নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার অচেনা আমি
গাছ থেকে বাতাসে ঝরে পরা বা পেঁকে লাল টুকটুকে হয়ে ঝরে পরা আম খেলে হায়াত কমে যায়, মৃত্যু নিকটে চলে আসে। এমন আজব ধারনা থেকেই এ দেশের মানুষ ঝরে পরা আম খায় না। তবে নিজে হাতে গাছ থেকে পেরে আম খায়। বাজারেও আম কিনতে পাওয়া যায়, তবে বিক্রেতা নিজে হাতে গাছথেকে আম পেরে বিক্রি করেন। ঝরে পরা আম ক্রয় বিক্রয় ও হয় না।
আমি যে বাসায় থাকি, বাসার সামনেই রাস্তা রাস্তা ঘেষে দুটি আম গাছ। গাছের ডালে ডালে ভরপুর আম! আমি প্রথমদিন বাসায় আসতেই দেখি বাসার সামনে রাস্তায় পাঁকা পাঁকা আম পরে আছে। কিছু রাস্তার মাঝে লেপ্টে গেছে গাড়ির চাকায় পৃষ্টাঘাত হয়ে। কিছু আমা মানুষের পায়ের গুতায় এদিক ওদিক ছড়িয়ে গেছে। খোজ নিয়ে জানলাম এখানে ঝরে পরা আম কেউ খায় না, মরার ভয়ে। ঝরে পরা আম খেলে নাকি মানুষ তারাতারি মরে। আজব কথা! আমি তো ছোট বেলায় আমাদের গ্রামের বাড়িতে সব গুলো গাছের নিচে কাকডাকা ভোরে হাজির হতাম, আম কুড়াতাম। ভর দুপুরে একটু জোড়ে দমকা হাওয়া বইলেই দৌড়ে যেতাম ঝরে পরা আম কুড়াতে। ঝরে পরা আম খেলে যদি মরন ঘনিয়ে আসে তাহলে আমি বেঁচে আছি এটা বোনাস জীবন।
আমার কথা শুনে সাথে থাকা বড় ভাইয়ের হাসি যেন থামছেই না, উনি বলল আমরা মাঝে মাঝে আম কুড়িয়ে আনি একদিন আনলে ৩ দিনে শেষ হয় না। শেষে ফ্রিজেই নষ্ট হয়, তাছাড়া এখানে আম কুড়াতে লোকে দেখলে টুকাই এর চেয়ে জঘন্য নিচু জাতের মানুষ মনে করবে। উনারা গভীর রাতে আম কুড়ায়, শুনেই আমি গভীর রাতের অপেক্ষা করতে লাগলাম।
রাত ১টা বাজে, রাস্তায় একটা পিপড়ারও আনাগোনা নেই, এই সুযোগ ২ মিনিটের মধ্যে একগাদা আম নিয়ে রুমে ঢুকলাম, আমরা ৩ জন মানুষ! এতো আম খাবে কে? বড় এক ভাই জিজ্ঞাস করলো, বললাম এ কয়টা আম তো আমারই লাগে। উনি বললো কয়দিন খাবা খাও, আমার প্রিয় ফল আম সেই আমারও এখন অতো ভালোলাগে না।
৩ জন একসাথে বসে খেলাম, আহ্ মিষ্টি আমগুলো! খাই আর ভাবি, ওরা কি যে বোকা ঝরে পরা আমের স্বাদ বুঝলো না।
ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখি রাস্তা ঝকঝকে পরিষ্কার, সাথে থাকা ভাইকে জিজ্ঞেস করে জানতে পেলাম, রাস্তা প্রতিদিন ভোরে ঝাড়ু দেয়, ওরা ডাস্টবিন এ ফেলে দেয় সব। শুনেই আমার কেমন যেন লাগলো।
ছোট বেলা থেকেই অন্যের ফলের গাছ নিজের মনে করে ফল খাইতাম, দিন - রাত কোন ব্যাপার না। সুযোগ বুঝে গাছের সেরা ফলগুলো আমার চাই। রাতে চুরি করে দিনে গাছওলাকে সান্তনার বানি শুনাতাম। আহ্ সেই দিনগুলি।
এখন আমি রোজ আম খাই, চুরি করতে হয় না। দরজা খুলে ২০ পা ফেললেই আম আর আম, ফ্রিজে এত্তোগুলো আম, গতকাল অনকগুলো ফেলে দিতে হয়েছে। ফ্রিজে থেকেও নষ্ট হয়, পাকা আম।
রোজার দিন & ব্যাস্ততা মিলে অতো সময় ই নেই, আম খাওয়ার। আম কুড়াতেও আর আগের মতো অনুভূতি পাই না। পঁচে যাক ঝড়ে পরা আমগুলো, খেলে তারাতারি মরতে হবে! ভাবলেই, মনে আমার হাসতে থাকে।
১৮ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৭
জে আর সিকদার বলেছেন: আমি ফিলিপাইনে থাকি। এখানে এসে অনেককিছু মিস করতেছি, আবার অনেক কিছুই পাচ্ছিও। শৈশবের সেই দিনগুলি, আহ্
২| ১৮ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৮
ওমেরা বলেছেন: আচ্ছা এটা কোন দেশ ---------------- ও বুঝেছি ফিলিপাাইন।
১৯ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৪
জে আর সিকদার বলেছেন: জী, ভাই। ফিল্লাদের দেশ, ফিলিপাইন
৩| ১৮ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৮
শায়মা বলেছেন: ঝড়ের দিনে মামার দেশে আম কুঁড়াতে সুখ
পাকা জামের মধুর রসে রঙ্গিন করি মুখ!
অনেক মজার স্মৃতি ভাইয়া!
১৯ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৬
জে আর সিকদার বলেছেন: স্মৃতিরা বেঁচে থাক রঙ্গীন অতীত জুড়ে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
"গাছ থেকে বাতাসে ঝরে পরা বা পেঁকে লাল টুকটুকে হয়ে ঝরে পরা আম খেলে হায়াত কমে যায়, মৃত্যু নিকটে চলে আসে। এমন আজব ধারনা থেকেই এ দেশের মানুষ ঝরে পরা আম খায় না। "
-আপনি কি আফ্রিকায় থাকেন? আম কুড়ানো হলো শৈশবের একটা বড় অংশ