নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রাগঐতিহাসিক ধারাভাষ্যকার শ্রদ্ধেয় \"চৌঃ জাফর উল্লাহ শরাফতের\" সাথে আমার নামের মিল ছাড়া, কাছে বা দুরের কোণ সম্পর্ক নেই।

চৌধুরী জাফর উল্লাহ শরাফত

সাধারণ মানুষ

চৌধুরী জাফর উল্লাহ শরাফত › বিস্তারিত পোস্টঃ

!!!!!!!!!!!!!!জ-ন-নী!!!!!!!!!!

১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৩৮

"জননী"
বিশেষ্য পদ = জন্মদাত্রী, মাতা।
বিশেষণ পদ= উৎপাদনকারিণী।
কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের (তাকমীল) সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান আইন, ২০১৮’ পাস হওয়ায় সোহরাওয়াদী উদ্যানে অনুষ্ঠিত "আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ" আয়োজিত ‘শোকরানা মাহফিলে’ বক্তব্য দেয়ার সময় উত্তরবঙ্গ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সভাপতি ও গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা রুহুল আমিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধিতে ভূষিত করলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি রেখে বলেন, "আমরা আপনার কাছে দাবি রাখব, বিশেষ করে আপনার পরবর্তী প্রজন্ম, আমার ভাই সজীব ওয়াজেদ জয় ভাইকেও ওলামায়ে কেরামদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করে দিয়ে যাবেন।" কওমির ছয় বোর্ডের সমন্বিত আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী। প্রধানমন্ত্রীকে কওমি জননী উপাধি দেওয়ার পাশাপাশি কওমি শিক্ষার স্বীকৃতি আদায়ে সব আলেমকে একত্র করার ক্ষেত্রে অবদান রাখায় হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফীকে "স্বাধীনতা পদক" দেওয়ারও দাবি উঠে। তবে সৌভাগ্য বশত এ ভয়ংকর দাবির পক্ষে, সরকারি পর্যায় থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সত্যি সেলুকাস কি বিচিত্র এই "আলেম সমাজ"।
আপনারা বেমালুম ভুলে গেলেন "গজারি" লাঠির বারি!!!!! ভুলে গেলেন ২০১৩ সালের ৫মে শাপলা চত্তরে অনুষ্ঠিত "অপারেশন সিকিউর শাপলা"। যেখানে আপনাদেরই ভাষ্য মতে আওয়ামী হায়েনাদের উন্মাদের মত আক্রমন ও লাগাতার গোলাগুলির সামনে শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করেন ২৫০০ এর অধিক হেফাজতে ইসলাম এর কর্মী ও সাধারন জনতা। আহত হন ১০০০০ এরও বেশী। সেই হায়েনাদের নেত্রীকে নিজেদের জননী বানিয়ে জাতির "ভাতিজা" বনে গেলেন!!!!
হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও ঢাকা মহানগরীর আহ্বায়ক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, "২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরের ঘটনায় যারা শাহাদাত বরণ করেছেন, তারা ঈমান আকীদা রক্ষার সংগ্রামের ইতিহাস রচনা করেছেন। তাদের ইতিহাস ইসলামের বৃক্ষকে তরতাজা রাখার ইতিহাস। আগামীতে শত শত বছর এই ইতিহাস জাতিকে ত্যাগ ও কুরবানীর শিক্ষা দেবে।"

মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, "হেফাজত কারও সঙ্গে আঁতাত করেনি, করতে পারে না, করবে না। যারা এমন কথা বলেন, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, পুলিশ ছাড়া আসুন। তাহলে বুঝা যাবে কত ধানে কত চাল। তিনি বলেন, হেফাজত কারো কাছে মাথা নত করেনি করবে না। হেফাজত শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীব্যাপী একটি মজবুত সংগঠন।"

ড. আহমেদ আব্দুল কাদের বলেন, "যাদের হাত হেফাজতকর্মীদের রক্তরঞ্জিত হয়েছে তাদের সঙ্গে আপস করার কোন সুযোগ নেই। মুরতাদদের সঙ্গে কোন আপস হতে পারে না।"

মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী বলেন, "যুগ যুগ ধরে জাতি ৫ মেকে স্মরণ রাখবে। শাপলা চত্বরের ঘটনার জবাব জাতি দেবে। এখন আমাদের মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সুযোগ পেলে জাতি শাপলা চত্বরের জবাব দেবে।"

মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী বলেন, "কিছু মিডিয়া হেফাজতকে খোঁচা দিয়ে লিখছে। যারা আমাদেরকে রক্তাক্ত করেছে, আমাদের ওপর জুলুম করেছে তাদের সঙ্গে আপস হতে পারে না। যারা আপস করবে তারা সরকার ও নাস্তিকদের দালাল।"
ডেইলি সংগ্রাম
যাক আপনাদের ব্যপার আপনারাই ভালো বুঝবেন। সামনে নির্বাচন। ভোটের যুদ্ধে যে কোন রাজনৈতিক দলই চাবে হেফাজত তথা আলেম সমাজের এত বড় একটি ভোট ব্যংককে নিজেদের আয়ত্তে রাখতে। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী সফল চাল দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই “কওমিকণ্ঠ” নামের অনলাইন পোর্টালে খবরের শিরনামে এসেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় দেখতে চান কওমি আলেমরা। শেখ হাসিনা পুনরায় সরকারে এলে ইসলামের জন্য কাজ করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তারা। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের উন্নয়নেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন কওমি আলেমরা। কওমিকণ্ঠ নভেম্বর ৪, ২০১৮।
কাওমী কণ্ঠ
সব রাজনৈতিক দলের মতই আওয়ামীলীগের লক্ষও থাকবে রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা, যারা সাধারন জনগন, আমাদের তো আর সেই বাধ্য বাধকতা নেই। তাই আমরা বিরিয়ানির ডেক নেড়েচেড়ে দেখতেই পারি।
কওমি মাদ্রাসার এই স্বীকৃতি দেয়াতে দুটি ক্ষেত্রে এর প্রভাব দেখা যেতে পারে।
প্রথমত, কাওমি ছাত্রদের সামাজিক মন মানসিকতায়। কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস (তাকমীল) পাশ করা প্রায় ২০০০ জনকে সরকারী চাকরীতে নিয়োগ দেয়ার কথা বার্তা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন কাওমি মাদ্রাসা থেকে পাশ করা লাখের উপরে ছাত্রদের তুলনায় ২০০০ পর্যাপ্ত নয়। বাকিদের কিছু যাবে তাদেরই মাদ্রাসা গুলো তে শিক্ষক হিসাবে, কিছু যাবে ইমামতির কাজে, কিছু বয়ান বাজি তথা মাহফিল করে বেড়াবে আর কিছু অংশকে অবশ্যই যেতে হবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোতে। কাওমি নেতারা যতই বলুক, “চাকরী পাওয়াটা বা অর্থ উপার্জন মুখ্য উদ্দেশ্য নয়।” সে কথা ধোপে টিকছে না। ডেস্টিনির মত মাল্টি ন্যশনাল বিজনেসের নামে বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কাওমি আলেমদের অধিক উপস্থিতি এই যুক্তির বিরুদ্ধে প্রমান হিসাবে যথেষ্ট। খোদ চরমনাই পীর সাহেবের ছেলের বিরুদ্ধে মাল্টি ন্যশনাল বিজনেসের নামে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্বসাদের অভিযোগ রয়েছে। ভুক্ত ভোগীদের বেশিরভাগই কাওমি সংশ্লিষ্ট আলেম,ছাত্র ও সাধারন মানুষজন।
ভিডিও-১
ভিডিও-২
সুতরাং তারা যখন চাকরীর আশায় বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে যাবে তখন তারা নিজেরাই বুঝতে পারবে তারা মূল ধারার শিক্ষা থেকে কতটা পিছিয়ে আছে। এই বুঝ থেকে নতুন প্রজন্মের কাওমি শিক্ষা নীতি প্রনেতারা হয়তো নিজেদের প্রয়োজনেই তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা যুগোপযোগী করতে বাধ্য হবে।
তাছাড়া বেশির ভাগ কাওমি ছাত্রদের মাঝে সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যপার হচ্ছে অন্য ধর্মের লোকদের প্রতি বিদ্বেষ। আমরা যারা জেনারেল লাইনে বিদ্যালয়, উচ্চবিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বের হই তাদের সবারই একজন করে হলেও হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান বন্ধু আছে। আমাদের আশে পাশে প্রতিবেশিদের মাঝেও হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান আছেন। আমরা ছোট বেলা থেকেই আমাদের প্রতি তাদের আচরণকে দেখি নিরপেক্ষ দৃষ্টি ভঙ্গি থেকে। কিন্তু কাওমি মাদ্রাসায় বেড়ে ওঠা একজন ছাত্র সেই দৃষ্টি ভঙ্গিতে তাদের দেখতে পারবে না। কারন ছোট বেলা থেকেই তারা তাদের সাথে মিশতে তো পারেই নি বরং উল্টা তাদের কে পরিচিত করিয়ে দেয়া হতে থাকে ইসলামের শত্রু হিসাবে। চাকরীর কারনে তারা যখন অন্য ধর্মের মানুষদের সাথে মিশতে বাধ্য হবে, তাদের জানতে পারবে, বুঝতে পারবে “আবু লাহাব” আর একই সাথে কর্মরত, একই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন নেয়া সুদীপ্ত, রাজন বা রোজারিওর মানসিকতা এক নয়। তারা উপলব্ধি করতে পারবে ভারত, বার্মা বা ফিলিস্তিনে, হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান দ্বারা মুসলমান হত্যার অপরাধে পাশের টেবিলের নিরীহ সুদীপ্ত, রাজন বা রোজারিওর কল্লাটা চাপাতির কোপে ফেলে দেয়াকে সমর্থন করার কোন মানে হয় না।

দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক প্রভাব। সরকারের উপর হেফাজতের প্রভাব, যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।
শাপলা চত্বরের অপারেশনের আগ পর্যন্ত সরকারীভাবে তাদেরকে তেমন একটা বাধার সম্মুখীন হতে হয় নি। অপারেশনের পরে হেফাজতের অনেক নেতা কর্মিকে গ্রেফতার করা হলেও পরে তাদের মুক্তি দেয়া হয় এবং গরু মেরে জুতা স্বরুপ দান করা হয় সম্মান। তাদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে অহেতুক নাক গলানোর প্রতি সরকারের আচরন যদি এরকম নির্লিপ্ত থাকে তাহলে নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অবস্থা আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের মত হবে। ১৯৯৫ সালে আফগানিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলিতে ও দেশটির সমাজে আরবীয় কালচার ও অতি মাত্রায় রাজনৈতিক ইসলামিকরণের কারণে তৎকালীন আফগান প্রেসিডেন্ট বোরহানউদ্দিন রব্বানি সরকার তালেবানদের সামান্যতম প্রতিরোধ করতে পারেননি। ১৯৯৮ সালের মধ্যেই তালেবান আফগানিস্তানের ৯০ ভাগ এলাকা দখল করে নেয়।
একইভাবে পাকিস্তানেও।
বাংলাদেশ জামাত ই ইসলামের আদি পিতা, পাকিস্থান জামাত ই ইসলামের নেতাদের এবং সাথে অপরাপর মেঠো মুল্লাহদের, কিছুটা চাপে পড়ে কিছুটা গদি নিরাপদ করতে,তৎকালীন পাকিস্তান সরকার, পাক- আফগান সীমান্তের অগণিত মাদ্রাসাগুলোকে পরিণত করে আফগান ভাইদের সাহাযার্থে তালিবানী সামরিক ট্রেনিং ক্যম্পে।
পাকিস্থান টক শো
একথা আই এস আই এর তৎকালীন প্রধান আসাদ দুরানি আল জাজিরার এক অনুষ্ঠানেও স্বীকার করেন। এবং সাফাই হিসাবে বলেন, “তখনকার পরিস্থিতিতে সেটা ঠিক ছিলো।”
ভিডিও -৩
সেই সব ট্রেনিং ক্যম্পের ফসল, তাদের তৎকালীন তালিবান ভাইয়েরাই কিছুদিন আগে পাকিস্থানের একটি স্কুলে ঢুকে নির্মম ভাবে হত্যা করে ছাত্র ও শিক্ষকদের। ভাগ্য ভালো আমাদের মুল্লাহদের আহ্লাদী আহ্বানে আমরা রহিঙ্গাদের এ ধরনের কোন সামরিক সাহায্য দেই নি।
আসাদ দুরানির মত ঠিক একই ধরনের সাফাই শোনা যায় বাংলাদেশেও। তখন বাংলাদেশ থেকে মুজাহিদ পাঠানোতে যে কাওমি মাদ্রাসাগুলোর হাত ছিলো এ বিষয়ে কাওমি মাদ্রাসার প্রতিনিধিরাও অস্বীকার করেন না। তারা এর সাফাই হিসাবে বলেন, “তখনকার অবস্থা মানে সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার মুসলিম দেশ আফগান দখল করে সেখানের মুসলমানদের অত্যাচারের প্রেক্ষিতে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে সেচ্ছায় জিহাদে যোগ দেয়া মুসলমানদের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে বাংলাদেশের মুসলমানেরাও যোগ দিয়েছিলেন। তখনকার প্রেক্ষিতে সেটা ঠিক ছিলো।"
সাথে অবশ্য এও বলেন, "কিন্তু এখন সেই অবস্থা বা প্রয়োজন কোনটাই আর নেই। সাথে সেই সব জঙ্গিদের প্রভাব ও মাদ্রাসা গুলোতে আর নেই। গুটি কয়েক মানুষের জন্য পুরা কাওমি মাদ্রাসাকে দোষ দেয়া ঠিক হবে না।”
ভিডিও -৪
সেই সময়ে একই কারনে আফগানিস্থান আসা সৌদি আরবের ওসামা বিন লাদেন, গড়ে তুলেছিলেন “আল-কাইয়িদা” যেটা দেশে বিদেশে এখনো সক্রিয়। একই যুক্তিতে তিনিও কিছুটা নিরীহ হয়ে যান।
হাল আমলে বেসরকারী বিস্ববিদ্যালয় থেকে জঙ্গি দলের উদ্ভব হলেও একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বাংলাদেশে জঙ্গি উৎপাদনের আঁতুড় ঘর ছিলো “কাওমি” এবং “আলিয়া” মাদ্রাসাগুলো। আর এর ধাত্রী ছিলেন আফগান ফেরত হাজার হাজার মুজাহিদের দল যাদেরকে রিক্রুট করা হোত এ সমস্ত মাদ্রাসা থেকেই। এসব আফগান ফেরত মুজাহিদদের প্রানের স্লোগান ছিল, “আমরা সবাই তালিবান, বাংলা হবে আফগান।”
গোড়াপত্তন আফগান মুজাহিদদের হাতে
এক্ষেত্রেই আসে আশংকা। জানি না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এই নতুন ফ্রাঙ্কেস্টাইন সন্তানকে সামলে রাখতে পারবেন কিনা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.