নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আদর্শ আহেমদ

আদর্শ আহেমদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিছু অজানা বিষয় জানালাম পড়ে জেনে নিন

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৩



বাংলাদেশের প্রায় ৮০ ভাগ মুসলমানই হানাফী মাযহাবের অনুসারী আর হানাফী মাযহাবে এটা আদায় করার নিয়ম নেই কিন্তু যারা গায়েবানা নামাজ আদায় করে তারা তাদের এই নামাজের পক্ষে দলিল হিসেবে পেশ করে নবীজি আমার মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই গায়েবানা জানাজার নামাজ পড়েছেন। গায়েবানা জানাজার নামাজের প্রধান শর্তই হলো যেই লাশ খুঁজে পাওয়া যায়না সেই লাশের জানাজা আদায় করা। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশে প্রত্যেকটা লাশই তাদের আত্তীয় স্বজনরা খুঁজে পায় (কিছু ক্ষেত্রে পায় না)| আর আমার দয়াল নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দোহাই দিয়ে যারা গায়েবানা জানাজা আদায়

করে এরা প্রকৃত মুশরেক ও ফাসেক| কেননা আমার নূর নবীজি একবারই গায়েবানা জানাজা আদায় করেছেন কিন্তু

আল্লাহর হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের

নিকট ওই লাশ গায়েব ছিল না সেটা ছিল হাজের কেননা আমার নবীজির নিকট গায়েব বলতে কিছু নেই তিনি সব গায়েবের খবর জানেন | আর নবীজির নামের সাথে গায়েবানা শব্দ বাবহার করে কেউ যদি বলে নবীজি গায়েবানা নামাজ আদায় করেছেন যা আমার দয়াল নবীজির শানের সম্পূর্ণ খেলাফ এবং এটা বলা কুফরী।



প্রশ্নঃ- বাংলাদেশে প্রধানত সুন্নী,ওহাবী এবং জামায়াতেইসলামী এ তিনটি ধারার ইসলামী দলরয়েছে।কোন দলটিআসলেই হযরত মোহাম্মদ (দঃ) এর আদর্শ অনুসরন করে এবং কোনটিসঠিক?

-------------------------

উত্তরঃ-

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতও একমাত্র সঠিক দল ও

ইসলামের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী দল। বাকি আহলে

সুন্নাত ওয়াল জামাতের পরিপন্থি ইসলামী লেবাসে যত দল উপদল রয়েছে সব ভ্রান্ত দল। খারেযী, ওহাবী দেওবন্দী মতবাদ ও মওদুদী মতবাদ তথা জামায়াতে ইসলামী হল ভ্রান্ত মতবাদী। তাদের আকিদা ও আদর্শ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতে তথা নবী

করীম (দঃ), সাহাবায়ে,তাবেয়ীন, তবয়ে তাবেয়ীন ও হক্বানী আওলীয়া কেরামের পথ,মত, আকিদ্বা আমল ও আদর্শের পরিপন্থি। যেমন আহলে সুন্নাতের বিজ্ঞ আলেমগণ মিষ্টার মওদুদীর লিখিত পুস্তকসমূহ যেমন তফহীমাত,রসায়েল

মাসায়েল ও তাফহিমুল কোরআন ইত্যাদিকে পর্যালোচনা করে তার আকিদা,আদর্শ ও মতবাদকে ইসলামী পরিপন্থি বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং মুফতি মাহবুব আলী খান (রহঃ) মিঃ মওদুদীর কুফরী কালামসমূহ তার লিখিত বিভিন্ন পোস্তক থেকে বের করে একটি স্বতন্ত্র পুস্তক রচনা করেছেন যা মওদুদী আকায়েদ মারুফ কুফরিয়্যাত কিতাব নামে খ্যাত উক্ত কিতাবে তাকে ইসলাম ও ঈমান থেকে বর্হিভূত বলা হয়েছে।

.

অনুরূপভাবে ওহাবীদের মুরুব্বীগণ কর্তৃক লিখিত কিতাব সিরাতুল মুস্তাকিম, তকবিয়্যাতুল ঈমান, তাহজিরুন্নাস, বরাহীনে কাতিয়া, ও হেফজুল ঈমান ইত্যাদি পুস্তক দ্বারা প্রমাণিত যে, ওহাবী মতবাদ হল ভ্রান্ত ও কুফরী মতববাদ। ওহাবী ও মওদূদী মতবাদের অনুসারী যতদল রয়েছে তা মূলত ইসলামীক দল নয় বরং সত্তিকার অর্থে ইসলামিক দল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত তথা সুন্নী জামাতকে ধ্বংশ করার জন্য জ্বিন শয়তান ও মানব শয়তান কর্তৃক সৃষ্ট কতগুলো বাতেল মতবাদের নাম। সুন্নীরাই হল বাস্তব ইসলামের অনুসারী এবং তারাই হল সত্তিকার অর্থে নবী করীম (দঃ), সাহাবায়ে কেরাম,তাবেয়ীন, তবয়ে তাবেয়ীন ও আওলিয়া কেরামের অনুসারী,তাদের পরিচয় হল তাদের অন্তরে রয়েছে আল্লাহ, রসূল ওআউলিয়া কেরাম এর প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা ভক্তি ও ভালবাসা ,বিশুদ্ধ আকিদা আর্দশ , আমল,ও নবীজির সুন্নতের প্রতি আনুগত্য।

=> বর্তমানে হেফাজতী, ওহাবী, জামাতী, ত-ব লীগীরা জাহেলী যুগের মক্কার কাফেরদের চাইতেও নিকৃষ্ট !



=> আইয়্যামে জাহেলী যুগে যখন সাহাবাকেরামগণ রাসূলে পাকের শানে কোনো প্রশংসা করে কারো কাছে কিছু বর্ণনা করতেন, তখন মক্কার কাফেররা দলীল খুঁজত, রেফারেন্স চাইত, ঐ প্রসংশাবাণীর প্রমাণ চাইত, তখন সাহাবগণ প্রমান, রেফারেন্স দিলে তাতে মক্কার কাফেররা বিশ্বাস করতেন এবং রাসূলে পাকের প্রতি ঈমাণ আনতেন ।



** কিন্ত আজ বড়ই পরিতাপের বিষয়, কেউ যদি এখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর শানে কোনো প্রশংসা করে, তাহলে দেখা যায় হেফাজতী, ওহাবী, জামাতী, ত-বলীগীরা তখনকার যুগের মক্কার কাফেরদের মতো দলীল খুঁজতে থাকে, রেফারেন্স চাইতে থাকে । তখনকার মক্কার কাফেররাতো দলীল, রেফারেন্স দেখার পর তা বিশ্বাস করত কিন্তু বর্তমানে মুসলমান নামধারী ঐসব জামাতী, ওহাবী, হেফাজতীদেরকে দলীল কিংবা রেফারেন্স দিলেও তারা তা বিশ্বাস করেনা বরং এই রেফারেন্সগুলোকে জাল হাদিস, দুর্বল হাদিস, মিথ্যা, বানোয়াট ইত্যাদি বলে মানুষের ঈমাণ হরণে ব্যস্ত থাকে ।



# আল্লাহপাক আমাদের প্রত্যেককে সমস্ত বাতিল ফের্কা থেকে হেফাজত করুক ।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৯

