নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সমাগত মিথ্যা অপসৃত

আল ইনসাফ

শিক্ষক, গবেষক ও কলামিস্ট

আল ইনসাফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

“মুসলমানদের জন্য ইসলামী কালচার বাদ দিয়ে অমুসলিমদের কালচার গ্রহণ করা বৈধ নয়”

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২০

বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক ইসলামী বিশেষজ্ঞদের মতে কোট টাই হলো, অমুসলিমদের বিশেষ পোষাক। যা স্বয়ং ডা. সাহেবও বিধর্মীদের কালচার বলে মেনে নিয়েছেন। তবে পার্থক্য হলো, হক্কানী আলেমদের নিকট ইসলামের কালচার বাদ দিয়ে অমুসলিমদের কালচার গ্রহণ করা বৈধ নয়। বিশেষ করে যারা ইসলামের দায়ী আদর্শ মনীষী তাদের জন্য একেবারেই নাজায়েয। কেননা এতে ইসলামকে খাট করা হয় এবং ইসলাম পরমুখাপেক্ষি বলে প্রকাশ করা হয়।
আর টাই যে ক্রুশ চিহ্ন নয়, তাও নিশ্চিত বলা যায় না। কেননা বহু ইসলামী বিশেষজ্ঞদেরমতে খ্রিষ্টানদের ভ্রান্ত আকীদা যথা ঈসা আ.কে সকলের পাপের মুক্তির বিনিময়ে শুলীতে চড়ানো হয়েছিল এ ইতিহাসকে স্বরণীয় করার মানসে তারা যে টাই ব্যবহার করে তা বাইবেলে উল্লেখ না থাকলেও আমলগতভাবে তারা তার প্রমাণ দিচ্ছে। সুতরাং যদি বাস্তবে তাদের নিদর্শন হয়, তাহলে মুসলমানের জন্য তা পরিধান করা মাকরুহে তাহরীমী। আর যদি এ তথ্য সঠিক না হয়, যেমনটি ডা. সাহেব দাবী করলেন, তাহলে অমুসলিমদের কালচার হওয়ায় মুসলমানদের জন্য ইসলামী কালচারের স্থলে তার ব্যবহার মাকরুহ থেকে কম নয়।
দেখুন, ইসলামের অনেক বিধান এমন আছে যেখানে আমলের ক্ষেত্রে অমুসলিমদের সাথে মিলে যায়, সে ক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশ হচ্ছে, পদ্ধতি ব্যবধান করে হলেও তাদের সামঞ্জস্যতা থেকে মুসলমানদের বেচে থাকা। যেমন-
১. ইয়াহুদিরা মুহাররমের দশ তারিখ আশুরার রোযা রাখতো একটি। তাই রাসূল সা. আরেকটি রোযা যোগ করে তাদের সাদৃশ্যতা থেকে বাচার জন্য উম্মতকে নির্দেশ দিয়েছেন।
২. আরবের সভ্যতা হিসেবে মুশরিকরা পাগড়ী পরিধান করতো, কিন্তু মুসলমানদের পাগড়ী পরার বিধান দেয়া হয়েছে ইবাদত স্বরূপ, কালচার হিসেবে নয়। তার পরও সাহাবীরা রাসূল সা.কে জিজ্ঞাসা করলেন আমরাও পাগড়ী পরি আর তারাও তো পরে, তাহলে এ দু’য়ের মাঝে পার্থক্য কী? রাসূল সা. বলেন- তারা পাগড়ী পরে কালচারগত ও টুপি ছাড়া। আর আমরা পাগড়ী পরি টুপির উপর। সুতরাং পার্থক্য স্পষ্ট। এখানে সাহাবাগণ এ প্রশ্নটি করার কারণ হচ্ছে, বিজাতিদের সাথে সাদৃশ্য থেকে মুক্ত থাকা।
৩. হযরত রিবয়ী ইবনে আমের রা. ও হযরত হুযাইফা রা. যখন রুস্তমের দরবারে আমন্ত্রণ পেয়ে দাওয়াতের কাজে যাচ্ছিলেন, গেইটে তাদেরকে ইসলামী পোষাক খুলে রুস্তমীদের পোষাক পরিধানের চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা করলেন না। এতে প্রমাণিত হয় যে, অমুসলিমদের পোষাক দাওয়াতী কাজের সহযোগী হলেও তা গ্রহণ করা যাবে না। কেননা, দাওয়াত তো ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য, ইসলামী চেতনা বিনষ্ট করে সে আবার কেমন দাওয়াত? বা কীসের দাওয়াত?
