নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

KORCZAK\'...

১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ ভোর ৬:৩০

'KORCZAK'...

'korczak' দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উপর নির্মিত আরও একটি মুভির নাম। মুভির নাম korczak হলেও এটা লেখক কাম মুভির নায়কের নামও।
'korczak' মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯১ সনে। পোলিশ ভাষায় নির্মিত ছবির সাবটাইটেল ইংরেজি হওয়ায় এবং আগে korczak নামের উপন্যাস পড়া থাকায় মুভি দেখে কোথাও খটকা লাগেনি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পোলান্ডে দিনের পর দিন গৃহবন্দী ছিলো প্রায় ২০০টি বাচ্চা। ওরা জানেও না মৃত্যুর এত কাছে ওরা দাঁড়িয়ে। ওদের অপরাধ একটাই, ওরা ইহুদি। ইংরেজিতে jew । সুদূর পোল্যান্ডের গল্প। গল্প হলেও সত্যি। (আমার মতো অনেকেরই ধারণা, বিশ্বাস - ইহুদি নিধনকে বিশ্বের ইহুদি মিডিয়া এবং তাদের দোসর গং সর্বত্রই অতিরঞ্জিত করে প্রচার করে একটা আন্তর্জাতিক সহানুভূতি আদায়ের মিশন পরিচালনা করে সফল হয়েছে)। মুভির ভাষ্যমতে, হিটলারের ইচ্ছে ছিল পৃথিবী ইহুদিশূন্য করা!

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিদের নির্মমভাবে হত্যা করা হত হিটলারের নির্দেশে। বাচ্চা, বুড়ো, নারী পুরুষ কেউই রেহাই পেতেন না। তখন ১৯৩৯ সন। জার্মানি যেদিন পোল্যান্ড দখল করে নিল সেদিন থেকেই মোটামুটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু। হিটলারের নাৎসি বাহিনী ইহুদিদের খুঁজে খুঁজে সবাইকে কনসেনট্রেশন ক্যাম্প এনে হত্যা করে। নাৎসিরা ১৯৪২ নাগাদ খবর পায় জানুশ কোরচ্যাক নামে পোল্যান্ডের এক শিশুদের ডাক্তারের আশ্রমে ২০০ মতন ইহুদি অনাথ বাচ্চা রয়েছে, যাদের মা বাবা-মাদের আগেই নাৎসিরা হত্যা করেছিল। তাদের অনাথ বাচ্চাদের তিনি (জানুশ কোরচ্যাক , janus korczak) লুকিয়ে রেখেছেন। বাচ্চাগুলো দিনের পর দিন গৃহবন্দী। ওরা শুধু চাইত একটু বাইরের আকাশ দেখতে। হঠাৎ একদিন নাৎসি সমন এসে পৌঁছল, ওদের এবার মরতে হবে। চলে যেতে হবে ট্রেবলিঙ্কা এক্সটারমিনেশন ক্যাম্পে। যেখানে একজায়গায় জড়ো করে সবাইকে হত্যা করা হবে। কিভাবে হত্যা করা হবে সেটা লিখলাম না, কারণ আতঙ্ক ছড়াতে ভালো লাগেনা।

কোরচ্যাককে বলা হয়েছিল তিনি মুক্ত। তিনি চলে যেতে পারেন। তাও তিনি ওই অনাথ শিশুদের ছেড়ে পালাননি। পালাতে পারেননি। তাঁকে এইজন্য পোল্যান্ডে 'কিং অফ দ্য চিলড্রেন' বলা হয়।
ওদের সাথেই মৃত্যুবরণ করবেন স্থির করে নিয়েছিলেন। তখন জুলাই মাস, ১৯৪২ সন। বন্দীদশায় বাচ্চাগুলো হাঁপিয়ে উঠছিল। ওরা মুক্ত আকাশ দেখতে চাইছিল।

