নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
তোমার বাবা কী করে?
এই প্রশ্নটা খুবই আপত্তিকর। একটা ছোট শিশু নিজেকে চিনতে শেখার আগেই তাকে শিখতে হচ্ছে তার বাবার পেশা। অবশ্য, নামেই পেশা, মূলত সেটা সামাজিক পরিচিতি। স্কুলে গেলে ক্লাস ওয়ান-টু এর বাচ্চাগুলোও জানে অমুকের বাবা ডাক্তার, তমুকের বাবা ব্যারিস্টার। এবং স্বভাবতই যার বাবার পেশাগত তেমন কোন সামাজিক পরিচিতি নেই, সে ব্রাত্য হয়ে থাকে সেই শিশুদের শ্রেণীকক্ষেই।
সবার বাবাই সবার কাছে ঈশ্বরের মতো। নিজেই সর্বশ্রেষ্ঠ এই মতবাদ প্রমাণের আজকের পৃথিবীতে সকল পেশার সমান মূল্যায়ন হয়তো কখনও হবে না, কিন্তু মেথরের সন্তানের কাছে তার বাবা আর প্রেসিডেন্টের সন্তানের কাছে তার বাবা সবসময় একই রকম থাকবে। কেন শিশুদের মাথায় আমরা ঢুকিয়ে দিচ্ছি এই ভ্রষ্ট ধারণাটা- তোমার বাবা কিছুই না/তোমার বাবা একদম হাতি-ঘোড়া? কী যায় আসে যদি আমার বাবা কিছুই না হন? কী যায় আসে যদি আমার বাবা দেশের সবচেয়ে পরিচিত ব্যক্তি হন? মানুষ হিসেবে আমার পরিচয় কি আমার বাবা কে দিয়ে হবে?
শৈশবে একটা সময় আমাদের এলাকায় অনেক চুরি হতো। পাশের বাড়িতে মামা সারা রাত পোষা কুকুর নিয়ে জেগে বসে থাকতেন আর প্রায়ই চোর ধরে ফেলতেন। প্রায়ই ঘুম থেকে উঠে দেখতাম একটা চোর ধরা পড়েছে রাতে, আর তাকে মহাসমারোহে এলাকার সবাই মিলে বেঁধে পিটাচ্ছে। একদিন দেখলাম এরকম একজন মানুষকে চোর বলে পেটানো হচ্ছে, একটু দূরে মানুষটার স্ত্রী আমার বয়েসী একটা ছেলের হাত ধরে কাঁদছে। ছেলেটার চোখে জল নেই, তবে বিস্ময় আছে। সে একটু পর পর বলছে, "আমার বাবাকে মারবেন না, আমার বাবা তো চোর না।" একজন ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করল, "তাহলে তোর বাবা কী?" ছেলেটা তখন থতমত খেয়ে বলল, "আমার বাবা"।
ছেলেটা ঠিকই বলেছিল। তার বাবার পরিচয় তার কাছে শুধুই বাবা, বাবার পেশা না। বাবা পেশায় চোর হলেও তার কাছে তো ঈশ্বরের মতোই। যেই ছেলেটা বাবা সচিব বলে নিজেকে উপসচিব মনে করে, বাবা ডাক্তার বলে নিজেকে অর্ধেক ডাক্তার মনে করে ওরা কখনও স্বীকার করে না যে বাবা ঘুষ খায় বা অন্যায়ভাবে টাকার পাহাড় গড়ে। তবে সেই ছেলেটা বাবা চোর দেখেই কিন্তু নিজেকে অর্ধেক চোর মনে করেনি, খুব সহজ ভাবে সত্যি কথাটাই বলেছিল- আমার বাবা।
যেই স্কুলে শিখানো হচ্ছে 'জন্ম হোক যথাতথা কর্ম হোক ভাল', সেই স্কুলেই কেবলমাত্র বাবার পরিচয়ের উপর ভিত্তি করে শিশুকে সুবিধা/স্নেহ দেয়া হচ্ছে, এর চেয়ে বড় হিপোক্রেসি আর কী হতে পারে?
