নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি হৃদয়ে বাংলাদেশ, প্রবাসেও বাংলাদেশ!

বহু বছর ধরে প্রবাসে দিন কাটাচ্ছি

চাটগাইয়া জাবেদ

প্রবাসী মন!

চাটগাইয়া জাবেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতের লুইচ্ছা ভন্ড বাবা গুরমিত সিংহ\'রে যে সাধ্বীর কারনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল!

২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৩:১৪

আমি পঞ্জাব থেকে আসা মেয়ে। সিরসা (হরিয়ানা)-র ডেরা সচ্চা সৌদায় একজন সাধ্বী হিসেবে সেবা করে চলেছি গত ৫ বছর ধরে। আমার মতো আরও কয়েকশো মেয়ে এখানে রয়েছেন, যাঁরা প্রতি দিন ১৮ ঘণ্টা করে সেবা করে চলেছেন।
কিন্তু এখানে আমরা যৌন নির্যাতনের শিকার। ডেরায় মেয়েদের ধর্ষণ করেন ডেরা মহারাজ (গুরমিত সিংহ)। আমি একজন স্নাতক। ডেরা মহারাজের উপরে আমার পরিবারের অন্ধ বিশ্বাস। পরিবারের সেই অন্ধবিশ্বাসের জেরেই আজ আমি একজন সাধ্বী। সাধ্বী হওয়ার বছর দুয়েক পর এক দিন রাত ১০টা নাগাদ হঠাৎ এক মহিলা ভক্ত আমার ঘরে আসেন। জানান, মহারাজ আমাকে ডেকেছেন। মহারাজ স্বয়ং ডেকে পাঠিয়েছেন শুনে খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছিলাম। সাধ্বী হওয়ার পর সেটাই তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাৎ। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে তাঁর ঘরে ঢুকি। দেখলাম ওনার হাতে একটা রিমোট এবং টিভিতে তিনি ব্লু ফিল্ম দেখছেন। বিছানায় তাঁর বালিশের পাশে একটা পিস্তল রাখা ছিল। এ সব দেখে আমি ভয় পেয়ে যাই। ভীষণ নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। এর পর মহারাজ টিভিটা বন্ধ করে দেন। আমাকে ঠিক তাঁর পাশে নিয়ে গিয়ে বসান। খাওয়ার জন্য এক গ্লাস জল দেন। তার পর খুব আস্তে করে বলেন, ডেকে পাঠানোর কারণ আমাকে তিনি নিজের খুব কাছের বলে মনে করেন। এটাই ছিল আমার প্রথম অভিজ্ঞতা।

এর পরই তিনি এক হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে তাঁর আরও কাছে টেনে নেন। কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে বলেন, আমাকে তিনি হৃদয়ের গভীর থেকে ভালবাসেন। আমার সঙ্গে সহবাস করতে চান। বলেন, তাঁর শিষ্যা হওয়ার সময়ই আমার সমস্ত সম্পদ, আমার শরীর এবং আত্মা তাঁর কাছে উৎসর্গ করেছি এবং তিনি তা গ্রহণও করেছেন। আমি বাধা দিলে তিনি বলেন, ‘আমি ঈশ্বর, এতে তো কোনও সন্দেহ নেই’। আমি তাঁকে বলি, ঈশ্বর কখনও এ রকম করেন না। আমাকে বাধা দিয়ে তিনি বলেন:
১) শ্রীকৃষ্ণও ঈশ্বর। তাঁর ৩৬০ জন গোপী ছিলেন। যাঁদের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণ প্রেমলীলা করতেন। আমাকেও সবাই ঈশ্বর বলে মানে। এতে এত অবাক হওয়ার কিছু নেই।
২) আমি তোমাকে এখনই এই পিস্তল দিয়ে খুন করতে পারি। তোমার লাশ এখানেই পুঁতে দেব। তোমার পরিবারের প্রতিটা সদস্য আমার অন্ধ ভক্ত। তুমি খুব ভাল করেই জানো, তাঁরা কখনই আমার বিপক্ষে যাবেন না।
৩) সরকারের উপরেও আমার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। পঞ্জাব, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রের অনেক মন্ত্রীও আমার কাছে আসেন। আমার প্রতি তাঁদের ভক্তি দেখান। রাজনীতিবিদরা আমার কাছ থেকে সাহায্য নিতে থাকেন। সুতরাং তাঁরাও আমার বিরুদ্ধে কোনও রকম পদক্ষেপ করবে না। আমি তোমার পরিবারের সদস্যদের সরকারি চাকরি কেড়ে নেব এবং তাঁদের সেবাদার দিয়ে খুন করাব। আর সেই খুনের কোনও প্রমাণ থাকবে না। তুমি খুব ভাল করেই জানো, ডেরা ম্যানেজার ফকিরচাঁদকেও আমি গুন্ডা দিয়ে খুন করিয়েছি। এখনও সেই খুনের কিনারা হয়নি। ডেরার দৈনিক আয় এক কোটি। এই টাকা দিয়ে আমরা রাজনীতিক নেতা, পুলিশ এমনকি বিচারক সকলকেই কিনে ফেলতে পারি।