ুব গস বলেছেন: একদম ঠিক

২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০১

অথর্ব বোহেমিয়ান বলেছেন: ভেরি বয়াড

৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০৬

মোঃ আনারুল ইসলাম বলেছেন:
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতও একমাত্র সঠিক দল ও
ইসলামের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী দল।
কথা ঠিক। কিন্তু আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত নামে নতুন একটি রাজনীতিক দল হাসু আপুর দোয়া নিয়ে গেল তাদের ব্যাপারে কিছু বয়ান করিলে বড়ই উপকৃত হতাম।

৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩৪

নাঈমুল ইসলাম প্রজন্ম ’৭১ বলেছেন: উপমহাদেশের নামধারী সুন্নীরা (মূলত এরা রেজভী) কবর পুজারী মুশরিক বেদাতী, যারা মাজার ব্যাবসা, পূর্বে ইংরেজদের দালালী করা আর বর্তমানে নাস্তিকদের দালালী করাই তাদের মূল কাজ।

৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৫৫

বিডিআর বলেছেন: Say, "None in the heavens and earth knows the unseen except Allah , and they do not perceive when they will be resurrected."

বলুন, আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে কেউ গায়বের খবর জানে না এবং তারা জানে না যে, তারা কখন পুনরুজ্জীবিত হবে। [সূরা নামল,আয়াত-৬৫]

৬| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৫৭

বিডিআর বলেছেন: আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না ? (সূরা আন-আম, আয়াত-৫০)

৭| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:০০

বিডিআর বলেছেন: আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য। (সূরা-আ’রাফ, আয়াত-১৮৮)

৮| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:০২

বিডিআর বলেছেন: একমাত্র আল্লাহ গায়েবের খবর জানেন। তিনি কারো কাছে নিজ গায়েব প্রকাশ করেন না। তবে যখন তিনি কোন নবী রাসুল কে মনোনীত করেন তখন অহী মারফত কিছু অদৃশ্যের সংবাদ জানিয়ে থাকেন। (সূরা-জিন, আয়াত-২৬,২৭)

৯| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৫:২৪

েফরারী এই মনটা আমার বলেছেন: পোস্টে সহমত ।
একমাত্র আল্লাহ তিনি গায়েবের খবর জানেন , কারো কাছে তিনি তাঁর রহস্য প্রকাশ করেন না, -- রসূলের মধ্যে যাঁকে তিনি মনোনয়ন করেছেন তাঁকে ব্যতীত । (সূরা-জিন, আয়াত-২৬,২৭)
@বিডিআর ইসলামের অপব্যখ্যা হতে বিরত থাকুন।

১০| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:০৭

রাকি২০১১ বলেছেন: কেননা আমার নবীজির নিকট গায়েব বলতে কিছু নেই তিনি সব গায়েবের খবর জানেন। ????


নিজের ঈমান ঠিক করে আসেন; তারপর কথা বইলেন

১১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:০৩

নাঈমুল ইসলাম প্রজন্ম ’৭১ বলেছেন: েফরারী এই মনটা আমা, উপরে প্রদত্ত্ব আমার লিঙ্ক এ ক্লিক করলেই সব জানতে পারবেন কারা অপবেক্ষা করছে !

১২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৫২

নাঈমুল ইসলাম প্রজন্ম ’৭১ বলেছেন: আলিমুল গাইব

যন্ত্র বা মাধ্যম ছাড়া সন্দেহাতীতভাবে স্বয়ং যা জানা যায় তাই এলমে গায়েব। হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ তাফসীর “মাদারিক” কিতাবে গায়েবের সজ্ঞায় বলা হয়েছে, “ যে বিষয়ের অনুকূলে কোন দলীল প্রমাণ নেই এবং যে সম্পর্কে কোন সৃষ্টিও অবগত নয় তাকে গায়েব বলে।” যা ইন্দ্রিয়ানুভূতির অগোচর এবং জ্ঞান ও বুদ্ধির অগম্য তা গয়েব। আল্লাহর নিকট কিছুই অদৃশ্য বা অজানা নেই, তাই তিনি‘ আলিমুল গাইব’।

রেজভীরা ইলমে গায়েবের অর্থ ও সংজ্ঞা না বুঝে, যে জ্ঞান আল্লাহর জন্যে এবং আল্লাহর শানের একমাত্র উপযুক্ত সে জ্ঞান রাসূলুল্লাহ (স:) এর জন্য সাব্যস্ত করে শিরক ফিস্ সিফাত এর অমার্জনীয় অপরাধে অপরাধী হয়েছে। আল্লাহর সত্তা যেমন উপকরণবিহীন তার ইলম ও উপকরণবিহীন। আল্লাহর মাধ্যম ছাড়া মাখলুকের ইলম কোন না কোন মাধ্যমে অর্জিত হয়। প্রকাশ্য অথবা গোপন, অতীত অথবা বর্তমান, দুনিয়া অথবা আখিরাত সবকিছুই আল্লাহর জন্য সমান। কোন জিনিস তার জ্ঞানের অগোচরে নেই। যমীনের বুকে বিশাল মরুভূমিতে যত বালু-কনা রয়েছে, বাগান ও বন-জঙ্গলের গাছ পালায় যত পাতা রয়েছে, প্রতি শাখায় যত ফুল এবং প্রতি ছড়ায় যত শষ্যদানা রয়েছে মানুষের মাথায় ও পশুর চামড়ায় যত লোম রয়েছে আল্লাহর জ্ঞানের এক ক্ষুদ্রতম অংশ সেগুলোর হিসাব রাখার জন্য যথেষ্ট। অথচ এসবের খবর রাখা কোন মানুষ, নবী বা ফেরেশতার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কখনো কখনো আল্লাহ তায়ালা কারো কারো জ্ঞানের সামনে তার ধারণক্ষমতা অনুযায়ী বিশ্ব-জগতের কিছু রহস্য উদ্ভাসিত করে দেন অথবা কোন অদৃশ্য বিষয় প্রকাশ করে দেন। তও একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত।

পক্ষান্তরে আল্লাহ তা’য়ালা যে গুণের অধিকারী তা তিনি পরিস্কার ভাষায় বলেছেন- “ গায়েবের চাবি তারই নিকট রয়েছে। তিনি ছাড়া অন্য কেউ তা জানে না। জলে ও স্থলে যা কিছু আছে তা তিনিই জানেন, তার অজ্ঞাতসারে একটি পাতাও পড়ে না, মাটির অন্ধকারে এমন কোন বস্তু নেই যা সুস্পষ্ট কিতাবে নেই।” (সূরা আনয়াম : 59)

তিনি প্রতিটি আওয়াজ যেভাবে শুনতে পান অনুরূপভাবে প্রতিটি জিনিসও দেখতে পান। যত গভীর অন্ধকারই হোক না কেন সেখানেও তার দৃষ্টি পৌঁছে যায়। গহীন অন্ধকারে আচ্ছন্ন জিনিস দেখার জন্য তিনি আলোর মুখাপেক্ষী নন। তিনি কারো অনুরূপ নন এবং অন্য কেউই তার অনুরূপ নয়। তিনি কোন স্থানে গন্ডিবদ্ধ নন, তিনি আরশের মধ্যে রয়েছেন এবং একই সঙ্গে সব জিনিসের সাথেও রয়েছেন। তিনি সর্বত্র পরিব্যাপ্ত।