(এই লেখাটা আমার নয়, স্কলাস্টিকা স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ইয়াসমীন জামান ম্যামের)
২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:২৫
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:৪৬
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: বাবা বাবাই (সকল সন্তানের নিকট) । যদিও এ জাতীয় অনেক প্রশ্নই করা উচিত নয় বা নৈতিক ভাবে সমর্থনযোগ্য নয় তার পরেও আমাদের কয়জনেরই বা নৈতিকতাবোধ সম্পর্কে ধারনা আছে?
আর আমরা সবাই নিজের অবস্থান যাই হোক না কেন অন্যের সম্পর্কে জানার (পরচর্যা) কৌতুহল দূর্নিবার। আর এটা যে কারো কারো জন্য মনোকষ্টের কারন হতে পারে এটাই আমরা ভেবে দেখিনা।
২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:৪৯
জুল ভার্ন বলেছেন: এসব হীন মনোবৃত্তি কেবল আমাদের দেশেই আছে।বিদেশমনটা দেখিনি, উন্নত দেশে dignity of labour আছে। সব পেশারই সন্মান আছে। ক্লাসে ফার্স্ট বয় বা গার্ল বলেও কিছুই নাই। Alphabetically রোল কল করা হয়। আমাদের দেশের এসব হীন মনোবৃত্তি কি কখনও যাবে! শুধু কবে কোন দেশ শত শত বৎসর আগে তাদেরকে শাসন করে অত্যাচার করেছিল সেসব নিয়েই ব্যস্ত। সেসব দেশ যে এখন কত উপরে উঠে গেছে তা দেখেনা।
৩| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:২০
রানার ব্লগ বলেছেন: খুবই অফেন্ডেড একটা প্রশ্ন !!!! এর মাধ্যমে শিশু কে তার অবস্থান সম্পর্কে সচেতন করার প্রয়াশ ঘটে।
২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:২৬
জুল ভার্ন বলেছেন: আমি মনে করিনা-এই প্রশ্নের মাধ্যমে শিশুকে সচেতণ করা যায়, বরং শিশুটিকে এক মনোস্তাত্বিক পরিস্থিতিতে ফেলে দেওয়া হয়। যেখানে শিশুটির হতাশাগ্রস্থ্য হওয়ার সম্ভাবনা প্রকট।
৪| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:৩৫
রানার ব্লগ বলেছেন: আমি সচেতন বলতে তার পারিপার্শিক অবস্থান সম্পর্কে সচেতন বা উদ্বিগ্ন করে তোলে বুঝিয়েছি। হ্যা অবশ্যি ইহার মধ্যমে মনোস্তাত্বিক জটিলতা তৈরি করে সামাজিক বিভেদের নোংরা দেয়াল টা শিশুর সামনে উন্মোচিত হয়।
২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:১২
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:৩৭
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: দারুন একটা বিষয় তুলে ধরেছেন। বাবাদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা।
২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:১৩
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ কবি।
৬| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:৫৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: সুন্দর কথা শেয়ার করেছেন। জন্ম হোক যেথাতথা কর্ম হোক ভালো।
কোন একদিন হয়তো এসবের পরিবর্তন হবে তখন আমরা থাকবোনা।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:১৯
জুল ভার্ন বলেছেন: তবুও আমাদের মানষিকতার পরিবর্তন হোক।
৭| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:৪১
মিরোরডডল বলেছেন:
একজন ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করল, "তাহলে তোর বাবা কী?" ছেলেটা তখন থতমত খেয়ে বলল, "আমার বাবা"।
চমৎকার এই লেখাটি শেয়ার করার জন্য থ্যাংকস ।
যেই স্কুলে শিখানো হচ্ছে 'জন্ম হোক যথাতথা কর্ম হোক ভাল', সেই স্কুলেই কেবলমাত্র বাবার পরিচয়ের উপর ভিত্তি করে শিশুকে সুবিধা/স্নেহ দেয়া হচ্ছে, এর চেয়ে বড় হিপোক্রেসি আর কী হতে পারে?
সো ট্রু !
২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:২০
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৫
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: বড়দের কাছ থেকেই শিশুরা এসব শিখে।আমি নিজে শুনেছি ছাত্রের পিতা বলছে,এ ভাবে সবাইকে ভর্তি করালে আমার ছেলেকে রাখবো না।এই মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে সময় লাগবে।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:২১
জুল ভার্ন বলেছেন: আদৌ কি আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন হবে!
