নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উৎসের খোঁজে।

Jaliskhan

মানুষ হইবার চাই

Jaliskhan › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৃন্ময়ী

২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৩

আশিক কিছুটা দোনোমনা করে কেন জেন, হয়ত স্বভাবজাত অস্থিরতা কিংবা নতুন কিছু বোঝার আগে সময় নেয়া। সব কাজেই সে অস্থির স্বভাবের। তার এই অস্থিরতা বর্ষার মতোই, ভাসিয়ে দেয় যেন বোধের সীমারেখা আর মননের সীমাহীন আকাশ। বৃষ্টি ভালো লাগে, আগে রোদও ভালো লাগত। এখন কেন যেন রোদ উঠলেই ওর মেজাজ চড়া হয়ে থাকে। মধ্যগগনে সূর্য মানে, আশিকের মেজাজ তুঙ্গে। এ সময় সে খানিকটা অমানুষ হয়ে যায়, পরিচিতদের সাথে অপরিচিত আচরণ করে, আর অপরিচিতদের মনে হয় শত্রু। যদিওবা তার জীবনে শত্রু বলতে সে নিজেই। বড় ভাই আর বাবার পীড়াপীড়ি তোয়াক্কা না করে দেশেই থেকে গিয়েছিল সে। এখন সারাদিন যান্ত্রিক স্থবিরতা আর গণতান্ত্রিক চর্চার মারপ্যাঁচে, সে যারপরনাই অসহায় বোধ করে। ভুল হয়ত সে করে নি, দেশ ছেড়ে। কিন্তু টের পায় কিছু একটা বদলে গেছে দেশে, শুধু দেশে বললে সত্যের অপলাপ হবে, আসলে সারা পৃথিবীই বদলে গেছে। আরেকটা ক্রুসেডের স্বপ্ন দেখে কারা যেন। পাগলছাগলে ভরে গেছে দুনিয়া। শতকরা চৌদ্দভাগ মানুষ দু’বেলা অন্নসংস্থান করতে পারে সারা দুনিয়ায় আর এদিকে ওনারা চাঁদে, মঙ্গলে আর কোথায় কোথায় যেন ফষ্টিনষ্টি করতে ছুটছে। এদিকে মানুষ মরনব্যাধিতে আক্রান্ত, না খেয়ে মরছে বাচ্চাগুলো সেদিকে খেয়াল নেই, খালি নতুন নতুন বদমাইশি। কি যা তা ভাবছে, এসব আশিক, ভাবে একবার। রোদ উঠলেই ওর কেন জানি সব কিছু মনে পড়ে যায়, বিশেষ করে এইসব ক্ষোভের কথা।

“পাগলছাগলে ভরে গেছে দুনিয়া” – এই কথাটা তার বলা ঠিক হয় নি, বুঝতে পারে আশিক। কাউকে এভাবে অপমান করার, কোন অধিকার নেই তার। মেজাজ আরো চড়া হয়ে উঠে তার, যখন দেখে রেস্তোরাঁয় খানিকটা উলঙ্গ এক যুগল, একই “স্ট্র”তে করে পানীয় খাচ্ছে। আশিক এরকম কত চা খেয়েছে বন্ধুদের সাথে, একই কাপ ভাগ করে খেয়েছে, তাও এদের এই মেকি দৃশ্য সে সহ্য করতে পারে না। অভিনয় তার খুব অপছন্দ। কিছুদিনের জন্যে অভিনয় আরো বেশি বিরক্তিকর। অন্যদিকে আর তাকায় না, আশিক। মাথা ঠান্ডা রাখার আপ্রান চেষ্টা করে সে। বুদ্ধি করে একটা আইসক্রিম কেনে, কিন্তু কিনেই মনে হয় আইসক্রিম তো মাথায় দেয়া যাবে না, বরফকুচি কেনার দরকার ছিল। আইসক্রিম নিয়ে দ্বিধান্বিত থাকে কিছু সময়, তারপর আবার রাস্তায় এসে একটা টোকাইকে পেয়ে দিয়ে দেয়। টোকাই ফুটপাতেই বসে পড়ে আইসক্রিম খেতে, ঝিরিঝিরি বৃষ্টির পূর্বাভাস আসে গায়ে কয়েকফোটা আলতো করে পড়াতে। টোকাইটাকে ছেড়ে দিয়ে, আশিক আবার রেস্তোরাঁয় দরজায় দাঁড়ায়।