রাসূলুল্লাহ (স:) কে আল্লাহ তা’য়ালা এমন ইলম দান করেছেন যা অন্য কোনও নবী বা ফেরেশতাকে দান করা হয়নি, সব নবী, সব মানুষ ও সব ফেরেশতার ইলম রাসূলুল্লাহ (স:) এর জ্ঞান সমুদ্রের একটি বিন্দুমাত্র। আগের পরের অসংখ্য ঘটনা, কবর জীবনের অবস্থা, হাশর ময়দানের চিত্র, জান্নাত-জাহান্নামের অবস্থান এক কথায় নবীজির শানের উপযুক্ত সমুদয় জ্ঞান তাকে দান করা হয়েছে। এর পরিমাণ আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। সাথে সাথে আমরা এ আকীদাও রাখি যে, রাসূলুল্লাহ (স:) এর পবিত্র জ্ঞানের সাথে গোটা সৃষ্টির জ্ঞানের যেমন কোন তুলনা হতে পারে না তেমনি আল্লাহর অসীম জ্ঞানের সাথে রাসূলুল্লাহ (স:) এর জ্ঞানের তুলনা চলে না।

ইলমে গায়েব সম্বন্ধে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত ইসলামী বিশ্বকোষে প্রকাশিত লেখা থেকে নিম্নে উদ্বৃত করছি। গাবা ‘আন অনুপস্থিত থাকা এবং গাব ফী, অদৃশ্যভাবে থাকা, মূল শব্দটির দ্বিবিধ অর্থ। সাম্প্রতিককালের পয়োগ রীতি অনুসারে, গায়েব (এবং বিশেষত গায়ব:) অনুপস্থিতি বোধক (এবং গায়বা: শুহুদ = উপস্থিত এর বিপরীত; সূফীতত্ত্বের একটি পারিভাষিক শব্দ) কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গায়ব বা অদৃশ্যভাবে অস্তিত্বশীল, ইন্দ্রিয়ানুভূতি এবং যুক্তি-বুদ্ধির অগম্য; অতএব যুগপৎ মনুষ্য জ্ঞানে অনুপস্থিত এবং আল্লাহর প্রজ্ঞায় গুপ্তার্থ জ্ঞাপক। ধর্মসংক্রান্ত শব্দ ভান্ডারের পারিভাষিক শব্দ হিসেবে আল গায়ব এর দ্বিতীয় অর্থ ব্যক্ত করে। সুতরাং ইহা ‘মহা রহস্য’ শব্দটি দ্বারা অনূদিত হতে পারে। বিরল ব্যতিক্রমসহ পবিত্র কুরআনে ইহার এরূপ অর্থ দৃষ্ট হয়। পবিত্র গন্থে মূল শব্দটি বারংবার ব্যবহৃত হয়েছে।

“ অদৃশ্যের জ্ঞানতো কেবল আল্লাহরই আছে” (কুরআন 10:20) “ অদৃশ্যের কুঞ্জি তারই নিকট রয়েছে, তিনি ব্যাতিত অন্য কেউ তা জানে না।” (6:59) এখানে আল্লাহর সংরক্ষিত রহস্যের (Divine mystery) উল্যেখ করা হয়েছে। এবং ইহা আপনা হতেই মানুষের বোধশক্তির অগম্য।
পবিত্র কুরআন সমস্ত গায়ব মানুষের নিকট প্রকাশ করে না, কিন্তু সমগ্র পবিত্র কুরআন গায়েবের একটি (আংশিক) সংবাদ। ফখরুদ্দীন আর-রাযী এ অর্থেই তার মহান ভাষ্যের নামকরণ করেন, “মহা রহস্যের চাবিসমূহ” (মাফাতিহুল গায়ব)।
হাম্বলীপন্থী ইবনে বাততা বলেন, মানুষ অবশ্যই নিজেকে আল্লাহর অসীম ক্ষমতার আশ্রয়ে সমর্পিত করবে এবং ঐশী মহারহস্যে (গায়ব) বিশ্বাস স্থাপন করবে। কারণ মানুষের ব্যক্তিগত বুদ্ধি-জ্ঞান মানুষকে এই রহস্য জ্ঞাত হওয়ার পর্যায়ে উন্নীত করতে অক্ষম।”
আল্লাহর সংরক্ষিত এই মহা রহস্য-এইভাবে একই সঙ্গে “বস্তুনিচয়ের রহস্য” মানুষের (প্রত্যেক মানুষের) আদৃষ্ট। ইহা আল্লাহর নিকট সংরক্ষিত, তিনি যে পরিমাণ ইচ্ছা করেন, নবীদের নিকট সেটুকুই প্রকাশ করেন।” (ইসলামী বিশ্বকোষ, দশম খন্ড, পৃষ্ঠা : 381)।

আল্লাহ আলিমুল গায়ব কুরআনের ভাষায়

আল্লাহ পাক এরশাদ ফরমান, “ বলুন, আল্লাহ ছাড়া আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে কেউই গায়েবের জ্ঞান রাখে না। এবং তারা জানে না তারা কখন পুনরুত্থিত হবে।” (সূরা আল-আনয়াম : 65)।
“ তিনি গায়ব ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তারা যাকে শরীক করে তিনি তার উর্দ্ধে।” (সূরা মুমিনূন : 92)
“ বলুন, আমি তোমাদের এটা না যে, আমার নিকট আল্লাহর ধন-ভান্ডার আছে। গায়ব সম্বন্ধেও আমি অবগত নই; এবং তোমাদের এটাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমার প্রতি যা ওহী হয় আমি কেবল তারই অনুসরণ করি। বলুন, অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান ? তোমরা কি চিন্ত কর না” (সূরা আল-আনআম : 50)।
“ বলুন, আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন, তাছাড়া আমার নিজের ভাল-মন্দের উপরও আমার কোন অধিকার নেই। আমি যদি গায়ব জানতাম তবে তো আমি বহু কল্যাণই লাভ করতাম এবং কোন অকল্যাণই আমাকে স্পর্শ করত না। আমি তো কেবল মুমিনদের জন্য সতর্ককারী ও সুসংবাদবাহী। (সূরা আরাফ : 188)
রাসূলুল্লাহ (স:) তার আশেপাশের অনেক মুনাফিকদের সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। যেমন আল্লাহ বলেন- “ মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশে পাশে আছে তাদের কেউ কেউ মুনাফিক এবং মদীনাবাসীদের মধ্যেও কেউ কেউ, তারা মুনাফিকীতে সিদ্ধ। আপনি তাদরেকে জানেন না আমি তাদেরকে জানি।” (সূরা তওবা : 101)।

রাসূলুল্লাহ (স:) নিজেও তার সম্পর্কে এ ধরণের আকীদা পোষণ নিষেধ করতেন। যেমন একবার মদীনার ছোট ছোট বালিকারা তার শানে কবিতা বললেন- “ এবং আমাদের মাঝে আছেন নবী (স:) তিনি জানেন আগামীকালের কথা। ” তাদের এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (স:) বললেন - “ এটা বলো না বরং অন্য যা বলতেছিলে, তাই বল। আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা আগামীকাল কি হবে। ”
হযরত আয়েশ (র:) বলেন, “ যে ব্যাক্তি মনে করে নবী (স:) গাযেব জানেন সে আল্লাহকে বড় অপবাদ দিল।” (বুখারী শরীফ)।

