়েটাকে বলে রাখবে,সকালে চুল বাঁধার সময় কথায় কথায় যেন বলে দেয় তুমিই সেই মানুষ যে তার সর্বস্ব নিয়ে অপেক্ষা করে আছে তার জন্যে।একটু বানিয়ে বলতে যেন দ্বিধা না করে,তোমার সাহস,প্রাচুর্যতার কথা,আর প্রস্তত থাকবে যে কোন সময়,কেননা ভালবাসার রাগ ঠান্ডা হতে খুব একটা সময় নেয় না।

আর যদি দেখ কাজের মেয়েটা একটু বেশ চালাক চতুর,তা হলে তোমার প্রথম কাজের মেয়েটার মন জয় করা!নিঃসন্দেহে একটা দূরুহ-দুর্গম পথ!অবশ্য অনেক সময় তাতে ঈর্ষা,হিংসায় তোমার আসল উদ্দেশ্যটাও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।হতে পারে কাজের মেয়েটা তোমার মানসীর কাছে সুপারিশ করতে পারে তোমার জন্যে,
আবার এমনও হতে পারে সে নিজেই তোমার প্রেমেও মত্ত হয়ে গেল।তবু তোমার চেষ্টা করে দেখা উচিত কি হয়?আমার উপদেশ হলো বেশী বিশ্লেষণ না করে উপদেশ মত যদি সবকিছু কর,ঠিকই তোমাকে জায়গা মত পৌঁছে দিব।তবে এমন যদি কাজের মেয়ের শরীর সৌন্দর্য উপেক্ষা করা তোমার পক্ষে সম্ভব না হয়,তবে অন্ততঃ মানসীর মনটা জয় করো প্রথমে,তারপর না হয় যদি একেবারেই মন বেসামাল হয়ে থাকে জড়িয়ে পড়ো দাসীর সাথে।তবে শুধু খেলার ছলে ছুটে যেও না এখানে ওখানে।শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছানোই তোমার লক্ষ্য,না হলে তো তুমি হেরেই গেলে।আর এমন যদি মেয়েটা অন্য কারও প্রেমে মত্ত,তাহলে হয়তো সে তোমার অযথার খেলায় মাতাল হবে না কোনভাবেই।ভাঙ্গা ডানার পাখী আর কত উঁচুতেই বা উড়ে যাবে।যে মাছ বড়শিতে আটকায় তার সাথেই আলাপ করা সম্ভব।তাই বলছি আবার এটা আমার উপদেশ সম্পূর্নভাবে শরীর খেলার সাথী না করা পর্যন্ত ক্ষান্ত দিও না কোন ভাবেই।হয়তো ও ভাবেই তোমার মানসীর সাথে যোগাযোগ হবে শেষ পর্যন্ত।

অনেকে ভাবে ঋতু পরিবর্তনটা শুধু জেলে আর কৃষকদের জানা দরকার,যা সম্পুর্ন ভুল।একটা সময় আছে ফসলের জন্যে বীজ বপণের,একই ভাবে ভালবাসা নিবেদনের ও একটা সময় আছে।দশ ভাগের নয় ভাগটাই নির্ভর করে সেই বিশেষ সময়টার জন্যে,সেই ঘনিষ্ঠ দূর্বল মুর্হুতটা।

তার জন্মদিনটা ভুলে যেও না,ভুলে যেও না নতুন বছরের অনুষ্ঠানের কথা।সার্কাসে থাকলে,বিশেষ ভাল কোন অনুষ্ঠানের মাঝের সময়টাও ঠিক না,কোন কিছু বলার।জোয়ারে ভেসে যাওয়া,একটা ছোট্ট কাঠের টুকরা ধরে নিজেকে বাঁচাতে হবে তখন।সব চেয়ে ভাল সময় যে দিন রোমানরা পালন করে আলিয়ার জলে রোমান সৈন্যদের রক্ত আহুতির গল্প কথা,ইতালী থেকে আসা গাউলদের ক্লসিয়াম শহরের অবরোধ দমন করার পর,গাউলদের রোম আক্রমনে রোম রক্ষার দিন,না হলে শনিবারে যে দিন সিরিয়ান ইহুদীরা কাজ করে না।অন্ততঃ এটুকু মনে রাখবে ঐ দিনগুলোতে যাবে না পচ্ছন্দের মেয়েটার কাছে যেমন,যেও না জন্মদিন বা অন্য কোনদিন যখন সে তোমার কাছে উপহার আশা করে।ভুলে গিয়ে দীর্ঘশ্বাস বা ভান করলে খুব একটা লাভ হবে না,কিছু একটা উপহার দিতেই হবে।মেয়েদের জানা আছে নির্বোধ প্রেমিকদের নিয়ে কিভাবে খেলা করতে হয়।দেখবে সময়মত ঠিকই ফেরীওয়ালা এসে গেছে,আর তোমার মানসী ঠিকই খুঁজে পাবে তার পচ্ছন্দের জিনিষটা।যতই বোঝানোর চেষ্টা করো,আজেবাজে জিনিষ কিনে লাভ নেই,মেয়েটা বলবে ওটাই তার পচ্ছন্দ।শুধু কাগজে লিখে দামটা দিতে হবে,আর তোমার মনে হবে লেখাপড়া না জানলেই ভাল ছিল।মনে রেখ প্রতিবছর একটা জন্মদিন আসবে,হয়তো তোমার মানসীর কোন কিছু পাওয়ার জন্যে একটা জন্মদিন তৈরী হবে।দেখবে অনেকসময় তোমার পচ্ছন্দের মেয়েটা এসে বলবে তার এটা বা ওটা হারিয়ে গেছে,কান্নায় চোখটা লাল হয়ে থাকবে,উত্তরে শুনবে তার সবচেয়ে পচ্ছন্দের কানের দুলটা হারিয়ে গেছে।কি অদ্ভুত একটা খেলা,মেয়েদের তাই না বন্ধু,আমার!তোমার কাছে টাকা ধার চাওয়াতে হয়তো দ্বিধা করবে না অনেকে,আর ঐ টাকা ফিরে পাওয়ার কথা বলে তোমাকে দুঃখ দিয়ে কি লাভ!দশ মাসে দশটা ভিন্ন ভিন্ন জিভ থাকলেও আমি হয়তো বলে শেষ করতে পারতাম না মেয়েদের এই ছলনার গল্প।

