নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনের আড়ালে রুঁধিয়া রাখিতে পারি নাই যে আবেগ,চোখের কোনের বাষ্প হয়ে উড়ে যায় সে জলমেঘ
“এই তুমি কি করছো”?
“অপেক্ষা করছি”
“কিসের জন্য”
“যেদিন আমার অপেক্ষা শেষ হয়ে যাবে সেই দিনটির জন্য”
“এইটা কি কোন ধাঁধা ছিলো”?
“নাহ! একদম না! এইটা তো সবচেয়ে সোজাসুজি সত্য কথা”।
“ঠিক আছে, আজ থেকে অপেক্ষা করা বন্ধ করে দাও। তাহলে আজকেই হবে তোমার অপেক্ষার শেষ দিনটা। সোজাসুজি সত্য কথার সোজাসুজি সমাধান”।
মেয়েটা খিল খিল করে হেসে উঠে। ছেলেটা বিভ্রান্ত হয়। পুরো ব্যাপারটার মধ্যে অবশ্যই একটা ধাঁধা আছে। সে ধরতে পারছেনা। সোজাসুজি সত্য কথাগুলোই সাধারণত সবচেয়ে কঠিন ধরনের ধাঁধা হয়।
মেয়েটা এবার ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা সত্যি করে বলোতো তুমি কি কোনকিছুর জন্য অপেক্ষা করছোনা”?
ছেলেটার তড়িৎ জবাব, “জ্বি না। অপেক্ষা মানে ঝুলে থাকা। আর ঝুলে থাকা মানে পায়ের নিচে মাটি না থাকা। আমি মাছ না, পাখিও না। আমি মাটির মানুষ, মাটির কাছাকাছি থাকতে ভালবাসি”।
মেয়েটা আবারো খিল খিল করে হেসে উঠে। মেয়েটার হাসির মধ্যে বিচিত্র একটা ব্যপার আছে। কিছু না বলেও সে যেন হাসি দিয়েই বলতে থাকে, কি বোকা, কি বোকা, ছেলেটা কি বোকা।
“হাসছো কেন”?
“তোমার কথা শুনে হাসছি। তুমি খুব মজা করে মিথ্যে কথাটা বললে। প্লেইন মিথ্যে না একেবারে যুক্তিতর্কসহ মিথ্যা। যাতে সত্যের কাছি কাছি শোনায়। সত্য কথার জন্য যুক্তি লাগেনা”।
“আচ্ছা, খুব ভালো,এবার আপনিই বলেন দেখি, হোয়াট ইজ সত্য। ট্রুথটা কি”।
“সত্যটা হলো তুমিও অপেক্ষা করছো। তুমি ভাবছো আমি তোমার সাথে ধাঁধা ধাঁধা খেলছি। তুমি অপেক্ষা করছো কখন তুমি তোমার ধাঁধার উত্তরটা পাবে”।
“এটা কোন অপেক্ষার জাতেই পরেনা”।
“অপেক্ষা তো অপেক্ষাই। অপেক্ষা মানে ঝুলে থাকা। আর ঝুলে থাকা মানে পায়ের নিচে মাটি না থাকা”।
“আমার বুলি আমাকেই শেখানো হচ্ছে”।
“উঁহু। সত্যকে স্বীকার করে নিচ্ছি”।
“বার বার বলার দরকার কি”?
“আছে। দরকার আছে। মিথ্যা বার বার বললে সত্য হয়ে যায়। আর সত্য বার বার বললে সাহস হয়ে যায়”।
“এতো সাহস দিয়ে করবে কি”।
“অপেক্ষা করবো। অপেক্ষা করতে অন্নেক সাহস লাগে”।
“ধরো একদিন তোমার অপেক্ষা শেষ হয়ে গেলো। তখন?!! তখন কি করবে”?