হানাফী ফিকাহ গ্রন্থের ফতোয়া

“ যে ব্যক্তি বিনাসাক্ষীতে কোন মহিলাকে বিয়ে করে এরপর বলে আল্লাহ ও রাসূলকে সাক্ষী করলাম, সে কুফরী করল।” (আলমগীরি)
কিতাবে এর কারণ র্দশিয়ে বলা হয় যে, লোকটি রাসূলুল্লাহ (স:) কে ‘আলিমুল গায়ব ও হাযির-নাযির মনে করে। অথচ এ ধরনের আকীদা পোষণ সম্পূর্ণ কুফরী।
“ এরপর ভালভাবে জেনে রাখুন, কখনো আল্লাহ তাদেরকে যা জানিয়েছেন তাছাড়া নবীগণ (আ:) গায়েবের বিষয়াবলী জানতেন না। তারপর নবী (স:) গায়েব জানতেন এ কুফরী আকীদা সর্ম্পকে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।” (ফিকতে আকবর)
“ কারো ইলমে গায়েবের দাবী করা কুরআনের সুস্পষ্ট দলীলের পরিপন্থী, সুতরাং এতে সে কাফির সাব্যস্ত হয়।” (ফতোয়ায় শামী)। ‍ৎ

আলিমুল গায়েবের অপব্যখ্যা

“ এবং আপনি যা জানতেন না তা আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন। আপনার প্রতি আল্লাহরঅসীম অনুগ্রহ রয়েছে। (সূরা নিসা : 113)।
রেজভীরা উক্ত আয়াত দ্বারা নবী করীম (স:) কে ‘আলিমুল গায়েব’ প্রতিপন্ন করে। আয়াতে ‘মা’ শব্দটি র্সাবিক অর্থে গ্রহণকরত জ্ঞান রাসূলুল্লাহ (স:) এর জন্য সাব্যস্ত করে তারা আলিমুল গায়েবের দলীল পেশ করে। এর উত্তরে আমরা কুরআন মাজিদের অন্য আয়াত পেশ করছি। “ মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন যা সে জানত না” (সূরা আলাক: 5) তবেতো তাদের ফর্মূলা অনুযায়ী প্রত্যেক মানুষই ‘আলিমুল গায়েব’ সাব্যস্ত হয়ে যায়। (নাউযুবিল্লাহ)।
তারা এ দলীল পেশ করে, “ এবং আমি প্রত্যেক বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যাস্বরুপ আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করলাম” (সূরা নাহল : 89) আমরা বলি মূসা (আ:) এর কিতাব সম্পর্কেও অনুরূপ বলা হয়েছে- “ এবং আমি মূসাকে দিয়েছিলাম কিতাব যা সৎ কর্মপরায়ণদের জন্য সম্পূর্ণ, যা সব কিছুর বিশদ বিবরণ।” (সূরা আল-আনআম : 154)।
“ আমি তার (মুসার) জন্য ফলকে সর্ববিষয়ে উপদেশ ও সর্ববিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা লিখে দিয়েছি।” (সূরা আরাফ : 145)।
“কুল্লু শাইইন” কোন স্থানে বেশি ও আধিক্য অর্থে ব্যবহৃত হয়। কোন স্থানে তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় বুঝাবার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। কুরআনে মৌমাছিকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ বলেন- “ এরপর (হে মৌমাছি) প্রত্যেক ফল হতে কিছু কিছু আহার কর।” (সুরা নাহল : 69)

আয়াতে প্রত্যেক ফল অর্থে আশেপাশের ফলসমূহ বুঝায়। তা না হলে আরবের মৌমাছি বাংলাদেশের আম ও কাঁঠাল ফল আহার করেনি। রানী বিলকিস সম্পর্কে বলা হয়েছে- “ তাকে (বিলকিসকে) সব কিছু হতে দেয়া হয়েছে।” (সূরা নামল : 23)
আয়াতে সব কিছু অর্থে তার যুগে তার প্রয়োজনীয় সবকিছু দেয়া হয়েছিল বোঝায়। তা না হলে বিলকিসকে আধুনিক যুগের যন্ত্রপাতি, টেলিফোন, টেলিভিশন, এটম বোম ইত্যাদি দেয়া হয়নি।

তারা দলীল হিসাবে এ আয়াত পেশ করেন। - “ বলুন, আমি জানি না তোমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা কি আসন্ন, না আমার প্রতিপালক এর জন্যে কোন দীর্ঘ মেয়াদ স্থির করবেন। তিনি গায়েবের পরিজ্ঞাতা, তিনি তার গায়েবের জ্ঞান কারও নিকট প্রকাশ করেন না, তার মনোনীত রাসূল ছাড়। সেইক্ষেত্রে আল্লাহ রাসূলের সামনে ও পেছনে প্রহরী নিয়োজিত করেন। রাসূলগণ তাদের প্রতিপালকের বাণী পৌঁছিয়ে দিয়েছেন কিনা জানার জন্যে। রাসূলগণের নিকট যা আছে তা তার জ্ঞানগোচর এবং তিনি সবকিছুর বিস্তারিত হিসাব রাখেন।” (সূরা জ্বিন : 25-28)
আয়াতের ব্যাখ্যা হচ্ছে- কাফিররা কিয়ামতের নির্দিষ্ট দিন-তারিখ বলে দেবার জন্য পীড়াপীড়ি করে। তাদের বলে দিন কিয়ামতের আগমন ও হিসাব-নিকাশ নিশ্চিত, তবে এর নির্দিষ্ট দিন-তারিখ আল্লাকহ কাউকেও বলেন নি। তাই আমি জানি না কিয়ামতের দিন নিকটে না আমার পালনকর্তা এর জন্য দীর্ঘ মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দিবেন। আমার না জানার কারণ এই যে, আমি আলিমুল গাইব নই। এটি আল্লাহর বিশেষ গুণ। এখানে কোন নির্বোধ ব্যক্তির মনে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে যে, রাসূলুল্লাহ (স:) যখন কোন গায়েবের জ্ঞান রাখেন না তখন তিনি রাসূল হলেন কিরূপে? কেননা, রাসূলের নিকট আল্লাহ তায়ালা হাজারো গায়েবের বিষয় ওহীর মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। উক্ত ধারণা নিরসনের জন্য পরবর্তী আয়াতে “ইল্লা” (ব্যাতিক্রম) বর্ণনা করা হয়েছে গায়েব ও গায়েবের সংবাদের মধ্যে পার্থক্য বুঝানোর জন্যে। অর্থাৎ রাসূল গায়েব জানেন না, তবে যে পরিমাণ গায়েবের সংবাদ কোন রাসূলকে দেয়া প্রয়োজন সে পরিমাণ গায়েবের সংবাদ ওহীর মাধ্যমে রাসূলকে দান করা হয়েছে। যখন রাসূলের প্রতি আমার পক্ষ হতে ওহী অবতীর্ণ হয় তখন ওহীবাহী ফেরেশতার চারপাশে ফেরেশতাগণের পাহারা থাকে যাতে শয়তান কোনরূপ হস্তক্ষেপ করতে সক্ষম ন হয়। এখানে রাসূল শব্দ দ্বারা প্রথমে রাসূল ও নবীগণকে প্রদত্ত গায়েবের প্রকার নির্ধারণ করা হয়েছে। আর তা হল শরীআত ও বিধি-বিধানের জ্ঞান ও সময়োপযোগী গায়েবের সংবাদ। সুতরাং “ইল্লা” বা ব্যাতিক্রমের মাধ্যমে নবী-রাসূলগণের জন্য প্রয়োজনীয় গায়েবের সংবাদ প্রেরণ প্রমাণিত হল। পরিভাষায় এই ব্যতিক্রমকে “ইসতিসনা মুনকাতি” (বিচ্ছিন্ন ব্যাতিক্রম) বলা হয়। যে গায়েব সম্পর্কে বলা হয়েছিল যে, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না, ব্যতিক্রমের মাধ্যমে সেই গায়েব প্রমাণ করা হয়নি বরং নবী-রাসূলের জন্য গায়েবের সংবাদ-প্রাপ্তি প্রমাণিত হয়েছে। রেজভীরা গায়েব ও গায়েবের সংবাদের মধ্যে পার্থক্য বোঝে না। নবীগণ গায়েবের সংবাদবাহী ছিলেন, ‘আলিমুল গায়েব’ ছিলেন না।