৪. রুস্তমের দরবারে দস্তরখানে পড়ে যাওয়া খাদ্য উঠাতে গিয়ে তাদের লোকদের প্রতিবাদের সম্মুখিন হয়েছিলেন হযরত হুযাইফা রা.। তিনি তাদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও ওই কাজটি ছাড়লেন না কেন? দায়ীর জন্য রুস্তমের নিয়ম কালচার গ্রহণ করা কি সহায়ক হতো না?
তিনি কেন বললেন -
أأترك سنة حبيبى بقول هولاء الحمقاء
আরে আমি কি এ নির্বোধদের কথায় আমার প্রাণপ্রিয় রাসূলের সুন্নাত ছেড়ে দিবো? কখনোই নয়।
সাহাবাদের শত শত ঘটনা এমন পাওয়া যাবে, যেখানে তারা অমুসলিমদের নিদর্শন গ্রহণ তো দূরের কথা, তাদের কালচার গ্রহণ করাকেও মেনে নিতে পারেননি। একমাত্র কারণ, তাদের সামনে রাসূল সা. এর নির্দেশ বিদ্যমান ছিল-من تشبه بقوم فهو منهم যে ব্যক্তি কোনো জাতি বা দলের সাদৃশ্য গ্রহণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত বলে বিবেচিত হবে।
আচ্ছা বলুনতো, এমন কোন অমুসলিম জাতি আছে? যারা ইসলামের কোন কালচারকে ভাল মনে করে গ্রহণ করেছে। যেমন টুপি, দাড়ি, সুন্নতী লিবাস, হিজাব ইত্যাদি? কখনও না; বরং তাদের সংসদে ইসলামী কালচারের বিরুদ্ধে আইন পাশ করা হয়েছে। আমরা মুসলমানরা কি ঠেকায় পড়লাম যে, বিজাতীদের কালচার গ্রহণ করতে যাবো? তাদের পোষাক কি আমাদের পোষাক থেকে ভাল?
সারকথা, ইসলামের কোন সত্যিকার দায়ী স্বয়ং ইসলামের দেয়া সুন্নতী লেবাস বাদ দিয়ে বিজাতীদের কালচারকে দাওয়াতের সহায়ক, সুবিধা বা ভাল ভেবে গ্রহণ করে নেয়া সরাসরি শরীয়তের সাথে উপহাস করার নামান্তর। এ নীতি সাহাবাদের দাওয়াতী নীতির বিরুদ্ধাচরণ। বড়ই পরিতাপের বিষয়, ডা. সাহেবের মত একজন দায়ী, ইসলামী আদর্শ সুন্নাতী পোষাককে গাড়ির সাথে তুলনা দিচ্ছেন। গাড়ি দুনিয়ার ব্যবহারের সরঞ্জাম। ব্যবহার করলে যেমন সাওয়াব নেই, না করলেও কোন গুনাহ নেই। কিন্তু মুসলমানের লেবাস এমন নয়। পোষাকের গুরুত্বের ব্যাপারে রাসূল সা. এর শত শত হাদীস রয়েছে, রয়েছে কুরআনের আয়াত। এমন একটি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান (সুন্নাত) কে উপেক্ষা করে তার স্থলে খ্রিস্টানদের ভেশ ভুশা গ্রহণ করার জন্য গাড়ির সাথে তুলনা করা ডা: সাহেবের মত যুক্তিবাদীর ব্যাপারে কল্পনা করাও মুশকিল।
সুতরাং এ কথা একেবারে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, ডা. জাকির নায়েকের এ সব বক্তব্য দ্বারা মুসলিম উম্মাহকে তাদের মৌলিক আদর্শ থেকে বিচ্যুতি ঘটিয়ে পাশ্চাত্যের আদর্শ কালচারে নিমজ্জিত করাই তার আসল লক্ষ্য। টুপি ধারণ করে ইসলামী কালচার অনুসরণ, আর কোট-টাই পরে বিজাতীদের অনুকরণ হয়তো ডাক্তারী মডেল হতে পারে, কিন্তু ইসলামী আদর্শ নয়।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪১

