অনুগল্পঃ অপেক্ষা

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪৮

ধীরে ধীরে অপেক্ষার পালা শেষ হল। অপেক্ষা, অনেকদিনের অপেক্ষা। অপেক্ষা করতে কেমন লাগে? কখনও অপেক্ষা যন্ত্রনার, কখনও অপেক্ষা মধুর। কখনও কখনও স্বপ্ন দেখে অপেক্ষার প্রহর কাঁটে। স্বপ্ন দেখতে ভাল লাগে, অপেক্ষা করতে ভাল লাগে। অপেক্ষা শেষ হয়ে যায়, স্বপ্ন বেঁচে থাকে।
এত অপেক্ষা, এত স্বপ্ন, কার জন্য? হ্যা, ভালবাসার জন্য। সে আসবে, আর আমাকে ভালবাসবে। ঠিক তেমনি, যেমনি আমি ভালবাসার স্বপ্ন দেখছি। তাইতো আমি অপেক্ষা করছি।
আমি যখন অপেক্ষা করি, ভালবাসার গন্ধ পাই। কেউ একজন আমাকে ভালবাসে। আকাশ বাতাশ সবাই জানে। আকাশে বাতাশে ভালবাসার গন্ধ ভেসে বেড়ায়। ভালবাসা কত মধুর, তা যে পায় সে জানে। তাইতো অপেক্ষা করতে ভাল লাগে। অপেক্ষা কখনও কখনও মধুর হয়। যে অপেক্ষা মধুর, সে অপেক্ষা সারা জীবনের জন্য হলেও দোষের কিছু নেই।
এই কাজ সেই কাজ কত কাজ। কাজের ফাঁকে অপেক্ষা, কাজের শেষে অপেক্ষা। পথের পানে অপেক্ষা। অপেক্ষা করতে করতে দিন রাত হয়, রাত দিন হয়। তারপরেও অপেক্ষা করতে ভাল লাগে। ভালতো লাগবেই। কারন, এ অপেক্ষায়তো বিশ্বাসে ভরা। এ অপেক্ষায়তো নেই কোন কৃতিমতা। এ অপেক্ষায় নেই কোন ছলনা। এ অপেক্ষা শুধুই ভালবাসার।

মাত্র ৫ টি বছর। মাত্র পাঁচ বছরের অপেক্ষা। চাইলে এর চেয়েও বেশি অপেক্ষা করা যায়। সারা জীবন ধরে অপেক্ষা করা যায়। কারন এ অপেক্ষা ভালবাসার, এ অপেক্ষা হয় মধুর। এরকম মধুর অপেক্ষা সারা জীবন করতে দোশের কি!
মাত্র ৫ বছর। প্রতিটা দিন কেটেছে অপেক্ষায়, প্রতিটা মূহুর্ত কেটেছে অপেক্ষায়। অবশেষে, ৫ টি বছর শেষ হল, অপেক্ষার পালা শেষ হল। নিজেকে পরিপাটি করে, সেঁজে গুজে, অনেক আনন্দ নিয়ে রাস্তায় অপেক্ষা করতে লাগল। যখন ট্রেনের শব্দ শোনা গেল, মেয়েটার বুক কেঁপে উঠল। অনেক বন্ধু বান্ধব ছেলেটাকে এগিয়ে আনতে গেল, ছেলেটার আনন্দ দেখে কে! পুরানো বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় স্বজন, সবাইকে কাছে পেয়েছে সে। অনেক আনন্দ, অনেক উচ্ছাস। তারপর মেয়েটি অতি আনন্দে কাছে গেল, কিছু একটা বলতে গিয়ে কথা আটকে গেল মেয়েটার। গলা কেপে উঠল। কিন্তু মুখ থেকে কোন শব্দ বের হল না। মেয়েটি আশা করেছিল, ছেলেটা তাকে দেখা মাত্রই অবাক হবে, কাছে আসবে, কথা বলতে চাইবে, জিজ্ঞেস করবে কেমন আছ তুমি! কিন্তু ছেলেটা এত মানুষের ভিরে মেয়েটাকে খেয়াল করল না।
মেয়েটা ছেলেটার জন্য অপেক্ষা করছিল, কারন ছেলেটা মেয়েটাকে পাঁচ বছর আগে কথা দিয়ে ছিল।

১ টি +১/-০