তারা মাওয়াহিব হতে দলীল হিসেবে এ হাদীস পেশ করেন- “ আল্লাহ তা’য়ালা আমার প্রতি দুনিয়াকে উঠালেন আমি এর দিকে দৃষ্টিপাত করলাম এবং কিয়ামত পর্যন্ত এতে যা কিছু হবে তার প্রতিও” (ইবনে ওমর রা:)
প্রথমত এ হাদীস একটি যয়ীফ হাদীস। এরুপ যয়ীফ হাদীস দ্বারা কোন দলীল প্রতিষ্ঠিত হয় না। এ হাদীস কুরআনের দলীল ও সহীহ হাদীস সমূহের বিপরীত। ইবনে উমর (র:) বর্ণিত এ হাদীস সম্বেন্ধে কানজুল উম্মালে বলা হয়েছে, এর সনদ দূর্বল।
দ্বিতীয়ত সহীহ মেনে নিলেও হাদীসটি খবরে ওয়াহেদ এবং খবরে ওয়াহেদ কুরআনের সুস্পষ্ট দলীলের বিপরীতে টিকে না।
তৃতীয়ত কুরআন ও অনেক সহীহ হাদীস দ্বারা দেখা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (স:) ইন্তিকাল পর্যন্ত বহু বষয়ে অবগত ছিলেন না। ইন্তিকালের পর কিয়ামত পর্যন্ত বহু বষয়ে অবগত থাকবেন না। যেমন আল্লাহ বলেন, “ যেদিন আল্লাহ রাসূলগণকে একত্রিত করবেন এবং জিজ্ঞেস করবেন তোমরাকি উত্তর পেয়েছিলে ? তারা বলবেন, আমাদেরতো কোন জ্ঞান নেই, আপনিই গায়েব সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত।” (সূরা মায়িদা : 109)।
বুখারী শরীফে র্বণিত আছে, হাশরের দিন আমার উম্মতের একদল আমার নিকট আনা হবে; তাদের হাউযে কাওসার হতে ফিরিয়ে দেয়া হবে। তখন আমি বলব, হে আল্লাহ! এরা আমার সাথী (উম্মত)।তখন আল্লাহ আমাকে বলবেন, আপনি জানেন না আপনার (ইন্তিকালের) পর এরা কি বেদাত করেছে। তখন আমি বলব, দূর হও, দূর হও।



রাসূলুল্লাহ (স:) আলিমুল গায়েব ছিলেন না কুরআনী ঘটনাবলী
নিম্নের কুরআনী ঘটনাবলী থেকে প্রমাণিত হয়, রাসূলুল্লাহ (স:) আলিমুল গায়েব ছিলেন না।

প্রথম ঘটনা :
“ হে নবী! আল্লাহ আপনার জন্য যা হালাল করেছেন তা আপনি হারাম করছেন কেন ?” (সূরা তাহরীম : 01)

সহীহ হাদীস অনুযায়ী এ আয়াত নাযিল হওয়ার কারণ এই যে, নবী করীম (স:) মধু খুবই পছন্দ করতেন। যখন রাসূলুল্লাহ (স:) উম্মুল মুমিনীন হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ (র:) এর হুজরায় তাশরীফ নিতেন তখন তিনি হুযুর (স:) এর খিদমতে মধু পেশ করতেন। এ জন্য তাঁর হুজরায় তুলনামূলকভাবে হুযুর (স:) এর যাতায়াত বেশি হয়। অন্যান্য উম্মুল মুমিনীন স্বাভাবিক কারনে ঈর্ষাণ্বিতা হন। তারা পরামর্শ করে একদিন হুযুর (স:) কে বললেন, আপনার মুখ থেকে মাগাফীর এর দুর্গন্ধ আসছে। (মাগাফীর এক প্রকার দুর্গন্ধযুক্ত আঠা) হুযুর (স:) বললেন, আমি তো মাগাফীর খাইনি। যয়নবের ঘরে মধু খেয়েছি। উম্মাহুতুল মুমিনীন বললেন, সম্ভবত মৌমাছি মাগাফীর গাছের ফুল চুষেছিল। যেহেতু হুযুর (স:) দুর্গন্ধ খুবই অপছন্দ করতেন তাই তিনি বললেন, আমি মধু পান করব না। এর উপর উল্লিখিত আয়াত নাযিল হল এবং এ বিষয়ে আল্লাহর পক্ষ হতে তাকে সাবধান করা হল। এ ঘটনায় নিম্ন বর্ণিত ফলাফল নির্গত হয়।
1. স্ত্রীদের কথায় এ কথা বিশ্বাস করলেন যে, মুখ মুবারক হতে মাগাফীর এর দুর্গন্ধ সত্যিই আসছে।
2. এ কথাও বিশ্বাস করলেন যে, সে মৌমাছি মাগাফীর এর ফুলের রস চুষে থাকবে।
3. যদি হুযুর (স:) আলিমুল গাইব হতেন, তবে তিনি প্রথমেই জানতেন যে, যদি আমি মধু না খাওয়ার প্রতিজ্ঞা করি তবে এটা আল্লাহর অপছন্দ হবে এবং তার নিকট থেকে সাবধান বাণী আসবে, ফলে তিনি আল্লাহর ইচ্ছার পরিপন্থি প্রতিজ্ঞা করতেন না।

দ্বিতীয় ঘটনা :
“আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করেছেন। কারা সত্যবাদী তা আপনার নিকট স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত এবং কারা মিথ্যাবাদী তা না জানা পর্যন্ত আপনি কেন তাদেরকে অব্যাহতি দিলেন? (সূরা তওবা : 43)