মৃন্ময়ী আগেই জানালার পাশে বসে ছিল। আশিকের কান্ড কারখানা সে অবগত আছে। খোলা বইয়ের মতই ওকে পড়তে পারে মৃন্ময়ী। পৃথিবীর সব চমৎকার অভিজ্ঞতাগুলোর সাক্ষী সে। এই আশিকের সাথে পরিচিত হওয়াটা তার ব্যাতিক্রম কিছু নয়। বেড়াতে গিয়েছিল বছর খানেক আগে এত আত্মীয়র বাসায়। ট্রেনে ফেরার পথে পরিচয় আশিকের সাথে। বৃষ্টির ছাট বেড়ে যাচ্ছে, আশিকের দেয়া আইসক্রিমটা গলে যাচ্ছে বৃষ্টির পানিতে। টোকাইটা বাকি আইসক্রিমটুকু এক কামড়ে খেয়ে ভীড়ে গেল, কোন সাময়িক আশ্রয়ে। “সাময়িক আশ্রয়” – আমরা সবাই আসলে সাময়িক আশ্রয়েই তো থাকি। নিজের জন্যে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করা যায় কি? মনে হয় না, কবরের উপরও তো কবর হয়। মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছে প্রথমে এক দু ফোটা, তারপর হুড়ুমুড় করে ভেঙ্গে পড়ল যেন আকাশ থেকে। রাস্তার মানুষগুলোকে আবছা দেখা যাচ্ছে। তুমুল বৃষ্টি। সেদিনও তেমনই ছিল। মৃন্ময়ীরা ভৈরব থাকে। কুমিল্লা থেকে টিকেট পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে একে তাকে ধরে, একটা টিকেট বের হয়েছিল বটে কিন্তু সেটা আবার দুইটা সিট একসাথে। টিকেটের মালিক একটা ফটোকপি রেখে, বাকিটা দিয়েছিল মৃন্ময়ী’র এক জ্ঞাতিভাই’র কাছে।

সাড়ে বারোটায় ট্রেন, আর সকাল থেকে জাঁকিয়ে বৃষ্টি। কুমিল্লার সুয়ারেজ লাইনগুলো সরাসরি নর্দমার সাথে সংযোগ থাকায় আর সংস্কারের অভাবে, একটু বৃষ্টিতে পানি উঠে যায় রাস্তায়। মৃন্ময়ী বারান্দায় দাঁড়িয়ে সে বৃষ্টিই দেখছিল। তুমুল বর্ষণে গাছ, মাটি আর মানুষগুলো যেন ফুলে ফেঁপে যাচ্ছিল। গাছের পাতাগুলো থকথকে সবুজ আর প্রানময় দেখাচ্ছিল। নারকেল গাছে একটি কাক, আরেকটি কাকের শরীরে চঞ্চু দিয়ে কিছু খুঁজছিল, উষ্ণতা হয়ত। মৃন্ময়ী’র কেমন যেন মাদকতা এসে গেছিল ভাবনায়। ইশ, মানুষ যদি ওমন করে উষ্ণতা নিত। নাস্তা খেয়ে সব গুছিয়ে মৃন্ময়ী স্টেশনে পৌঁছায় বারোটা নাগাদ। মাঝে কিছুটা ভিজে গিয়েছিল সে, ভেজা কাপড় শরীরে সেঁটে যাওয়ায় কেমন একটা অস্বস্তি হচ্ছিল। অবশ্য এই ভেবে ওর খুব ভালো লাগে যে, এই বর্ষায় গাছগাছালি পাখপাখালি সবারই এক অবস্থা। নিজেকে ওদের সাথে মেলাতে পেরে ওর খুব ভালো লাগছিল। রিক্সাওয়ালার চোখ তার শরীরে খেলা করছে টের পায়, মৃন্ময়ী। ওসব এড়িয়ে গিয়ে তাড়াতাড়ি ভাড়া মিটিয়ে প্ল্যাটফর্মে পা বাড়ায় সে। বসার একটা জায়গা বের করা দরকার আগে, তারপর তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছে নিতে হবে। পার্স থেকে টিকেট বের করে দেখে আরেকবার। পাশের সিটে কে পড়বে, কি জানি! যাকগে সে দেখা যাবেক্ষণ বলে, অপেক্ষায় বসে থাকে মৃন্ময়ী।