মেয়েটা আবারো খিল খিল করে হেসে উঠে। সেই হাসির শব্দ যেন বলতে থাকে আমি যা জানি তুমি তা জানোনা, আমি যা বলি তুমি তা বুঝোওনা। নিজেকে বোকা ভাবার মধ্যে এক ধরনের বিরক্তি আছে। ছেলেটাও বিরক্তস্বরে বলে,”এই হাসি থামাও। হাতে সময় খুব বেশি নেই”।
“সময় কি কখনো বেশি কম হতে পারে। সময় কি কখনো শেষ হয়? অথচ দেখো আমাদের এই ব্যস্ত সময়ে, সময় প্রতি মুহূর্তেই শেষ হয়। আমাদের কাছে আমাদের জন্যই সময় নেই। কিন্তু সময় তো নেই হয়নারে, ছেলে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে মানুষই নেই হয়ে যায়। সময়ের শেষ নেই। অপেক্ষারও শেষ নেই। তোমার জন্মই হয়েছে মৃত্যুর অপেক্ষা করার জন্য। এই বিশাল অপেক্ষা ভুলে গিয়ে তুমি তুচ্ছ অপেক্ষার পেছনে ছুটছ। চোখ খুলো, তাকিয়ে দেখ, মাথার উপরে কি সুন্দর আকাশ। তোমার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছেনা। তুমি শেষ হয়ে যাচ্ছ, সময়ের কাছে একটু একটু করে”।
“বুঝলাম, তোমার অনেক বুদ্ধি। আমি বোকা ছেলে। অতশত বুঝিনা। আমি শুধু বুঝি যার শুরু আছে তার শেষ আছে। যে অপেক্ষার জন্য আমার জন্ম, আমার মৃত্যু দিয়ে তার শেষ। আমি নেই তো কিছু নেই। আমি আছি তো সময় আছে, অপেক্ষা আছে, শুরু আছে, শেষ আছে। একি আবার হাসি শুরু করলে কেন। আশ্চর্য”!!
মেয়েটা পাগলের মতো হাসতে থাকে। হাসতে হাসতে চোখে পানি এসে যায়। তারপরও হাসি থামেনা। ছেলেটা বসে থাকে। মেয়েটার এই হাসি সে বোঝেনা। এই হাসির কাছে সে ভীষণ অসহায়। মেয়েটা একসময় হাসি থামায়। হাসি মুখ করে ছেলেটাকে বলে, “তোমাকে আজ বলবোনা কেন হাসছিলাম। আরেকদিন বলবো”।
“আজ কেন নয়”।
“উঁহু, আরেকদিন যেদিন দেখা হবে সেদিন বলবো”।
“ঠিক আছে। দেখা হবে তো”।
মেয়েটা হাসতে হাসতে চলে যায়। ছেলেটা অপেক্ষায় থাকে। একদিন যায়, দুই দিন যায়। মেয়েটা আর আসেনা। ছেলেটা আশায় আশায় থাকে। দিন কয়েক পর মেয়েটার বাসা থেকে মৃদু স্বরে কোরআন শরীফ তিলাওয়াতের সুর ভেসে আসে। মেয়েটা আর নেই। সে তখন না ফেরার জগতের বাসিন্দা। ছেলেটা জানতেও পারলোনা মেয়েটা যাবার বেলায় তার অপেক্ষাগুলো ছেলেটাকে দিয়ে গেলো। সময় শেষ হয়না। অপেক্ষাও শেষ হয়না। শুধু মানুষ চলে যায়।
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০৪
জলমেঘ বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০১
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মিথ্যা বার বার বললে সত্য হয়ে যায়। আর সত্য বার বার বললে সাহস হয়ে যায়”।
দারুন একটা কথা।
মেয়েটা যাবার বেলায় তার অপেক্ষাগুলো ছেলেটাকে দিয়ে গেলো। সময় শেষ হয়না। অপেক্ষাও শেষ হয়না। শুধু মানুষ চলে যায়।
++++
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০৬
জলমেঘ বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সবসময়
৩| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৪
তুষার কাব্য বলেছেন: বাহ ! বেশ লিখেছেন +++
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১৯
জলমেঘ বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০২
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ভালো লাগল !
