নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছাইয়ের নেই আগুনের ভয়

জুলিয়ান সিদ্দিকী

জগতের সব কাজই আমি পারি না। অনেক কাজে অলস হলেও লিখতে কখনও ক্লান্তি বোধ করি না। এতে করে আমার সময়গুলো ভালো কাটে।

জুলিয়ান সিদ্দিকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রতিপক্ষ

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪২

অল্প-বিস্তর কষ্ট সবার জীবনেই থাকে। তবু কারো কারো হাসি-খুশি আর উজ্জ্বল মুখশ্রী তাদের আশপাশের লোকজনের মনে কিছুটা হলেও শক্তি আর সাহসের যোগান দিয়ে যায় স্বল্প সময়ের জন্যে হলেও। তবু যেন খুব বেশিক্ষণ মনের স্বাভাবিক অবস্থাটা ধরে রাখতে পারেন না সায়রা বেগম। সর্বক্ষণ যেন বিগত দিনের ক্ষয়ে যাওয়া পানসিটাকেই তিনি দেখতে পান স্মৃতির পরিত্যক্ত সৈকতে। যেখানে কেবল নিষ্ঠুরতা আর প্রতারণার জলোচ্ছ্বাস অবিরাম। সহানুভূতি মাখা নমনীয় দৃষ্টির বদলে প্রতিহিংসা আর শাসনের লকলকে দৃষ্টির আস্ফালন। মানুষ মানুষের জন্যে কথাটি ঠিকই আছে, কিন্তু তা যে কেবল মঙ্গলের জন্যেই সে কথা স্পষ্ট করে বলা নেই কোথাও।



মশিউর রহমান তেমন একটা সুপুরুষ না হলেও মানুষ হিসেবে মন্দ ছিলেন না। স্বভাবটিও ছিল যেন কনকনে শীতের রাতে এক মুষ্টি গাঢ় ওম। উচ্চস্বরে যেন কথা বলতে শেখেন নি। আর সে সুযোগে সংসারের পরিবৃত্তে স্ব-কণ্ঠের অনুরণন স্থায়ী হয়ে গিয়েছিল বলে, এখনও তা ধরে রাখতে বদ্ধ-পরিকর তিনি। উড়ে এসে জুড়ে বসা ছেলের বউ গ্রীবা বাঁকিয়ে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে তার দিকে তাকাবে ব্যাপারটি যেন ভাবতেও পারেন না। এতকাল যে সংসারটিকে আগলে রেখেছিলেন তার কর্তৃত্ব চলে যাবে অন্যের হাতে আর নিজের সংসারে নিজেই ভার বা বোঝা হয়ে পড়ে থাকবেন এক কোণে, সে কথা ভাবনায় এলেও মনে হয় যেদিকে দু চোখ যায় সেদিকে চলে যান।



স্বামীর মৃত্যুর পর পরই নিজের জীবনটাকে নিয়ে ভাবতে আরম্ভ করেছিলেন। যদিও স্বামীর জীবদ্দশায় তেমন গভীর ভালবাসায় বাঁধতে পারেন নি মানুষটিকে, তবু খানিকটা দায় নেভানোর মতো করে হলেও এক ধরনের টান অনুভব করেছেন। আর এতেই বেশ সন্তুষ্ট ছিলেন অল্পে তুষ্ট থাকা মানুষটি। স্ত্রীর কাছ থেকে কতটা পেলেন তার গভীরতা মেপে দেখতে নিক্তি বা গজ ফিতে হাতে তুলে নেন নি। অথচ নিজের দিকে তাকালে জীবনটাকে তেমন ভর ভরন্ত মনে হয় না সায়রা বেগমের। বড় ছেলে লাভলু যদিও হাচড়ে পাছড়ে ব্যবসা নিয়ে উঠে দাঁড়াতে প্রাণান্ত চেষ্টা করছিল, তবু কোনোক্রমে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারছে না। তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন দিয়ে ঠেসে রেখেছে ব্যবসার চারপাশ। তারাই যে ইঁদুরের মতো ব্যবসাপাতির শেকড়-বাকড় কাটছে না তাই বা কে জানে। এ নিয়ে ছেলে বা ছেলের বউর সঙ্গে ঝঞ্ঝাটে যেতে চান না। ছেলের নামে নেওয়া ব্যাঙ্ক ঋণের কারণে বউ মন্টি আর তিনি আইনগত ভাবে আটকা পড়ে আছেন ব্যাঙ্কের কাছে। মনের মিল না থাকলেও সময়ে সময়ে কোর্টে হাজিরা দিতে যান দুজনেই। তখনও শাশুড়ি আর পুত্রবধূতে তেমন একটা কথা হয় না। কবে যে ব্যাঙ্ক আর কোর্টের টানা হ্যাঁচড়া থেকে মুক্ত হবেন বুঝতে পারেন না।