আশিক এমনিতে খুব একটা সিগারেট খায় না। কিন্তু বৃষ্টি আর অপেক্ষায় থাকলে, তার ইচ্ছে করে ধূমপানে। প্ল্যাটফর্মের এক পাশে দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরিয়ে গতকালের কথা ভাবে। নদীতে নৌকা ভ্রমণটা দারুন হয়েছিল। ওরা তিনজন একটা মোটামুটি মাঝারি ধরনের নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছিল। আশেপাশের সবুজ তাজা ঘাস, উপচে পড়া নদীর পানি, গ্রামের ধারে মহিলাদের গোসল, নদীর পাড়ে ফুটবল খেলা পাখিদের কলরবে কেটে গিয়েছিল দারুন সময়। আসার পথে ঝুমঝুমি বৃষ্টি মন উদাস করে দিয়েছিল সবার। এত বড় ফোটা ছিল যে, দু’তিনবার ভিজতে গিয়ে আর সাহস করে নি আশিক। বৃষ্টির ফোটাগুলো মনে হয় কোন এক উদ্দেশ্যে এত জোরে ঝরে পড়ছিল। মাটি চুইয়ে চুইয়ে ওরা ঢুকে পড়েছিল পৃথিবীর অভ্যন্তরে। হয়ত বৃষ্টির জলই ওদের ভালোবাসার, বন্ধনের যোগসূত্র। এক স্তর থেকে যখন আরেক স্তরে যায়, আগের স্তরের ভালোবাসাগুলো টেনে নিয়ে এসে পরের স্তরকে উৎফুল্ল করে বৃষ্টির জল। এভাবেই অনেক গভীরে গিয়ে একবারে স্বচ্ছ, শুভ্র, আনন্দিত জল নিজেকে ছড়িয়ে দেয় আবার উপরে উঠে মেঘ হয়ে ভাসবে বলে।

ট্রেন আসার ঘোষণা শুনে, আশিক সিগারেট ফেলে কাছাকাছি এসে দাঁড়ায়। পাশের সিটে কে বসবে, খোদা মালুম। এসেছে কি না কেই বা জানে! আশিকের বিরক্ত লাগে যদি কেউ ট্রেনে কমলা, ডিম বা বাদামের খোসা ফেলে। অনেকে আবার, সিটের নিচে থুতুও ফেলে। এধরনের লোক থাকলে, সে সিট ছেড়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকে। আজ ভাগ্যে কি আছে কে জানে!

মৃন্ময়ী বেশভূষা ঠিক করে নিয়ে এসে কাছাকাছি দাঁড়ায়। প্ল্যাটফর্মে ঢুকার গেট বরাবর যে বগিতে সে যাবে, সে বগি দাঁড়ানোর কথা। সেখানেই দাঁড়ায় সে। যৌথ সিটের ভাগীদার এসেছে কি না কে জানে। না আসলেই ভালো হতো। ও একা একা দুই সিট নিয়ে যেতে পারত। ছিঃ কিসব স্বার্থপরের মতো ভাবছে সে। অবশেষে অভিজ্ঞতার ঝুলিতে সিলগালা পড়ে, আবার কবে আসা হবে না জেনেই ট্রেনে উঠে পড়ে।

