নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
Dunkirk: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অলৌকিকতম ঘটনার ধ্রুপদী একটি মুভি দেখলাম।
ঘটনাটা ১৯৪০ সালের ২৬ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত চলেছিল। ঘটনাস্থল সমুদ্রতীর, উত্তর ফ্রান্সের ডানকার্ক নামক স্থান। সেখানে আটকা পড়া প্রায় চার লাখ মিত্রবাহিনী সেনাকে উদ্ধার করবার জন্য যে অপারেশন চালানো হয়েছিল, তার নাম ছিল 'অপারেশন ডায়নামো'। ইতিহাস সাক্ষী, সত্যি এতগুলো মানুষকে বাঁচানো গিয়েছিল হিটলারের বাহিনীর হাত থেকে, এজন্য এটা পরবর্তীতে ‘মিরাকল অফ ডানকার্ক’ নামে পরিচিত হয়।
বিশাল ধু ধু এক সাগরতীরের নাম ডানকার্ক। সেখানে বাড়ি ফিরবার জন্য অপেক্ষা করছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চার লাখ সেনা, কখন জাহাজ আসবে আর তারা ফিরবে দেশে। কিন্তু বলা নেই কওয়া নেই, শত্রুপক্ষ এই উন্মুক্ত সাগরতীরেই বোমা আর গুলি ছুড়তে শুরু করল। নিশ্চিত মৃত্যুর মুখোমুখি লাখ লাখ সৈন্য.....। এই ঘটনা নিয়েই ক্রিস্টোফার নোলান বানিয়েছেন ‘ডানকার্ক’ মুভিটি।
ডানকার্কে যখন জার্মান বাহিনী বিপুল সংখ্যক ব্রিটিশ, ফ্রেঞ্চ, বেলজিয়ান ও কানাডীয় সেনাকে ঘিরে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে, তখন হাউজ অফ কমন্সে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল সে ঘটনাকে ‘চূড়ান্ত সামরিক বিপর্যয়’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর শিকড় আর মাথা ডানকার্কে আটকা পড়ে আছে, মৃত্যুর অপেক্ষায়। উদ্ধারের পর তাঁর সুবিখ্যাত “আমরা সাগরবেলায় যুদ্ধ করব” বক্তৃতায় তিনি এ ঘটনাকে অলৌকিক আখ্যা দেন।
১৯৪০ সালের এপ্রিলে জার্মান বাহিনী ডেনমার্ক আর নরওয়ে আক্রমণ করে। মে মাসে আক্রমণ করে বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস এবং ফ্রান্স। ২১ মের মাঝে জার্মান বাহিনী সেখানে যুদ্ধরত বিইএফ (ব্রিটিশ এক্সপেডিশনারি ফোর্স)-কে ঘিরে ফেলে। এছাড়াও বেলজিয়ান বাহিনীর যা বাকি ছিল ও ফ্রান্সের তিনটি বাহিনীকে বিইএফ-এর সাথেই উত্তর ফ্রান্সে কোণঠাসা করে ফেলে নাৎসিরা। বিইএফ বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল ভাইকাউন্ট গোর্ট সিদ্ধান্ত নিলেন এখন এখান থেকে না পালালে বিপদ। তাই তাঁর বাহিনীসহ স্বদেশে ফিরবার জন্য তিনি কাছেই বন্দর এলাকা ডানকার্কে যাবার নির্দেশ দিলেন, সেখানে জাহাজ ভিড়তে পারবে এবং সেনারা জাহাজে করে ফিরে যেতে পারবে।
হিটলারের মনে যদি এই মিত্রবাহিনী ধ্বংস করে দেবার ইচ্ছে থেকে থাকত তবে তিনি সবচেয়ে বড় ভুলটা করেন ১৯৪০ সালের ২২ মে; সেদিন তাঁর অনুমতিতে জার্মান হাই কমান্ড পদাতিক বাহিনীকে থেমে যেতে বলে। তাই এই সেনা প্রত্যাহার ঠেকানোর ভার কেবল জার্মান এয়ার ফোর্সের হাতে রইল। তাদের মোকাবিলা করে ব্রিটিশ এয়ার ফোর্স। যদি তখনই মিত্রবাহিনীর উপর আক্রমণ চালানো হতো তবে, হয়ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিরাই বিজয়ী হতো।
কিন্তু ২৬ মে সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। ওদিকে প্রথম দিনে মাত্র ৭৬৬৯ জন সেনা দেশে ফিরতে পারে। কিন্তু তখনই কোণঠাসা মিত্রবাহিনীকে চেপে ধরে নাৎসি বাহিনী। কোথায় যাবে মিত্রবাহিনীর সেনারা? একদিকে সাগর, আর অন্যদিকে জার্মান বাহিনী। আর উপর থেকে বোমা ফেলছে জার্মান এয়ারফোর্স। সাগর তীরে দাঁড়িয়ে চার লক্ষ সৈন্য!
