![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"বিশ্বাসের তাঁতে আজ আবার বুনতে চাই জীবনের দগ্ধ মুসলিন "
লাবন্য যখন ক্লাস ফাইভ-এ পড়ে তখন একদিন লাবন্যদের পাড়ায় শৈবাল নামের একটা ছেলে এল। রুয়েটের ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্র। রোগা পাতলা চেহারা, পরনে ওয়াশ করা বাক রজারস-এর জিনস্ আর কালো সবুজ চেক একটা শার্ট। এটা সেই সময়ের কথা যখন রাজশাহীতে একটাও শপিং সেন্টার গড়ে ওঠেনি। আর শপিং সেন্টার গুলোয় যা এখন অনায়াসে পাওয়া যায় সেই সব বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর কেউ নামই শোনেনি। একসট্যাসি,বে ইম্পোরিয়াম,প্লাস পয়েন্ট,সিলভার রেইন বলে যে কিছু আছে তা কেউ জানেই না! সেই সময় লিপস্টিক বলতে লোকে একটাই নাম বোঝে – ল্যাকমে। সুপার ভাসমল নামের তেলটা তখন ভীষণ জনপ্রিয়, একটুও চটচটে নয় আর হাল্কা। তখনও অধিকাংশ মানুষই রাত আটটার বিটিভি দেখার র ঘুমানোর প্রস্তুতি নেয়।এই রকম সময়ে বটল গ্রিন আর কালো চেক শার্ট পরা ছেলেটা লাবন্যদের পাড়ায় এল, পাড়ার সাগরদার বন্ধু হিসেবে। লাবন্যদের সেই পাড়ায় বাড়িতে বাড়িতে ভীষণ সদ্ভাব ।পুজোর মন্ডপে লাবন্য দেখল শৈবালকে। আর ক্লাস ফাইভের লাবন্য ১০বছরের লাবন্য শৈবালকে দেখেই প্রেমে পড়ে গেল শৈবালের।
ঠাকুরের পায়ে ধান দুব্বো দিয়ে প্রণাম করে নিজের দশ বছরের ছোট্ট পাখির মত চঞ্চল মনকে অর্পন করে দিল শৈবালকে। শৈবালকে একদিন না দেখতে পেলে মেয়ে অস্থির হয়ে উঠত। লাবন্যর জন্য শৈবালকে রোজ একবার আসতে হত পাড়ায়। না এলে লাবন্য কেঁদে ভাসিয়ে দিত, আর পড়ার টেবিলে বসে শুধুই জানলার দিকে তাকাত। মনটা হু হু করত তার। লাবন্য ছিল ভীষণ দুষ্টু প্রকৃতির মেয়ে। সেই লাবন্য বাবার দেওয়া চকলেট একটু খেয়ে একটু সরিয়ে রেখে দিত শৈবালদার জন্য। সন্ধ্যে হয়ে আসা সময়ে পদ্মার ধারে বট গাছের তলায় চকলেট, বাদামচাক, ডালমুট, ললিপপ এসব শৈবালদাকে দিয়ে সে শৈবালদার সদ্য ব্রণ ওঠা গালে চুমু খেতো। তারপর হঠাৎ বাবা মারা যাওয়ার পর লাবন্যকে নিজের চেনা জীবন ছেড়ে চলে যেতে হল ঢাকায়।
শৈবালদা হারিয়ে গেল!