অন্যদিকে বড় মেয়ে এশার বর হাশমতুল্লা প্রায়ই বলে যে, ছেলে তার বউ-বাচ্চা নিয়ে খুব শীঘ্রই বিদেশে স্যাটেল হবে। দেশের ব্যবসাপাতি গুটিয়ে ফেলেছে এরই মধ্যে। শেষ বয়সে জেলের হাত থেকে বাঁচলেও পথে বসা থেকে বাঁচার সম্ভাবনা নেই। মেয়ে-জামাইর কথা পুরোপুরি উড়িয়ে দিতে পারেন না তিনি। তবু মনে কষ্ট পাবে ভেবে কথাটা কোনো বারই ছেলেকে জিজ্ঞেস করতে পারেন না। আবার ছেলের বউ কান কথাকে গুরুত্ব দেওয়ার কারণে দু চার কথা শুনিয়ে দেবে না তারও নিশ্চয়তা নেই।

সব মিলিয়েই নিজের প্রাপ্তির দিকটার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ হলে জীবনটাকে তেমন একটা ভর-ভরন্ত মনে হয় না। ছোট মেয়ে ইতি কতো ভাল একটা বর পেয়েছিল, কিন্তু সংসারটাকে টিকাতে পারলো না। আজকালকার মেয়েরা সব কিছুই যেন তৈরি মুড়ি-মুড়কির মতো ভাবে। আরে খানিকটা কষ্ট তো জীবনে সহ্য করতেই হয়। সিঁড়ি বেয়ে যতটা ওপরের দিকে মানুষ উঠতে চায়, তার শ্রম আর ঘাম তো ততটাই হবে। কিন্তু বুঝল না মেয়ে। সম্পর্কটা ভেঙে দেওয়াটা সহ্য করতে পারেন নি মানুষটা। মেয়ের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভাবতে ভাবতেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন শেষ পর্যন্ত।



অবশ্য বিধবা হলে কার কেমন লাগে তা ঠিক অনুমানের ওপর ভিত্তি করে বুঝতে চান না তিনি। তবে নিজের ক্ষেত্রে টের পেয়েছিলেন যে, বেশ একটা স্বাধীনতা চলে এসেছে মনের ভেতর। অল্প কিছুদিনের মধ্যে মনটা বেজায় নির্ভার আর ফুরফুরে হয়ে উঠলেও কারো কাছে তা প্রকাশ করেন নি। তবু কোন অসচেতন মুহূর্তে মনের আলগা দরজার ফাঁক গলে ঢুকে পড়েছিলেন আবদুল হাকিম। যার সঙ্গে প্রথম বিয়ের কথা পাকা হয়েছিল। সব কিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবার পরও বালির মূর্তির মতো কখন খসে পড়েছিল বুঝতে পারেন নি। হঠাৎ একদিন চমকে উঠে জানতে পেলেন তার বিয়ের তারিখ পার হয়ে গেছে। যদিও বিয়ে ব্যাপারটাকে অতটা বুঝতে পারছিলেন না, তবু কেমন যেন এক ঝাঁক বিষণ্ণতা এসে চেপে ধরেছিল। সে বিষণ্ণতা আর মন থেকে দূর করতে পারছিলেন না বলে মশিউর রহমানের সংসারে মন বসাতে না পারলেও একে একে লাভলু, এশা আর ইতি এসে তাকে অষ্টে-পৃষ্টে বেঁধে ফেলেছিল সংসারের চাকার সঙ্গে। হয়তো গর্ভে এসে পড়েছিল বলেই নিতান্ত দয়া করে তাদের নিরাপদ ভূমিষ্ঠের ব্যাপারে খানিকটা নমনীয় ছিলেন বলা যায়। মানুষের সন্তান হিসেবে তাকে বাঁচানোর দায় মানুষের বলেই হয়তো বুকে তুলে নিয়েছিলেন তাদের। আদর-যত্ন যতটা না হলেই নয় ততটুকু দিয়েই বড় হতে সাহায্য করেছেন। সেই থেকে এ সংসারই তার একমাত্র বিচরণ ক্ষেত্র ছিল দীর্ঘকাল। তবু আজকাল বেশ অনুভব করতে পারেন যে, লাভলু, মন্টি আর তাদের ছেলে-মেয়েদের প্রতি কিছুটা বেশিই যেন সদয়।



একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে দ্বিতীয়বার দেখা হয়েছিল আব্দুল হাকিমের সঙ্গে। আর দূর থেকে তাকে দেখতে পেয়েই মনটা কেমন হুহু করে উঠেছিল। মনে হয়েছিল এই মানুষটির সঙ্গে কেন যে বিয়েটা হলো না। তাহলে তো তাকে এখন বিধবার পরিচয়ে বেঁচে থাকতে হতো না। বিধাতা কেন যে এমন একটি বেহিসাবি কাজে সময় নষ্ট করলেন অযথা। আবদুল হাকিম এখনো দিব্যি সুস্থ আর শক্ত-সমর্থ রয়ে গেছেন। অথচ তাকে কিনা বিধবা হিসেবে জীবনের সব আলো আর রঙ সমূহ দূরে ঠেলে দিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। কতকাল পর দেখা হয়েছে মানুষটির সঙ্গে তারপরও মনে হচ্ছিল এই কিছুক্ষণের জন্যে চলে গিয়েছিলেন দৃষ্টির আড়ালে।