আশিক যখন সিটের কাছে এসে পৌঁছায়, মৃন্ময়ী ততক্ষণে ট্রেনের দরজায়। গতির দিকে মুখ করে আশিক বসে পড়ে সিটে, তার সাথে বিশেষ কিছু নেই। বাসার জন্যে কিছু মিষ্টি আর রসমলাইয়ের প্যাকেট ছাড়া। একটা ছিপছিপে মেয়ে কাঁধে ঝোলানে ছোট একটা ব্যাকপ্যাক আর হাতে মাজারি আকারের লাগেজ নিয়ে তার অপর পাশে বসে। লাগেজটা দু’হাত দিয়ে ধরে উপরে রাখে মৃন্ময়ী। আশিকের বৃষ্টিবিঘ্নিত চোখ, ছিপছিপে মেয়েটির দেহের ভাজে পতিত হয়। কি সুন্দর তন্নি তরুনী! মুহূর্তেই চোখ ফিরিয়ে নেয়, আশিক। সিদ্ধান্ত নেয় আর ফিরে তাকাবে না। মৃণ্ময়ী অল্প ভেজা চুল ছেড়ে কাঁধের একপাশে নিয়ে জানালায় চোখ রাখে, আড়চোখে দেখে আশিককে। আজকালকার ছেলেরা এতো ল্যাদল্যাদে হয় বলে ওর মনে হয় না। ফোনে কি জেন দেখছে। মৃণ্ময়ী নিজেই কথা শুরু করে। আপনার সিট নাম্বার কত? সম্ভবত আপনার টিকেট আমার কাছে আছে। আশিক ভদ্রতা করে মুখের কোনে হাসি দিয়ে বলে, আচ্ছা। তারপর আর সে চোখ নামাতে পারে না। ওর কোন রাগ হয় না, এখন। কেন যেন মনে হয়, বর্ষার উন্মত্ত বৃষ্টিপ্রবাহে সে চোখ রেখেছে। সুপারির বাগান আর অনতিদূরে পুকুরের পাড়ে আশিক বসে আছে, পাশে কেউ একজন। কলাগাছের ভেলায় করে কটা বাচ্চা পুকুরের মাঝখানে ডুবোডুবি খেলছে, আর সে আর এক মায়াবী একজন হাত ধরে বৃষ্টিতে ভিজছে। “আমার সিটটা ছাড়েন” – বলে কোথা হতে এক আগুন্তুক বাগড়া দেয়, বর্ষার স্তুতিতে।

আশিক আগেই দেখে নিয়েছিল, মেয়েটি উল্টো জায়গায় বসেছিল। জানত না যে, এই সেই তার পাশে বসে ভৈরব যাওয়ার কথা। লোকটির কথা শুনে বুঝতে পারে আশিক। হঠাৎ মৃন্ময়ী ভুল বুঝতে পেরে আশিকের পাশে এসে বসে। শক্ত হয়ে বসে থাকে আশিক। মৃন্ময়ী ধীরে ধীরে জিজ্ঞেস করে, আপনি কি ভৈরব যাবেন? আশিক, না তাকিয়েই, “না” বলে। বৃষ্টির জোর কমে আসলে, জানালা খুলে দেয় সবাই, দমবন্ধ ভাবটা কমে আসে। বাইরে তাকাতেই অপূর্ব দৃশ্য ধরা পড়ে। দিগন্তপ্রসারী সবুজ ধান ক্ষেত, গোড়া পর্যন্ত পানিতে ডুবে আছে। রোদ উঠছে মেঘেদের ফাঁক দিয়ে, সূর্যর আলো জলকনাগুলোকে ঝলমলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে; যেন কোন বাঁশীর টানে দলে দলে ছুটছে জলবিন্দুগুলো। হঠাৎ দমকা হাওয়ায় মৃণ্ময়ী’র এলোচুল আশিকের ডান গালে এসে পড়ে। অপ্রস্তুত মৃন্ময়ী সরিয়ে নেবার আগেই, একটা বুনো গন্ধ আশিককে মাতিয়ে দিয়ে যায়, চোখ বোজে আশিক। কিছুক্ষন আর কথা বলে না, কেউ। আশেপাশে ধ্বসে পড়া মাটি, বৈদ্যুতিক তারের উপড়ে যাওয়া খুটি, রাস্তায় মানুষের কোলাহল আর চিরাচরিত ট্রেনের দুলুনিতে, আবেশে দু’জনেই কল্পলোকের গাছে চড়ে। সে গাছের মগডালে বসে, দু’জন খুঁজে নিতে চায়, সেই পাথেয় – যারই ধারায় সিক্ত এ পৃথিবী।