ছোট্ট একটা ব্যালকনি ছিল লাবন্যর ঘরের সঙ্গে। আর টবে দুটো একটা গাছ রাখত সে সেখানে। সেই ব্যালকনিতে মেয়েটি অবলীলায় মেলতে পারত অন্তর্বাস, গোলাপি ব্রা, সাদা প্যান্টি। মা শিখিয়েছিল অন্তর্বাস মেলে তার ওপর দিয়ে একটা পাতলা ওড়না বা ওই জাতীয় কিছু বিছিয়ে দেওয়া উচিত। ব্রা, প্যান্টি সর্বসমক্ষে মেলাটা রুচিসম্মত নয়। মেয়েটি মানত না এই কারণ। বকা খেত, খেয়ে আবার সেই কাজটাই করত। মেয়েটি ছিল ছোট থেকেই একটু দুষ্টু। যেই কেউ তাকে বলত, æতুমি একটা মেয়ে তোমাকে এটা করতে নেই …”। যুক্তি তৈরি করত সে। যে যুক্তি দিয়ে æকরতে নেই” –কে খন্ডন করে ফেলা যায়। মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় লাবন্য ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সিগারেট খেত। এই সব ছোট ছোট প্রতিবাদ দিয়ে সে নিজে একটা অজানা অঙ্ক মেলাতে চেষ্টা করত আর যে সব ছোট ছোট বিষয়ে সে প্রতিবাদ করতে চাইত তার মধ্যে অন্যতম ছিল তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া সতীত্বের ধারনা। তাকে সবাই শিখিয়েছিল শরীর একজনকেই দিতে হয়। বৈধ সম্পর্ককেই কেবল মাত্র শরীর দিয়ে ভালবাসতে হয়। বৈধ সম্পর্ক অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক!এমন কি স্কুলে তার সমবয়সী বন্ধুদেরও এই বিষয়ে নানা প্রেজুডিস ছিল। নানান নীতি নিয়ম তারা আরোপ করে বসত নিজেদের ইচ্ছে অনিচ্ছার ওপর। তারা সকলেই একমত ছিল এই বিষয়ে যে যাদের সঙ্গে তারা চুপিচুপি প্রেম করছে তারা প্রেমিক হলেও সর্বগ্রাসী পুরুষ, তারা সব সময় হাত ধরতে চায়, আর তাদের হাত চেটো তখন ঘামে ভিজে থাকে, তারা প্রেমিকার পাশে পাশে হাঁটতেও কুনুই ব্যবহার করে প্রেমিকার স্তনে ঠেলা মারে। যে সব ছেলেরা প্রেমের এক বছরের মধ্যে প্রেমিকাকে চুমু খেতে চায় তাদের সম্পর্কে মেয়েরা যথেষ্ট সন্দিহান। লাবন্যর বন্ধুদের মধ্যে একজন তো প্রেমিক বরের চুম্বন প্রস্তাব আসা মাত্র তার সঙ্গ ত্যাগ করেছিল। যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে সেটা কুড়ি বছর আগের। তখন মনের রাস্তায় হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত না হলে শরীরে পৌঁছনও যেত না। শরীর তখন মেয়েরা æদিত”, ছেলেরা æনিত’’, বলা যায় ‘ভোগ করত’। শরীর দেওয়াটা ছিল তখন শর্ত সাপেক্ষ – মেয়েটিকে বিবাহ করার শর্তে একটি ছেলে মেয়েটির শরীরে অবগাহনের সুযোগ পেত, এখনও কবিতায় ছেলেরা মেয়েদের শরীরে অবগাহন করে, মেয়েদের পুরুষের শরীরে অবগাহন করার কথা শোনা যায় না।
যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে সেই সময়ে একটা মেয়ে মনে করত ‘ছেলেটা আমাকে যথার্থই ভালবাসে’, যদি ছেলেটা দেখা হলে শুধু প্রেমের বচন দিয়ে অনায়াসে অমনোযোগী হতে পারত মেয়েটির শরীরের প্রতি। অথচ লাবন্য প্রেমে পড়ে ছটফট করছিল আলিঙ্গনের জন্য, চুম্বনের জন্য। প্লেটোনিক প্রেমের সম্পর্কে ততদিনে সে পড়াশুনো করে ফেলেছে। প্লেটোনিক প্রেম সম্ভব কি সম্ভব নয় তা নিয়ে বিতর্ক থাকুক কিন্তু তার প্রেমটা শরীর এবং মন দুটোকেই আলোড়িত, আন্দোলিত করে, মন চায় শরীর দিয়ে বুঝতে অনুভব করতে।
ঢাকা শহরের মেয়ে ঢাকার অলিগলি ঘুরে প্রেম করবে এটাই স্বাভাবিক, ছেলেটা ছিল ‘বিয়ে করবই’ টাইপ।নাম স্বাধীন সদ্য চাকরি পেয়েছে, এবার বিয়ে। ছেলেটা জানে লাবন্য মেয়েটা একটু অন্যরকম, বুদ্ধিবৃত্তি প্রখর আবার ঢের আবেগে ঘাঁটা মেয়েটা চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলেও মেয়েটার শরীর কথা বলে। এই সব মেয়েদের চট করে বিয়ে করে দুটো বাচ্চা দিয়ে দিতে হয় কোলে, তবেই মেয়েগুলো মাটির বাড়ির মত হয়ে যায়। এই সব ভেবেই ছেলেটা প্রেম করেছিল লাবন্যর সঙ্গে। একদিন জিয়া উদ্যানের মধ্যে দাঁড়িয়ে বাড়িতে বকা খাওযা মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে জড়িয়ে ধরল স্বাধীনকে । ছেলেটা কাঠ। সেই কাঠকে লাবন্য গভীর চুম্বন করল একটা। সেই মেয়েটার জীবনে প্রথম চুম্বন, ছেলেটারও তাই। চুম্বন শেষে আরও কিছু কথার পর দুজনে বাড়ির পথ ধরল। আর ছেলেটা ভাবল, একি মেয়ে রে ভাই? রাস্তার মধ্যে জড়িয়ে ধরে চুমু খেল? মাত্র এক মাস চেনে আমাকে, চুমু খেয়ে ফেলল? এ তো চরিত্রহীন মেয়ে, খেলুড়ে, শরীর হ্যাংলা। একে তো কাল বিছানায় নিয়ে যেতে চাইলেই চলে যাবে। সতীত্ব ফতিত্ব তো এর কাছে ইস্যুই নয়। এই মেয়েকে বিয়ে করলে তো সর্বনাশ। আমি খেটে মরব আর এ পুরুষ সঙ্গের জন্য উলুক ঝুলুক করবে
যেমনি ভাবা তেমনি কাজ। স্বাধীন কিছুই বুঝতে দিল না লবন্যকে।লাবন্যর সাথে শুরু করল প্রেম প্রেম খেলা মিশল মেয়েটার সঙ্গে, মেয়েটার শরীর নিল ধীরে ধীরে। আস্তে আস্তে তারিয়ে তারিয়ে। তারপর লাবন্যকে অন্ধকারে রেখে একদিন বিয়ে করল অন্য একটা মেয়েকে। ছেলেদের সতীত্বের ধারনাটা খুব অদ্ভুত। একটা মেয়ে একটা ভার্জিন মেয়ে যদি তার ভার্জিনিটি তার প্রেমিককে দেয়, তাহলে যে পুরুষ সেটা পেল, সে সেটা নিল – এমন কি তার কাছেও মেয়েটা আর ফ্রেশ থাকে না। ‘মেয়েটা আমাকে দিয়ে দিল’টা হয়ে যায় ‘মেয়েটা বিয়ে না করেই একজনকে দিয়ে দিল?’ তাই তখন ছেলেটা বিয়ে করার জন্য আর একটা ফ্রেশ মেয়েকে খোঁজে যে মেয়েটারও ভার্জিনিটি কি না নিয়ে চলে গেছে আর একটা ছেলে। ওই একই রকম মানসিকতা নিয়ে। আমি দেখেছি পুরুষরা সব্বাই একটা বিষয়ে ভয়ঙ্কর আত্মপ্রতারণা করে। কোনও ছেলেকে জিজ্ঞেস করো ‘তোমার বউয়ের সঙ্গে ফার্স্ট লাভ মেকিং-এ তোমার বউ ব্লিড করেছিল?’ মানে হোয়াট ডু ইউ থিংক? ওয়াজ শি আ ভার্জিন?
ছেলেটা একটু অন্যমনস্ক হয়ে যায় উত্তর দিতে আর অবধারিত ভাবে বলে, ‘হ্যাঁ, ব্লিড করেছিল!’