সায়রা বেগমকে দেখতে পেয়ে নিজ থেকেই এগিয়ে এসেছিলেন আবদুল হাকিম। আগ্রহী হয়ে ফোন নাম্বার নিয়েছিলেন। সেই থেকে মাঝে মধ্যে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে কথাবার্তা হয় টুকটাক। কিন্তু স্বপ্ন থেকে দুজনের কারোরই যেন সাহস বা আগ্রহ নেই। সায়রা বেগম অর্থ্রাইটিসের কারণে প্রায়ই শয্যাশায়ী থাকেন। অন্যদিকে আব্দুল হাকিমও প্রায়ই স্থবির হয়ে থাকেন ডায়াবেটিসের অত্যাচারে। কথায় কথায় জানা হয়ে যায় স্ত্রী হারিয়ে আব্দুল হাকিমও নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছেন দীর্ঘকাল। ইউরোপের কোনো দেশ হলে হয়তো বৃদ্ধ বয়সেও বিয়ের ব্যাপারটি আরো সহজ হয়ে যেতো। কিন্তু দেশটা বাংলাদেশ বলে এখানকার সংস্কার বেশ জটিল। পান থেকে চুন খসাবার জো নেই।



যদিও আবদুল হাকিম মনের ইচ্ছে গোপন করেন নি। এক রকম খোলামেলা প্রস্তাবও দিয়েছিলেন, যেহেতু ছেলেমেয়ে সবাই দূরে থাকে। আর সায়রা বেগমের ছোট মেয়েটা দু সন্তান নিয়ে তার কাছে থাকলেও তারা যার যার কাজে বেরিয়ে গেলে দীর্ঘ একাকীত্ব হামলে পড়ে। চাইলে দুজনেই সেই সময়গুলোকে উর্বর করে তুলতে পারতেন। কিন্তু ইচ্ছে করলেই সব হয় না। শরীরের চাহিদা সীমাহীন হলেও পারিপার্শ্বিকতার কথা ভেবে অনেক সময় চেপে যেতে হয় কষ্টগুলো।



তার ছোট বোন হাসিনা অতটা সংস্কারপন্থী নয়। বিধবা হলেও তার চাহিদা পূরণে বিকল্প পথ বের করেছে ঠিকই। তার ছেলে-মেয়েরা তাদের মায়ের ব্যাপারটি জানলেও গলা উঁচু করবার সাহস নেই কারো। মৃত্যুর আগেই হাসিনার স্বামী সব কিছু তার নামে লিখে দিয়েছিলেন বলে, ছেলেমেয়েদের ওপর তাকে নির্ভরশীল হতে হবে না। সায়রা বেগম নিজের ক্ষেত্রে আশা করেছিলেন মা আর ভাইয়েরা মিলে কিছু একটা করবে। কিন্তু মশিউর রহমানের মৃত্যুর পর তার একাকীত্বের ব্যাপারটা যেন কারো চোখেই পড়ল না। এ নিয়ে এখনো মাঝে মাঝে একটা নীরব কষ্টে ভোগেন তিনি।

মেয়েটা একা একা আছে তাও প্রায় বছর পাঁচেক হয়ে গেল। ত্রিশের পর কোনো বিধবা বা ডিভোর্সির কলঙ্ক-দুর্নাম কুড়ানো হয়ে গেলে নিঃস্বার্থ বন্ধু পাওয়া বা নতুন করে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে পারা অতি সৌভাগ্যের ব্যাপার বলেই মনে করে লোকজন। তবু কেমন করে যেন চার পাশে নানা বয়সের ছেলে বন্ধুদের একটা বৃত্ত ধরে রাখতে পেরেছে ছোট মেয়ে ইতি। প্রীতম বলে এক ছেলে তো এমন ভাবেই জড়িয়ে গিয়েছিল যে, বিয়ের কথাবার্তা সব ঠিকঠাক হয়ে গিয়েছিল। কী একটা ব্যাপার নিয়ে শেষে মেয়েটাই বেঁকে বসলো যে, আর সম্ভব হয়নি সেই বিয়েতে তার মত করানো।