আখাউড়া জংশন পেরিয়ে দু’জন নাম বিনিময় করে, ভৈরব নেমে আশিক মৃন্ময়ীকে প্ল্যাটফর্মে ছেড়ে দিয়ে আসে। বুকের ভেতরটা কেমন খচখচ করে, কখনও হাল্কা কখনও ভারী বর্ষণ হতে থাকে হৃদয় জুড়ে। ভালোবাসার ভাবনাগুলো সবুজ পাতার মতো লকলকিয়ে বাড়ে আর মিশে যেতে থাকে বোধের গভীরে, হৃদমাঝারে। এই টানটা মৃন্ময়ীও অনুভব করে যখন বাসার দরজায় পৌঁছায়। সেই থেকে ওদের প্রেমময়তা, ভাবের লেনদেন, নদীর পাড়ে বসে কবিতার পাঠ অথবা গল্পের ফোয়ারা। মৃন্ময়ী ঢাকায় আসে, বিশ্ববদ্যালয়ে ভর্তি হতে। আশিক যতটুকু পারে সময় দেয়, মৃন্ময়ীকে। বছর গড়ায় ওদের পরিচিতির, বোঝাপড়া ভালোবাসায় বদলায়, টুকটাক করে আলোচনা চলে ওদের মাঝে। জিনিসপাতির দাম থেকে ট্রাম্পের ক্ষমতা দখল, দেশের অস্থিরতা, আর নিত্যনতুন নিয়মের বেড়াজালে এগুতে থাকে ওদের মানবিক চাওয়া পাওয়া। অবশেষে আশিক দরজা খুলে, ভেতরে প্রবেশ করে। তলপেটে কি জানি একটা টান পড়ে তার, মৃন্ময়ী যেন সাক্ষাৎ সুন্দরের প্রতিভূ। এক লহমায় আশিক ভুলে যায় আজ কিসের জন্যে এখানে আসা।

মৃন্ময়ী আশিকের দিকে মুখ তুলে তাকায়, পাতলা ঠোঁটে ওর সর্বনাশা হাসিটা লেগে থাকে। আশিক, জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে। আজকের এই আয়োজনের কারন আশিক বুঝতে পারে। তিন বছরের আগের একদিনের ভুলে একটা শারীরিক সম্পর্ক, মৃন্ময়ী জানতে পেরেছে কি করে। আশিক কেন লুকিয়েছিল, না কি বলি বলি করেও বলা হয়ে উঠে নি তার। ভুল তো হয়েইছিল, কিন্তু আজ আর তা শোধরাবার সুযোগ হবে না বোধহয়। আশিকের চোখ ছলছল করে উঠে, বৃষ্টি কমে রোদ উঠেছে, মাথা আবার গরম হয়ে যাচ্ছে, মৃন্ময়ীর হাসি তাকে যেন উপহাস করছে। আশিক আবার উঠে পড়ে, মৃন্ময়ীকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বেরিয়ে পড়ে। কোথায় যেন আবার মেঘ ডেকে উঠে, মৃন্ময়ী’র চোখের রেখায় বৃষ্টির বড় দুটি ফোটা টলমল করে, এক অব্যক্তকথা গড়িয়ে পড়ে গাল বেয়ে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.