আমার উপদেশ হলো প্রথমে একটা চিঠি লেখ।বল তার জন্যে কি ভাবে পাগল তুমি,এমন কি আকুতি মিনতি করে মনের ভাষাটা নিবেদন করলেও কোন ক্ষতি নাই।প্রিয়াম আকিলিসের কাছে হেক্টরের মৃতদেহ নেয়ার জন্যে নিবেদনের কথা কার না জানা,প্রথমে না মেনে নিলেও ট্রয়ের বুড়ো রাজা প্রিয়াম আকিলিসকে তার বাবার কথা মনে করিয়ে দিলে,আকিলিস সেটা উপেক্ষা করতে পারেনি,সময়মত উপস্থাপনা।আর যাই হোক রাজী হবে যে কোন কথায়!শুধু রাজী হতে আর দোষ কোথায়।কথাবার্তায় তো কোটিপতি হতে দোষ কোথায়?অনেক কিছুই করা সম্ভব,শুধু আশা দিয়ে।হয়তো হতে পারে সে একজন ছলনাময়ী দেবী,যে তোমার কাজে আসবে।আবার এমনও হতে পারে অনেক উপহার দেয়ার পর সে হয়তো তোমাকে নোংরা কাগজের মত ছুঁড়ে ফেলতে পারে।এটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ যেন তাকে সবসময় ভাবতে দিবে নতুন কোন একটা উপহার তার জন্যে অপেক্ষা করছে,সব সময়।

কে না জানে কৃষক যে সবসময় অনুর্বর জমিতে সার দিয়ে যায় তার ফলটা কি পায়?একজন জুয়াড়ী তার লোকসান ফিরে আনার জন্যে জুয়া খেলে যায় তার ফলটাই বা কি হয়?আমার মনে হয় একজন পুরুষের সবচেয়ে বড় দক্ষতা কোন উপঢৌকন দেয়া ছাড়া কোন মেয়ের মন জয় করা।ও ভাবে কাউকে জয় করার দক্ষতা যদি তোমার থাকে,তা হলে অবাক হয়ে দেখবে তোমাকে খুশী করার জন্যে তোমার মানসীর কোন কার্পন্য হবে না কোন সময়।তাই আবার বলছি চিঠিটা যখন লিখবে সেটা যেন ভঁরা থাকে মধুর সুরে আর আগামীর অনেক নতুন আশায়।দেখবে ওটাই তোমাকে সোজা নিয়ে যাবে প্রেমিকার মনের গভীরে।ডেলপেসোতে দেবতা আর্টিমেসে মেলায় সিডিপেকে দেখে তার প্রেমে পড়ে যায় আকোনিটিয়াস আর সিডিপে ছলে বলে কৌশলে যে কোনভাবে হোক তাকে পাওয়ার জন্যে সে কার্পন্য করেনি। জলপরী সিডিপে একটা আপেলে লেখা আকোনটিয়াসের কটা কথা দেখে পড়ার চেষ্টা করতে গিয়ে বেশ জোরে জোরেই পড়লো ,‘দেবতা আর্টেমিসের সামনে এটা আমার প্রতিজ্ঞা আমি আকোনটিয়াস ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবো না’।আপেলটা তুলে নেয়ার ভুলটা বুঝতো পারলো সিডিপে,কিন্ত দেরী হয়ে গেছে তখন,নিজের কথায় নিজেই আটকা পড়ে গেছে সে,
লেখাগুলো জোরে জোরে পড়ায় সেটাই তার প্রতিশ্রুতি হয়ে দাঁড়ালো।আমার বন্ধুরা-শিল্প সংষ্কৃতি নিয়ে শুধু নাড়াচাড়া না একটু জ্ঞান থাকলে সেটা নিঃসন্দেহে অনেক সাহায্য করে।

শুধু বিচারক,সিনেটার আর নামকরা লোকজন কথায় ভাষায় মানুষকে বিচলিত করার ক্ষমতা রাখে না,তুমিও হতে পার সেই দলের একজন।তবে একটু সাবধান থাকবে খুব সহজেই নিজের ক্ষমতা দেখানোর জন্যে উত্তেজিত হয়ে পড়ো না।প্রেমিকাকে যখন চিঠি লিখবে,এমন না মনে হয় যে কোন সভায় বক্তৃতা দেয়া হচ্ছে।কথা হবে সাজানো মধুর যেন তুমি বসে তার সাথে কথা বলছো,বেশী কাব্য ভণিতা শেষমেষ ক্ষতিই করবে তোমার প্রেমের খেলায়।যদি দেখ চিঠিটা ফেরত এসেছে আর খোলাও হয়নি,হতাশ হবে না কোনভাবে,
চালিয়ে যাবে তোমার প্রয়াশ।বড্ড বেমানান ষাঁড়কেও লাঙ্গল চালানো শেখানো যায়,দুরন্ত বেসামাল
ঘোড়াটাকেও শেখানো যায় রথটানা।এমন কি লোহাও ক্ষয়ে যায় ঘর্ষনে ঘর্ষনে,শক্ত মাটিও চাষে নরম হয়,ফসলের উপযোগী হয়।জলের স্রোত ভেঙ্গে দেয় শক্ত পাথর,ঠিক একই ভাবে তুমি যদি ধৈর্য নিয়ে এগিয়ে যাও,স্পার্টার আইকারিয়াসের সুন্দরী মেয়ে পেনিলোপকে জয় করতেও বেগ পেতে হবে না।ট্রয় যখন অবরোধে ছিল,প্রথম দিকে তারা হার না মানলেও,কিন্ত সেই উৎসাহ শেষ পর্যন্ত টিকেনি।তোমার চিঠিটা পড়ে সে যদি উত্তর না দিয়ে থাকে,তাতে কি যায় আসে?আবার তাকে চিঠি লেখ,সব কিছুর একটা সময় আছে।হয়তো এমনও হতে পারে সে তোমাকে আর চিঠি না লেখার জন্যেও বলতে পারে।শুধু তাই না এমনও হতে পারে তার সম্পুর্ন আদেশ না মেনে নিলে সে হয়তো রাগে দুঃখে অস্থির হয়ে যেতে পারে।ছুটে যাও,পূর্ন হবে তোমার মনের ইচ্ছা।

