নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কবিতা

ইকবাল মাহমুদ

নিজের সম্পর্কে নিজের আসলে তেমন একটা কিছু বলার থাকেনা, সহজ সরল অনেক, মানুষ কে বিশ্বাস করতে ভালো লাগে। ল' পরতেসি, গীটার আর গান খুব ভালবাসি, কবিতা ভালবাসি , আর ভালবাসি বন্ধুদের সাথে জমিয়ে আড্ডা । আর হাল্কা লিখালিখির বদভ্যাস আছে। https://www.facebook.com/iqusan

ইকবাল মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি নীল অপরাজিতা ও গোল্ডলিফ সিগারেট

২৫ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:২৮

এক ছোট ভাই এর লাইফ স্টোরি এর সাথে ফিকশন মিশিয়ে একটি ছোট গল্প লিখেই ফেললাম। আবারো ক্ষমা প্রার্থনা করে নিলাম ফিকশন যোগ করার জন্য।



*****একটি নীল অপরাজিতা ও গোল্ডলিফ সিগারেট*******



গত দশ মিনিট ধরে বনানী এগারো এর সামনে দাড়িয়ে আছে দীপরাজ, অপেক্ষা করছে ত্রপার জন্য। মাত্র দশ মিনিট অথচ দিপরাজের মনে হচ্ছে কত সময় ধরেই না সে দাড়িয়ে আছে। কিন্তু তার একটুও খারাপ লাগছেনা। আজকে দিপরাজ এর এক অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করছে।

আজ ত্রপার জন্মদিন, আর এই উপলখ্যে দিপরাজ এর প্ল্যান টাই একটু ভিন্য ধরনের । অনেক ভালো লাগার কিছু মুহূর্ত থাকবে আজকের এই সময় টা ঘিরে, চোখ বন্ধ করলেই সে ত্রপা কে দেখতে পাচ্ছে। ত্রপা অনেক খুশি হবে আজ, কেননা এতদিন পর দিপরাজ তার মনের কথা বলতে যাচ্ছে।

এই ভালোলাগার শুরু টা যে কোন একদিনে নয়, অনেক গুলো দিন একসাথে সময় কাটানোর পরেই দিপরাজের এই অবস্থানে আসা। একসাথে কত ঘুরাঘুরি, বিকেলের স্নিগ্ধ আলোতে একসাথে পথে পথে হেটে বেড়ানো,এমন কত গুলি অসাধারন সময় কেটেছিল দিপরাজ এর। কত রাত ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলাপ, কত কিছু নিয়েই না কথা বলতে পারে ত্রপা, এক নিমিষেই যেন সব কিছু ভেসে উঠছে দিপরাজ এর চোখে।

একদিন ত্রপা বলেছিল তুমি কি শুনতে চাও আমার অনেক গুলি না বলা কথা? দিপরাজ সেদিন শুনেছিল ত্রপার অনেক কথা। অনেক ছেলেই ত্রপা কে পছন্দ করে, কিন্তু ত্রপা দিপরাজ কেই বেশি প্রাধান্য দেয়, দীপরাজ এ জন্য অনেক খুশি।

একদিন দিপরাজ বলেছিল...জানো? তোমার নাম পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে লিখে দেখি সব কবিতার মত লাগে। সেদিন ত্রপা খুব হেসেছিল। ত্রপার হাসি টা কতই না সুন্দর , যেন পাহাড়ি কোন ঝর্না বয়ে চলছে অবিরাম। হাসি থেমে গেলেও দিপরাজ সেই শব্দ অনেক্ষন ধরে শুনতে পায়।

দিপরাজ খুব মনোযোগ দিয়ে ত্রপার কথা গুলো শুনত,মনে রাখত ত্রপার খুব ছোট খাটো পছন্দ অপছন্দ গুলো। কিন্তু তা ত্রপা কে বুঝতে দিতে চায়নি কখনো দিপরাজ,সে চেয়েছিল একদিন হঠাৎ করেই ত্রপা কে চমকে দিবে। ত্রপার অপরাজিতা ফুল খুবি পছন্দের ছিল, আর তাই দিপরাজ আজ অপরাজিতা ফুল হাতে অপেক্ষায় আছে।

