নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আলোর দিশারী
বাংলা ভাষায় গোস্বা শব্দটির বহুল প্রচলন না থাকলেও ঢাকা শহরের দক্ষিণাঞ্চল, বিশেষ করে পুরাণ ঢাকার লোকজনের মাঝেই তা বেশি প্রচলিত। মূলতঃ রাগ, ক্ষোভ, অভিমানেরই একটা স্থুল প্রতিশব্দ গোস্বা।
পুরান ঢাকার মেয়র এবার এ শব্দটিকে নিয়ে একটা চমৎকার উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি ওসমানী উদ্যানটি বা তার একাংশ দখল করে আটান্ন কোটি টাকা ব্যয়ে ‘গোস্বা নিবারনী পার্ক’ নামে দক্ষিণ ঢাকার নাগরিকদের নতুন নামে পার্ক করছেন। শহরে এতো জায়গা থাকতে বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী এবং মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর নামে যে উদ্যানটি আছে তার প্রতি এতো ঝোঁক কেন বুঝা কঠিন। আগে একবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র নির্মাণের জন্যও এ উদ্যানের উপর নজর পড়েছিল। পরিবেশবাদীদের তূখোর প্রতিবাদ, আর আন্দোলনের মুখে সেটা বন্ধ করে স্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়। এবারও লোলুপ দৃষ্টি ওসমানী উদ্যানের উপরই।
কোথাও কোন নাগরিককে গোস্বা করে তা নিবারণের জন্য পার্ক বা উদ্যান খোঁজার দাবি তুলতে শুনিনি। কিন্তু প্রতিনিয়িতই সবাই যানজটের ভোগান্তিতে পড়ে হিমসিম খাচ্ছে। রাস্তার মোড়ে জমে থাকা ময়লার দুর্গন্ধে অস্থির হচ্ছে। ছিনতাইকারী আর নেশাখোরদের দৌড়াত্বে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে অব্যবস্থাপনার ফলে ওসমানী উদ্যানে আগত দর্শনার্থী, ভ্রমণার্থীদের এরূপ অযাচিত ঝামেলা পোহাতে হয়।
নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান, যানজট নিরসনের উদ্যোগ, ময়লা আবর্জনা দূরীকরণ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ শহরবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবী। এসকল দাবী পূরণ না হওয়াতে জনমনে ক্ষোভ তথা গোস্বা তো হতেই পারে। তার প্রেক্ষিতে আমাদের মাননীয় মেয়র জনগণের মুখে একটা ললিপপ এটে দেবার সুন্দর পরিকল্পনা করেছেন। একদিকে আটান্ন কোটি টাকার বাজেট, আরেক দিকে জেনারল ওসমানীর নামে নামকরণ করা উদ্যানটি সঙ্কোচন করার পাঁয়তারা। ব্যপারগুলোতে স্বাভাবিকতা খুঁজে পাওয়া কঠিন।
ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে আপনার মনে যে কষ্টের উদ্রেক হবে, থানায় অভিযোগ না জানিয়ে দখলকৃত ওসমানী উদ্যানের কথিত গোস্বা নিবারণী পার্কে এসে আপনি তা সহজেই দূর করে নিবেন। দুঃসহ জ্যামে পড়ে দেরীতে অফিসে গিয়ে উর্ধ্বতন কর্তা ব্যক্তিটির শাসানী শুনে আপনার মনে যে ক্ষোভে হবে, একটু আগে আগে ছুটি নিয়ে গোস্বা নিবারণী পার্কে গিয়ে আপনি সকল গোস্বা নিবারণ করে ঘরে ফিরবেন। রাস্তার পাশে জমে থাকা ময়লার দুর্গন্ধে আপনার গা গুলিয়ে এলে নাকে রুমাল চেপে দৌড়ে চলে যাবেন গোস্বা নিবারণে। সিটি কর্পোরেশনের অফিসসহ সকল অফিসে কাজ করাতে গিয়ে দূর্নীতির কারণে যখন চরম বিরক্ত হবেন, সিটিকর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ের অনতি দূরের এই গোস্বা নিবারণী পার্কে এসে গোস্বা নিবারণ করে আবার ফিরে যাবেন। বাজারে গিয়ে দ্রব্যমূল্যের অবস্থা দেখে টাসকী খেলে, কিংবা স্ত্রীর চাহিদা মতো পর্যাপ্ত বাজার করে না নিয়ে ঘরে ফেরার পর যে রাগারাগী হবে, তা নিবারণ করতে স্বপরিবারে এই পার্কে চলে আসবেন। ঘরে ফেরা পথে যদি জ্যামে পরে বিরক্ত হোন, ফের চলে আসবেন এই মহান গোস্বা নিবারনী পার্কে।
গোস্বা নিবারণের ললিপপ চুসতে থাকুন, চুসতেই থাকুন, যতক্ষণ না আপনার মনের সকল গোস্বাগুলো সদয় মেয়রের সুমহান কীর্তি গোস্বা নিবারনী পার্কে এসে নিবারণ না হয়।
বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী এবং মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর নামে নামকরণকৃত উদ্যানের নাম উচ্ছেদ করার কোন ষড়যন্ত্র খুঁজে, এবং ‘গোস্বা নিবারণী পার্ক’এর নামে আটান্ন কোটি টাকার বাজেটের টাকা কোথায় কিভাবে খরচ হলো, এসব প্রশ্ন করে আমাদের নগরের কর্তাব্যক্তিদের মনে গোস্বার উদ্ররেক করবেন না যেন কখনো। ওনারা গোস্বা করে তা নিবারণ করতে এখানে এলে কিন্তু আপনি আর জায়গা পাবেন না এখানে। ওনাদেরকে আমোদে আহলাদে হাসিখুশি থাকতে দিন, গোস্বার কালো মেঘ ওনাদের যেন না ঢাকে।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৪
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: এমনই একটা হাস্যকর প্রকল্প নেওয়া হয়েছ, যার হিসাব সহজেই তসরুপ করা যাবে। পাবলিকের এটার দিকে তেমন দৃষ্টি বা আগ্রহ থাকবে না।
২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৮
যবড়জং বলেছেন: পাবলিক তো ললিপপ চুষে চলেছে ...............
০৭ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৪:৪১
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: পাবলিক চুষে চলেছে না, পাবলিককে নিয়ে ওরা খেলছে। এ খেলারও শেষ আছে। ইতিহাসের পাতায় অনেক খেলোয়ার পাবেন যারা বেনোজলে ভেসে গেছে
৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:১৮
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: ধন্যবাদ রাজিব নূর ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২৩
যবড়জং বলেছেন: হিসাব দিতেই হবে আগে অথবা পরে,,,,,,,,,,