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২২
জলমেঘ বলেছেন: ধন্যবাদ
৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৩
রঙ তুলি ক্যানভাস বলেছেন: তৃতীয় ভাললাগা।অনেকগুলো লাইন বেশ ভাল লাগল।
“ অপেক্ষা-যেদিন আমার অপেক্ষা শেষ হয়ে যাবে সেই দিনটির জন্য”
"প্লেইন মিথ্যে না একেবারে যুক্তিতর্কসহ মিথ্যা। যাতে সত্যের কাছি কাছি শোনায়। সত্য কথার জন্য যুক্তি লাগেনা”।
"মিথ্যা বার বার বললে সত্য হয়ে যায়। আর সত্য বার বার বললে সাহস হয়ে যায়”।
" ছেলেটা জানতেও পারলোনা মেয়েটা যাবার বেলায় তার অপেক্ষাগুলো ছেলেটাকে দিয়ে গেলো। সময় শেষ হয়না। অপেক্ষাও শেষ হয়না। শুধু মানুষ চলে যায়।"
মাঝে মাঝে আমারো ইচ্ছে করে কাউকে অপেক্ষাগুলো দিয়ে যেতে, অপেক্ষার যন্ত্রণা যে ভয়াবহ, ভাগ্যিস দেয়ার মতন কেউ নেই,তাহলেতো অন্যের যন্ত্রণার কারণ হয়ে থেকে যেতাম!
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫২
জলমেঘ বলেছেন: গল্পটা এতো ক্রিটিক্যালি পড়ার জন্য ধন্যবাদ রঙ তুলি ক্যানভাস। সব যন্ত্রণা একদিন দূর হয়ে যাবে এই কামনা রইলেঅ
৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১২
কলমের কালি শেষ বলেছেন: গল্পে ভালো লাগলো ।
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫২
জলমেঘ বলেছেন: ধন্যবাদ
৭| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:২১
জুন বলেছেন: সুন্দর গল্প
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৩
জলমেঘ বলেছেন: ধন্যবাদ
৮| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১২
অপু তানভীর বলেছেন: বদ কন্যা এতো খিল খিল করে হেসে ওঠে কেনু !!
অনেক দিন পরে আপনার লেখা পড়লাম ! এখন আর লেখেন না কেন ?
২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৩
জলমেঘ বলেছেন: বাহ! হাসবেনা! শুধু শুধু মুখ গোমড়া করে রাখার মানে হয়। খুব ব্যস্ত ছিলাম। লিখালিখিই ভুলে গিয়েছি। এখন যে খুব ফ্রি আছি তা না। কিন্তু ব্যস্তটার কাছে নিজেকে হারিয়ে ফেলার কোন মানে হয় বলেন।
ধন্যবাদ, কাউকে তো পাওয়া গেলো, যে আমার লেখালিখি নামক অখাদ্য কুখাদ্য মনে রেখেছে
৯| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৯
অপু তানভীর বলেছেন: আমি গুনে গুনে যে ৩৩ জন ব্লগারকে আমার অনুসারী তালিকায় রেখেছিলাম তার ভিতর প্রায়ই সবাই লেখালেখি ছেড়ে দিয়েছে । আপনিও তাদের একজন ! হাতে গোনা দুএকজন আছে যারা লেখে টুকটাক !
আবার নিয়মিত হোউন এই কামনায় !
২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৫
জলমেঘ বলেছেন: উৎসাহের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ
১০| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১৭
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো। বেশ কয়েকটা তীক্ষ্ণ ওয়ান লাইনার লেখাটাকে আরো ঋদ্ধ করেছে।
৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:২৮
জলমেঘ বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
১১| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০৯
সুমন কর বলেছেন: ভাল লাগল।
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫১
জলমেঘ বলেছেন: ধন্যবাদ
১২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৮
ডি মুন বলেছেন: +++
নিয়মিত থাকুন আমাদের মাঝে।
শুভেচ্ছা সতত।
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৩
জলমেঘ বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার জন্যও শুভেচ্ছা
১৩| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৩৭
বন্ধু তুহিন প্রাঙ্গনেমোর বলেছেন: সুন্দর লিখা..কিছু কিছু কথা অনেক উর্বর...........শুভকামনা।
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০৪
জলমেঘ বলেছেন: ধন্যবাদ
১৪| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩০
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
রহস্যঘেরা পাঠ ৷ অব্যক্ত কথাও পাঠককে ধরে রাখতে সক্ষম ৷ তবে রহস্যেরা ধাঁধায় একাকার হয়ে রইল ৷
মঙ্গল হোক ৷
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৫
জলমেঘ বলেছেন: পাঠের জন্য ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪০
এক দুর্বাসা বলেছেন: ভালো লাগলো , শুভেচ্ছা রইলো।