ঢাকা শহর টাও কেমন জানি! কোথাও অপরাজিতা ফুল নেই, কত কষ্ট করে যে দিপরাজ কে এই অপরাজিতা ফুল খুজে পেতে হয়েছে সে এক অন্য গল্প।

আজকের দিন টা দিপরাজ একটু স্পেশাল করে রাখতে চায়, রেস্টুরেন্টে ইতিমিধ্যেই বলা আছে যে তারা সে রেস্টুরেন্ট এ ঢুকার সাথে সাথেই যেন ত্রপার পছন্দের গান গুলি সব একের পর এক বাজতে শুরু হয়। মনের কথা বলার আগে একটু আবেশ তৈরি করে নিতে চায় দিপরাজ।

ত্রপা একদিন বলেছিল ছেলেদের সাদা শার্ট,জিন্স আর কনভার্স এ খুব ভালো লাগে,আর তাই দিপরাজ আজ ত্রপার পছন্দ মতই এসেছে। রেস্টুরেন্ট এ একটা গিফট বক্স রাখা আছে, আর তার হাতে একটি নীল অপরাজিতা। এইত ত্রপা কে দেখা যাচ্ছে,রিকশা করে ত্রপা আসছে, হৃদয় স্পন্দন হঠাৎ করে তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে যাচ্ছে দিপরাজ এর।

আজকে সে ত্রপা কে বলবে তার ভালোবাসার কথা, অনেক দিন ধরে জমিয়ে রাখা আবেগ গুলি আজ প্রকাশ করবে দিপরাজ, সে জানে ত্রপা ও তাকে অনেক পছন্দ করে। এতদিনের এতটা পথ এক সাথে হাটা,এত আবেগ আর অধিকার সকটুকু তো আর মিথ্যে হতে পারেনা।





আজ ত্রপার জন্মদিন, জন্মদিন গুলো সাধারণত একটু স্পেশাল ই হয়ে থাকে। সারা রাত ফোনে উইশ, পুরা ফেবু টাইমলাইন জুড়ে শুধু একটি কথা শুভ জন্মদিন। এতকিছু কারই না ভালো লাগে, সে এখন যাচ্ছে দিপরাজ এর সাথে দেখা করতে, অসাধারন ভালো একটি ছেলে দিপরাজ। এইত দূরে দিপরাজ কে দেখা যাচ্ছে...... হাতে একটি নীল অপরাজিতা !

খুবি অবাক হয় ত্রপা, সে বুঝতেই পারেনি দিপরাজ তাকে নীল অপরাজিতা এনে দিবে। কবে জানি বলেছিল তার নীল অপরাজিতা পছন্দ? সে তো অনেক দিন হয়ে গেলো, এখনো দিপরাজ মনে রেখেছে? ত্রপা অনেক খুশি হয়, চোখে মুখে তার খুশির ভাব ফুটে উঠে, রিকশা এসে থামল দিপরাজ এর সামনে।

ওমা! ত্রপা প্রায় চিৎকার করে বলে উঠে আমার জন্য এনেছ ফুল? ওয়াও! দিপরাজ, তুমি মনে রেখেছ?

তুমি বলবে আর আমি এনে দিব না, তাকি হয়?

ইয়েই ইয়েই...!! অনেক ধন্যবাদ তোমাকে দিপরাজ, খুশি তে ঝলমল করে উঠে ত্রপা।

ওরা দুজন কথা বলতে বলতে রেস্টুরেন্ট এর দিকে যেতে লাগলো, এই রেস্টুরেন্টেই দিপরাজ আর ত্রপা সবসময় দেখা করে। রেস্টুরেন্ট এ ঢুকতেই ত্রপা হঠাৎ লক্ষ করতে থাকে যে তার প্রিয় একটি গান বাজছে রেস্টুরেন্টে ।

ত্রপা দিপরাজ এর দিকে অবাক হয়ে তাকাতেই দেখে সে হাসছে, তখন ত্রপাও বুঝতে পারে এটি তাও জন্য জন্মদিনের উপহার গুলোর মধ্যে একটা।

ওরা সবসময় যে টেবিল এ বসে, সেখানে গিয়ে দেখে একটি কেক রাখা আছে, তার উপর ছোট্ট সুন্দর সুন্দর কিছু মোমবাতি, ত্রপার মন টা খুশি তে ভরে উঠতে থাকে।

