নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উৎসের খোঁজে।

Jaliskhan

মানুষ হইবার চাই

Jaliskhan › বিস্তারিত পোস্টঃ

ত্যাগ

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৬

এইবার ভয়াবহ বিপদ ঘটে গেলো আমাদের উপর। ঈদের আগে ছুটি পড়ে গেলো বেশি, যেন ঈদের আগে আরেক ঈদ এলো।

ফি বছর যেমন হয়, এই বছর তারচেয়ে একটু বেশি কষ্ট হলো। নয়া নয়া প্ল্যান হলো, বিস্তর ঘাঁটাঘাঁটি হলো পত্র পত্রিকায়। দেশের ম্যাপ নিয়েও টান দিলো কেউ কেউ। অনেকে বিকল্প পথ বের করে নিলো, কিকরে জ্যাম এড়ানো যায়।

"এড়ানো"র চেষ্টা কর্তৃপক্ষও করলো বৈকি। সে যাকগে কেউ কেউ বারো, ষোল আর আঠারো ঘন্টা শেষে বাড়িও ফিরলো। মেঠো পথের বদলে ইট বিছানো পথ, বাঁশঝাড়ের বদলে টং দোকান, এজমালি বড় পুকুরের বদলে ছোট ছোট ডোবা করে উত্তরোত্তর উন্নতির ধারা বজায় রাখল কেউ কেউ আর তা দেখে দীর্ঘ যাত্রা শেষে অনেকের ঈদ আনন্দ দ্বিগুণ চতুর্গুণ শতগুণ হয়ে ফিরে আসলো আমাদের জীবনে।

এইসব প্রচার, প্রসার, আবেগ আর ঈদের আনন্দে যখন সবাই দিলখোলা, আবেগাপ্লুত আর বেহিসেবি, সেই সময় দেশ হিসেবে বাংলাদেশও ত্যাগ করলো টঙ্গিতে তিরিশ জনের জীবন। ষোল সতেরো কোটি মানুষের মাঝে তিরিশ জন, এমন কিছু ব্যাপার নয়!

প্রতিদিন সারা পৃথিবীতে এক বিলিয়নেরও উপরে গরু মহিষ জবাই হয়। পৃথিবীর বড় "ফুড চেইন" গুলো এই মাংসের ক্রেতা। উলটো করে বললে, এরাই আসলে মাংসের চাহিদার সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকেন। সেই সাথে সাধারণ মানুষ মাংস বলতে পাগল।

আবার ভিন্ন ধারার লোকেরাও আছেন। বারে বসা কমিউনিস্টদের মতোন, ইনারা শাকাহারী, সবজিভোগী, মাংসত্যাগী। চামড়ার জুতো, চামড়ার বেল্ট পরে এরা বন্য প্রাণী সংরক্ষণ করেন। জুতোর তলা ক্ষয়ে যায় যেমন ক্ষয়ে যায় বনে জঙ্গলে পশুদের সংখ্যাও।

অর্ধকোটি গরুর ছাগলের চাহিদা আমাদের দেশে, ত্যাগের দিনে। প্রতিবছর মাংসাশী প্রাণীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ভারতীয়'রা গরু রপ্তানি বন্ধ করবে বলে বিজ্ঞাপন দিয়েছে। আমাদের স্বপ্ন দেখা চোখ, জেদ করে উৎপাদন বাড়িয়েছে। ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছে, জমি বিক্রি করেছে আর যোগান দিতে চেষ্টা করেছে দেশীয় চাহিদার।

কারণ কি?

দেশিয় লোকেরা চায় দুটো পয়সা বেশি পেতে, পরিশ্রমের ফসল ঘরে তুলতে। সবাই খুশি, দেশপ্রেম জাগ্রত। আর ওদিকে ভারতীয় গরু দেশি গরু নামেই চলছে। কোন বাঁধা নেই, দেদারসে সীমান্ত পার হচ্ছে, ওদের তো আর পাসপোর্ট লাগে না। আমরা ওদের গরুকে "ফেলানি"র মতো সীমান্তে ঝুলিয়ে রাখব, তবে মাংস রেখে দেবো আগেই।

আবারও লাভের বখরা সিন্ডিকেটের কাছে মার খাবে। বড়দের বুদ্ধির কাছে ছোটরা সমর্পণ করবে। এসবই হয়, মেনেও নিতে হয়। আসলে বড়রা থাকতে আমরা কেন দেশ দুনিয়া নিয়ে চিন্তা করি!

সীমান্ত থেকে আওয়াজ এসেছে, সীমান্তবর্তী জেলা শহরগুলোতে গরুর চামড়া রেখে দিতে লক্ষ লক্ষ টাকা অগ্রিম দেয়া হয়ে গেছে। গরু এসেছিলো হেঁটে আবার ফিরে যাবে চামড়া হয়ে। রুপান্তর প্রক্রিয়া কি অনন্যসাধারণ। গরীব, ধনী আর প্রতিষ্ঠানের জোগাড় করা চামড়া রাতে এক হয়ে যায় শহরের কোন প্রান্তে। মরা গরুর চামড়া পাহারা দেয় দেশের সেবকেরা।

আত্মত্যাগের রাতে পাড়ায় পাড়ায় জমে মাংস আর মদের আড্ডা। বিয়ারের সাথে মাংস খেলে গতর বাড়ে। মদের সাথে মাংস যেন বীরের মর্যাদা।

আমরা মাংসাশী জীব। মাংস ছাড়া চলে বলুন! মাংস নিয়ে তাই ব্যবসা হয়, মাংস নিয়ে পলিসি তৈরি করতে হয়। মাংসের যোগান দিতে গিয়ে কেউ কেউ সর্বস্বান্ত হয়।

এদিকে টঙ্গিতে মানুষ পুড়ে কিমা হয়। সে কিমা লবন মেখে খেতে স্বাদ হতো অনেক। আচ্ছা এমন কি হয় না, আমরা মানুষ খাওয়া শুরু করি। এই যেমন ধরুন, যারা দুর্বল তাদের। আবার যারা আধুনিকতা বোঝে না তাদের। হয়তো যারা অনেক প্রশ্ন করে তাদেরও।

কারণ এদের সবারই সমাজে গ্রহণযোগ্যতা কম। আসুন না আমরা ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হই। আমাদের ভালোলাগাগুলো ত্যাগ করি। সবলের উত্থান আর দুর্বলের ধ্বংস কামনা করি। আবার কর্মস্থলে ফিরতে গিয়ে বসে বসে একটা দিন পার করি, চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে মৃত্যুবরণ করে নেই। আমরা আমরাইতো!

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৮

আব্দুল্লাহ্ আল আসিফ বলেছেন: ক্ষোভ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.