বিষয়টা নিয়ে ভাবলে সায়রা বেগমের মনে হয় যে, বিয়েটা না হওয়াতে একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে। তিনি একা একা কী করে থাকতেন? শহরের বাড়ি ছেলে আর তার বউয়ের দখলে দিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হতেন। মন্টির সঙ্গে থাকাটা খুব একটা সুখকর বিষয় যে হতো না, আগের কিছু অভিজ্ঞতা দিয়েই বেশ বুঝতে পারেন। তা ছাড়া ছেলে ছেলের বউ-বাচ্চারা একই বিল্ডিঙে থাকলেও কিছুতেই যেন একাকীত্ব ঘোঁচে না তার। মেয়েটা আছে বলে তার ছেলে-মেয়ে দুটোর সঙ্গে বা মেয়েটার সঙ্গেও নানা চোটপাট দেখিয়ে বেশ স্বস্তি বোধ করেন। মনে হয় বেঁচে আছেন। টিকে আছে প্রায় বিলীন সাম্রাজ্যটাও। কিন্তু ইদানীং মেয়ের হাব ভাবও তেমন সুবিধের ঠেকছে না। চলনে পোশাকেও অনেকটা পরিবর্তন ফুটে উঠছে। পাছে না মেয়ে কখনো বিদ্রোহ করে বসে তা নিয়ে স্বস্তিতে থাকলেও, দীর্ঘদিন ধরে ডিভোর্সি আর দুটো ছেলেমেয়ে আছে যেনে কোন আহাম্মক তাকে ভালবাসতে বা বিয়ে করতে এগিয়ে আসবে সে ভাবনাটাই খানিকটা স্বস্তি দেয় মনে। তবু মাঝে মধ্যে হঠাৎ করেই পাশের রুম থেকে ভেসে আসা ফোনালাপের টুকরো টুকরো শব্দ জোড়া দিয়ে বুঝতে পারেন ইতির জীবনে নতুন করে কারো আবির্ভাবের ইঙ্গিত। মেয়ে ভীতু না হলে বা মায়ের অবাধ্য হবে না, মাকে কষ্ট দেবে না টাইপের সস্তা মানসিকতার না হলে মায়ের সম্মতিতে তার ভাল কিছু একটা হবে সে দুরাশায় পচে মরতো না।



একবার লোকটা তাকে খালা-মনি খালা-মনি করে বেশ একটা খাতির জমাতেও চেষ্টা করেছিল। বলেছিল আগের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক নেই। মেয়ে আছে চারটি। কথা শুনে মোটেও পাত্তা দেননি তিনি। আর কেনই বা এসব উটকো সম্পর্ককে পাত্তা দেবেন? তার বয়স যখন আটত্রিশ সে সময় বিধবা হয়েছেন। সেই থেকে দিনে-রাতে পুড়ে পুড়ে যেভাবে নিঃস্ব হয়েছেন তারই গর্ভজাত কন্যা কোন যুক্তিতেই বা অতটা সৌভাগ্যের অধিকারী হয়ে যাবে! তা কিছুতেই তিনি হতে দেবেন না। সেও যন্ত্রণার লাথি খেয়ে জীবনের কোনো একটি কোণায় পড়ে থাকুক। বুঝুক নিঃস্বতা আর নৈঃসঙ্গ্যের সুচ কতটা গভীরে গিয়ে নখ দাবায়! অবশ্য এও ভাবনায় আসে যে, মা হয়ে অতটা নিষ্ঠুর হওয়া ঠিক হয়তো নয়। কিন্তু তার আরেক মন বলে যে, তিনি তো কেবল জননীই নন, নারীও তো! ছেলে-মেয়েরা কি মায়ের নৈঃসঙ্গ্য টের পায় না, চোখে কি দেখে না তাদের জননী কতটা পোড় খেয়েও বেঁচে আছে কেবল তাদের দিকে চেয়ে? সে-ই ভাল, যারা দেখেও দেখে না, কেন তিনি তাদের সুখে কাঁটা হবেন না?



হঠাৎ টিকটিকির ডাকের সঙ্গে সঙ্গে উৎসের দিকে দৃষ্টি দিতে গিয়ে দেয়ালের ঘড়িটার দিকে চোখ পড়ে সায়রা বেগমের। সন্ধে ছটা পঁচিশ। ছেলে পক্ষ ইতির বিয়ের কথাবার্তা পাকা করতে আসবে সাতটার দিকে। তার ভাই-বোনেরাও চলে আসবে ততক্ষণে। সায়রা বেগম উঠে খানিকটা দূর থেকে ইতির ঘরে একবার উঁকি দিয়ে দেখলেন সন্তর্পণে। মেয়েটার চেহারা যেন দপদপ করছে খুশিতে। আর সে দৃশ্য দেখে যেন তার নিজেরই শ্বাস-প্রশ্বাস ভারী হয়ে আসে। বুকের মাঝামাঝি আর কণ্ঠনালীর কোথাও একটা ব্যথা ব্যথা বোধ হতে থাকে। বাঁ হাতে আলতো করে বুকের মাঝামাঝি হাত বুলাতে বুলাতে বিছানায় পড়ে থাকা সেলফোনটা তুলে নিয়ে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই একটি নাম্বারে রিং দিলেন। কারো সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পর বললেন, হ্যালো, আপনারা কি বেরিয়ে পড়েছেন?