কুড়ি বছরে অনেক কিছু বদলেছে, এমন কি এই বিষয়ে লেখার প্রয়োজনীয়তা পর্যন্ত অবসোলিট হয়ে গেছে, শুধু বদলায়নি ছেলেদের এই অন্যমনস্ক মিথ্যেটা!!!
১২ বছর পর ফেসবুকে একটা ফ্রেন্ডস্ রিকোয়েস্ট পেল লাবন্য। শৈবাল সরকার।সে আ্যাকসেপ্ট করতে দেরি করেছিল দু তিন দিন। তার মধ্যে সেই শৈবাল সরকার আরও একটা মেসেজ পাঠাল, ‘আ্যাই তুই লাবন্য না? রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করিস্ নি কেন রে?’ তখন শৈবালদাকে চিনতে পারল লাবন্য, উত্তর দিল, ‘তুমি রাজশাহীর শৈবালদা?’
‘হ্যাঁ!’ উত্তর এল, ‘তুই নীল ডেনিমের স্কার্ট পরতিস্? আর চুলে নানান রঙের ক্লিপ লাগাতিস্? সব মনে আছে আমার। আমি একদিন না এলে কি কাঁদতিস্ তুই, বাবা!’
‘ওঃ, শৈবালদা তোমাকে যে কত খুঁজেছি!’
‘আমিও খুঁজেছি! এই এত খোঁজাখুঁজি করে তোকে না পেয়ে শেষে বিয়েতে মত দিলাম, কামিং মান্থের ১৯ তারিখে বিয়ে...!’
লাবন্য বলল, ‘সত্যি, কি কান্ড বলো! তার মানে আমি একা তোমার প্রেমে পড়িনি? তুমিও পড়েছিলে? এবার কাছে পেয়েও লাবন্য হারিয়ে ফেলল তার শৈবালদাকে।
লাবন্যর মনে কোনও কালে কোনও ভূতের অস্তিত্ব ছিল না।লাবন্য অন্য অনেক কিছুকে ভয় পেত, যেমন পুরুষদের, যেমন প্লেনে চড়া। তারপর ধরা যাক ঘুমের মধ্যে টের পাওয়া ভূমিকম্পে মেয়েটি খুবই ভয় পেত। এছাড়া কেটে-ছড়ে টিটেনাস হয়ে যাওয়া বা হঠাৎ চাকরি খুইয়ে ফেলা এসব জিনিসকেও লাবন্য বিস্তর ভয় পেত কিন্তু ভূতকে সে কোনদিনও কোনও নম্বর দেয়নি। ভূতের গল্প সে প্রচুর শুনেছে ছোটবেলায়, বড় হয়েও। অনেককে সে দাবি করতে শুনেছে স্বচক্ষে ভূত দেখার। ছোটবেলায় তার মা তাকে বুলুপাগলি নামের এক পেত্নীর ভয় দেখাত। কোঁকড়া কোঁকড়া এক মাথা খড়ের মতো চুলগুলো মুখের সামনে এনে এমন মাথা ঝাঁকাত যে ভয়ে চিৎকার করে উঠত সেই মেয়ে। তারপর একদিন সে ধরে ফেলল ওই বুলুপাগলি কোনও পেত্নী-টেত্নী নয়, তাদের বাড়ির রাতদিনের কাজের মাসি। সে যে ভূতের অস্তিত্ব তার কাছে ‘স্টুপিডিটি’ হয়ে গেল আর কখনও সে ভূতকে ধর্তব্যের মধ্যে ধরেনি।এক ঝড়ের রাতে হঠাৎ স্টোক করে মারা গেল লাবন্যর মা।এবার মেয়েটি একা হয়ে গেল।
ইতিমধ্যে লাবন্য অনেক বড় হয়ে গিয়েছে, প্রায় চল্লিশের কোঠায় তার বয়স। অল্প বয়েসের বিয়েটা ভেঙে গিয়েছে। তারপর জীবনে দু’একজন পুরুষ যে আসেনি তা নয়, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেনি। তারাও মেয়েটিকে ভুলে গিয়েছে, লাবন্যও তাদের ভুলে গিয়েছে। এইবার এই প্রায় আটত্রিশ বছর বয়েসে নিজের একাকিত্বকে ভয় পেয়ে সে ঠিক করল ফের বিবাহ করবে। এই সময় যে ছেলেটি পদার্পণ করল লাবন্যর জীবনে তার ভীষণ ভূতের ভয়।লাবন্য হেসে ফেলল এই কথা শুনে।