নবম হিজরীতে রাসূলুল্লাহ (স:) তাবূক অভিযানে বের হওয়ার অভিপ্রায় করলেন। সবাইকে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য ঘোষণা করা হল। মুনাফিকরা হাযির হয়ে নিজেদের বিভিন্ন বাহানা পেশ করে যুদ্ধে অংশগ্রহণের অক্ষমতা জানাল। হুযুর (স:) তাদের সবাইকে অনুমতি প্রদান করলেন। এ জন্য আয়াত নাযিল হল এবং মৃদু ভাষায় হুযুর (স:) কে সাবধান করে বলা হল, আপনি তাদের বাহানার সত্য-মিথ্যা প্রকাশ পাবার পূর্বে কেন অনুমতি দিলেন ? এটা সুস্পষ্ট কথা যে, তিনি আলিমুল গাইব ছিলেন না বলেই অনুমতি দিয়েছিলেন। অন্যথায় তারা যে মিথ্যা বাহানা পেশ করছে তা তিনি জানতেন।

তৃতীয় ঘটনা :
“ দেশে ব্যাপকভাবে শত্রুকে পরাভূত না করা পর্যন্ত বন্দী রাখা কোন নবীর জন্য সংগত নয়, তোমরা কামনা কর দুনিয়ার সম্পদ এবং আল্লাহ চান আখিরাতের কল্যাণ, আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আল্লাহর পূর্ব-বিধান না থাকলে তোমরা যা গ্রহণ করছ তজ্জন্য তোমাদের উপর মহা-শাস্তি পতিত হত। (সূরা আনফাল : 67-68)

নির্ভরযোগ্য তাফসীর গ্রন্থসমূহের বর্ণনানুসারে উল্লিখিত আয়াত নাযিলের কারণ এই যে, বদর যুদ্ধে কাফির ও মুশরিকদের 70 জন লোক মুসলমানের হাতে বন্দী হয়। হুযুর (স:) তাদের ব্যাপারে সাহাবীগণের পরামর্শ চাইলেন। হযরত আবু বকর (র:) আরজ করলেন, আমার মতে এই বন্দীদের সাথে বৈধ ব্যবহার করা হোক এবং কিছু মুক্তিপণ আদায় করে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হোক। এতে আমাদের আর্থিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে। আর এ আশাও পোষণ করা যায় যে, একদিন তারা হেদায়েতের পথে এসে ইসলাম গ্রহণ করবে। হযরত উমর (র:) আরজ করলেন, “ হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা’য়ালা আপনাকে তাদের মুক্তিপণ হতে অমুখাপেক্ষী করেছেন। এরা সবাই কাফির মুশরিকদের নেতা। যদি এখানে তাদের ধ্বংস করে দেয়া হয় তবে কুফর এর শক্তি ভেঙ্গে পড়বে। তাই আমার মত এই যে, আমাদের মধ্যে যে যার প্রিয় ও নিকট আত্মীয় তাকে তার নিকট সোপর্দ করা হোক। সে-ই তার গর্দান কাটবে। আমার অমুক প্রিয় ব্যক্তিকে আমার নিকট সোপর্দ করা হোক। হুযুর (স:) হযরত ওমর (র:) এর অভিমত গ্রহণ না করে হযরত আবূ বকর (র:) এর পরামর্শ গ্রহণ করলেন। তখন উপরোক্ত আয়াত নাযিল হয়। অর্থাৎ বন্দীদের ছেড়ে দেয়া সংগত ছিল না, বরং সবাইকে হত্যা করাই ছিল সংগত। এ ঘটনায় দিবালোকের ন্যায় প্রকাশ পায় যে, হুযুর (স:) আলিমুল গাইব ছিলেন না।

চতুর্থ ঘটনা :
“কখনই আপনি কোন বিষয়ে এ কথা বলবেন না, আমি তা আগামীকাল করব, ‘আল্লাহ ইচ্ছা করলে’ এ কথা না বলে। যদি ভুলে যান তবে আপনার প্রতিপালককে স্মরণ করবেন।” (সূরা কাহফ : 23,24)

মুফাসসিরীন বলেন, এ আয়াত নাযিল হওয়ার কারণ এই যে, যখন কুরাইশরা নবী করীম (স:) কে আসহাবে কাহফ, যুলকারনাইন ও রূহ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করল তখন তিনি বললেন, আগামীকাল বলব এবং এ কথার সাথে ইনশাআল্লাহ বলতে ভুলে গেলেন। এ জন্য 15 দিন মতান্তরে 40 দিন পর্যন্ত ওহী আসা বন্ধ থাকে। এরপর এ আয়াত নাযিল হয়- কোন কাজ করার প্রতিজ্ঞা করবেন না ইনশাআল্লাহ ছাড়া। যদি সে সময় ভুলে যান তবে যখন স্মরণ হবে তখনই বলে নিবেন। এতে বুঝা গেল যে, নবী করীম (স:) আসহাবে কাহফ ইত্যাদি সম্বন্ধে অবগত ছিলেন ‍না এবং ওহীর মাধ্যমে আল্লাহ না জানালে তিনি কিছুই বলতে পারেন না।

পঞ্চম ঘটনা :
“মুমিনগণ যখন বৃক্ষতলে আপনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করল তখন আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন।” (সূরা ফাতহ : 18)

হুদাইবিয়ার সন্ধি নবী করীম (স:) এর পবিত্র জীবনের প্রসিদ্ধতম ঘটনা। সে বছর হুযুর (স:) কুরবানী করার জন্যে প্রায় 14 শত সাহাবাসহ কা’বা যিয়ারতের উদ্যেশ্যে রওয়ানা হলেন। পথে কাফিররা বাধা প্রদান করল। নবী করীম (স:) হযরত উসমান (র:) কে আবু সুফিয়ান ও মক্কার অন্যান্য সর্দারের নিকট এ বার্তাসহ পাঠালেন যে, আমি যুদ্ধ করতে আসিনি। আমাদেরকে কা’বা শরীফ তাওয়াফ করতে দাও। কুরাইশরা হযরত উসমান (র:) কে বন্দী করল। মুসলমানদের মধ্যে তখন এ ভুল সংবাদ প্রচারিত হল যে, কাফিররা তাকে হত্যা করেছে। হুযুর (স:) চিন্তিত হলেন। সাহাবা কিরামের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হল। সবাই যুদ্ধ করতে এবং হযরত উসমান হত্যার প্রতিশোধ নিতে অস্থির হয়ে পড়েন। এ বিষয়ে সবাই হুযুর (স:) এর নিকট বাইআত নেন এবং হুযুর (স:) ও হযরত উসমানের হয়ে বাইআত নেন। অথচ কাফিররা হযরত উসমান (র:) কে হত্যা করেনি।
এ ঘটনা দ্বারা কত সুন্দরভাবে প্রকাশ পায় যে, হুযুর (স:) আলিমুল গাইব ছিলেন না। আলিমুল গাইব হলে হযরত উসমান হত্যার ভুল সংবাদে প্রভাবান্বিত হতেন না।