ধন্যবাদ।
৯| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:৩২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। আমাদের একজন শিক্ষক ছিলেন যিনি কোন ছেলে পড়া না পারলে তার বাবা সম্পর্কে অত্যন্ত আপত্তিকর কথা বলতেন। জিজ্ঞেস করতেন তোর বাবা কি পাস। আরও বাজে বাজে কথা বলতেন। আরেক শিক্ষক একজন একজন করে জিজ্ঞেস করতেন বল তোমাদের বংশ কি।
আসলে এরা শিক্ষক নামের কলঙ্ক।
পিতা বা মাতা যত খারাপই হোক তাকে কখনও সন্তানের সামনে অপমান করা উচিত না। সন্তানের কাছে পিতা মাতা হোল নক্ষত্রের মত। ভিখারুন্নেসা স্কুলের একটা মেয়ে তার পিতামাতাকে অপমানের জন্য আত্মহত্যা করেছিল কিছুদিন আগে।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:২৪
জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার উল্লেখিত দুই শিক্ষক নামের অসভ্যের কারনেই আমাদের এই অবক্ষয়।
হ্যা ভিখারুন্নেসার সেই ছাত্রীর কথা মনে আছে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১০| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৪৫
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: পিতা কী করে এটা একটা জঘন্য প্রশ্ন। যে বা যারা এই প্রশ্ন করে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের উদ্দেশ্য খারাপ থাকে। এই প্রশ্নের উত্তরের ওপর শিশুটির প্রতি তার ব্যবহার নির্ভর করে।
আরেকটা প্রশ্ন শুনলেই খুব বিরক্ত লাগে। সেটা হচ্ছে "তোমাকে কে বেশি আদর করে? বাবা নাকি মা? " এই প্রশ্ন দ্বারা ছোট বেলাতেই বাবা মা এর মধ্যে একটা বিভাজন তৈরি করে দেয়া হয় বাচ্চাটার মনে।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:২৭
জুল ভার্ন বলেছেন: "তোমাকে কে বেশি আদর করে? বাবা নাকি মা? " এই প্রশ্ন দ্বারা ছোট বেলাতেই বাবা মা এর মধ্যে একটা বিভাজন তৈরি করে দেয়া হয় বাচ্চাটার মনে।[/sb খুব সত্য কথা। এই প্রশ্নের নেতিবাচক দৃষ্টি বাচ্চাদের মধ্যে বীজ বপণ করে দেয়।
ধন্যবাদ।
১১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:০৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: মূল লেখাটা যারই হোক, আপনি এমন একটা স্পর্শকাতর বিষয় আমাদের সাথে শেয়ার করে আমাদেরকে সাবধান হতে সাহায্য করেছেন, এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:২৭
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় শ্রদ্ধেয়।
১২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: স্কুলে আমাকে ম্যাডাম প্রশ্ন করেছিলেন- তোমার বাবা কি করে? আমি বলেছিলাম জানি না। ইচ্ছা করেই বলেছিলাম।
ম্যাডাম সহ পুরো ক্লাশ খুব অবাক হয়েছিলো।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:৩২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমরা যখন ইলেভেন ক্লাসে তখন একজন নতুন শিক্ষক জয়েন করেন-যিনি ক্যাডেড কলেজ এবং ক্যাডেটদের এটিচিউড সম্পর্কে ধাতস্থ্য হতে পেরেননি। তিনি ক্লাসে নিজের পরিচয় দিয়ে যখন ক্যাডেটদের পরিচয় জানতে চাচ্ছিলেন তখন একজন ক্যাডেট উত্তরে বলেছিলো-"আমার বাবা এখন জেলে, সাত মার্ডার করে জেলে আছে-সাত মার্ডারের মধ্যে একজন শিক্ষক ছিলেন।" স্যার খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন আর আমরা স্যারের ফ্যাকাসে মুখটা দেখে হাসছিলাম!
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:১২
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: অনেক কিছুই আমাদের করা উচিত নয়। তবুও আমরা করি । খুব সুন্দর পোস্ট