একদিন ছেলেটি বলল ফাঁকা রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে আসার সময় ছেলেটি লম্বা এক নারীমূর্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছে, তখন রাত দেড়টা। রাস্তার মাঝখানে দাঁড়ানো ওই নারীমূর্তিকে দেখে ভয় পেয়ে ছেলেটা একশ তিরিশ কিমি স্পিডে গাড়ি চালিয়ে দেয় এবং তার বিশ্বাস যে তার গাড়ি ধাক্কাও মেরেছিল ওই অপচ্ছায়াকে। কিন্তু দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যেতে যেতে পিছন ঘুরে তাকিয়ে ছেলেটি ঠিক সেই আগের জায়গাতেই একরকম স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিল নারীমূর্তিকে।
লাবন্য ছেলেটির প্রেমে পড়েছিল বলেই সম্ভবত বিচলিতবোধ করেছিল এই ঘটনায়। তার প্রেমিককে মাঝে মাঝে ফোন করত একটা মেয়ে। দিনের মধ্যে দু’তিনবার ফোন আসত মেয়েটার। তার প্রেমিক তাকে বলেছিল মেয়েটি কে, কেন ফোন করে সে তা জানে না, ফোন করে মেয়েটা শুধু ‘আই লাভ ইউ’ বলে, বলে আর হু-হু করে কাঁদে। কাঁদে আর দেখা করতে চায়। কোথায় দেখা করতে চাও জিজ্ঞেস করলে বলে নদীর ধারে, কখনও বলে মাঝরাতে, যখন নিশাচর পাখি মাথার ওপর চক্কর মেরে ওড়ে তখন। তার প্রেমিক মেয়েটিকে বোঝায়, 'দেখো, আই ডোন্ট লাভ, কোনও প্রশ্নই ওঠে না, আমি তো তোমাকে চিনিই না, বিসাইডস্ আই আম সিয়িং সাম ওয়ান, আই লাভ হার, তাই আর কাউকে এন্টারটেন করার প্রয়োজনও নেই।'
তখন মেয়েটি আরও কাঁদে, এত কাঁদে যে, এই মেয়েটির প্রেমিকের মনে হয় ওই মেয়েটির চোখের জলে সে ভেসে যাচ্ছে, ভিজে যাচ্ছে। কিছুদিন এরকম চলার পর লাবন্য বিরক্ত হয়ে ওঠে। তার আর প্রেমিকের মাঝখানে এই ফোনের মেয়েটা যেন কেমন ঝুলে আছে বলে সবসময় মনে হতে থাকে তার। প্রেমিকের বুকের মধ্যে যখন ঘন সন্নিবেশ ঘটে তার তখনও মনে হয় মেয়েটা দূর থেকে দেখছে, দেখে কাঁদছে, হয়ত এক্ষুনি ফোন করবে। আর সত্যিই তাই হয় ঘনিষ্ঠতম মুহূর্তে মেয়েটার ফোন আসে। আর মেয়েটা হু-হু করে কাঁদতে থাকে। নানাবিধ চেষ্টা সত্ত্বেও মেয়েটার ফোন আসা বন্ধ হয় না।
লাবন্য বুঝতে পারে তার মধ্যে একটা অন্যরকম ভয় তৈরি হচ্ছে। ইদানিং তার প্রেমিক ফোনের মেয়েটির কথা উঠলে এমন গম্ভীর হয়ে যাচ্ছে যে তারপর আর কোনও কথাই বলছে না তার সঙ্গে – লক্ষ্য করে মেয়েটা। ইদানিং মেয়েটার কান্না শুনে তার প্রেমিক কানে হাত চাপা দিয়ে বলে ওঠে ‘আমি আর সহ্য করতে পারছি না!’ মেয়েটির ভয় বাড়তে থাকে, তার মনে হতে থাকে তার প্রেমিককে চোখের জল ফেলে ফেলে জিতে নেবে ফোনের মেয়েটা। তার সারাক্ষণ প্রেমিককে হারানোর ত্রাস হতে থাকে। প্রতিদিনই মনে হয় আজই, বোধহয় ছেলেটা চলে যাবে ফোনের মেয়েটার কাছে।