রাসূলুল্লাহ (স:) আলিমুল গায়েব ছিলেন না হাদীসে বর্ণিত কিছু ঘটনা

প্রথম ঘটনা :
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (র:) বলেন, নবী করীম (স:) সাহাবীবৃন্দকে নিয়ে নামায আদায় করছিলেন। নামাযের মধ্যে হঠাৎ জুতা মুবারক খুলে ফেললেন। সাহাবীগণ যখন দেখলেন তিনি জুতা মুবারক খুলেছেন তখন তারাও নিজেদের জুতা খুলে নিলেন। নবী করীম (স:) নামাজ শেষ করে বললেন, কি জন্য তোমরা তুজা খুলেছ ? তারা বললেন, আমরা আপনাকে আপনার জুতা খুলতে দেখেছি তাই আমরা আমাদের জুতা খুলেছি। নবী করীম (স:) বললেন, আমার নিকট জিবরাঈল এসে আমাকে জানালেন যে, আপনার জুতাদ্বয়ে নাপাকী রয়েছে। (আবু দাউদ)

এ ঘটনায় প্রমাণিত হয় যে, নবী করীম (স:) আলিমুল গাইব ছিলেন না। আলিমুল গাইব হলে জুতায় যে নাপাকী রয়েছে তা জানতেন এবং নামাযের পূর্বেই জুতা মুবারক খুলে নিতেন।

দ্বিতীয় ঘটনা :
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (র:) বর্ণনা করেন, একবার হযরত জিব্রাঈল (আ:) নবী করীম (স:) এর কাছে (কোন নির্দিষ্ট সময়ে দেখা করার জন্য) আসার ওয়াদা করেছিলেন, (আর সেই ওয়াদা মতে ঐ নির্ধারিত সময়ে কোন এক নির্দিষ্ট ঘরে রাসূলুল্লাহ (স:) তার অপেক্ষায় বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকেন। ) কিন্তু জিব্রাঈল (আ:) আসতে দেরী করেন। এতে রাসূলুল্লাহ (স:) মনে খুব কষ্ট পেলেন। পরে যখন ঘর থেকে বাহিরে এলেন তখন (ঘরের বাহিরে) জিব্রাঈল (আ:) এর সাক্ষাৎ পেলেন। রাসূলুল্লাহ (স:) তার কাছে (ঐ নির্দিষ্ট সময়ে না আসার জন্য) কষ্ট পাওয়ার অভিযোগ করলেন। জিব্রাঈল (আ:) রাসূলুল্লাহ (স:) কে বললেন, “ যে ঘরে কোন প্রাণীর ছবি থাকে আর যে ঘরে কুকুর থাকে সে ঘরে আমরা কখনো প্রবেশ করিনা। তাই যথা সময়ে এসেও বাধ্য হয়ে ঘরের বাহিরে এখানে আপনার অপেক্ষায় আছি। (বুখারী, লিবাস অধ্যায়)

চিন্তা করুন, রাসূলুল্লাহ (স:) সর্বত্র হাযির-নাযির হলে আলোচ্য ঘরের বাহিরে তার জন্য অপেক্ষামাণ জিব্রাঈল (আ:) কে না দেখার কারণ ও কৈফিয়ৎ কি ? যে ঘরে তিনি অবস্থান করছিলেন সে ঘরে ছবি বা কুকুর থাকা সত্ত্বেও তিনি তা জানতে পারেন নি। মানবিক পঞ্চেন্দ্রিয়েল আওতার বাইরে কোন কিছুর অবস্থান জানা একমাত্র আলিমুল গায়েব লা-শরীক আল্লাহর পক্ষেই সম্ভব।

তৃতীয় ঘটনা :
আহযাবের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (স:) প্রচন্ড শীত ও বৃষ্টির রাতে শত্রুবাহিনীর সংবাদ জানতে ইচ্ছা করলেন। সুতরাং তিনি বার বার বলতে লাগলেন, কে আছে যে শত্রুর নিকট গিয়ে আমাকে সংবাদ দিবে তারা কি করছে। অবশেষে হযরত হুজাইফা (রা:) এর নাম নিলেন। তিনি গিয়ে তাদের সংবাদ নিয়ে আসলেন। রাসূলুল্লাহ (স:) আলিমুল গায়েব হলে হুজাইফাকে পাঠাতেন না।

চতুর্থ ঘটনা :
রাসূলুল্লাহ (স:) মিরাজ হতে আগমনের পর যখন সাহাবীগণকে রাত্রের কিয়দংশে মসজিদুল হারাম হতে মসজিদুল আকসা ভ্রমানের ঘটনা বললেন, তখন মক্কার কাফিররা তার একথা অবিশ্বাস করে বলল, আপনি যদি বাইতুল মুকাদ্দাস গিয়ে থাকেন তবে মসজিদুল আকসার বর্ণনা দিন। তৎক্ষণাৎ হযরত জিব্রাঈল (আ:) রাসূলুল্লাহ (স:) এর সামনে আল্লাহর নির্দেশে মসজিদুল আকসার চিত্র তুলে ধরেন। রাসূলুল্লাহ (স:) তা দেখে দেখে সব বলে দিলেন।
রাসূলুল্লাহ (স:) সেই মসজিদে গিয়েছিলেন, নামাজও আদায় করেছিলেন অথচ মসজিদের দরজ-জানালা ইত্যাদির কথা স্মরণ না থাকার কারনে তার সামনে সমজিদের চিত্র তুলে ধরা হয়েছিল। যদি তিনি হাযির-নাযির ও আলিমুল গাইব হতেন তবে মসজিদের চিত্র তার সামনে তুলে ধরার প্রয়োজন ছিল না। উক্ত ঘটনা হাদীসের কিতাবসমূহে লিপিবদ্ধ আছে।

পঞ্চম ঘটনা :
একবার কতিপয় মুনাফিক এসে নবী করীম (স:) কে বলল, আমরা মুসলমান হয়েছি। আমাদেরকে কিছু ক্বারী দিন। তিনি তাদের কথা বিশ্বাস করে তাদের সাথে দশজন ক্বারী দিলেন। পথিমধ্যে তারা ক্বারীদের হত্যা করে। তিনি আলিমুল গাইব হলে তাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতেন না।

আমরা বিশ্বাস করি নবুওয়াতের জন্য প্রয়োজনীয় সব জ্ঞান রাসূলুল্লাহ (স:) কে দেয়া হয়েছিল। তার পূর্বে কত নবী-রাসূল এসেছেন, যেহেতু এটা নবুওয়াতের সাথে সম্পৃক্ত নয় তাই সব নবীদের কথা তাকে বলা হয়নি। যেহেতু সাগরে কত ফোটা পানি আছে, পশুর শরীরে কত লোম আছে, মরুভূমিতে কত বালকণা আছে, গাছে কত পাতা আছে, আকাশে কত তারকারাজি আছে ইত্যাদি জানা নবুওয়াতের জন্য অপরিহার্য নয়, তাই এগুলো জানা কোন নবীর কাজ নয়। এসব আল্লাহ জানেন। প্রতিটি জিনিসের হিসাব তার কাছে রয়েছে। তিনি কোন কিছু ভোলেন না
কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন, বদরের যুদ্ধে কোন কাফির কোন স্থানে মারা যাবে তা তিনি পূর্বেই বলে দিয়েছিলেন। এরূপ অনেক কথাই তিনি বলেছিলেন যা পরে সত্যি সত্যি সংঘটিত হয়েছিল। তাদের উত্তরে আমরা বলব, তিনি আল্লাহর পক্ষ্য থেকে ওহীপ্রাপ্ত হয়ে অনুরূপ কথা বলেছিলেন। যেমন আল্লাহ বলেন, “ এবং তিনি মনগড়া কথা বলেন না, এ তো ওহী যা প্রত্যাদেশ করা হয়।” (সূরা নাজম : 3-4)