যদি দেখ সে ময়লা ফেলতে বাইরে গেছে,কাছাকাছি গিয়ে আলাপ আরম্ভ কর,কথা বলতে এমন ভাব দেখাবে যেন আশেপাশে কেউ শুনে ফেলছে।যদি দেখ কোন এক বাজার থেকে সে বের হয়ে আসছে,হেঁটে হেঁটে তার কাছে যাও।যদি দেখ সে গোলাপী পোষাক পরে নাটকে গেছে,তুমিও চলে যাবে সেখানে।তার সুন্দর কাঁধের প্রশংসা করবে,আর তোমার চোখ দুটো অবাক হয়ে হারিয়ে যাবে তাকে দেখে।যে পুরুষ অভিনেতা মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করছে তাকে হাততালি দিতে ভুলবে না,আর নাটকের প্রেমের অভিনেতা যখন ষ্টেজে আসে,হাততালি দেবে আরও জোরে।তোমার মানসী বসলে তুমিও বসে থাকবে,দাঁড়ালে তুমিও দাড়াবে,হাজারো কাজ তোমার থাক না পড়ে।

কোনদিন তোমার চুল বাহারে কোকড়া করো না,মুখে পাউডার দিবে না কখনও।ও গুলো রংঢং মানায় পুরোহিতদের,যারা ফিরিজিয়ান সুরে প্রকৃতির দেবী সিভেলের স্ততি করে।সাদামাটা পোশাক পরবে,তুমি তো একজন পুরুষ।এথেন্সের বীর,রাজা থিসিয়াসের ক্রীটের সুন্দরী রাজকুমারী আরিয়াডানের মন জয় করার পোষাক আশাক প্রসাধনের দরকার হয়নি।তার বীরত্বের খ্যাতিই ছিল যথেষ্ট,আরিয়াডানের সোনার সুতা দিয়েই অর্ধেক মানুষ অর্ধেক ষাঁড় মিনোটাসকে হত্যা করার পর গোলক ধাঁধাঁ থেকে বের হয়ে যেতে পারে থিসিয়াস।ক্রীটের আরেক রাজকুমারী মিনোসের মেয়ে ফায়েডারা তো সাধারন হিপ্পোলাইটাসকে দেখে পাগল হয়ে গেল,সে আর যাই হোক ফুলবাবু ছিল না।পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন,দাঁতটা যেন পরিষ্কার থাকে,পায়ের চেয়ে বড় জুতা পরো না দেখানোর জন্যে।চুল এলোমেল রেখ না,দাঁড়ি থাকলে একটু ছেঁটে সাজাতে দোষ নাই।নখগুলোও সুন্দর করে কাটবে।আর যাই হোক সুবাসে আকাশ ছোঁয়া হবে না কখনও।সুবাস সুগন্ধির ব্যাপারটা মেয়েদের আর সমকামীদের জন্যেই ছেড়ে দাও।