সম্পর্ক খুবই ভয়ের জিনিস। লাবন্য বুঝতে পারে সেই ভয় তাকে গ্রাস করছে, গিলে ফেলছে। আর কোনও কাজে সে মন দিতে পারে না, কোনও চিন্তা সঠিকভাবে করতে পারে না, কোনও নির্ণয় আগের মতো দৃঢভাবে নিতে পারে না, সব সময় টের পায় তার পাশে একটা হাওয়া এলোমেলো বইছে। তারপর লাবন্য বুঝতে পারে সেই হাওয়ার একটা আদল আছে, একটা মেয়ের আদল, একটা গন্ধ আছে, তীব্র ফুলের গন্ধ।
লাবন্য নিজে আরও পারফিউম ঢালে গায়ে, আরও সাজে, প্রেমিককে হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সে আর অনেক কিছু করে ফেলে যা আগে করার কথা ভাবেনি। তারপর একদিন সে অনেক রাতে অফিস থেকে ফেরার পথে দেখতে পায় সাদা কাপড় পরা লম্বা এক নারীমূর্তি মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে। মেয়েটি ভূত দেখতে পায় আজকাল মাঝেমাঝেই। মেয়েটি আজকাল বিশ্বাস করে ভূত আছে!
১৬ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৭
jotejoy বলেছেন: জগা খিছুড়ই আমার হেব্বি ফিবারিট।আপনার লাবড়া পছন্দ নিশ্চয়ই?
২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৮
শ্যাঁওঁড়াঁ গাঁছেঁরঁ বাঁসিঁন্দাঁ বলেছেন: আঁমিঁ তোঁ আঁছিঁইঁ ! এঁতেঁ বিশ্বাঁসঁ-অঁবিশ্বাঁসেঁরঁ কীঁ আঁছেঁ ??
১৬ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৫
jotejoy বলেছেন: যাক শেষমেষ লাবন্যর ১টা গতি হল।ধন্যবাদ।
৩| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৯
রিফাত হোসেন বলেছেন: পড়লাম.... বহু ধৈর্য ধরে ! তবে দ্রুত । হাহাহ
++
১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:২২
jotejoy বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩
Kawsar banggalii007 বলেছেন: অতিশয় উচছ সাহিত্য কারবার।
১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:২২
jotejoy বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩
জানতে চায় বলেছেন:
১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০২
jotejoy বলেছেন:
৬| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৫৬
মুসাব্বির৬৬৬ বলেছেন: ভাই , লাবণ্য ছেলে না মেয়ে ? আপনার গল্পে একটু ত্রুটি আছে। :-& :-<
১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০১
jotejoy বলেছেন: ছোট্ট একটা ব্যালকনি ছিল লাবন্যর ঘরের সঙ্গে। আর টবে দুটো একটা গাছ রাখত সে সেখানে। সেই ব্যালকনিতে মেয়েটি অবলীলায় মেলতে পারত অন্তর্বাস, গোলাপি ব্রা, সাদা প্যান্টি। মা শিখিয়েছিল অন্তর্বাস মেলে তার ওপর দিয়ে একটা পাতলা ওড়না বা ওই জাতীয় কিছু বিছিয়ে দেওয়া উচিত। ব্রা, প্যান্টি সর্বসমক্ষে মেলাটা রুচিসম্মত নয়। মেয়েটি মানত না এই কারণ।
৭| ১৮ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৪৩
জানতে চায় বলেছেন: ভাই রাগলেন কেন?
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৫
আতিকুল০৭৮৪ বলেছেন: জগা খিছুড়ি পাকিয়ে ফেলছেন। আরো ছোট করেন ভাই