কিছু একটা শুনে তিনি আবার বললেন, আপনাদের আজ আসতে হবে না। আমি স্যরি, একটা বড় রকমের অসুবিধা হয়ে গেছে!



ফোনের ও প্রান্তের কারো কথার উত্তরেই হয়তো সায়রা বেগম আবার বলে ওঠেন, না না! আমরা পরে কোনো একদিন তারিখটা জানিয়ে দেবো। তা ছাড়া মেয়ের মামারা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নি।



সে কথার সঙ্গে সঙ্গেই হয়তো কথা শেষ হয় সায়রা বেগমের। খানিকটা প্রসন্ন চিত্তে সেল ফোনটা বিছানার দিকে ছুঁড়ে ফেলে নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরে তাকান। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে ধুলোর পরতে ফ্যাকাসে হয়ে থাকা গাছের পাতা আর ডালপালা। সেই সঙ্গে মনে হয় তার বুকের ওপর চেপে বসে থাকা কোনো পাহাড় যেন হঠাৎ করেই নেমে গেল দীর্ঘদিন পর। শরীরটাও যেন বেশ হালকা আর ঝরঝরে হয়ে উঠল। যে অনুভূতিটির সঙ্গে দীর্ঘকাল পরিচয় না থাকার কারণে প্রায় ভুলে যেতে বসেছিলেন।

মন্তব্য ৪৩ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৪৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৩

ঢাকাবাসী বলেছেন: বেশ চমৎকার লাগল। এটাই আধুনিক জীবন, আমাদের জীবন! শেষটা অন্যরকমও করা যেত, নাকি!

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৯

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ ঢাকাবাসী।

শেষটা অন্যরকম করা যেতো অবশ্যই। কিন্তু আমার যে উদ্দেশ্য তা পুরণ হতো না। সায়রা বেগম যে কেবল মা নন, একজন রক্ত-মাংসের সাধারণ সুখ-দুখ, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির বয়ে বেড়ানো নারীও তা হয়তো ফুটে উঠতো না এভাবে।

২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৯

মামুন রশিদ বলেছেন: গল্পে খুব জটিল একটা বিষয়ে নাড়াচাড়া করেছেন জুলিয়ান ভাই । আটত্রিশে বিধবা হওয়া একজন মহিলার কাছে বাকি জীবনটা একা একা নিঃসঙ্গ কাটিয়ে দেয়া খুব কষ্টের । পারিপার্শ্বিক কারনেই হয়ত তার দ্বিতীয় বিয়ে বা বিকল্প সম্পর্কের দিকে যাওয়া সম্ভব হয় না । তিলে তিলে কষ্ট পেতে পেতে তাদের একটা অভিমান তৈরি । নিজের মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ের প্রসঙ্গটা যখন আসে, তখন তার জীবনের সকল অপ্রাপ্তি আর অভিমান ঈর্ষায় রুপ নেয় । নিজের মেয়েই হয়ে উঠে তার প্রতিপক্ষ ।

জটিল গল্পে ভাললাগা ।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৯

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন রশিদ।

আটত্রিশে বিধবা হওয়া একজন মহিলার কাছে বাকি জীবনটা একা একা নিঃসঙ্গ কাটিয়ে দেয়া খুব কষ্টের । পারিপার্শ্বিক কারনেই হয়ত তার দ্বিতীয় বিয়ে বা বিকল্প সম্পর্কের দিকে যাওয়া সম্ভব হয় না ।

-আমরাই কিন্তু আমাদের জীবনে নানা জটিলতা সৃষ্টি করি। কিন্তু আর খানিকটা যদি উদারতা থাকতো আমাদের পারিবারিক জীবনে তাহলে কাউকেই বিকল্প ভাবনা ভাবতে হতো না। সংখ্যায় খুব কম হলেও অনেক পরিবার আছে যেখানে এ ব্যাপারটাকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। গল্পে পাই যে শ্বশুর-শাশুড়ি বিধবা পুত্রবধূর বিয়ের ব্যবস্থা করছেন বা উৎসাহিত করছেন তার পছন্দের কাউকে বিয়ে করতে। তবে পড়শীরা বা সন্তানরা ব্যাপারটাকে ভালো চোখে দেখে না।

আমার একটা ভাবি ছিল, ভাই মারা যাওয়ার ৫বছর পর্যন্ত সে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি আমাদের দিকে চেয়ে। পরে বাবা-মা তার বিয়েতে সম্মতি দিয়েছিলেন এবং ভাবির নতুন স্বামীটাও আমাদের বাড়ি আসা যাওয়া করতো। আমার মাকে মা ডাকতো। সেই ভদ্রলোক মারা যাওয়ার পর ভাবিটা এখন আমাদের পরিবারেই আছে। যা নিয়ে গ্রামের দুষ্টু লোকেরা নেতিবাচক মন্তব্য করেনি।