০০০০০



(২)
পুরুষেরা স্বভাবজাত ভাবেই একটু বোকা,সব কিছু বিশ্লেষণ করে আসলটা খুঁজে বের করতে তাদের বেশ বেগ পেতে হয়।মেয়েরা আবার জন্মগতভাবেই একটু খেলা,ছলনার ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়।পুরুষেরা মেয়েদের যদি খুব একটা প্রাধান্য না দিতো,তবে মেয়েরা হয়তো পুরুষের পায়ের কাছে ভক্তের মত বসে থাকতো।শিশির ভেজা মাঠে মেয়েরা নম্র সুরে খোঁজে ভালবাসা রোগের ষাঁড়,তাকিয়ে থাকে ছুটে আসা লাগাম হারানো ঘোড়ার জন্যে।পুরুষদের ভালবাসার রোগটা অত চোখেমুখে ধরা পড়ে না,আমরা চেষ্টা করি আবেগকে একটা বাঁধনে ধরে রাখার জন্যে,বাঁধাধরা একটা শালীনতার মধ্যে।।
যদি আমরা মিলাটেসের মেয়ে বায়াবলিসের কথা বলি,জমজ ভাই কুনাসের অবৈধ প্রেমের উন্মাদনায় শেষমেষ লজ্জায় আত্মহত্যা করে।বায়াবিলিস প্রথমে ভাবতো কুনাসের জন্যে তার জন্যে যে আর্কষন সেটা স্বাভাবিক একটা সর্ম্পক।কুনাসের শারীরিক আর্কষন উপেক্ষা না করতে পেরে ক্রীতদাসীর হাতে একটা চিঠি লেখে পাঠায় কুনাসের কাছে,চিঠিতে বায়াবিলিস দেবতাদের মধ্যে অজাচারের কথা ব্যাখা করে,বোঝানোর চেষ্টা করে ঐ সর্ম্পকে কোন নোংরামি নাই।তবে কুনাস নিজেকে রক্ষা করার জন্যে ঘর ছেড়ে পালায়,আর বায়াবিলিস তাকে খুঁজতে খুঁজতে পাগল হয়ে আত্মহত্যা করে।আর মাইররার অবৈধ প্রেম আরও অবিশ্বাস্য।বাবা সায়নিরাসের প্রেমে অন্ধ মাইররা চক্রান্ত করে তাকে নেশাগ্রস্ত করে তার সাথে যৌনসঙ্গম করে।গর্ভবতী মাইররার সবকথা জানার পর সায়নিরাস তলোয়ার নিয়ে তাকে হত্যা করতে গেলে ছুটে বেড়াচ্ছিল বনে জঙ্গলে মাইররা।মাইররা অসহায় ভাব দেখে দেবতারা্ করুনা করে তাকে গাছে রুপান্তরিত করে,আর জন্ম হয় গাছের আকারে এডোনিসের,মাইরার চোখের জল গাছের সুবাস হয়ে আজও বলে যাচ্ছে গল্পটা।আবেগের স্রোতে অন্ধ হয়ে আঁটকে রাখতে পারেনি তারা নিজেদের।
আইডার উপত্যকায় একটা সাদা ষাঁড় ঘুরে বেড়াতো,যার সৌন্দর্যের কোন তুলনা ছিল না।তার দুই শিং এর মাঝে ছিল সুন্দর কালো গোল একটা চাকতি,ধবধবে সাদা চামড়ার সৌন্দর্যে সেটা আরও সুন্দর হয়ে ফুটে উঠতো।ষাঁড়টা যখন গা দোলাতে দোলাতে হেঁটে যেত,গনাসাস আর সিডোনিয়ার বাছুরগুলো অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো তার একটু ছোঁয়া পাওয়ার আশায়।তবে বাছুরদের কথা থাক,যাদুতে অভিশপ্ত সূর্য দেবতা হেলিয়াসের মেয়ে পাসিফেও পাগলের মত ভালবাসতো ষাঁড়টাকে,দেবী আফ্রোদাইতির অভিশাপের ফল সেটা।পাসিফের স্বামী মিনোসকে বলির জন্যে সমুদ্র দেবতা পসাইডন ষাঁড়টা উপহার দেয়।তবে বলি দেয়া তো হয়নি,পাসিফে ঐ ষাঁড়ের যৌন আবেদনে এতই উন্মাদ ছিল যা,কামনা মেটানোর জন্যে সে,নামকরা স্থপতি ডায়েডিলাসের সাহায্য নেয় বিশেষ আয়োজন করার জন্যে।বিশেষভাবে তৈরী করা গোলকধাঁধাঁয় থাকতো ষাঁড় মিনোস,আর পাসিফে প্রাসাদ থেকে লুকিয়ে যেত অভিসারে গোপন রাস্তা দিয়ে।ক্রীটের লোকজন,ধনী,
ক্ষমতাশালীরা সবাই যদিও মিথ্যা বানিয়ে বলতে বেশ ওস্তাদ,তবে কাহিনীটা কেউ কোনদিন অস্বীকার করেনি।প্রেমে অন্ধ পাসিফে নিজের হাতে ছিঁড়ে আনতো সবুজ ঘাস,নরম গাছের পাতা,গাছের কচি মিষ্টি ডাল,ভালবাসার ষাঁড়ের জন্যে।পাহাড়ে,উপত্যকায় ছুটে যেতে যেতে পাসিফের দৃষ্টিতে থাকতো ষাঁড় মিনোসের চেহারা।পাসিফের সবসময় ভাবতো এমন যদি হতো স্বামী,মানুষের এলাকা ছেড়ে সে হতে পারতো গরুর দলের একজন।তবু শুধু হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছু হয়নি,আয়নায় দেখতো বদল হয়নি কিছুই,আর একজন মেয়েমানুষ ছাড়া,সে আর কিছু না।পাসিফে অবৈধ প্রেমের স্বপ্নের তাড়নায় ছূটে যেত বরফে ঢাকা উপত্যকায়,যদিও তা ছিল তার স্বামী ক্রীটের রাজার জন্যে খুবই অপমানজনক,তবু তার তেমন কিছু করার কিইবা ছিল।রাতে পাসিফে স্বামীকে ফেলে ছুটে যেত পাহাড় জঙ্গল পার হয়ে ষাঁড় মিনোসের সাথে যৌনমিলনের আশায়,অনেকটা যেন পাগল বাচ্চান্ত খুঁজে বেড়াচ্ছে বাকুসের সঙ্গ পাওয়ার জন্যে।ঈর্ষায় জ্বলে যেত পাসিফে যখন দেখতো কোন বাছুর মিনোসের সাথে সঙ্গমের জন্যে তাকে প্রলুদ্ধ করার চেষ্টা করতো।রাগে পাসিফে বাছুরটাকে কেটে টুকরো টুকরো করতো না হয় লাঙ্গল কাঁধে দিয়ে লাগাতো চাষের কাজে।এ ভাবে অনেক বাছুর রানী পাসিফের ঈর্ষার শিকার হয়ে দেবতাদের বলি হয়ে শেষ হয়ে গেছে,শুধু তাই না পাসিফে রাগ কমানোর জন্যে বাছুরের মৃতদেহের চোখে আঙ্গুল দিয়ে হাসতো,উল্লাসে।পাসিফে স্বপ্ন দেখতো সে বদলে গেছে ইউরোপায়-যাকে দেবতাদের রাজা জুস সাদা ষাঁড়ে রূপান্তরিত করে নিয়ে গেছে তার প্রেমের খেলার শিকার হিসেবে,না হয় হয়তো সে হয়ে গেছে আইও যাকে জুস,বৌ হেরার ঈর্ষার শিকার থেকে উদ্ধার করার জন্যে বদলে দেয় একটা বাছু্রে।পাসিফের আবেগ যখন সব সীমানা ছাড়িয়ে গেছে,তখন তার এক সহকারীকে দিয়ে মেপেল কাঠের ষাঁড়ে নিজেকে লুকিয়ে ছুটে যেত রমণের খেলায়।মিনোসের সাথে যৌনখেলার ফসল মিনোটারের সহ্য হয়নি পাসিফের এই লাম্পট্য,আর তার ফলাফল কার না জানা।অর্ধেক মানুষ অর্ধেক ষাঁড় মিনোটাসের চেহারা ছিল বীভৎস-গোলকধাঁধাঁর মধ্যে লুকিয়ে থাকতো সে আর উৎর্সগ হিসেবে রেখে যাওয়া কিশোর কিশোরীরা ছিল তার খাবার।শেষমেষ থিসিয়াসের হাতে নিহত হয় মিনোটার।আবেগে ভেসে যাওয়ার আরেক উদহারণ।
ক্রীটের আরেকজন মেয়ের কথা মনে পড়ে-অলিম্পিয়ার রাজা থাইসটেসের প্রেমে এতই পাগল ছিল,তার কামনার জন্যে সে সূর্য দেবতা ফোবিসকে(এপেলোকে)বাধ্য করতো যেতে রাতের অন্ধকারে।ক্রীটের রাজা মিনোসের কথা যদি বলি,মিনোস যখন মেগারা দখল করে নাইসাসের মেয়ে স্কাইলা তাকে দেখে এতই পাগল হয়ে যায়,বশীভুত করার জন্যে বাবার যাদুর সোনালী চুল কেটে মিনোসের হাতে মেগারা তুলে দিতে দ্বিধা করেনি,নাইসাস দুঃখে নিজেকে বাজপাখীতে রুপান্তরিত করে।মিনোস যখন তাতেও তার আয়ত্বে আসেনি,স্কাইলা সাঁতার কেটে ছুটে যায় মিনোসের কাছে,বাজপাখী নাইসাস যদিও তাকে বাঁধা দেয়।আবেগের ঝড়ের আরেক উদহারণ।
আর্টিয়াসের ছেলে আগামেনন যুদ্ধ ক্ষেত্রে জয়ী হয়ে এসেও শেষে বৌ এর বিশ্বাসঘাতকতায় নিহত হয় তার প্রেমিক আগেস্থিটিসের হাতে।আগামেনন যখন ট্রয়ের যুদ্ধে ব্যাস্ত,তখন তার বৌ ক্লেমেন্সট্রা চুপি চুপি প্রেম আরম্ভ করলো আগেস্থিটসের সাথে।আর ক্লেমেন্সট্রার প্রেমে ক্লেমেন্সট্রা এতই ভেসে গেছে সে চক্রান্ত করে আগামেন্ন করে আর আগাস্থিটিস হলো মাইসেনার রাজা।পরে আগামেননের ছেলে তার বাবার খুনের প্রতিশোধ নিতে ভুলেনি।
মেডেয়ার কথাটাও বলা দরকার,জেসনের প্রেমে পাগল মেডেয়া নিজের সন্তানদের খুন করে দেবী হেরার মন্দিরে পুঁততে দ্বিধা করেনি।তার কাছে ওটা ছিল জেসনের প্রতি তার প্রতিশোধ।মেডেয়ার ভালবাসা আর যাদুর সাহায্যে জেসন সোনালী ভেড়ার লোম উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।করিনিথে পৌঁছানোর সেখানকার রাজকন্যা ক্রেয়ুসার প্রেমে পড়ে জেসন আর মেডেয়াকে,তার সন্তানদের সহ নির্বাসনে পাঠায়।মেডেয়া থেমে থাকেনি বিষ মাখানো উপহার দিয়ে শুধু ক্রেইয়ুসাকে খুন করে ক্ষান্ত হয়নি,খুন করে জেসনের ঔরশের সন্তানদেরও।