কোরচ্যাক শুধু একজন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই ছিলেন না। তিনি একজন সাহিত্যানুরাগী ভালো পাঠক এবং লেখকও ছিলেন। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গুণমুগ্ধ ছিলেন। বন্দী শিবিরের বাচ্চাদের তিনি রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন শিশুতোষ গল্প শোনাতেন। এইসময় তিনি বাচ্চাদের রবি ঠাকুরের "ডাকঘর" নাটকটির ঘটনা বলেন। আর ক্ষুদেদের দিয়ে অভিনয় করালেন এই ডাকঘর। অভিনয় করতে করতে ওরা একাত্ম হয়ে গেল নাটকের সঙ্গে।

ডাকঘর নাটকটি অমল নামের একটি ছোট ছয় সাত বছর বয়সী ছেলের। সে শুধু ঘরেই থাকে। কবিরাজ নিদান দিয়েছেন ঘরে থাকতেই হবে তাকে, ঘরের বাইরে বেরোনো মানা। বেরোলেই মৃত্যু অবধারিত। ঘরবন্দী হলেও তার মনটি এদিক সেদিক ছুটে চলে যায়। তবে ভারী অবসন্ন হলেও শেষে আর বিষণ্ণ নয় সে .....
অমল আর সেই অমলের ডেকে ডেকে গল্প করা দইওয়ালা, রাজপ্রহরী, মোড়ল, বালিকা, অমলের গৃহ বন্দী দশা ওরা চমৎকার ফুটিয়ে তুলেছিল।

তারপর ৫-৬ আগস্ট ১৯৪২ সন। জার্মানির সৈন্যরা ওদের হত্যা করার জন্য ক্যাম্পে নিয়ে যেতে এল। কোরচ্যাক কিছু লুকোননি ওদের কাছে, বলেছিলেন, "সবচেয়ে সুন্দর জামা পরো, সবচেয়ে প্রিয় বইটা হাতে নাও আর ব্যাগ পিঠে। যদি আমাদের কেউ নিতে আসে, আমাদের যেতে হবে।"

প্রতীকী নাটক ডাকঘর। নাটকে রাজা হলো মৃত্যুর দেবতা আর ডাকহরকরা, প্রহরী হলো মৃত্যুদূত। ওরা সবচেয়ে খুশি ছিল সেইদিন যেদিন ওরা ঘর ছেড়ে বেরোল।
তারপর আগস্ট ৭,১৯৪২ সন। ট্রেবলিঙ্কায় নিয়ে গিয়ে সবাইকে হত্যা করা হয়। কেউ ভয় পায়নি, চেঁচামেচি করেনি সেদিন। গণসমাধি আছে সবার সেখানে ....
মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জীবনের জয়গান বড়রা গাইতে পারে, কিন্তু বাচ্চারা যে পেরেছিল কোরচ্যাক এর আদর ভালোবাসা আর স্নেহের পরশে রবি কবির 'ডাকঘর' গল্পের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে। korczak কে পোল্যান্ডে "Hero of the holocaust" বলা হয়।
ডাকঘর নাটকের শেষ কটি সংলাপঃ (এখানে 'ও' বলতে অমলকে বোঝানো হয়েছে)।
রাজকবিরাজ: 'ও ঘুমিয়ে পড়েছে'।
সুধা: "আমি যে ওর জন্য ফুল এনেছি- ওর হাতে কি দিতে পারব না?"
রাজকবিরাজ: 'আচ্ছা, দাও তোমার ফুল।'
সুধা: "ও কখন জাগবে?"
রাজকবিরাজ: 'যখন রাজা এসে ওকে ডাকবে'।
সুধা: 'তখন তোমরা ওকে একটি কথা কানে কানে বলে দেবে?"
রাজকবিরাজ: 'কী বলব?'
সুধা: বলবে, "সুধা তোমাকে ভোলে নি"।।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কি এই মুভিটার কথা বলছেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.