আসলে মেনে নেবার মানসিকতা থাকলে কিন্তু অনেক সংকট থেকে আমরা নিজেদের এমন কি আপনজনদেরও উদ্ধার করতে পারি।

গল্পের সায়রা বানুর ব্যাপারটা তার সন্তানদের চোখে পড়তে পারতো, তারা উদ্যোগী হয়ে কিছু একটা করতে পারতো, যা সায়রা বানু এবং তার ছেলেমেয়েদের জন্য ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনতে পারতো। এ থেকে সমাজের অন্যান্যরাও শিক্ষা নিতে পারতো, ব্যাপারটাকে স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখতে পারতো। কিন্তু ব্যাপারটা ঘটেনি বলেই হয়তো সায়রা বানুরা বিকল্প পথ বেছে নেন, যারা পারেন না তারা আক্রান্ত হন মানসিক যন্ত্রণায় আবার কেউ বা হয়ে ওঠেন ঈর্ষা-পরায়ণ।

ভালো থাকুন মামুন। শুভ কামনা থাকলো অনেক।

৩| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: জেলাসি।এভাবেও হতে পারে। নতুন ভাবে চিন্তা করার সুযোগ মিলল। :)

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১৮

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ঠিক বলেছেন সেলিম আনোয়ার। জেলাস। আর তার জন্য কত না পথ রয়ে গেছে!

৪| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০৯

মাহবুব আলী বলেছেন: গল্পের প্রথম প্যারাটি তেমন প্রয়োজনীয় মনে হয় নি, অথবা শেষে বা অন্য কোনোখানে দেয়া যেতে পারত। প্রথমেই মতামত মন্তব্য, শরৎ সাহিত্যের এই বিষয়টি অনেকের মাঝে আছে। গল্পটির প্লট সুন্দর। একটু নির্মোহ থেকে মন্তব্য করলাম। শুভেচ্ছা।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ভাইজান, আপনার কমেন্ট দেখে ভাবলাম অনেক। যা বলেছেন এক দিক দিয়ে ঠিক আছে। বিতর্কের অবকাশ নাই। কিন্তু অন্য কোথাও জায়গা হবে না প্রথম প্যারাটার।

হোক শরৎচন্দ্রের কৌশল। তবু শরৎচন্দ্র আমাদের প্রিয়। এখনো শরতে মুগ্ধতা কাটে নাই আমার। কিন্তু প্রথম প্যারাটা না হলে এ গল্পটা শুরুও হতো না। তাই তার ভূমিকা আমার কাছে গৌণ মনে হয় নাই।

আর কারো ব্যাপারে নির্মোহ মন্তব্য করতে না পারেন, আমার ক্ষেত্রে তা প্রত্যাশিত তা আপনিও জানেন। যে কারো নির্মোহ মন্তব্যই লেখালখির জন্য ভালো পরিবেশ আর ভাবনার সহায়ক।

ভালো থাকবেন সব সময়।

৫| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৩

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: হঠাৎ একদিন চমকে উঠে জানতে পেলেন তার বিয়ের তারিখ পার হয়ে গেছ। ভালো লাগলো।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪১

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ মাহতাব সমুদ্র। ভালো থাকুন সব সময়।

৬| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৪

আম্মানসুরা বলেছেন: মধ্যবয়সী নারীর বৈধব্য যন্ত্রণা, একাকীত্ব খুব কষ্টের কিন্তু মায়েরা কক্ষনো জেলাসি হয় না। এটা ঠিক ভালো লাগল না। যতটুকু দেখেছি বাবা মায়ের মাঝে এমন একটা প্রার্থনা থাকে যে, আমি যে কষ্টের মধ্য দিয়ে গেলাম আমার সন্তান যেন তার মুখোমুখি না হয় প্রভু! এবং সে লক্ষ্যে কাজ ও করেন সবটুকু দিয়ে।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: গতানুগতিকতার বাইরে আমরা ভাবতে চাই না। মায়েরা বেশিরভাগই নিজেদের সর্বোচ্চ ত্যাগটাই তুলে ধরেন আমাদের সামনে, আমরা সেটা দেখেই অভ্যস্ত। আমি একটা ঘটনা জানি যেখানে মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলে বাবাকে দেখার কেউ থাকবে না বলে মেয়ের বিয়ের কোনো সম্বন্ধ এলে কথাবার্তা পাকা হয়ে গেলেই তিনি নিজে গিয়ে ছেলেদের গ্রামে মেয়ের দুর্নাম করে আসতেন। :P

অনেক সময় স্বার্থের কারণেও মানুষ এমন উদ্ভট আচরণ করে। যাই হোক আপনার কথা তো মানলামই। কিন্তু গল্প কী নিয়ে তৈরি হয়- যা গতানুগতিক নয়। আমরা কিন্তু আমাদের দৈনন্দিন বিষয়গুলো গল্পে পাই না। আর তেমন কিছু থাকলে বলে দেই গল্পটা পানসে।