অথচ অষ্টম দিনের মাঝেই ৩,৩৮,২২৬ জন সৈন্য দেশে ফেরার পথে! কীভাবে তাঁরা নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এলেন? কীভাবে রক্ষা পেলেন? কেবল একটা বাক্যেই সেটা বলা যায়, যেটি ডানকার্ক মুভির ট্যাগলাইন-“400,000 MEN COULDN’T GET HOME, SO HOME CAME FOR THEM."
কিন্তু তারপরেও ৬৮,০০০ সেনাকে হারাতে হয়। ফেলে যেতে হয় অস্ত্রপাতি, ট্যাংক ইত্যাদি।
মুভিটি দেখবার সময় হ্যান্স জিমারের মনোমুগ্ধকর মিউজিকের সাথে সাথে আপনি পৌঁছে যাবেন ১৯৪০ সালের সেই ডানকার্কের সমুদ্রতীরে, যেখানে আতংকে রয়েছেন লাখ লাখ সেনা। এই মুভির মাধ্যমে ওয়ান ডিরেকশন ব্যান্ডের গায়ক হ্যারি স্টাইলসের অভিনয় অভিষেক হয়েছে। আর পাইলট হিসেবে টম হার্ডির অনবদ্য অভিনয়ের কথা তো বলতেই হয়, আর কিলিয়ান মার্ফি তো আছেনই।
মাত্র ১ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট দৈর্ঘ্যের ডানকার্ক মুভিটি গতানুগতিক War Movie নয়, বরং যুদ্ধের ময়দানে একজন কী অনুভব করতে পারে সে অনুভূতি প্রকাশের অনবদ্য এক মুভি। কোনো চরিত্রের Backstory এখানে দেয়া হয়নি, শুধু সে মুহূর্তে তাঁরা কতটা আতংকে আছেন সেটাই এ মুভির প্রধান উপজীব্য।
এই মুভিতে কিছু ব্যতিক্রমী তথ্যঃ যুদ্ধের মুভিতে কম্পিউটার গ্রাফিক্স থাকবেই। কিন্তু নোলান এই মুভিতে কোনো গ্রাফিক্সের ব্যবহার করেননি। চার লাখ সেনা কীভাবে দেখিয়েছেন নোলান? প্রধান প্রধান চরিত্রের শিল্পীরা ছাড়াও প্রায় ১,৫০০০ এক্সট্রা এই মুভিতে তিনি ব্যবহার করেন, আর বাকি কাজ চালান কার্ডবোর্ডের সেনা বানিয়ে। মুভিটিতে সত্যিকারের ৬২টি জাহাজ ব্যবহৃত হয়! এর মধ্যে ১২টি সেই ১৯৪০ সালের ডানকার্কে ব্যবহৃত সামরিক নৌযান! মুভি ইতিহাসে আগে কোনো মুভিতে এতগুলো সত্যিকারের নৌযান ব্যবহৃত হয়নি। যেখানে ডানকার্কের ঘটনা ঘটেছিল সেই জায়গাতেই এই মুভির শুটিং করেছেন ক্রিস্টোফার নোলান!
ডানকার্ক ছবির টাইটেল তিনটি রঙ দিয়ে লেখা। আকাশী নীল, গারো নীল আর কমলা- যার মানে আকাশ, সাগর আর ভূমি। এই তিন জায়গা থেকেই মুভির কাহিনী এগিয়ে যায়। মজার ব্যাপার, এই মুভিতে কোনো নারী অভিনেত্রী ছিলেন না বলবার মতো। পুরো মুভি জুড়েই কেবল পুরুষ!