ঠিক এর পরই মহারাজ আমাকে ধর্ষণ করেন। গত তিন বছর ধরেই মহারাজ এ ভাবে আমাকে ধর্ষণ করে আসছেন। প্রতি ২৫ থেকে ৩০ দিন অন্তর আমার পালা আসে। আমি জানতে পেরেছি, আমার মতো যত জন সাধ্বীকে তিনি তলব করেছেন, তাঁদের সকলকেই ধর্ষণ করেছেন। বেশিরভাগেরই বয়স এখন ৩০ থেকে ৪০। বিয়ের বয়স পেরিয়ে গিয়েছে। তাঁদের কাছে এখন ডেরার এই আশ্রয় ছাড়া আর কোনও অবলম্বন নেই।
এই সমস্ত মহিলাদের বেশিরভাগই শিক্ষিত। কারও স্নাতক তো কারও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে। কিন্তু তাঁরা তা সত্ত্বেও এই নরকবাস করছেন। কারণ একটাই, মহারাজের উপরে তাঁদের পরিবারের অন্ধ বিশ্বাস। আমরা সাদা পোশাক পরি, মাথায় স্কার্ফ বাঁধি, পুরুষদের দিকে চেয়ে দেখি না। পুরুষদের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন হলে ৫-১০ ফুট দূরত্ব বজায় রাখি। কারণ, এ সবই মহারাজের ইচ্ছা। তাঁর কথা মতোই আমরা এখানে চলাফেরা করি। সাধারণ মানুষ আমাদের দেবী গণ্য করেন। কিন্তু তাঁরা জানেন না, ডেরাতে আমরা আসলে রক্ষিতা। ডেরা এবং মহারাজের আসল সত্যিটা আমি আমার পরিবারকে জানানোর চেষ্টা করেছিলাম। তাতে তাঁরা আমাকেই বকাবকি করেন। জানান, ডেরায় স্বয়ং ঈশ্বরের (মহারাজ) বাস। সুতরাং এর থেকে ভাল জায়গা আর নেই। এবং ডেরা সম্পর্কে যেহেতু আমার মনে খারাপ ধারণা জন্মেছে, তাই আমার উচিত ‘সতগুরু’-র নাম করা। শেষ পর্যন্ত আমাকে মহারাজের সমস্ত আদেশ পালন করতেই হয়, কারণ আমি সব মিলিয়ে অসহায়।
এখানে কাউকেই অন্যদের সঙ্গে বেশি কথা বলতে দেওয়া হয় না। পাছে ডেরার সত্য ফাঁস হয়ে যায়, তাই টেলিফোনেও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয় না। কোনও সাধ্বী যদি মহারাজের এই আচরণ ফাঁস করে দেন, তাহলে মহারাজের আদেশ মতো তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়। কিছু দিন আগে, ভাতিন্দার এক তরুণী মহারাজের এই সমস্ত নির্যাতনের কথা পরিবারকে জানান। মহারাজের নির্দেশে সমস্ত সাধ্বী মিলে তাঁকে বেধড়ক পেটান। মেরুদণ্ডে গুরুতর চোট নিয়ে তিনি এখন শয্যাশায়ী। তাঁর বাবা ডেরায় কাজ করতেন। কাজে ইস্তফা দিয়ে বাড়ি ফিরে যান। মহারাজের ভয়ে এবং আত্মসম্মানের কথা ভেবে মুখ খোলেননি।

