নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চৌধুরী সাহেব

আবদুল আউয়াল চৌধুরী

অচেনা মানুষ ...!

আবদুল আউয়াল চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমিরাতে বাংলাদেশি দের ভিসা বন্ধের নেপথ্যে

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:১৭

আরব আমিরাতে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য সব ধরনের নতুন ভিসা অনুমোদন ২০১২ সালের আগষ্ট মাস থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ।

যদিও আমিরাতে বৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানো কিংবা নবায়নের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। তবে আরব আমিরাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা গালফ নিউজকে জানিয়েছেন, এই নিষেধাজ্ঞা অস্থায়ী, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই নির্দেশনা তুলে নেয়া হবে। কিন্তু ভিসা বন্ধের কারণ হিসাবে কর্তৃপক্ষ যা উল্লেখ করেছেন তা বাংলাদেশিদের জন্য খুবই উদ্বেগজনক। জাল পাসপোর্ট এবং জাল ভিসা নিয়ে বারবার বেশ কিছু বাংলাদেশি ধরা পড়ার পরই স্থগিতাদেশের এই খড়গ নেমে আসলো। শুধু ভিসা ও পাসপোর্ট জালিয়াতিই নয়, পর্ণো সিডি ব্যবসা, চুরি, খুন, এমনকি ধর্ষণের মত মারাত্মক অপরাধ এবং বেআইনী কাজে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। অনেকে স্বল্প-মেয়াদী ভুয়া কোম্পানির নামে ভিসা বের করে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক নিয়ে আসছে। মাত্র ৩/৪ মাসের মধ্যে ওই সব কোম্পানি বিলুপ্ত হয়ে যায়, আর কোম্পানির স্পন্সরশীপে আসা অসহায় মানুষগুলো তখন সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে মরিয়া হয়ে অনেকে অপরাধের জগতে পা বাড়াচ্ছেন। যা সত্যিই দুঃখজনক। ফলে দেশের ইমেজ ধুলোয় লুটোচ্ছে এবং যার পরিনামে সমগ্র বাংলাদেশ কম্যুনিটিকে দুর্নামের বোঝা বইতে হচ্ছে। আরব আমিরাতে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কাছ থেকে কম্যুনিটির উত্কণ্ঠা,দুঃখ-কষ্ট এবং হতাশার কথা জানা যায়। ভিসা বন্ধ থাকায় বাংলাদেশিরা অনেক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী শ্রমিক নিয়োগ করতে না পারায় ক্ষতির সন্মুখীন হচ্ছেন, অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হচ্ছে। এছাড়া অনেকে তাদের পরিবারের সদস্যদের দেশ থেকে আনতে পারছেন না। আরব আমিরাতের স্কুলে এডমিশন পাবার পরও সন্তানদের ভিসা যোগাড় করতে পারছেন না। আরব বিশ্বে কর্মরত প্রায় ৪৫ লক্ষ বাংলাদেশির মধ্যে ১২ লক্ষ বাংলাদেশির দ্বিতীয় আবাস হলো আমিরাত। ভিসা স্থগিত হবার কারণে আরব আমিরাতের প্রবাসী বাঙালির সাথে তাদের পরিবারের লক্ষ লক্ষ সদস্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিশ্বকে রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়ে এক্সপো-২০২০-এর স্বাগতিক শহরের শিরোপা ছিনিয়ে এনেছে দুবাই । এক্সপো-২০২০-এর জন্য নির্মিত হচ্ছে একটি অত্যাধুনিক শহর। আশা করা হচ্ছে, এই বাণিজ্য মেলা দেখতে আরব আমিরাতে প্রায় আড়াই কোটি বিদেশি অতিথির সমাগম হবে, উন্মোচিত হবে শ্রম-বাজারের নতুন দিগন্ত, বৃদ্ধি পাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, উন্নত হবে আর্থ-সামাজিক যোগাযোগ এবং আবাসন। এই এক্সপোকে সামনে রেখে কেবল বাংলাদেশ থেকেই লক্ষাধিক শ্রমশক্তি রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ভিসা বন্ধের আদেশ, বাংলাদেশিদের প্রত্যাশার আকাশ কালো মেঘে ঢেকে দিয়েছে। অনেকে এক্সপো-২০২০-এর জন্য রাশিয়াকে ভোট দেয়াটাই ভিসা বন্ধের একটি অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন। সম্প্রতি নেপালের সাথে ৩ লক্ষ নতুন ভিসা-চুক্তি দুবাইকে ভোট দেয়ারই পুরস্কার বলে মনে করা হচ্ছে। আসলে বিষয়টি পুরোপুরি সত্য নয়। এক্সপো-২০২০-এর স্বাগতিক দেশ নির্বাচন প্রক্রিয়া তিন দফা ভোটের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। প্রথম রাউন্ডের ভোট হয় ২০১১ সালে। তখন প্রতিযোগী শহরগুলো ছিল যথাক্রমে ব্রাজিলের সাওপাওলো, রাশিয়ার একাতেরিংবার্গ, তুরস্কের ইজমির, থাইল্যান্ডের আয়্যুথিয়া, আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই। প্রথম রাউন্ডে রাশিয়াকে ভোট দিলেও প্যারিসে অনুষ্ঠিত পরবর্তী দুই রাউন্ডে বাংলাদেশ দুবাইকে ভোট দেয়। এছাড়া এক্সপো-২০২০-এর জন্য দুবাইয়ের প্রতি পূর্ণ সমর্থনের কথা আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশ সরকার জানিয়ে দেন। তাই আমার মতে, রাশিয়াকে ভোট দেয়াটা ভিসা বন্ধের বহুবিধ কারণের মধ্যে একটি হতে পারে। অতএব, আরব আমিরাতের প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে অপরাধের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এই অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে সহসা মুক্তি পাবার কোনো পথ আমি দেখছি না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.