মেয়েদের ভালবাসার প্রতিশোধের কাহিনীর শেষ নাই,মেয়েদের প্রতিশোধ পুরুষদের চেয়ে অনেক ভয়ংকর,বলা যায় হয়তো হাজারো গুনে বেশী।তাই আমার উপদেশ ভালবাসা্র মানুষটার বিশ্বাস নষ্ট করো না সহজে।এমন কোন মেয়ে আছে যে পচ্ছব্দ করে না প্রেম নিবেদন,সম্মতি দিক বা না দিক,হয়তো আছে হাজার দশের মধ্যে একজন যে জড়ায় না প্রেমের খেলায়।।আর সে যদি তোমাকে প্রত্যাখান করেই তাতে তোমার ক্ষতিটা কোথায়,আর তোমাকে প্রত্যাখান করার তার কারণ কিইবা হতে পারে?নতুন আনন্দ কে না খুঁজে পেতে চায়?আমরা তো সবসময়ই অন্যদের তাকিয়ে দুঃখ করি,মনে মনে ভাবতে কি ভাল লাগে না,ঐ সুন্দরী যদি আমার প্রেমিকা হতো?
সবচেয়ে ভাল সিদ্ধান্ত হলো,পচ্ছন্দের মেয়েটার চাকরানীর সাথে বন্ধুত্ব করা,তার সাহায্য নিঃসন্দেহে তোমাকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে।অবশ্য এটাও জানা দরকার,কাজের মেয়ের সাথে মনিবের সর্ম্পকটা কেমন,জানার চেষ্টা করবে তার পচ্ছন্দের অপচ্ছন্দের বিষয়গুলো।তাই আমার উপদেশ চেষ্টা করবে মানসীর কাজের মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব করতে,দেখবে অনেককিছু সহজ হয়ে গেছে তোমার জন্যে।কাজের মেয়ের কাছ থেকেই জানতে পারবে তোমার পচ্ছব্দের মেয়েটার সাথে কথা বলার শুভসময় কোনটা,সময়টা ভাল হবে প্রেম নিবেদন করার।কখন সেই সময় যখন সে আনন্দে,হাসিতে ছুটে বেড়ায়,বসন্তের প্রজাপতির মত ছন্দে ছন্দে,সেটাই তো সময় যখন অজান্তেই তার হ্রদয়ে দাগ কাটবে তোমার কথাগুলো।