মুভির লন্ডন প্রিমিয়ারে ডানকার্কে বেঁচে যাওয়া ৩০ জন আমন্ত্রিত সেনা সদস্য ছিলেন। তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, 'কেমন লেগেছে মুভিটি?' তাঁরা বলেছিলেন, "মুভিটি নিখুঁতভাবে সেই ডানকার্কের ঘটনা তুলে ধরতে পেরেছে"।
সবচেয়ে অবাক করা বিষয়টি হলো, এই মুভিটিতে মিত্রবাহিনীর সেনাদেরকে ঘিরে ফেলেছিল জার্মান সেনারা, অথচ পুরো মুভি জুড়ে একবারও কোনো জার্মান সেনাকে দেখানো হয়নি! এক ঝলক চোখে পড়লেও দেখা যায়নি কোনো চেহারা। নোলান চেয়েছিলেন মুভিটিতে দর্শক কেবল আতংকটা অনুভব করুক এবং দর্শক সেটা শতভাগ উপলব্ধি করেছেন।
২০ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:৩৬
জুল ভার্ন বলেছেন: মুভিটা দেখলে আপনার প্রত্যাশা পূরণ হবে নিশ্চিত।
২| ২০ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২০
রাজীব নুর বলেছেন: মুভির লিংকটা দেন দেখি। হাতে সময় আছে।
২০ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৪৭
জুল ভার্ন বলেছেন: আমি নেটফ্লিক্সে দেখেছি।
৩| ২০ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:২৬
করুণাধারা বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। মুভিটা দেখার চেষ্টা করবো।
২১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৪৮
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ২২ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:৫১
মেরুভাল্লুক বলেছেন: টরেন্ট থেকে নামিয়ে নেন।, যাদের দেখার ইচ্ছা
৫| ২৩ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১:৩২
ডাব্বা বলেছেন: ভেরি ওয়েল মেইড মুভি।
২৩ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৩০
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৬| ২৩ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৩:০৬
মার্শাল ইফতেখার আহমেদ বলেছেন: হ্যাঁ চিত্রগ্রহন দারুণ! ভালো লেগেছে চলচ্চিত্রটি তবে আমার কিছুটি ধীর গতির মনে হয়েছে। শুভেচ্ছা।
২৩ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:২৯
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ২৩ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:৩৫
জুন বলেছেন: ডানকার্ক আর পার্ল হারবার সেই সাথে হিরোশিমা নাগাসাকি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের এক কলংকজনক অধ্যায়। সবকটিতেই নিরীহ সৈন্য নতুবা মানুষের উপর আকস্মিক আক্রমণ ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ড যা যুদ্ধের নীতিমালা বহির্ভূত জুলভার্ন। ডানকার্ক তেমনি এক মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে তৈরি। এই করোনাকালে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচুর ম্যুভি দেখছি ঘরে বসে। কোন কোনটি ৪/৫ বার পর্যন্ত।
সুন্দর লেখায় +
২৩ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:৪২
জুল ভার্ন বলেছেন: করোনাকাল আমিও কাজে লাগিয়েছি মুভি দেখে আর বই পড়ে।
শুভ কামনা।
২৩ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:৪৫
জুল ভার্ন বলেছেন: 'অক্টোবর' নামের একটা হিন্দী মুভি দেখেছি বেশ কয়েকবার, তেমন মুভি ইদানীং কালে আমার দেখা হয়নি। যদি সুযোগ থাকে ছবিটা একাকী দেখবেন-আশা করি ভিন্নমাত্রায় উপভোগ করবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:২২
স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: চরিত্রিগুলোর সাথে একাত্ব হয়ে যাওয়ার মতো মুভি। প্রথম দিকে তো সমুদ্র তীরে আটকে পড়া সৈন্যদের মতো আমিও আকাশের দিকে চেয়ে অপেক্ষা করছিলাম অজানা আশংকায়। অসাধারণ সিনেমাটোগ্রাফির এই মুভিটি না দেখলেই নয়।