ভালো থাকুন আম্মানসুরা।

৭| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৬

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: যা বলার মামুন ভাই ই বলে দিল ।
মা জাত টা থেকে আমরা শুধু ত্যাগ দেখতেই ভালবাসি ।
নাড়া দিল গল্প ।
ভাল থাকুন জুলিয়ান দা ।
শুভকামনা রইল অনেক ।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৮

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: হুম, বাবা-মায়েরা সারা জীবন আমাদের জন্যে ত্যাগ করেই যান, আমরা আর তাদের দিকটা দেখবার প্রয়োজন মনে করি না। বহুকাল ধরে খুবই খারাপ সময় যাচ্ছে বাবা-মায়েদের জন্য।

ভালো থাকুন সব সময়।

৮| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৮

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: চমৎকার চমৎকার গল্প। লেখা এমনই হওয়া উচিত জুলিয়ান দা!!!

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ, কা_ভা। ভালো থাকুন সব সময়।

৯| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৬

সুমন কর বলেছেন: গল্প ভালো হয়েছে। বাস্তব পেক্ষাপটে রচিত।
ইউরোপের কোনো দেশ হলে হয়তো বৃদ্ধ বয়সেও বিয়ের ব্যাপারটি আরো সহজ হয়ে যেতো। কিন্তু দেশটা বাংলাদেশ বলে এখানকার সংস্কার বেশ জটিল। পান থেকে চুন খসাবার জো নেই।

সুন্দরভাবেই বলা হয়েছে এবং শেষটা ব্যতিক্রম হওয়াতে মন্দ হয়নি।
ভালো থাকবেন।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৫

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন কর। বাংলাদেশটা কাজের বিষয়গুলো অনুকরণ করে না। এটাই আপচুচ!

১০| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫২

বশর সিদ্দিকী বলেছেন: একাকি মানুষের প্রচন্ড ফিলিংস টাকে গভির থেকে তুলে এনেছেন। ভাল লাগল।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৭

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকুন সব সময়।

১১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: লেখার ফাঁকে ফাঁকে কিছু যথাযথ উপমা পুরো গল্পটাকে উপভোগ্য করে তুলেছে। একটানে পড়ে ফেলেছি। বিশেষ করে সায়রা বেগমের মনস্তত্ত্ব নিয়ে কাটাছেঁড়া চমৎকার লেগেছে। কেউ তাঁর কষ্টটাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না- এমনকি তাঁর মেয়েটাও না। তাই একাকীত্ব এবং অভিমানে তাঁর ভাবনা জটলা বেঁধে গেছে। এখন তিনি মেয়েকেও এই কষ্টের ভাগ দিতে চান।

চমৎকার থিমে চমৎকার বর্ণনা। ভালো লাগা রেখে গেলাম প্রিয় জুলিয়ান।

শুভরাত্রি।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৫

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ শঙ্কু।

মানুষ অবহেলিত হতে হতে কখনো প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠতে পারে। আমাদের আম্মুরা যে কেবল ত্যাগ করেই যাবেন সন্তানের দিকে চেয়ে তা নিয়ে হয়তো সন্তানরাও ভাবনা-চিন্তা করা উচিত।

১২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: মাঝে মাঝে বাস্তব কল্পনাকেও হার মানায়। সায়রা বেগম মা হবার পরেও একজন মানুষ, নিজের একাকীত্ব, যৌনতা কিছুই সে অগ্রাহ্য করতে পারে না যেখানে ৩৫ এ ধরা হয় একজন নারীর মধ্য বয়স যে সময়টার পর সে একাকীত্বের মাঝে গেছে শারীরিক আর মানসিক ভাবে ! যদিও এ রকম খুব একটা দেখা যায় না মা মেয়েকে ঈর্ষা করে দলিত করে রাখে পদে পদে, তবে সেটা বাস্তবেরই দৃশ্য , খুব দেখার মতো চোখ না হলে আড়ালেই রয়ে যায় ।

খুব ভালো লেগেছে গল্প । অনেকদিন পর কিছু পোস্ট দিলেন !!

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আপু।

বাস্তবতা কল্পনাকেও হার মানায়। ওপরের কমেন্টেও দেখেছি মায়েদের সেই সনাতন রূপটাই আমরা সব সময় দেখতে চাই। সর্বংসহা আর চিরত্যাগী ভূমিকায়। তাদের যেন আর কিছুরই প্রয়োজন নেই। এমনকি সেই বয়সের মায়েরা আবার বিয়ে করলে সন্তানরাও তাদের ত্যাগ করতে দেখেছি।

ভাল থাকুন।

১৩| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪০

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: চমৎকার।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২৫

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইজান। ভাল থাইকেন।

১৪| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৮

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


একেই আসলে গল্প বলে। +++++ রইল।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩১

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: :) :) :)

১৫| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১২

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: নিখাদ বাস্তবতাই মনে হলো আমার কাছে !