একই ভাবে, এই নির্যাতনের শিকার হন কুরুক্ষেত্রের এক তরুণীও। ডেরা ছেড়ে বাড়ি চলে যান তিনি। তাঁর কাছ থেকে এ সব কথা জানার পর তাঁর ভাইও ডেরার কাজ থেকে ইস্তফা দিয়ে চলে যান। পঞ্জাবের সঙ্গরুর এক তরুণী সাহস করে বাড়ি ফিরে ডেরার ভয়ঙ্কর দিকটা সবাইকে জানিয়েছিলেন। পর দিনই ডেরার অস্ত্রধারী সেবাদার বা গুন্ডারা তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যান। মুখ খুললে তাঁকে খুনের হুমকি দেন।
একই ভাবে মানসা, ফিরোজপুর, পাতিয়ালা এবং লুধিয়ানা থেকে এখানে আসা তরুণীরাও ভয়ে ডেরা নিয়ে কিছু জানাতে চাননি। তাঁরা ডেরা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। কিন্তু তার পরও খুন হওয়ার ভয়ে মুখ বন্ধ করে আছেন। সিরসা, হিসার, ফতেয়াবাদ, হনুমানগড় এবং মেরঠের তরুণীরাও মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন।
আমিও যদি আমার নাম জানাই, তাহলে আমাকে এবং আমার পরিবারকে খুন করা হবে। সাধারণ মানুষের স্বার্থেই এই সত্য আমি সামনে আনতে চাই। এই মানসিক চাপ আর নির্যাতন সহ্য করতে পারছি না। খুব বিপদে রয়েছি। সংবাদমাধ্যম বা সরকারি কোনও সংস্থা যদি তদন্ত চালায়, তা হলে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন সাধ্বী এগিয়ে এসে এই সত্য জানাবেন আমি নিশ্চিত। আমাদের ডাক্তারি পরীক্ষা করা হোক। আমরা আদৌ সাধ্বী কি না তা জানা হোক। পরীক্ষায় যদি প্রমাণ হয় যে আমদের কুমারিত্ব নেই, তাহলে তদন্ত করে জানা হোক, কে আমাদের সতিত্ব হরণ করেছেন।

তাহলেই সত্য বাইরে আসবে। মহারাজ গুরমিত রাম রহিম সিংহই যে আমাদের জীবন নষ্ট করেছেন তার প্রমাণ মিলবে!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৪৪

নীল আকাশ ২০১৬ বলেছেন: চ্যানেল আইতে গুরমিত সিংকে ইন্ডিয়ার 'সাঈদী' বলে প্রচার করা হচ্ছে। কেন? বাংলাদেশের সাঈদী কি তার মত কোন ডেরা পরিচালনা করতেন? তারও কি পোষা কিছু 'সাধ্বী' ছিল? সেও কি তার ইনকাম দিয়ে বাংলাদেশের মন্ত্রী, পুলিশ, বিচারক কিনে ফেলতে পারত?

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:০০

বিজন রয় বলেছেন: কলংক। আতংক।

পোস্টে সূত্রটি দিয়ে দিন।

৩| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:২৯

জেকলেট বলেছেন: গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের ফাসি হওয়া উচিত। কিন্তু ব্যাপারটা নিয়া মনে হয় ইন্ডিয়ার মুক্তমনা মিডিয়া মুখপাত্র NDTV খুব গোস্বা। গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের নামের শুধু "রহিম" অংশ নিয়া উনারা টেলপ করছে। ব্যাপারটা হাস্যকর রকমের দৃষ্টিকটু। আর চ্যানেল আইয়ের কথা কি বলব !! হলুদ সাংবাদিকতার প্রধানতম পৃষ্টপোষক হচ্ছে এই চ্যানেল আই

৪| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ২:০৮

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আনন্দবাজারের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলে কিছু হতো কি??




''

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.