নতুন বলেছেন: ঈহুদীদের আবিস্কার কম্পিউটার ব্যবহার করা হালাল? বিধ`মীদের আবিস্কার ঔষুধ ব্যবহার করা হালাল?

কিন্তু কোট/টাই ব্যবহার করা হারাম???

এই যে ইন্টারনেটে এসে অমুসলিমের বিরুদ্ধে মানুষকে প্রলুভ্ধ করছেন তা কি ঠিক?

যদি দুনিয়ার ঈহুদী/কাফেররা যদি চিন্তা করতো যে এই প্রযুক্তি মুসলমানকে ব্যবহার করতে দেওয়া যাবেনা তবে কি হইতো?

ডাক্তারী বিজ্ঞানে যত অবদান তার মনে হয় ৯৫% ই বিধ`মীদের এবং তা ঠিকই ব্যবহার করছেন...আর বলছেন যে তাদের অনুসরন করা যাবে না?

এটা মুরগীর গোস্ত হারাম কিন্তু ঝোল হালাহের মতন হয়ে গেল না??

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৩

কেউ নেই বলে নয় বলেছেন: বলদের ব্লা ব্লা ব্লা। বাংলার গ্রীষ্মের ভ্যাপসা গরমে আরবের মোল্লাদের পাগড়ী আর জোব্বা পইরা থাকতে বইলো। সোজা দৌড়াবে এইসব ইসলামী কালচার নামের বুলি। কোন ধর্ম এক জাতির কালচার সমস্ত জাতির উপর চাপাইয়া দেয়ার কথা বলতে পারে না। জাকির নায়েকে এতো চুলকায় কেন? ব্যবসা বন্ধ হইয়া যাইতেছে তাই?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৮

আল ইনসাফ বলেছেন: অবাক লাগলো, কালচার আর প্রযুক্তির মানে কি এক ? এই প্রার্থক্য যে বুঝে না সে আবার অহেতুক বুলি আওড়ান কেন? লজ্জা থাকা দরকার।

৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৭

হোয়াইট টাইগার বলেছেন: নতুন ভাইয়ের মন্তব্যকে সমর্থন করলাম ।আসো আমরা সেই পথে যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক ।

৪| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৪

মুদ্‌দাকির বলেছেন: টুপি পড়া বা দাড়ি রাখা কি ফরজ? সার্ট প্যান্ট পড়লে যদি সরিয়তের কোন নিয়ম না ভাংগে তাহলে কি গুনা হবে? ইসলামি কালচার কি? নিজে মুমিন হওয়া বেশী প্রয়োজন নাকি অন্য তথাকথিত মুমিন ব্যাক্তির বাহ্যিক অবয়ব ফলোকরা বেশী প্রয়োজন ?
একটু দেখবেন কি এই হাদিস খানা যাচাই করে?? সহি না জাল আমার অত জ্ঞান নাই !!



মুহাম্মাদ ইবন আবদুল আযীয (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয় তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের আচার-আচরণকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে অনুকরন করবে। এমনকি তারা যদি গুইসাপের গর্তেও প্রবেশ করে থাকে, তাহলে তোমরাও এতে তাদের অনূকরন করবে। আমরা বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরা কি ইহুদি ও নাসারা? তিনি বললেনঃ আর কারা?