ইলিয়নের(প্রতিষ্ঠাতার নামে ট্রয়ের পুরোনো নাম)অধিবাসীরা গ্রীকদের আক্রমনে রাগে দুঃখে অসহায় হয়ে কাঁদছিল,আবার আনন্দে মত্ত হয়ে তাদের ঘোড়া এনে নিজেদের বিপদ ডেকে আনতে তাদের বেশী সময় লাগেনি।একটা ভাল সময় হলো যখন তোমার মানসী কারও সাথে যুদ্ধে হেরে মানসিকভাবে অশান্ত,অস্থির হয়ে আছে।সম্ভব হলে ভাব দেখাবে,তুমিই যেন তার প্রতিশোধের বিশেষ অস্ত্রটা।কাজের মেয়েটাকে বলে রাখবে,সকালে চুল বাঁধার সময় কথায় কথায় যেন বলে দেয় তুমিই সেই মানুষ যে তার সর্বস্ব নিয়ে অপেক্ষা করে আছে তার জন্যে।একটু বানিয়ে বলতে যেন দ্বিধা না করে,তোমার সাহস,প্রাচুর্যতার কথা,আর প্রস্তত থাকবে যে কোন সময়,কেননা ভালবাসার রাগ ঠান্ডা হতে খুব একটা সময় নেয় না।

আর যদি দেখ কাজের মেয়েটা একটু বেশ চালাক চতুর,তা হলে তোমার প্রথম কাজের মেয়েটার মন জয় করা!নিঃসন্দেহে একটা দূরুহ-দুর্গম পথ!অবশ্য অনেক সময় তাতে ঈর্ষা,হিংসায় তোমার আসল উদ্দেশ্যটাও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।হতে পারে কাজের মেয়েটা তোমার মানসীর কাছে সুপারিশ করতে পারে তোমার জন্যে,
আবার এমনও হতে পারে সে নিজেই তোমার প্রেমেও মত্ত হয়ে গেল।তবু তোমার চেষ্টা করে দেখা উচিত কি হয়?আমার উপদেশ হলো বেশী বিশ্লেষণ না করে উপদেশ মত যদি সবকিছু কর,ঠিকই তোমাকে জায়গা মত পৌঁছে দিব।তবে এমন যদি কাজের মেয়ের শরীর সৌন্দর্য উপেক্ষা করা তোমার পক্ষে সম্ভব না হয়,তবে অন্ততঃ মানসীর মনটা জয় করো প্রথমে,তারপর না হয় যদি একেবারেই মন বেসামাল হয়ে থাকে জড়িয়ে পড়ো দাসীর সাথে।তবে শুধু খেলার ছলে ছুটে যেও না এখানে ওখানে।শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছানোই তোমার লক্ষ্য,না হলে তো তুমি হেরেই গেলে।আর এমন যদি মেয়েটা অন্য কারও প্রেমে মত্ত,তাহলে হয়তো সে তোমার অযথার খেলায় মাতাল হবে না কোনভাবেই।ভাঙ্গা ডানার পাখী আর কত উঁচুতেই বা উড়ে যাবে।যে মাছ বড়শিতে আটকায় তার সাথেই আলাপ করা সম্ভব।তাই বলছি আবার এটা আমার উপদেশ সম্পূর্নভাবে শরীর খেলার সাথী না করা পর্যন্ত ক্ষান্ত দিও না কোন ভাবেই।হয়তো ও ভাবেই তোমার মানসীর সাথে যোগাযোগ হবে শেষ পর্যন্ত।

অনেকে ভাবে ঋতু পরিবর্তনটা শুধু জেলে আর কৃষকদের জানা দরকার,যা সম্পুর্ন ভুল।একটা সময় আছে ফসলের জন্যে বীজ বপণের,একই ভাবে ভালবাসা নিবেদনের ও একটা সময় আছে।দশ ভাগের নয় ভাগটাই নির্ভর করে সেই বিশেষ সময়টার জন্যে,সেই ঘনিষ্ঠ দূর্বল মুর্হুতটা।