রাসূলুল্লাহ (স:) বলেন, “ আমি যখন তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে তোমাদেরকে নির্দেশ দেই তখন তা গ্রহণ করবে। আর আমি যখন আমার নিজের মতানুসারে তোমাদের কোন বিষয়ের নির্দেষ দেই তখন আমি একজন মানুষ।” (মুসলিম শরীফ)।

বদর যুদ্ধে মুজাহিদ বাহিনীকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (স:) প্রথমে এক স্থানে শিবির স্থাপন করলেন। হযরত হুবাব ইবনে মুনযির (রা:) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (স:)! এই জায়গাটাকি আপনি আল্লাহর নির্দেশেই বছাই করেছেন, যার কাছ থেকে এক চুলও এদিক ওদিক সরতে পারি না, না এটা আপনার নিজের রণকৌশলগত অভিমত ? তিনি বললেন, এটা নেহাত একটা রণকৌশল এবং আমার নিজস্ব অভিমত। হুবাব (রা:) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (স:)! এ জায়গাটা ভাল নয়। অতএব আপনি সবাইকে নিয়ে এখান থেকে এগিয়ে যান। আমরা ঐ কূপের কাছে গিয়ে ছাউনী স্থাপন করবো যা কুরাইশদের অতি নিকটে। এরপর আমরা সেই জায়গার আশেপাশে যে কূপ আছে তা বন্ধ করে দেব। সেখানে একটি হাউয তৈরী করে তাতে পানি ভর রাখব। পরে আমরা শত্রুদের সাথে লড়াই করব। তখন আমরা পানি পান করতে পারবো কিন্তু ওরা পারবে না। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (স:) বললেন, “তুমি ঠিকই বিলেছ”। এরপর তিনি সবাইকে নিয়ে কুরাইশদের নিকটে অবস্থিত কূপের কাছে পৌছলেন এবং সেখানে তাবু ফেললেন। (সীরাতে ইবনে হিশাম)
রাসূলুল্লাহ (স:) আলিমুল গায়েব হলে প্রথমেই উক্ত স্থানে তাবু ফেলতেন। এ থেকে এ কথাও জানা গেল যে, রাসূলুল্লাহ (স:) ব্যক্তিগত অভিমত কখনো পরিত্যাগ করে সাহাবীদের অভিমত গ্রহণ করেছেন।
কুরআন ও হাদীস শরীআতের মূল উৎস। কুরআনের সাথে হাদীসের বাহ্যিক বৈপরিত্য দেখা দিলে কুরআনের উপর আমল করতে হবে। আর কুরআনের অস্পষ্ট আয়াতের মুকাবেলায় সুস্পষ্ট আয়াতের অনুসরণ করতে হবে। যারা দ্ব্যর্থবোধক অস্পষ্ট আয়াতের অনুসরণ করে তাদের সম্বন্ধে আল্লাহ পাক বলেন, “ তিনিই আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন। তাতে কিছু আয়াত আছে সুস্পষ্ট, সেগুলোই কিতাবের মূল অংশ। আর অন্যগুলো অস্পষ্ট সুতরাং যাদের অন্তরে কুটিলতা রয়েছে তারা ফিৎনা ও অপব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে তন্মধ্যেকার অস্পষ্টগুলোর অনুসরণ করে। আর সেগুলোর ব্যাখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। (সূরা আল-ইমরান : 07)
রাসূলুল্লাহ (স:) বলেন, আমি তোমাদের মধ্যে দুটি বিষয় ছেড়ে গেলাম। যতদিন এ দুটি শক্তভাবে আকড়ে থাকবে ততদিন তোমরা গোমরাহ হবে না, আল্লাহর কিতাব ও তার রাসূলের সুন্নাত। ( মিশকাত)

১৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৭

আদর্শ আহেমদ বলেছেন: সুরা সুরা নমলের ৩৮-৪০ আয়াতের ঘটনাটি হযরত সুলাইমান (আলাইহিস সালাম) তাঁর পরিষদ বর্গের নিকট নির্দেশ দেন সাবার লোকেরা আত্মসমর্পণ করে তাঁর কাছে আসার আগে তাদের মধ্যে যে সক্ষ্ম হবে সে যেন সাবার রাণী বিল্কিসের সিংহাসনটিতার কাছে এনে দেয়। আর তা শুনার পরপরই শাস্ত্রে পারদর্শী ছিলেন এমন একজন পরিষদ চোখের পলকে মাত্র সেটি হযরত সুলাইমান (আলাইহিস সালামের) সামনে হাজির করে করেন।
এই ছাড়া ইলমুল গায়েব বলতে সেসব কিছুর জ্ঞান বুঝায় যা প্রকৃত ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য নয় অর্থাৎ ইন্দ্রিয় স্পর্শ দ্বারা দেখা, শোনা, ছোয়া, ঘ্রান নেয়া বা অনুভব করা যায়না। সাধারনভাবে মানুষের যা জানার ক্ষমতাতীত।
কুরআন পাকে আল্লাহ বলেছেন- তিনি(আল্লাহ) অদৃশ্যের পরিজ্ঞাত, তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান তিনি কারো নিকট প্রকাশ করেন না, মনোনীত রাসুলকে জানিয়ে থাকেন –(সুরা জ্বিন-২৬-২৭)। এর দ্বারা প্রমাণিত হয়- হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এলমে গায়েবের ক্ষমতা আল্লাহ অর্পণ করেছেন। শুধু কুরআনের বাণী দ্বারা আমাদের রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সব কিছু জেনেছেন এমন নয়- এলমে গায়েবের আলৌকিক ক্ষমতায় তিনি একবার উহুদ পাহাড়ে আরোহনের সময় হযরত ওমর ও ওসমান (রাঃ) এর শাহাদাত সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন-(বুখারি শরিফ,৫৭ নং বই, ২৪ নং হাদিস।

১৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৯

আদর্শ আহেমদ বলেছেন:
আনুরুল আলম ভাই একটা জোকস শুনেন এক লোকের ৪টি ছেলে ছিল। লোকটির খুব আশা ছিল ৪ ছেলেকে নিয়ে। বড় ৩টা তাঁর বাবা চোখের মনি না থাকলেও ছোট্টা ছিল সবার চোখের মনি। কত আশায় বুক বেঁধেছিল তাকে নিয়ে। কিন্তু ছোটটা কি করল বন্ধুদের আড্ডায় পড়ে তার বাবার সকল আশায় ছাই ছিটিয়ে দিল। বাবার সেকি কষ্ট! এই কষ্ট কাউকে দেখাতে না পেরে ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করেদিল। সে ছেলেটি বের হল আর এলোনা বাবার স্নেহ ময়ী কোলে। আমাদের এই দলটি হল সেই ছেলের মত।

১৫| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৪৯

আদর্শ আহেমদ বলেছেন: ৭১ প্রজন্ম আপনি হয়ত ওহাাব দের বইগুলো পড়েছেন। আপনি দয়া করে কানজুল ঈমান তরজুমান সহ কোরাআন টি পড়ুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.