সহীহ বুখারি অধ্যায়ঃ কুরআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারন হাদিস নাম্বারঃ ৬৮২১

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৭

আল ইনসাফ বলেছেন: روى مسلم عن محمد بن سيرين قال : إن هذا العلم دين فانظروا عمن تأخذون دينكم .
ইমাম মুসলিম রহ মুসলিম শরীফে মুহাম্মদ বিন সীরীন সূত্রে বর্ণনা করেন- “নিশ্চয় এ ইলম (জ্ঞান) দ্বীন (ধর্ম), সুতরাং তোমরা ভালোভাবে যাচাই বাচাই করে তা গ্রহণ করো যে, কার থেকে তা গ্রহণ করা হচ্ছে।

৫| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৬

কমরেড ফারুক ১ বলেছেন: আসো সেই পথে যা
আমাদের ও তোমাদের মধ্যে
এক ।

৬| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৮

মুদ্‌দাকির বলেছেন:

জানি না কোন প্রসঙ্গে এই কথা এসেছে কিন্তু যদি শাব্দিক ভাবে আপনার এই কোট গ্রহন করতে হয়, তবে বলতে হবে যে ছাত্রকে অবশ্যই শিক্ষক হতে জ্ঞানী ব্যাক্তি হতে হবে যদি শিক্ষকের ভালো মন্দ ছাত্রের বিচার করতে হয়। ইসলাম কুপমুন্ডুকতা নয়। কুয়া থেকে বেরিয়ে আসুন আপনারা। আমি জাকির নায়েকের কোন ভক্ত নই,কিন্তু এই টুকু বুঝি কোর্ট আর টাই পড়াটা একজন মানুষের খারাপির লক্ষণ বা খারাপ কোন গুন হতে পারে না। আপনি যদি মধ্যপ্রাচ্চে কিংবা ইথিউপিয়াতে যান শুধু মাত্র পোষাক দেখে ইহুদী , খৃষ্টান কিংবা মুসলমান আলগা করতে পারবেন না, এমন কি নাম দেখেও না।

৭| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৯

কলমদানি বলেছেন: 2নং এর রেফারেনস দিন

৮| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৩

কলমদানি বলেছেন: رقم الصفحة 374-75/مشكواةالمصابيح / طبع هندية / قال الامام سنده ليس بالقاءم الترمذي هذا حديث غريب

৯| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০৫

রাজীব বলেছেন: আরবে কোন পান্জাবী পড়ে না, হিন্দুরা পুজার সময়ে পান্জাবী পড়ে। এখন পান্জাবি পরা কি জায়েজ হবে??
আরবে কোন লুংগী নেই। কোন সাহাবী লুংগী পরেছে এমন কোন প্রমান নেই। বর্মীজরা লুংগী পরত। এটি পরা কি জায়েজ হবে?

১০| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২২

নতুন বলেছেন: ভাই আমাদের দেশে যেই পোষাখ পরে... পান্জাবী/লু্ংগী পরে সেটা কি ভাবে ইসলামী হইলো?

১১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৩৮

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: ইমাম মুসলিম রহ মুসলিম শরীফে মুহাম্মদ বিন সীরীন সূত্রে বর্ণনা করেন- “নিশ্চয় এ ইলম (জ্ঞান) দ্বীন (ধর্ম), সুতরাং তোমরা ভালোভাবে যাচাই বাচাই করে তা গ্রহণ করো যে, কার থেকে তা গ্রহণ করা হচ্ছে।

এই হাদিস দিয়ে আপনি পোশাক এর উপর গুরুত্ব বোঝাতে চাইলেন? আমি যদি বলি এই হাদিস দ্বারা ঐ সকল ব্যক্তিদের কাছ থেকে জ্ঞান নেয়ার কথা বলা হয়েছে, যারা ইসলামের ফরজ গুলো পালন করেন, যারা হালাল পথে রোজগার করেন, যারা হারাম পরিহার করেন, যারা অন্যের ক্ষতি করেন না, যারা প্রকৃত ইসলাম সম্পর্কে জানেন। এখানে পোশাক তো আসার কথা না।

ইসলামে পবিত্র কোরআনে কি কোথাও আরবি লেবাস ছাড়া অন্য কোন পোশাক পরিধানের উপর কোন বিধি নিষেধ দিয়েছে? শীত প্রধান অঞ্চল যেখানে বরফ ঢাকা থাকে, সেই স্থানের পোশাক তাহলে কি হবে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.