তার জন্মদিনটা ভুলে যেও না,ভুলে যেও না নতুন বছরের অনুষ্ঠানের কথা।সার্কাসে থাকলে,বিশেষ ভাল কোন অনুষ্ঠানের মাঝের সময়টাও ঠিক না,কোন কিছু বলার।জোয়ারে ভেসে যাওয়া,একটা ছোট্ট কাঠের টুকরা ধরে নিজেকে বাঁচাতে হবে তখন।সব চেয়ে ভাল সময় যে দিন রোমানরা পালন করে আলিয়ার জলে রোমান সৈন্যদের রক্ত আহুতির গল্প কথা,ইতালী থেকে আসা গাউলদের ক্লসিয়াম শহরের অবরোধ দমন করার পর,গাউলদের রোম আক্রমনে রোম রক্ষার দিন,না হলে শনিবারে যে দিন সিরিয়ান ইহুদীরা কাজ করে না।অন্ততঃ এটুকু মনে রাখবে ঐ দিনগুলোতে যাবে না পচ্ছন্দের মেয়েটার কাছে যেমন,যেও না জন্মদিন বা অন্য কোনদিন যখন সে তোমার কাছে উপহার আশা করে।ভুলে গিয়ে দীর্ঘশ্বাস বা ভান করলে খুব একটা লাভ হবে না,কিছু একটা উপহার দিতেই হবে।মেয়েদের জানা আছে নির্বোধ প্রেমিকদের নিয়ে কিভাবে খেলা করতে হয়।দেখবে সময়মত ঠিকই ফেরীওয়ালা এসে গেছে,আর তোমার মানসী ঠিকই খুঁজে পাবে তার পচ্ছন্দের জিনিষটা।যতই বোঝানোর চেষ্টা করো,আজেবাজে জিনিষ কিনে লাভ নেই,মেয়েটা বলবে ওটাই তার পচ্ছন্দ।শুধু কাগজে লিখে দামটা দিতে হবে,আর তোমার মনে হবে লেখাপড়া না জানলেই ভাল ছিল।মনে রেখ প্রতিবছর একটা জন্মদিন আসবে,হয়তো তোমার মানসীর কোন কিছু পাওয়ার জন্যে একটা জন্মদিন তৈরী হবে।দেখবে অনেকসময় তোমার পচ্ছন্দের মেয়েটা এসে বলবে তার এটা বা ওটা হারিয়ে গেছে,কান্নায় চোখটা লাল হয়ে থাকবে,উত্তরে শুনবে তার সবচেয়ে পচ্ছন্দের কানের দুলটা হারিয়ে গেছে।কি অদ্ভুত একটা খেলা,মেয়েদের তাই না বন্ধু,আমার!তোমার কাছে টাকা ধার চাওয়াতে হয়তো দ্বিধা করবে না অনেকে,আর ঐ টাকা ফিরে পাওয়ার কথা বলে তোমাকে দুঃখ দিয়ে কি লাভ!দশ মাসে দশটা ভিন্ন ভিন্ন জিভ থাকলেও আমি হয়তো বলে শেষ করতে পারতাম না মেয়েদের এই ছলনার গল্প।

আমার উপদেশ হলো প্রথমে একটা চিঠি লেখ।বল তার জন্যে কি ভাবে পাগল তুমি,এমন কি আকুতি মিনতি করে মনের ভাষাটা নিবেদন করলেও কোন ক্ষতি নাই।প্রিয়াম আকিলিসের কাছে হেক্টরের মৃতদেহ নেয়ার জন্যে নিবেদনের কথা কার না জানা,প্রথমে না মেনে নিলেও ট্রয়ের বুড়ো রাজা প্রিয়াম আকিলিসকে তার বাবার কথা মনে করিয়ে দিলে,আকিলিস সেটা উপেক্ষা করতে পারেনি,সময়মত উপস্থাপনা।আর যাই হোক রাজী হবে যে কোন কথায়!শুধু রাজী হতে আর দোষ কোথায়।কথাবার্তায় তো কোটিপতি হতে দোষ কোথায়?অনেক কিছুই করা সম্ভব,শুধু আশা দিয়ে।হয়তো হতে পারে সে একজন ছলনাময়ী দেবী,যে তোমার কাজে আসবে।আবার এমনও হতে পারে অনেক উপহার দেয়ার পর সে হয়তো তোমাকে নোংরা কাগজের মত ছুঁড়ে ফেলতে পারে।এটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ যেন তাকে সবসময় ভাবতে দিবে নতুন কোন একটা উপহার তার জন্যে অপেক্ষা করছে,সব সময়।

কে না জানে কৃষক যে সবসময় অনুর্বর জমিতে সার দিয়ে যায় তার ফলটা কি পায়?একজন জুয়াড়ী তার লোকসান ফিরে আনার জন্যে জুয়া খেলে যায় তার ফলটাই বা কি হয়?আমার মনে হয় একজন পুরুষের সবচেয়ে বড় দক্ষতা কোন উপঢৌকন দেয়া ছাড়া কোন মেয়ের মন জয় করা।ও ভাবে কাউকে জয় করার দক্ষতা যদি তোমার থাকে,তা হলে অবাক হয়ে দেখবে তোমাকে খুশী করার জন্যে তোমার মানসীর কোন কার্পন্য হবে না কোন সময়।তাই আবার বলছি চিঠিটা যখন লিখবে সেটা যেন ভঁরা থাকে মধুর সুরে আর আগামীর অনেক নতুন আশায়।দেখবে ওটাই তোমাকে সোজা নিয়ে যাবে প্রেমিকার মনের গভীরে।ডেলপেসোতে দেবতা আর্টিমেসে মেলায় সিডিপেকে দেখে তার প্রেমে পড়ে যায় আকোনিটিয়াস আর সিডিপে ছলে বলে কৌশলে যে কোনভাবে হোক তাকে পাওয়ার জন্যে সে কার্পন্য করেনি। জলপরী সিডিপে একটা আপেলে লেখা আকোনটিয়াসের কটা কথা দেখে পড়ার চেষ্টা করতে গিয়ে বেশ জোরে জোরেই পড়লো ,‘দেবতা আর্টেমিসের সামনে এটা আমার প্রতিজ্ঞা আমি আকোনটিয়াস ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবো না’।আপেলটা তুলে নেয়ার ভুলটা বুঝতো পারলো সিডিপে,কিন্ত দেরী হয়ে গেছে তখন,নিজের কথায় নিজেই আটকা পড়ে গেছে সে,
লেখাগুলো জোরে জোরে পড়ায় সেটাই তার প্রতিশ্রুতি হয়ে দাঁড়ালো।আমার বন্ধুরা-শিল্প সংষ্কৃতি নিয়ে শুধু নাড়াচাড়া না একটু জ্ঞান থাকলে সেটা নিঃসন্দেহে অনেক সাহায্য করে।