ওরা টেবিল এ বসার পর পরেই ত্রপার পছন্দের খাওয়ার গুলো আসতে থাকে একের পর এক। ত্রপা ভাবে আজ মনে হয় শুধু তার শুধু সারপ্রাইজ হবারই দিন।

খাওয়া দাওয়া শেষে ওরা যখন বিদায় নিবে তখন দিপরাজ ত্রপা কে সেই গিফট বক্স টি দেয়, এর মধ্যে রয়েছে কিছু চকোলেট আর একটা চিঠি।

চিঠির মধ্যে তার ভাললাগার কথা গুলো বলা আছে, বলা আছে কিভাবে একটু একটু করে ত্রপা কে ভালো লাগতে শুরু করল, কিভাবে ওরা দুজন একটু একটু করে কাছে আসতে শুরু করলো সব কিছু।



বাসায় ফিরে ত্রপা যখন গিফট বক্স খুলে চিঠি টি পড়তে শুরু করে তখন তার সিবকিছু কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যেতে থাকে। সে বুঝতে পারে সে একটি ভুল করে ফেলেছে, সে দিপরাজ এর সাথে খুব বেশি ক্লোজ হয়ে গিয়েছিলো। এতটা তার উচিৎ হয়নি, কিন্তু এখন তো অনেক বেশি দেরি হয়ে গেলো। সে তো দিপরাজ কে খুব কাছের একজন বন্ধু ভাবত, এর বেশি কিছু তো নয়। তার কষ্টের সময় গুলো তে দিপরাজ তাকে অনেক বেশি সাপোর্ট করে গিয়েছে, আর শুধু তার জন্যই ত্রপা এখনো ভালো থাকার অনুপ্রেরনা পায়। অথচ ত্রপা দিপরাজ কে বন্ধু থেকে বেশি কিছু ভাবতেই পারছেনা।

চিঠি তে লিখা ছিল যদি তার উত্তর হ্যাঁ হয় তাহলে যেন সে দিপরাজ কে রাত ১০ টায় ফোন দেয় আর উত্তর যদি না হয় তাহলে ফোন না দিলেই দিপরাজ বুঝে নিবে। ত্রপার দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছে, দেয়াল ঘড়ি তে রাত দশটা বাজার সঙ্কেত দিলো মাত্র। ত্রপা ফোন হাতে নিয়ে দিপরাজ এর নাম্বার টি স্ক্রিনে নিয়ে আসে, কিন্তু তার আর ফোন দেওয়া হয়না সে ফোন হাতে নিয়ে বসে থাকে। তার খুব ইচ্ছে করছে তার অনুভূতি গুলো দিপরাজ এর সাথে শেয়ার করতে, কিন্তু কি জানি একটা বাঁধা কি জানি একটা অদৃশ্য দেয়াল আজ দুজনের মাঝে । ত্রপার ঝাপসা দৃষ্টি আরও ঝাপসা হতে থাকে, অশ্রু গড়িয়ে পরে তার চিবুক দিয়ে। ফোন হাতে নিয়ে সে বসেই থাকে।



এভাবেই দিপরাজ এর ভালোবাসা টি পরে থাকে ঝরা পাতার মত। অদৃশ্য দেয়াল জুড়ে শ্যাওলা বেয়ে উঠে আর দিপরাজ ভাবে_

ভূল চোখের ভাষায়

ভূল নদীতে ঝাপ দিয়েছি,

লাল সে স্রোতে সঙ্গোপনে তলিয়ে গেছি।

ধূর্ত চাঁদের জোছনা-কোমল শীতলতায়

সিক্ত হয়ে সুধাই আমি

তবে কি হায় ভূল করেছি?



আর দিপরাজ এর হাতে উঠে আসে একটি গোল্ডলিফ সিগারেট।



কেউ একজন বলেছিল _ একটি ছেলে ছেলে যখন একা একা ধূমপান করতে থাকে তখন তার সাথে আর “একা” শব্দ টি ব্যাবহার করা যাবেনা কারন ছেলেটি একা নয় তার সাথ একটি সিগারেট আছে।

_________________________________



দিপরাজ কে বিশেষ ধন্যবাদ ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৪২

মেনন আহমেদ বলেছেন: খুব ভালো লাগলো।

২৫ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১:০৭

ইকবাল মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.