০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:৩৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ অভি। চেষ্টা করি বাস্তবতাই গল্পে ফুটে উঠুক। কতটা পারছি তা জানা হয় না।
ভালো থাইকেন।

১৬| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২২

শায়মা বলেছেন: সায়রা বেগমকে সত্যিই চোখের সামনে দেখতে পেলাম ভাইয়া।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৩৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ শায়মা। ভালো থাকেন সব সময়।

১৭| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৪

জুন বলেছেন: এমনটি মনে হয় আজকাল আমাদের সমাজেও ঢুকে পড়েছে জুলিয়ান সিদ্দিকী। অত্যন্ত মুন্সীয়ানার সাথে আপনি ব্যাপারটা তুলে ধরেছেন আপনার গল্পের মাধ্যমে। সায়রা বেগমদের জন্য কিছুটা সহানুভূতি রইলো ।
+

০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৪৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: আপু, সায়রা বেগমদের কথা আমরা ভাবি না। সামাজিক ভাবে আমরা ভাবতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারছি না বলে।

ভালো থাইকেন আপু সব সময়।

১৮| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৪

শ্যামল জাহির বলেছেন: চাহিদা-আকাঙ্খা মেটাতেই বিভিন্ন পথের সৃষ্টি। বৈধ পথই গ্রহন যোগ্য পথ।

অনেক সময় চাহিদা-আকাঙ্খা মেটানোর বৈধ পথও গ্রহন করা হয়ে উঠেনা পারিপার্শ্বিকতার কারণে।
চাহিদা আছে এমন বিধবা/বিপত্নীকের কথা প্রত্যেকটা সন্তান বা কাছের মানুষ গুলো ভাবা উচিৎ বলে অনেকে মনে করেন। শারিরীক চাহিদা না থাকলেও; মানসিক দিকটিকেও প্রাধান্য দেয়া যেতে পার। চাহিদা-আকাঙ্খা মেটাতেই বিভিন্ন পথের সৃষ্টি। বৈধ পথই গ্রহন যোগ্য পথ।

অনেক সময় চাহিদা-আকাঙ্খা মেটানোর বৈধ পথও গ্রহন করা হয়ে উঠেনা পারিপার্শ্বিকতার কারণে।

চাহিদা আছে এমন বিধবা/বিপত্নীকের কথা প্রত্যেকটা সন্তান বা কাছের মানুষ গুলো ভাবা উচিৎ বলে অনেকে মনে করেন। যদি বিধবা/বিপত্নীক চায়- শারিরীক চাহিদা না থাকলেও; মানসিক দিকটিকে প্রাধান্য দিয়ে হলেও; সঙ্গী গ্রহণে মধ্যস্হতাকারীর ভূমিকা রাখতে পারে সন্তানরা। আর একমাত্র বৈধ সঙ্গীই হচ্ছে স্বামি-স্ত্রী।

১৯| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৪৯

শ্যামল জাহির বলেছেন: স্যরি জুলিয়ান ভাই, একই কথা ডাবল ঘোড়া মারছে!
অর্ধেক ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিন! :P

২০| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৪৯

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: চাহিদা আছে এমন বিধবা/বিপত্নীকের কথা প্রত্যেকটা সন্তান বা কাছের মানুষ গুলো ভাবা উচিৎ বলে অনেকে মনে করেন। যদি বিধবা/বিপত্নীক চায়- শারিরীক চাহিদা না থাকলেও; মানসিক দিকটিকে প্রাধান্য দিয়ে হলেও; সঙ্গী গ্রহণে মধ্যস্হতাকারীর ভূমিকা রাখতে পারে সন্তানরা। আর একমাত্র বৈধ সঙ্গীই হচ্ছে স্বামি-স্ত্রী।


-তাহলে আসেন আম্মানসুরার মন্তব্যের বিরোধীতা করি জোরেসোরে। X(

২১| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:১১

আরজু পনি বলেছেন:

সিঁড়ি বেয়ে যতটা ওপরের দিকে মানুষ উঠতে চায়, তার শ্রম আর ঘাম তো ততটাই হবে।


জীবনের নিঃসঙ্গতার ভয়াবহতা দেখলাম আপনার লেখায় যেখানে সন্তানও হয়ে উঠে প্রতিদ্বন্দী ।

অনেক ভালো লাগা রইল ।।

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:০৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আরজু পনি। ভাল থাকবেন সব সময়।

২২| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩২

বোকামন বলেছেন:
হূম ..
ভালো গল্প ।।

১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫০

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ বোকামন। ভালো থাকুন সব সময়।

২৩| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:২৪

কুমার মিজান বলেছেন: জাষ্ট ঢু মারতে আসছিলাম। পড়ে ভাল লাগল।

১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ঢুঁ মেরে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ কুমার মিজান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.