শুধু বিচারক,সিনেটার আর নামকরা লোকজন কথায় ভাষায় মানুষকে বিচলিত করার ক্ষমতা রাখে না,তুমিও হতে পার সেই দলের একজন।তবে একটু সাবধান থাকবে খুব সহজেই নিজের ক্ষমতা দেখানোর জন্যে উত্তেজিত হয়ে পড়ো না।প্রেমিকাকে যখন চিঠি লিখবে,এমন না মনে হয় যে কোন সভায় বক্তৃতা দেয়া হচ্ছে।কথা হবে সাজানো মধুর যেন তুমি বসে তার সাথে কথা বলছো,বেশী কাব্য ভণিতা শেষমেষ ক্ষতিই করবে তোমার প্রেমের খেলায়।যদি দেখ চিঠিটা ফেরত এসেছে আর খোলাও হয়নি,হতাশ হবে না কোনভাবে,
চালিয়ে যাবে তোমার প্রয়াশ।বড্ড বেমানান ষাঁড়কেও লাঙ্গল চালানো শেখানো যায়,দুরন্ত বেসামাল
ঘোড়াটাকেও শেখানো যায় রথটানা।এমন কি লোহাও ক্ষয়ে যায় ঘর্ষনে ঘর্ষনে,শক্ত মাটিও চাষে নরম হয়,ফসলের উপযোগী হয়।জলের স্রোত ভেঙ্গে দেয় শক্ত পাথর,ঠিক একই ভাবে তুমি যদি ধৈর্য নিয়ে এগিয়ে যাও,স্পার্টার আইকারিয়াসের সুন্দরী মেয়ে পেনিলোপকে জয় করতেও বেগ পেতে হবে না।ট্রয় যখন অবরোধে ছিল,প্রথম দিকে তারা হার না মানলেও,কিন্ত সেই উৎসাহ শেষ পর্যন্ত টিকেনি।তোমার চিঠিটা পড়ে সে যদি উত্তর না দিয়ে থাকে,তাতে কি যায় আসে?আবার তাকে চিঠি লেখ,সব কিছুর একটা সময় আছে।হয়তো এমনও হতে পারে সে তোমাকে আর চিঠি না লেখার জন্যেও বলতে পারে।শুধু তাই না এমনও হতে পারে তার সম্পুর্ন আদেশ না মেনে নিলে সে হয়তো রাগে দুঃখে অস্থির হয়ে যেতে পারে।ছুটে যাও,পূর্ন হবে তোমার মনের ইচ্ছা।

যদি দেখ সে ময়লা ফেলতে বাইরে গেছে,কাছাকাছি গিয়ে আলাপ আরম্ভ কর,কথা বলতে এমন ভাব দেখাবে যেন আশেপাশে কেউ শুনে ফেলছে।যদি দেখ কোন এক বাজার থেকে সে বের হয়ে আসছে,হেঁটে হেঁটে তার কাছে যাও।যদি দেখ সে গোলাপী পোষাক পরে নাটকে গেছে,তুমিও চলে যাবে সেখানে।তার সুন্দর কাঁধের প্রশংসা করবে,আর তোমার চোখ দুটো অবাক হয়ে হারিয়ে যাবে তাকে দেখে।যে পুরুষ অভিনেতা মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করছে তাকে হাততালি দিতে ভুলবে না,আর নাটকের প্রেমের অভিনেতা যখন ষ্টেজে আসে,হাততালি দেবে আরও জোরে।তোমার মানসী বসলে তুমিও বসে থাকবে,দাঁড়ালে তুমিও দাড়াবে,হাজারো কাজ তোমার থাক না পড়ে।

কোনদিন তোমার চুল বাহারে কোকড়া করো না,মুখে পাউডার দিবে না কখনও।ও গুলো রংঢং মানায় পুরোহিতদের,যারা ফিরিজিয়ান সুরে প্রকৃতির দেবী সিভেলের স্ততি করে।সাদামাটা পোশাক পরবে,তুমি তো একজন পুরুষ।এথেন্সের বীর,রাজা থিসিয়াসের ক্রীটের সুন্দরী রাজকুমারী আরিয়াডানের মন জয় করার পোষাক আশাক প্রসাধনের দরকার হয়নি।তার বীরত্বের খ্যাতিই ছিল যথেষ্ট,আরিয়াডানের সোনার সুতা দিয়েই অর্ধেক মানুষ অর্ধেক ষাঁড় মিনোটাসকে হত্যা করার পর গোলক ধাঁধাঁ থেকে বের হয়ে যেতে পারে থিসিয়াস।ক্রীটের আরেক রাজকুমারী মিনোসের মেয়ে ফায়েডারা তো সাধারন হিপ্পোলাইটাসকে দেখে পাগল হয়ে গেল,সে আর যাই হোক ফুলবাবু ছিল না।পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন,দাঁতটা যেন পরিষ্কার থাকে,পায়ের চেয়ে বড় জুতা পরো না দেখানোর জন্যে।চুল এলোমেল রেখ না,দাঁড়ি থাকলে একটু ছেঁটে সাজাতে দোষ নাই।নখগুলোও সুন্দর করে কাটবে।আর যাই হোক সুবাসে আকাশ ছোঁয়া হবে না কখনও।সুবাস সুগন্ধির ব্যাপারটা মেয়েদের আর সমকামীদের জন্যেই ছেড়ে দাও।


০০০০০

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:৪৮

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: ১: পুরুষরা বোকা কারণ এরা সারাক্ষণ মেয়েদের নিয়ে গবেষণা করে তাই।


২: পুরুষরা আসলে সারা জীবনই শিশু থাকে, মেয়েদের কাছে।


৩: মেয়েদের মন বুঝা অনেক সহজ।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:৫২

ইল্লু বলেছেন: মেয়েদের বাদ দিলে পুরুষদের শিল্প সাহিত্য সবকিছুই অন্ধ হয়ে যাবে।
মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য-পুরুষ ছাড়া তাদের জীবন অসম্পুর্ন।
ধন্যবাদ

২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:০২

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টের লেখা গুলো পড়তে ভাল লেগেছে।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:৪৮

ইল্লু বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.